জ্বলদর্চি

জামা কখনো আগুন হতে পারে না/নিমাই জানা

   ফোটোগ্রাফি- সৈয়দ স্নেহাংশু   


জামা কখনো আগুন হতে পারে

নি মা ই জা না

বাবা অথবা মা 
ভাই অথবা দাদা 
উনুন গুলো সকলেরই আলাদা
কয়লার মত যে যার পুড়ে যাচ্ছে নিজস্ব তাপে
শাড়ি অথবা কাপড়ের খুঁটে লুকিয়ে রাখা নখ
কখনো ধারালো তলোয়ার হয়ে ওঠে
রক্তাক্ত করে নিজেদের জিভ ।

হাড় ভেঙে গেলে মাংস গলে গেলেই 
নাকের বড় কষ্ট হয় পচা গন্ধের শ্বাস 
নোলক খুলে গেলে শরীরে কেমন 
মেঘ ঘনিয়ে আসে
দু'দন্ড মানুষ দেশের মতো ভাগ হয়ে 
বসে পড়ে বাসি ফুলের কাছে 
সকলে কেমন আনমনা থাকে 
গরম রোদে, ঘামে থেকে নুন 
কাটা ঘায়ে কেবল রক্ত জবা ফুটিয়ে দেয় 

মেঘের মতো ঝরে পড়া চোখ মায়ের মুখে
গাছের বাকল খুলে পড়ে , 
আমিও অসুখ প্রার্থনা করি
বয়স্ক শরীর রোদ দ্যাখে নিম গাছের বাকলে
এক হাঁটু জলে কেবল কেঁচোরা 
উর্বরতা হারিয়ে ফেলে 
কতক গুলো শরীর কোনদিন স্নান করেনি 

নিজেকে কেবল জন্মদিনেই খুঁজি 
জন্মের সকল কঙ্কালসার তথ্য নিয়ে 
বসে পড়ি খোলা জানালার পাশে 
কে আমাকে এভাবেই ছেড়ে গেছে মুহূর্ত ভুলে আলের সকল রেখায় ধারাপাত 
করে গেছে লাল বাহিকা 
সারা জীবন শুধু বয়েই গেছি, 
জন্ম তারিখ এখনো পাইনি 

আমার ডান পকেটে সায়ানাইড রাখি 
বাম পকেটে অনেকটা কৌতুহলে 
ভরে রাখি করবী ফুল
না আত্মহত্যার জন্য নয় 
আমি কেবল তাদের উষ্ণতা খুঁজতে চাই
কিভাবে মানুষ গুলো ছোট হতে হতে প্রতিটি 
বিষ বিন্দুর ভেতর ঢুকিয়ে দেয় নিজেকে 
আমি শুধু মানুষের দৈর্ঘ্য মাপতে থাকি 
সেন্টিমিটার স্কেলে 

প্রতিটি পাতার বিন্যাসের ভেতর 
একটি করে কুঁড়েঘর আছে 
বাতাসের আয়ু রাতের মত ফুরিয়ে আসে
হারিয়ে যাচ্ছি নিজেরাই , রক্তের ভেতরও 
আলাদা দুটি রং আছে 
সকলেই আলাদা বিছানা পাতে
দুই দিকে দুইটি মুখের আলাদা জগত 
সকলেই কেবল দেহ হীনতায় ভুগে
ঈশ্বর শুধু ভ্যালিডিটির জন্য অপেক্ষা করে ।

কোন সংক্রমণ সুস্থতার নয় 
দখিন বাতাসের মতো কৃষ্ণচূড়া 
ফুটতেই পারে কোন শ্রাবণ মাসে 
পেছন থেকে হাত তুলে দাঁড়িয়ে থাকে 
অর্জুনতলা স্কুল ছুটি হতেই পারে, 
এখন বয়সের ই বড় কঠিন রোগ ।
রক্তের চাপ না বাড়লেও সকলেই 
সুস্থতা খোঁজে শিশুদের মুখে কেবল 
সরস্বতী ঠাকুর আমি শুধু পুড়ে যাওয়া 
চৈত্রের কথা ভাবি।

ধূসর রং নিয়ে যারা কচুরিপানার মতো , 
মেঘ তাদের নিয়ে পিচ রাস্তা ধরে 
হেঁটে যায় অভাবের ঘরে 
অভাবের কথাই বলে গেছে সকল 
এক এক ঘর খালি করে গেছে 
আগুনের লাল রঙ, আগুনের জন্য 
তবুও দীর্ঘ অপেক্ষা 
আগুনের ভেতর নাকি বড় বড় ঘাস 
চোখ বুজে ঘাসগুলোর ভেতর 
ঢুকে যাচ্ছে দলাপাকানো মানুষ 
এর কোন সমীকরণ নেই ।

   ফোটোগ্রাফি- সৈয়দ স্নেহাংশু   

Post a Comment

0 Comments