জ্বলদর্চি

ছোটোবেলা নবম সংখ্যা

ছোটোবেলা || নবম সংখ্যা 

প্রকাশিত হল নবম সংখ্যা। স্বনামধন্য ফোটোগ্রাফার রাকেশ সিংহ দেবের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে হস্তশিল্পীর জাদুমহিমা। এ সংখ্যায় আমাদের আমন্ত্রণে গল্প লিখেছেন বিশিষ্ট গল্পকার মৌসুমী ঘোষ। রাকেশ সিংহ দেব ও মৌসুমী ঘোষকে ধন্যবাদ জানাই। মেল মাধ্যমে লেখা ও ছবি পাঠানোর আবেদন জানাই। মেল - jaladarchi@yahoo.in

সিঙ্গারা ও নিমকির গল্প  

শ্রীপর্ণা ঘোষ 
(জওহর নবোদয় বিদ্যালয়, মেদিনীপুর, শ্রেণি - ষষ্ঠ) 

দুই ভাই ছিল। তাদের নাম ছিল -  সিঙ্গারা ও নিমকি। দু'জনে খুব দুষ্টু ছিল। কিন্তু তাদের দুষ্টুমির ধরনটা আলাদা ছিল। সিঙ্গারা খালি নিরীহ পশুদের মানে না-মানুষদের সাথে দুষ্টুমি করত। যেমন, দু'টো বেড়ালের লেজ বেঁধে দিত। কুকুরের বাচ্চা গাছে তুলে দিত। বেড়াল কুকুরের কানে ঘাস দিয়ে সুড়সুড়ি দিত। বেড়ালের গায়ে রঙ ঢেলে দিত। এরকম নানা দুষ্টুমি করত। আর নিমকি বাড়ির সবার ইমপর্টেন্ট জিনিস নষ্ট করে দিত। যেমন, ওদের মা যেই টেবিলে একটা জরুরী কাগজ রেখেছে সে তখনি সেটা কুচি কুচি করে ডাস্টবিনে ফেলে দিত। বাবা টিভি দেখতে ভালোবাসে বলে সে টিভির পেছনে জল ঢেলে দিত। মায়ের মোবাইলের ভেতরের সব কিছু খুলে নষ্ট করে দিত। এরকম অনেক দুষ্টুমি করত।

দুষ্টুমি করা ছাড়াও তাদের একটা খুব বাজে স্বভাব ছিল, তারা খালি দু'জন দু' জনের নামে তাদের বাবা-মাকে লাগাত। এই দুষ্টুমিগুলো বাড়তে বাড়তে একদিন সিঙ্গারা মাংস খাবার পর একটা মাংসের হাড় নিয়ে তাদের পাশের বাড়ির কুকুরটার কাছে গেল। সে ঐ কুকুরটাকে বলল, "আ আ তু তু, এই হাড়টাকে খাবি আয়।" 

সেই কুকুরের তো হাড় দেখে মুখ থেকে লালা পড়ছে। কুকুরটা হাড়টা নিতে যায়, সিঙ্গারা হাত ওপরে তুলে নেয়। আবার নিতে যায়, আবার তুলে নেয়। এই রকম অনেকবার চেষ্টা করার পর,  কুকুরটা হাড়টা কামড়াতে গিয়ে সিঙ্গারার হাতটা কামড়ে দেয়। সেটা নিমকি দেখতে পেল। আর সঙ্গে সঙ্গে মা-বাবাকে বলে দিল। মা-বাবা সিঙ্গারাকে নিয়ে ডাক্তারখানায় গিয়ে ইনজেকশান লাগিয়ে দিল। আবার একদিন নিমকির খুব জ্বর এল। ডাক্তারবাবু তাকে দেখে প্রেসক্রিপশন লিখে রেখে গেলেন। আর তখনি নিমকি সেটা ছিঁড়ে বাড়ির বাইরে নালিতে ফেলে দিল। সেটা আবার সিঙ্গারা দেখে ফেলল। সে সেই কথা বাবা-মাকে বলে দিল। বাবা-মা তখন আবার নতুন প্রেসক্রিপশন লিখিয়ে আনল ডাক্তারের কাছ থেকে।

এরপর তাদের বাবা মা ঠিক করল কিছু করতে হবে। একদিন তাদের বাবা-মা তাদের মনের ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল। মনের ডাক্তার তাদের সব জিজ্ঞেস করলেন। দুই ভাই দুজনের নামে লাগাতে লাগাতে ঝগড়া শুরু করে দিল। ডাক্তার তখন সব বুঝতে পেরে বললেন, "এবার থেকে তোমাদের দুজনের কেউ খারাপ কাজ করলে তোমরা অন্য কাউকে তা লাগাবে না। যে সেই কাজ করছে তাকেই বোঝাবে, এটা ঠিক নয়, এই বলে।" 
সিঙ্গারা ও নিমকি বলল, "হ্যাঁ, আমরা মনে রাখব।" তারপর থেকে একে অপরের ভুল ধরানোটাতেই ওরা মজা পেয়ে গেল। এই রকম করতে করতে তারা কবে যেন খুব ভালো ভাই তো বটেই, খুব ভালো বন্ধুও হয়ে গেল। 
বুদ্ধিমান শেয়াল

অর্ণা দাশ (শ্রেণি - সপ্তম) পাঠভবন স্কুল, কলকাতা

এক জঙ্গলে এক সিংহ বাস করতো। জঙ্গলের সব পশুরা তাকে সম্মান জানালে সে এমন ভাব করত যে, সে শুধু জঙ্গলের নয় পুরো পৃথিবীর রাজা। অথচ তার এখন বয়স হয়েছে সে শিকার ধরতে পারে না। রোজ এইরকম চলতে থাকে, যে দিন শিকার ধরতে পারে আনন্দে ভোজ সারে না পারলে উপোস থাকতে হয়। একদিন তার মাথায় এক বুদ্ধি এল। সে জঙ্গলের সব পশুদের  ডেকে এক সভার আয়োজন করল। সে নরম গলায় বলল "বন্ধুরা আমরা সবাই জানি হরিণরা জঙ্গলের শ্রী। তাদের চঞ্চলতা আমাদের মাতিয়ে রেখেছে। তাদের জন্য এই জঙ্গলে এতো আনন্দ। তাই আমি ঠিক করেছি যে প্রতিদিন একটি করে হরিণকে পুরস্কৃত করবো।" বুদ্ধিমান শেয়ালও সেখানে উপস্থিত ছিল। সিংহের প্রস্তাবে তার সন্দেহ হল। কিন্তু সে নীরব রইল। সভা শেষ হতেই জঙ্গলের বোকা পশুরা আনন্দে  যে যার ঘরে ফিরে গেল। পরের দিন সিংহের কাছে এক হরিণ এলো পুরস্কারের লোভে। সিংহ তাকে মেরে তার মনোহর ভোজ শুরু করল। রোজ এক এক করে হরিণ আসে এবং সিংহ তাদের আহার করে। এই ভাবে জঙ্গলে হরিণের সংখ্যা কমতে থাকে। 

সবাই এবার সিংহকে সন্দেহ করে। তখন শেয়াল  ঠিক সময় বুঝে এক গোপন সভার আয়োজন করল। সভায় প্রচুর তর্ক বিতর্কের পর সবাই মেনে নেয় যে সিংহ তাদের দিনের পর দিন বোকা বানিয়ে জঙ্গলের ক্ষতি করেই চলেছে এবং তারা সবাই মিলে সিংহকে শাস্তি দিতে চাইল। শাস্তি দেওয়ার দায়িত্ব শেয়ালই নিল ।
পরের দিন শেয়াল সিংহের গুহায় হাজির হল। শেয়াল সিংহকে বলল ,
"মহারাজ আমি জানি আপনি হরিণদেরকে পুরস্কৃত করার বদলে তাদেরকে  ভোজন করেন। আমি একথা কাউকে বলবো না কারণ আপনি আমাদের রাজা।"
একথা শুনে সিংহ খুব খুশি হল এবং শেয়ালকে তার গুহায় আশ্রয় দিল। 

পরের দিন শেয়াল বলল " মহারাজ আপনি যে প্রতিদিন একটি করে হরিণকে ভোজন করেন তা জঙ্গলের কেউই জানে না। কিন্তু তারা আপনাকে সন্দেহ করছে। মহারাজ এরচেয়ে ভালো আপনি আমাদের পাশের জঙ্গলের রাজা, সিংহের গুহায় নেমন্তন্ন খেতে যান। কোনও হরিণ এলে আমি বলে দেব আপনি পাশের জঙ্গলে শিকার করতে গেছেন এতে জঙ্গলের বোকা পশুরা ভাববে যে আপনি নিজের শিকার নিজেই করেন হরিণদেরকে বোকা বানান না।"
সেইকথা শুনে সিংহ হাসিমুখে পাশের জঙ্গলে সিংহ রাজার গুহায় নেমন্তন্ন খেতে গেল। কিন্তু তাকে কেউ নেমন্তন্ন করেনি। এদিকে পাশের জঙ্গলের রাজা, সিংহের গুহায় সভা বসেছিল। সিংহ যেই গুহায় এসে পৌঁছল, তখন তারা ভাবলো যে সে তাদের রাজাকে আক্রমণ করতে এসেছে। সবাই মিলে সিংহের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। তখনই সিংহ মারা গেল।

অপর দিকে সেই জঙ্গলের সব পশুরা শেয়ালের ওপর খুশি হয়ে তাকে তাদের রাজা বানাল।

নীতি কথা - 
                         অন্যের অপকার করলে 
                         নিজেরও অপকার হয় ।
                       
                      
                   
মানুষের চোখে ঈশ্বর কে কেমন 

নীহারিকা রানা
(অলিগঞ্জ ঋষি রাজনারায়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সপ্তম শ্রেণি) 


চরিত্র - শ্যামরতন, নিলু
[পাড়ার মোড়ে আড্ডা দিতে দিতে শ্যামরতন বাবু নিলু বাবুকে বলেই ফেললেন]

শ্যামরতন : কি হে নিলু ভালো আছো তো ?
নিলু : ঈশ্বর যেমন চান, তবে আছি ভালো। 

শ্যামরতন : হুম....  এখন পাড়ায় একটা ফেরিওয়ালাকে আসতে দেখি না ?
নিলু : আকাল পড়েছে সেদিন আর ফিরে আসবে না। তা রতন বাবু আছেন কেমন? শরীর,মন সব ভালো তো ?
শ্যামরতন : শরীর.... তা আছে ভালো, মন তার তো খোঁজ নেই ভাই।
এবার বল ? তোমার শরীর স্বাস্থ্য।
নিলু : শোনবার কিছুই নেই ওই চলে যাচ্ছে একরকম, সবই ঈশ্ব....
শ্যামরতন : কিছু বললে ! 
নিলু : হ্যাঁ বললাম বইকি সবই ঈশ্বরের ইচ্ছে। 

শ্যামরতন : বলি ঈশ্বরে বিশ্বাস করা হয় ?
নিলু : হ্যাঁ ওই ... কেন বলুনতো ! 
শ্যামরতন :  না, আগে দেখতাম ঈশ্বরের ভক্তি কি জিনিস! বাড়ির মেয়ে বউদের দেখতাম সেই যে সকাল থেকে উপোস করতে এক্কেবারে নির্জলা উপোস, তারপর সেই রাতে পুজো শেষ করে উপোস ভাঙতো। মানে বুঝতেই পারছ। 

নিলু : না না না রতন বাবু ঠিক এইখানেই আপনাদের মত মানুষদের ভুল
শ্যামরতন : না, মানে, ঠিক কি বলতে চাইছো বলত ? 
নিলু : রতন বাবু আমি একজন  সামান্য মানুষ মাত্র, আপনার জ্ঞানের কাছে আমার কথা গুলো খুবই সামান্য।
শ্যামরতন : না না তেমনটা বলবেন না, আপনার ওই ছন্দ মিলিয়ে কথা বলাটা আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। l am impressed 

নিলু : বয়স তো হল এখন আর ইমপ্রেস টিমপ্রেস... যাগ্গে আমি ওই ছন্দের বাইরে এসেই একটা কথা বলি আপনাকে দয়া করে সেগুলোর লেকচার হিসেবে গ্রহণ করবেন না।
রতন বাব, ঈশ্বর হলো গিয়ে মানুষের মনের বিশ্বাস তা আপনাকে আমি আগেই বলেছি।
মানুষ যাকে মন থেকে বিশ্বাস করে তার নামই ঈশ্বর। এই যে উপোস, ব্রত এই গুলো সবই মানুষের তৈরি করা কিছু কুসংস্কার ছাড়া আমি আর  কিছুই  বলতে পারিনা। 
রতন বাবু ভেবে দেখুন ঈশ্বর কি বলেছেন নিয়ম বিধি মেনে তাকে স্মরণ করতে হবে 
আপনার মনের দ্বন্দ্ব,বা যখন আপনি কোনো বিপদে পড়েন,
আপনি যদি কোনো ভালো কাজ করেন, কারো ভালো করতে চান,
আর কেউ সাড়া দিক আর না দিক ঈশ্বর কিন্তু সাড়া দেয়। 

আর ওই যে, যে সাড়া দেয় তার নামই ঈশ্বর।
তাই মনের বিশ্বাসটা টিকিয়ে রাখুন আর মনের কথা শুনে চলুন।
আর দেখুন সবই ঈশ্বরের ইচ্ছে।

---------------------
আমন্ত্রিত লেখক 

সিংহ মামা

মৌসুমী ঘোষ

আমি তখন সবে মাধ্যমিক পাশ করে সায়েন্স নিয়ে ইলেভেনে ভর্তি হয়েছি। মামারবাড়ি থেকে ল্যান্ডলাইনে ফোনে ছোটোমামা জানালো, পরেরদিন বড়োমামা আসবে আমাদের বাড়ি দাঁতের ডাক্তার দেখাতে। আমি তো খবরটা মায়ের মুখে শোনা অবধি ভয়ে কোন বন্ধুর বাড়ি শেল্টার নেব ভাবতে বসলাম।
যদিও মামার বাড়ির গ্রাম থেকে চিকিৎসার জন্য আমাদের শহরের বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের আনাগোনা নতুন কিছু নয়, তাবলে সিংহমামা! হ্যাঁ, বড়োমামাকে আড়ালে সিংহমামা বলতাম।
ভোর হয়ে গেল মা আমাকেই বাসস্ট্যান্ডে পাঠালো বড়োমামাকে আনতে কারণ আমি সারারাত ভেবেও কোনো বন্ধুর নাম মনে করতে পারলাম না যেখানে লুকিয়ে থাকা যায়। 
বড়োমামা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাড়ি আসার পথটুকুতেই আমার পড়াশোনার যাবতীয় শোচনীয় খবরাখবর নিয়ে নিলেন প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে। আমিও আমতা আমতা করে নিজের অসহায়তা স্বীকার করলাম। তিনিও বারে বারে গর্জন করে উঠলেন। আর করবেন নাই বা কেন, তিনি অঙ্কে গোল্ড মেডেলিস্ট। স্বয়ং কে.সি.নাগের ছাত্র। অঙ্কের বাড়ির ছেলে। হ্যাঁ। আমার মামারবাড়ির দাদু আর সব মামারাই অঙ্কের অধ্যাপক অথবা শিক্ষক ছিলেন। আশেপাশের বেশ কয়েকটা গ্রামে তাই আমার মামার বাড়ি অঙ্কের বাড়ি নামে খ্যাত ছিল।
বাড়ি এসেও আমার নিষ্কৃতি হল না। সেদিনই বিকেলে আমাকেই সিংহমামাকে নিয়ে দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাবার নির্দেশ দিলেন বাবা। ডাক্তারবাবু রুগীকে চেয়ারে বসিয়ে হাঁ করিয়ে থ্যাবড়া মতো স্টিলের যন্ত্রটা দিয়ে জিভ চেপে ধরে আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, "আর মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই। বয়সও তো যথেষ্ট হয়েছে। এখন যেহেতু যন্ত্রণা নেই তাই আজই তুলে দেওয়া ভালো।"
বড়োমামা উসখুস করে প্রতিবাদ জানালেন মনে হল। তবে ডাক্তারের গুঁতোয় গোঁ গোঁ ছাড়া আর বিশেষ কিছুই বলতে পারলেন না। আমি মনে মনে দারুণ হাসতে হাসতে দাঁত তোলার জন্য ঘাড় নেড়ে অনুমতি দিলাম। কম্পাউন্ডার রেডিই ছিল। ইনজেকশান এগিয়ে দিল ডাক্তারের হাতে। ডাক্তারবাবু দাঁতটার দুপাশে দুবার ইকজেকশানের সুঁচ বিঁধিয়ে দিয়ে পাশের ঘরে আধ ঘন্টা অপেক্ষা করতে বললেন।
পাশের ঘরে বসে মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিল,  মামার চোখ যেন দাঁতের শোকে ছল ছল করছিল। আমার মনে পড়ল, ছোটোবেলায় প্রতিবার মামারবাড়ি গেলেই মুখে মুখে নামতা জিজ্ঞেস করতেন বড়োমামা। না পারলেই এমন ধমকাতেন একবার তো আমি প্যান্টে হিসিই করে ফেলেছিলাম। বড়ো হবার পর বীজগণিতের ফর্মূলা জিজ্ঞেস করতেন। আমি তো না পারলে আগে ভাগেই কেঁদে ফেলতাম। মামার মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হল, সিংহরাও কাঁদে? মামাই হঠাৎ কাঁদো কাঁদো হয়ে বললেন, "দাঁততো নিজের শরীরেরই একটা অঙ্গ। সেটা উচ্ছেদ করতে হবে ভাবিনি।"
এবার ভিতর থেকে ডাক এল। আধ ঘন্টা ধরে ডাক্তার আর কম্পাউন্ডার চিমটে আর চ্যাপ্টা মুখের স্টিলের যন্ত্রটা নিয়ে মামার দাঁতের সাথে যুদ্ধ করে তবে সমূলে উৎপাটিত করতে পারলেন। ভীষণ টানাটানি যুদ্ধের পর মামা যখন মুখ ভর্তি রক্ত নিয়ে এলিয়ে পড়েছেন,  ডাক্তার চিমটেতে ভিলেন দাঁতটাকে নিজের চোখের সামনে ধরে চেঁচিয়ে উঠলেন, "এ কি এ আবার হয় নাকি!" 
আমি বললাম, "কি হয় নাকি!"
দাঁতটা ট্রের ভিতর রেখে মামার চেড়া মারিতে স্টিচ করতে করতে ডাক্তার বললেন, " ছোকড়া তুমি কি পড়ো?"
"ইলেভেন সায়েন্স।"
"তবে তো তুমি জানবে। সচরাচর মানুষের দাঁতের রুট ক্যানেল দুটি পাওয়া যায় আর বাঘ-সিংহদের চারটি দেখা গেলেও যেতে পারে। তোমার মামার এই দাঁতটায় চারটি রুট ক্যানেল।" 
কথাটা শুনে কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে গেছিলাম। তারপর যা এর আগে সবসময়ই মামার আড়ালে বলে এসেছি হঠাৎ সেটাই আমার ভিতর থেকে কে যেন চেঁচিয়ে বলে উঠল, "সিংহ মামা।"
অমনি বড়োমামা মুখ হাঁ করে রক্ত চক্ষু নিয়ে আমার দিকে ফিরে সিংহের মতো গর্জন করে উঠল। ডাক্তার আর কম্পাউন্ডারও হো হো করে হেসে উঠল।

জ্বলদর্চি পেজ- এ লাইক দিন👇



আরও পড়ুন 
                  

Post a Comment

0 Comments