জ্বলদর্চি

অন্য ধারার শর্ট ফিল্ম- পর্ব: ৬ / নিসর্গ নির্যাস মাহাতো

অন্য ধারার শর্ট ফিল্ম- পর্ব: ৬

নিজেদের জন্যই বাঁচিয়ে রাখতে হবে ডকুমেন্টারি ফিল্ম

ডকুমেন্টরি। এই একটা মাত্র ফিল্ম তুলে ধরে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য। অথচ জেলায় তেমনভাবে ডকুমেন্টারি ফিল্ম চোখে পড়ে না। এ বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন আরও বেশি উদ্যোগী হলে ভালো হয়। একথা বলার কারণ, বিভিন্ন সরকারি প্রৌজেক্ট-উন্নয়ন তথ্যচিত্রের মাধ্যমে সহজেই তুলে ধরা যায়।

অন্যান্য ফিল্ম- এর তুলনায় ডকু ফিল্ম এর খরচ অনেকটাই কম। প্রোডিউসারের অভাবও তেমন হবে না। 

জেলাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে একাধিক জানা-অজানা ঐতিহাসিক বিষয়। ভৌগলিক দিক থেকেও সমৃদ্ধ এই জেলা। আর্থ-সামাজিক সমস্ত বিষয়ই তুলে ধরা যায় তথ্যচিত্রের মাধ্যমে। 
ডকুমেন্টরি ফিল্ম নিয়ে কাজ করেছে সুপ্রিয় মাইতি, অচিন্ত্য নন্দী, মৃণাল মাহাতো, সৌমেন্দু দে। কবি অভিনন্দন মুখোপাধ্যায় ও আলোকচিত্রগ্রাহক দেবরাজ দাসের সঙ্গে আমি কিছু কাজ করেছিলাম। 

যেহেতু এই ধরনের ফিল্ম শুধুই তথ্যবহুল তাই দর্শক গুটিকয়েক। অবশ্য বিভিন্ন ধরনের ফিল্মের বিশেষ বিশেষ দর্শক থাকে। সকলেরই সব ঘরানা প্রিয় নয়।

পরিচালককে ভাবতে হবে তাঁর কাজ কী করে দর্শক মহলে আরও বেশি করে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। তাই আকর্ষণ বৃদ্ধি করতে জোর দিতে হবে ইউনিক সিনেমাটোগ্রাফিতে। লক্ষ্য রাখতে হবে ভয়েসওভার যেন সহজেই মন কাড়ে। ক্লিয়ার সাউন্ড-এর দিকে বিশেষ মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রে এডিটিং- এ বেশি কারুকাজ না থাকাই ভালো। তবে দক্ষতা অবশ্যই কাম্য। স্বচ্ছ-সরল কাজও কিন্তু দক্ষতার। তবে নির্দিষ্ট কালার টোন ব্যবহার করা যেতে পারে। 

ভালো দিক যেমন তুলে ধরা যায় তেমনই এই ধরনের ফিল্মে সমস্যা, দাবি তুলে ধরা উচিত। একটি তথ্যচিত্র অবশ্যই সময়ের কথা বলে। লক্ষ্য রাখতে হবে সেই প্রামাণ্য বিষয়ে যেন না কোনও খুঁত থাকে। ডকুমেন্টরি আসলে সমাজের আয়না। 

বানাব বললেই বানানো যায় না। কোনও তথ্যচিত্র শুরু করার আগে তা নিয়ে যথেষ্ট স্টাডি করতে হয়। কারণ, ভুল তথ্য দেওয়ার অধিকার আমাদের কারোরই নেই। সামান্যতম ভুলে দর্শকদের কাছে যেতে পারে ভুল বার্তা। যা অবশ্যই গর্হিত কাজ। এক্ষেত্রে নিজের মনের মতো করে বানিয়ে নেওয়ার-কল্পনার কোনও প্রশ্নই আসে না। তুলে ধরতে হবে সত্যি টুকুই।

দর্শকদেরও আরও বেশি করে আগ্রহ প্রকাশ করতে হবে তথ্যচিত্রে। কারণ কমার্শিয়াল ফিল্মের মতো এর দর্শক সংখ্যা বিপুল সংখ্যক নয়। অথচ হুবহু কিছু জানতে ডকুমেন্টারির ভূমিকা অপরিসীম। তাই নিজেদের স্বার্থেই বাঁচিয়ে রাখতে হবে ফিল্মের এই ধারাকে। প্রোডাকশন হাউসের উৎসাহকে বাড়াতে বা কমাতে পারে দর্শকরাই।

(ভ্রম সংশোধন: পঞ্চম পর্বে অচিন্ত্য মারিক- এর বদলে নাম হবে অচিন্ত্য নন্দী)

সংযোজন- পার্থসারথি শ্যাম। পরিচালক, অভিনেতা, কবি, সম্পাদক, প্রচ্ছদ শিল্পী সব ছাড়িয়ে নিখাদ ভালো মানুষ। মূলত কবিতা আর চলচ্চিত্র নির্ভর লিটল ম্যাগাজিন 'চিত্রকাব্য'। নিজেই আঁকতেন প্রচ্ছদ। তাঁর প্রোডাকশন হাউস 'নতুন মুখ'। খুঁজে আনতেন নতুন প্রতিভা। আপনি রয়ে গেলেন হৃদয়ের অন্দরমহলে। পত্রিকার সব সংখ্যা, শর্ট ফিল্ম আর প্রোডাকশন হাউস নিয়েই। 

জ্বলদর্চি পেজ- এ লাইক দিন👇


আরও পড়ুন

Post a Comment

0 Comments