জ্বলদর্চি

হাজার বছরের বাংলা গান- ১৪


হাজার বছরের বাংলা গান।। পর্ব-১৪

তু ল সী দা স   মা ই তি

সংগীতের সুবর্ণযুগে বিষ্ণুপুরের গান :  বাংলার একমাত্র সংগীত ঘরানার চলাচল

 । আগের পর্বের পর ।

বিষ্ণুপুর ঘরানার সূচনা লগ্ন থেকেই ভারতের সর্বত্র তার আবহ ছড়িয়ে পড়েছিল। যদুভট্ট ও ক্ষেত্রমোহন গোস্বামীদের সময় থেকেই বাংলার সর্বত্র এমনকি ভারতের নানান প্রান্তে বিষ্ণুপুরের শিল্পীদের গান সমাদর পায়। রামশংকরের আর এক শিষ্য অনন্তলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর চার পুত্র রামপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়, গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়,সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রামকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ,সমকালীন সময়ে রাধিকাপ্রসাদ গোস্বামীর সংগীতের মাধ্যমে বিষ্ণুপুর ঘরানা সুবর্ণযুগে পৌঁছায়। সংগীতের কেন্দ্রে ধ্রুপদসংগীত থাকলেও,খেয়াল, টপ্পা ঠুমরি গানের চর্চা বাংলার একমাত্র সংগীত ঘরানাকে সমৃদ্ধ করতে থাকে। হিন্দিভাষায় লেখা গান বা বন্দিশের পাশেই বাংলা ভাষায় শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চাও হতে থাকে। নতুন গান সৃষ্টি এবং সর্বত্র তা পরিবেশিত হতে থাকে।
প্রসঙ্গে বলা জরুরি, সমসময়ে বিষ্ণুপুরের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্যান্য রাজবাড়ি ও জমিদারবাড়িগুলিও সংগীত চর্চার কেন্দ্র হিসাবে গড়েওঠে। 
কৃষ্ণনগর,বর্ধমান,মুর্শিদাবাদ,চুঁচুড়া কুচবিহার, মহিষাদল, নাড়াজোল, পঁচেটগড়, সিমলাপাল,ভেলাইডিহা, কুচিয়াকোল,পঞ্চকোট, পাতকুম, হেতমপুর-এ সকল স্থানই ছিল তৎকালীন বাংলার সংগীতপীঠ। সর্বত্র বিষ্ণুপুর ঘরানার শিল্পীদের অবাধ যাতায়াত। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, পাথুরিয়াঘাটা জমিদারবাড়ি, শোভাবাজার রাজবাড়ি, প্রভৃতি কলকাতার নানা অঙ্গনও  নিবিড় সংগীত চর্চার ক্ষেত্র হয়ে গড়ে  উঠেছিল। ত্রিপুরা, কাশ্মীর সহ বহু কেন্দ্রে বিষ্ণুপুরের শিল্পীদের যোগযোগ ছিল ইতিহাস থেকেই তা জানা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিষ্ণুপুরের গায়কগণ এই ক্ষেত্র গুলিতে সুরের  পন্ডিত অথবা শিক্ষক হয়ে নিজেদের বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। 
 
মল্লরাজ গোপাল সিংহ  রামশংকর ভট্টাচার্যের অন্যতম মেধাবী ছাত্র অনন্তলাল বন্দ্যোপাধ্যায় কে সংগীতকেশরী উপাধি প্ৰদান করেন। অনন্তলাল বিষ্ণুপুর রাজসভার সংগীত আচার্যের পদে অভিষিক্ত হয়ে নিজের চার সন্তান সহ বহু শিষ্যকে বিষ্ণুপুর ঘরানার গানে পারঙ্গম করে তোলেন। বহু নতুন নতুন  গান তিনি রচনা করেন ও তাতে সুরারোপ করেন। হিন্দি বন্দিশের সাথে বাংলা গানও তিনি রচনা করেন। তাঁর রচিত বাংলা গানের মধ্যে 'দীন তারিণী বলে মা ডাকি গো তোরে', 'কিবা সুন্দর উপবন শোভা', 'দীন-বন্ধু  করুনা-সিন্ধু পতিত-জন-পাবন' প্রভৃতি গানগুলি উল্লেখযোগ্য।এই গানগুলি বাংলা ও বাঙালির গানের ইতিহাসে সম্পদস্বরূপ।  রাজা গোপাল সিংহের মৃত্যুর পর মল্লরাজ রামকৃষ্ণদেবের পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি একটি সংগীত বিদ্যালয় তৈরি করেন। পন্ডিতরা মনে করেন এই সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই  ভারতের প্রথম সংগীতশিক্ষার প্রতিষ্ঠান। বাঙালির সংগীত ইতিহাসে এই গৌরব বাংলা সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্ব বৃদ্ধি করেছে। এই সংগীত বিদ্যালয় থেকে সংগীত শিক্ষালাভ করে বহু গায়ক সংগীত জগতে দিকপাল হয়ে ওঠেন। রাধিকাপ্রসাদ গোস্বামী, উদয়চন্দ্র গোস্বামী, অনন্তলাল বন্দ্যোপাধ্যাযের চার পুত্র রামপ্রসন্ন, গোপেশ্বর, সুরেন্দ্রনাথ ও রামকৃষ্ণ প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উঠে আসে। তাছাড়া ছিলেন বিপিনচন্দ্র চক্রবর্তী, হারাধন চক্রবর্তী, ঈশ্বরচন্দ্র সরকার,অম্বিকাচরণ কাব্যতীর্থ প্রমুখ সঙ্গীত সাধকগণ। প্রকৃতপ্রস্তাবে এঁদের হাত ধরেই বাঙালির সংগীতক্ষেত্র সুবর্ণযুগে পৌঁছায়। শুধু কণ্ঠসংগীত নয়, যন্ত্র সঙ্গীতেও এঁরা দক্ষ ছিলেন। বিষ্ণুপুর ঘরানার গানে যেসব যন্ত্র বাজত তার মধ্যে ছিল,পাখোয়াজ,এসরাজ, সেতার, সুরবাহার, ন্যাসতরঙ্গ, জলতরঙ্গ, বীণা,অনেক ক্ষেত্রে তবলা।
বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত মৃদঙ্গবাদক জগতচাঁদ গোস্বামীর পুত্র রাধিকাপ্রসাদ গোস্বামী বাংলার সংগীত ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ নাম। প্রথমে বিষ্ণুপুরে, পরে কলকাতায় সংগীত শিক্ষা ও সিদ্ধিলাভ করে তিনি জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে সংগীত আচার্য হিসেবে নিযুক্ত হন। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে তাকে ঠাকুরবাড়িতে সংগীত প্রতিভা বিকাশের ক্ষেত্র তৈরি করে দেন। অল্পদিনের মধ্যেই কলকাতা সহ বাংলার সংগীত সমাজে তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর সান্নিধ্য পান। তিনি 'ভারত সংগীত সমাজ'-এর ও আচার্য পদে নিযুক্ত হন। ভারতব্যাপী  তাঁর প্রতিভা ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর অনুরাগীরা তাঁর গান শোনার জন্য আকুল হয়ে পড়তো। কাশিমবাজারের স্বনামধন্য মহারাজা  মনীন্দ্রচন্দ্র নন্দী তাঁর সংগীত সভায় তাঁকে আচার্য পদে নিয়োগ করেন। রাধিকাপ্রসাদের গান রবীন্দ্রনাথের ভালো লেগেছিল। রবীন্দ্রনাথ কিছু বছর রাধিকাপ্রসাদএর কাছে সংগীতে তালিম নেন।  সংগীত বিষয়ে তাঁদের মধ্যে নানা আলাপচারিতা হয়। ধ্রুপদ ছাড়াও খেয়াল ও টপ্পা গানেও তিনি ছিলেন অসাধারণ দক্ষ। রবিঠাকুরের দুটি টপ্পা অঙ্গের গান তিনি এইচ এম ভি থেকে রেকর্ড করেন। 'বিমল আনন্দে জাগো রে ও 'স্বপন যদি ভাঙিলে রজনী প্রভাতে' শিরোনামের গান দুটি  'রবিবাবুর গান' নামে অন্যতর মাত্রা পায়। বাংলাগানের ইতিহাসে এ এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তাঁর সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুভব - "সকলেই জানেন রাধিকা গোস্বামীর কেবল যে গানের সংগ্রহ বা রাগরাগিনীর রূপজ্ঞান ছিল তা নয়, তিনি গানের মধ্যে বিশেষ একটি রস সঞ্চার করতে পারতেন। সেটা ছিল ওস্তাদের চেয়ে কিছু বেশি। সেটা যদিও নাও থাকত তবু তাঁকে আমরা ওস্তাদ বলে গণ্য করতুম। এবং ওস্তাদের কাছ থেকে যেটা আদায় করার তা আমরা আদায় করতুম। আমরা আদায় করেও ছিলুম। সে সব কথা সকলের জানা নেই।" 

রামপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়  ভারতীয় ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য নাম। বাবা অনন্তলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে  কণ্ঠসংগীত, পাখোয়াজ ও তবলায় তালিম নিয়ে অল্প বয়সেই সংগীতগুণী হয়ে ওঠেন রামপ্রসন্ন। তারপরে তিনি কলকাতায় গিয়ে যতীন্দ্রমোহন ঠাকুরের সভাগায়ক গোপাল চক্রবর্তীর কাছে ধ্রুপদ ও  টপ্পা গানে তালিম নেন। নীলমাধব চক্রবর্তীর কাছে সেতার ও সুরবাহার শেখেন। তাঁর নাম ভারতের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। অল্প বয়সেই তিনি সংগীত গুরু হয়ে ওঠেন। আঠারো উনিশ বছর বয়সে তিনি আর এক সংগীত পীঠস্থান কুচিয়াকোল রাজবাড়িতে যান এবং সভাগায়ক নিযুক্ত হন। ধ্রুপদ শিক্ষার পাশাপাশি  রাজা যোগেন্দ্রনাথ তাঁর কাছে পাখোয়াজ, তাঁর ছেলে বসন্তকুমার সেতার  এবং ভ্রাতা রজনীনাথ সুরবাহার শেখেন। কয়েক বছর এই স্থানে অবস্থানের পর রামপ্রসন্ন আমন্ত্রন পান নাড়াজোল রাজবাড়িতে। রাজা নরেন্দ্রলাল খাঁ ছিলেন একজন সংগীতগুণী ও অনুরাগী। কুচিয়াকোল থেকে নদীপথে মহিষাদল রাজবাড়িতে সংগীত পরিবেশনের জন্য যাচ্ছিলেন রামপ্রসন্ন। পথেই দেখা হয় নাড়াজোল রাজার সাথে। নৌকোর মধ্যেই সুরবাহারের মূর্ছনায় অভিভূত হয়েই নাড়াজোলে নিয়ে আসেন। অনেক দিন ছিলেন। বহু শিষ্যকে গান শিখিয়েছেন। বহু গান নির্মাণ করেছেন তিনি এখানে থেকেই। বাংলা গানও অনেক রচনা করেন। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ 'সংগীতমঞ্জরী' গ্রন্থ। রাজা নরেন্দ্রলাল রায়ের আনুকূল্যে ও পৃষ্ঠপোষকতায়  এই সংগীত সংকলন ১৩১৪ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়। তাঁর আর একটি গ্রন্থ 'মৃদঙ্গদর্পণ' কুচিয়াকোলের রাজা যোগেন্দ্রনাথ সিংহদেব এর আনুকূল্যে মুদ্রিত হয়েছিল। বলাবাহুল্য, গ্রন্থদুটিই বাংলার সংগীত ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ।

গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় বিষ্ণুপুর ঘরানার শুধু নয়, ভারতীয় সংগীত জগতে অতি উল্লেখযোগ্য নাম। তিনি সমগ্র ভারতে 'সমাদৃত' এক সংগীতগুণী। রবীন্দ্রনাথ তাঁর সম্পর্কে বলছেন "বাংলাদেশে একমাত্র হিন্দুস্থানী গানের ওস্তাদ আছেন শ্রীযুক্ত গোপেশ্বর। আর যাঁরা আছেন তাঁরা কেউই তাঁর সমকক্ষ নন, এবং অনেকে তাঁর আত্মীয়। আমি তাঁকেও শান্তিনিকেতনে শিক্ষকতা কাজের জন্য পেতে ইচ্ছা করেছিলুম। কিন্তু কলকাতায় তাঁর এত কাজ যে তাঁকে কলকাতার বাইরে পাওয়া সম্ভব হয়নি। দিলীপকুমারও তাঁর চেয়ে কোনো যোগ্যতর ওস্তাদের কথা আমাকে জানাতে পারেননি। আজকের দিনে কলকাতায় যেখানেই সংগীতশিক্ষার প্রয়োজন হয়েছে, সেখানেই তাঁর ডাক পড়েছে।"  এই কথাতেই স্পষ্ট তিনি কতো বড়ো মাপের গুণী শিল্পী ছিলেন। সব রকম সংগীতে পারদর্শী ছিলেন । যন্ত্র সংগীতেও ছিলেন অসামান্য।  বহু গানের তিনি নির্মাতা। নতুন নতুন গান রচনা ও সুরারোপ করতে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। ধ্রুপদ, খেয়াল, টপ্পা, ঠুমরি, সব রকমের গান তিনি রচনা করেছেন। বাংলা গানের ইতিহাসেও তিনি অভিনবত্ব এনেছেন। বহু ছাত্র ছাত্রী গুণী জন তাঁর কাছে গানের তালিম নিয়ে ধন্য হয়েছেন। তিনি বহু গ্রন্থের রচয়িতা। তাঁর 'সংগীতচন্দ্রিকা',গীতমালা, তানমালা, সঙ্গীত লহরী,বহুভাষা গীত, গোপেশ্বর গীতিকা,গীতদর্পণ, ও ভারতীয় সঙ্গীতের ইতিহাস  প্রভৃতি গ্রন্থগুলি গানের আকরগ্রন্থ। কয়েকটি পত্রিকা সম্পাদনার সাথে যুক্ত ছিলেন। 'আনন্দ সংগীত পত্রিকা'  ও 'সঙ্গীত  বিজ্ঞান প্রবেশিকা' তাঁর মধ্যে অন্যতম। সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রবেশিকা  দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশিত একটি আকর পত্রিকা।সংগীতের এমন কোনো বিষয় নেই যে এই পত্রিকায় স্থান পায় নি।  'প্রবাসী', 'ভারতবর্ষ', 'ভারতী' সহ সমকালে  প্রকাশিত  বহু পত্রিকার নিয়মিত লেখকও ছিলেন তিনি। দু বছর তিনি বিশ্বভারতীতে অধ্যাপনা করেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে বিশ্বভারতী থেকে 'স্বর-সরস্বতী' উপাধিতে ভূষিত করেন। নাড়াজোল রাজা তাঁকে 'তানরাজ' ,কুচিয়াকোল রাজ 'সুররাজ' :নিখিল ভারত সঙ্গীত সম্মেলন' তাঁকে 'সঙ্গীত নায়ক' উপাধি প্রদান করেন। পরে বিশ্বভারতী থেকে ১৯৬১ তে তিনি 'দেশিকোত্তম' সম্মান পান। ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী, পদ্মবিভূষণ ও ভারতরত্ন দিয়ে সম্মানিত করে।
রবীন্দ্রনাথের  প্রতি গোপেশ্বরের সীমাহীন শ্রদ্ধা ছিল। তিনি কবিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন একটি বিখ্যাত গান। সিন্ধু রাগে ঝাঁপতালে নিবদ্ধ সেই  গান। 
"ধন্য বিশ্বকবি  তুমি হে রবীন্দ্র, গুণাধার,
তোমার অপূর্ব কীর্তি তুলনা নাহিক তার।
…………………"

গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যাযের আর এক ভাই সুরেন্দ্রনাথ ও আর এক সংগীতগুণী। তাঁরও নামও সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তিনি নানা ভাবেই যুক্ত ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ এর বহু গানের সুরারোপ তিনি করেছেন। বাংলা গানের ইতিহাসে তাঁর অবদান অপরিসীম। ধ্রুপদ ধামার টপ্পা খেয়াল সংগীতের সাথে সুরবাহার সেতার  এসরাজ প্রভৃতি যন্ত্র সংগীতে তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন। কলকাতায় ও শান্তিনিকেতনে তিনি অধ্যাপনা করেছেন সফলতার সাথে। রবীন্দ্রনাথ সুরেন্দ্রনাথকে 'স্বরলিপির যাদুকর' আখ্যা দিয়েছিলেন। তিনি 'সুরেশ্বরী' নামে একটি রাগিনী সৃষ্টি করেন। গান্ধীর অনশন কালে তিনি 'গান্ধী' নামে একটি রাগ সৃষ্টি করেছিলেন। তাঁর রচিত গ্রন্থ  'গীত পরিচয়', 'এস্রাজ মুকুল'এবং 'সেতার শিক্ষা'। জীবনের শেষ লগ্নে তিনি পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন।
সংগীতকেশরী অনন্তলাল বন্দ্যোপাধ্যাযের চার গুণী পুত্র রামপ্রসন্ন , গোপেশ্বর, সুরেন্দ্রনাথ ও রামকৃষ্ণ

বিষ্ণুপুরের আরো যাঁরা ঘরানার সাথে সাথে বাংলার সঙ্গীতকে সমৃদ্ধ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে রমেশচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়, জ্ঞানেন্দ্রপ্রসাদ গোস্বামী, সত্যকিঙ্কর বন্দোপাধ্যায়, রামকৃষ্ণ বন্দোপাধ্যায়, বিপিনচন্দ্র চক্রবর্তী, গদাধর দাশগুপ্ত, কার্তিকচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়, রামপদ বন্দোপাধ্যায় প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। যন্ত্রসঙ্গীতে জগতচাঁদ গোস্বামী, কীর্তিচাঁদ গোস্বামী, মধুসূদন ভট্টচার্য, গোকুলচন্দ্র নাগ, নিত্যানন্দ গোস্বামী প্রমুখের নাম উল্লেখ করা যায়। আজও সেই ধারা বহমান। হাজার হাজার সংগীত গুণী কয়েকশতক ধরে তাঁদের সৃষ্টি ও প্রতিভাকে বাঙালির সংগীত অঙ্গনে রেখে গেছেন এবং যাচ্ছেন। তাঁদের কথা অন্য কোনোদিন বলার ইচ্ছে থাকলো। বাংলা গান ও বাঙালির গান তাঁদের প্রভাব বহন করে চলেছে।  
(চলবে..)

Post a Comment

1 Comments

  1. সংগীত আমার অনেকেই করি , অনেকেই করেছেন আবার অনেকেই করবেন , কিন্তু এই যে ইতিহাস কে সামনে থেকে দেখে তার উৎপত্তিস্থল কে চিনে ভালোবেসে সংগীত ভালোবাসা হয়তো বা সবার ই হয়না । অনেকেরি হয়তো ইতিহাস জানার কৌতূহল থাকে ।
    যাইহোক এই যে আমরা এই ধারাবাহিকে সংগীতের পরম্পরা বিবর্তনের রূপ দেখছি আমার মতো অনেকে ই উপকৃত হচ্ছে বলে মনে করি । সঙে থাকছি আপনি বলে চলুন । খুব সুন্দর উপস্থাপনা ।

    ReplyDelete