জ্বলদর্চি

আশিস চৌধুরী


আ শি স  চৌ ধু রী


প্রতীক্ষা

অনেক আগের কথা আজ মনে পড়ে
ত্রস্ত পায়ে এসেছিলে কবিতা শোনাতে
ব্যস্ত আমি বলেছি সেদিন
এখন ওসব নয় অন্য কোনোদিন

আজ মাঝ পথে পথ চেয়ে বসে আছি
কবিতা শুনব বলে
নিভে এল দু'চোখের আলো
মনে কি পড়ে না একবারও?

বাস্তুসাপ

আমি বাস্তুসাপের সঙ্গে দিব্যি আছি
আর চারিদিকে অন্য সাপ দেখে বলছি
ওদের খতম করে দাও

সারাজীবনই হিস হিস শব্দ
 সারাজীবনই বাস্তুসাপের ছোবল
তবু সারাজীবনই দুধ কলা দিয়ে আপ্যায়ন


ভালোবাসা

ছেলে গেল ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছি বলে
আর মেয়ে একটু দূরে 
কলেজের ক্লাস আছে বলে
গৃহকর্তীও গেলেন মায়ের কাছে যাচ্ছি বলে
দশ কিলোমিটার দূরে
ওরা তিনজনই একই পথের পথিক
কেউ সত্যিটা বলে যায়নি
ওরা গেছে তাদের একান্ত ভালোবাসার মানুষের কাছে
আর এদিকে নিঃস্ব গৃহকর্তা বসে আছে
'ভালোবাসা' নামে পাথরটিকে জড়িয়ে ধরে


চিতা বহ্নিমান

তিতিবিরক্ত হয়ে সেদিন সন্ধ্যায়
গীতবিতান থেকে তুলে আনলাম
একমুঠো বর্ষা, সে আর কতক্ষণ
চারিদিকে এত দাবদাহ এত আগুন জ্বলছে
যে দেশালাই কাঠির প্রয়োজন নেই
চিতা বহ্নিমান
কেউ ঝাঁপ দিচ্ছে কাউকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে
সহমরণের পালা শুরু হয়েছে
সতীদাহ পতিদাহ দুইই সমানে চলছে
পুড়ে ছারখার হচ্ছে স্বদেশ
কোথাও এতটুকু শান্তিবারি নেই
চারিদিকে জলের জন্য হাহাকার
অকৃপণ প্রকৃতিও হাত গুটিয়ে নিয়েছে

পালাবার পথ নেই, পুড়তেই হবে
তাতে তুমি শেষ হবে না খাঁটি হবে
নির্ভর করছে তোমার ওপর।

প্রতিস্পর্ধী 

তোমার ঠোঁটে হুল ফোটাতে পারতাম
শুধু সংযমের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার বাসনায়
আমি  তা করিনি, এ কবির অহঙ্কার
অন্য কেউ করবে তা নিশ্চিত
এতদিন পর তুমি আজ বুঝেছ
কবিরা শুধু লোভী নয় অহংসর্বস্ব নয়
তারা ঈশ্বরের মত নিরাসক্ত হতেও জানে
শুধু যখন দিকচক্রবাল জুড়ে
শুয়োরেরা পিলপিল করে
তখনই তার সংযমের বাঁধ ভাঙ্গে
ঈশ্বর  কিন্তু তখনও নির্বিকার

--------

Post a Comment

1 Comments

  1. AnonymousJuly 13, 2020

    প্রতিটি কবিতাই ভালো লাগল।অভিনন্দন ও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।

    ReplyDelete