জ্বলদর্চি

অন্যধারার শর্টফিল্ম -৭/ নিসর্গ নির্যাস মাহাতো


অন্যধারার শর্টফিল্ম

পর্ব-৭

নিসর্গ নির্যাস মাহাতো 

নিজস্ব মহল: লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন

শর্টফিল্ম মানে সমস্ত শিল্পের মিশ্রণ। আর তা নির্মাণ হয় মিলেমিশে। আগের পর্বে যাদের কথা বলেছি তাদের নাম বাদ দিয়েই আজ বলছি আরও কয়েকজনের কথা।

এদের রয়েছে নিজস্ব মহল। কৌশিক চক্রবর্তী, সায়ন্তন দাস, কৌস্তভ বর্ধন, সৌমেন পন্ডিত, রূপক সেনগুপ্ত, সুমনদীপ পাণ্ডে কাজ করেন অন্যরকমভাবে। নতুন করে ভাবতে শেখাচ্ছেন এঁরা। বয়সের কোনো বেড়াজাল নেই। তবে শিল্পী নির্বাচনে রয়েছে নিজস্ব মহল। 

এই মহল ব্যাপারটা বেশ অন্য রকম। সকলেই রয়েছে। সকলের পরিবার এক। বিভিন্ন গোষ্ঠী হয়ে উঠেছে এক একটা পরিবার। প্রত্যেক জনের সঙ্গে প্রত্যেক জনের বন্ডিং হিংসে করার মতো। কাজের মধ্যে মেতে থাকেন সর্বদা।

একেকজনের গোষ্ঠী থেকে তৈরি হচ্ছে স্টোরি লাইন, স্ক্রিপ্ট। তারপর রেইকি, লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন। দর্শকদের মন কাড়লেই নিজেরাই মেতে উঠছেন সাকসেস পার্টিতে। তৈরি হচ্ছে নতুন কিছু করার পরিকল্পনা।

বড়দের দেখে ছোটরা শিখছে। ছোটদের দেখে বড়রা। আলাদা আলাদা মহল থাকলেও অনুপ্রাণিত হচ্ছে একে অপরের থেকে। 

সকলেরই চোখে স্বপ্ন। নতুন কিছু উপহার দেওয়ার। এটাই প্রাণ। এই মহামারিতেও তাঁরা মেতে রয়েছেন 'সৃষ্টি সুখের উল্লাসে'।

ফিল্ম মেকিং মানে আগে কাকে ভালবাসতে হবে। তারপর চেষ্টা। একটা কাজ থেকে আরেকটা কাজে এগোলেই সার্থক হয় শিক্ষা। 

শর্ট ফিল্ম তৈরি করতে গেলে, চোখ বন্ধ করে চালিয়ে যেতে হবে শেখার চেষ্টা। কাউকে হেয় করা নয়। অপরের ভুল হলে শিখিয়ে দিতে হবে। করিয়ে দিতে হবে। সমালোচনা গ্রহণ করার জন্য উদার হতে হবে। নিমগ্ন থাকতে হবে আত্মসমালোচনায়।

শর্টফিল্ম করব তাই কলকাতা, তা শুনলে হাসি পায়। শিল্প লুকিয়ে আছে সর্বত্র। শিল্প ও শিল্পীর মানচিত্র হয় না। নিজের এলাকা থেকেই কাজ শুরু করা যাক। এখানে কলকাতাকে বয়কট এর কথা বলছি না। নিঃসন্দেহে কলকাতা-মুম্বই বেটার অপরচুনিটি। কিন্তু বাইরে গেলেই বিখ্যাত হয়ে যাব কথাটা ভুল। রত্নগর্ভা মাতৃভূমিকে গৌরবান্বিত করার দায় আপনার।

শর্ট ফিল্ম করবো অথচ জিনিস নেই ভাবাটা ভুল। বা আমার এত জিনিস আছে, ওর নেই তা মনে করে ব্যঙ্গের হাসি হাসাটাও নিছক মুর্খামি। চেষ্টা থেকেই শিল্প হয়। আসলে সবার আগে যেটা চাই কনসেপ্ট। অন্যরকম ভাবার ক্ষমতা। তারপর গ্রামার। তারপরে আসতে আসতে এগোনো উচিত উন্নত মানের জিনিসের দিকে।
কারোর হয়তো কিছু নেই, কিন্তু সেটা নিয়ে আপনি বিদ্রুপ করছেন। এতে আপনার দাম্ভিকতায় ফুটে ওঠে। আপনার চেয়ে শত দিক থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস কম থাকা কিন্তু পকেট ভরা স্বপ্ন আর চেষ্টা নেই সে ছাপিয়ে যেতে পারে আপনাকে।

শিল্পী হতে গেলে হতে হয় বিরাট হৃদয়ের অধিকারী। জানতে হয় বট গাছের মত ছায়া দিতে। শর্ট ফিল্ম-এর সঙ্গে যুক্ত সকলেই শিল্পী। তাই হৃদয় নিয়ে ছায়া দিতে শিখুন। যাঁরা শিল্পতে মাতেন, তাঁরা স্বপ্ন নিয়ে আসে। তা মাড়ানোর অধিকার আপনার নেই। তাহলে আপনি নিছক খুনী, শিল্পী বা শিল্পপ্রেমী নন।

বারবার বলে এসেছি শর্ট ফিল্ম একটা আন্দোলন। লিটল ম্যাগাজিন এর মতোই। শর্ট ফিল্ম বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কমার্শিয়াল নয়। তাই নিছক ইন্ডাস্ট্রির চোখে দেখা বন্ধ করাই উচিত।

জ্বলদর্চি পেজ- এ লাইক দিন👇


আরও পড়ুন 

Post a Comment

0 Comments