জ্বলদর্চি

অন্যধারার শর্টফিল্ম -১১/ নিসর্গ নির্যাস মাহাতো

অন্য ধারার শর্ট ফিল্ম
পর্ব- ১১

কলমে- নিসর্গ নির্যাস মাহাতো

বিষয়: কনসেপ্ট

শর্ট ফিল্ম অল্প সময়ে বলে দেয় অনেক কথা। তাই কনসেপ্ট স্বাভাবিকভাবেই হতে হবে অন্য ধারার। তবেই দর্শকের নজর কাড়বে সৃষ্টি। খুব স্বাভাবিক ঘটনাকেও অন্যভাবে রিপ্রেজেন্ট করা যায়। সেই করতে পারাটাই শিল্প। আসলে শিল্প মানে, কী ভাবে রিপ্রেজেন্ট করা হচ্ছে তাই।

কনসেপ্ট দু'ধরনের হতে পারে প্রথমত, বাস্তব নির্ভর। দ্বিতীয়ত, কাল্পনিক বিষয়। যেহেতু শিল্প, তাই বাস্তব নির্ভর শর্ট ফিল্ম নির্মাণেও কল্পনা থাকে, তৈরি হয় নাট্যরূপ। এক্ষেত্রে মূলত স্ক্রিপ্ট রাইটার ও ডিরেক্টরের কল্পনায় বেড়ে ওঠে সৃষ্টি। তাই ফুটে ওঠে পর্দায়।

শর্ট ফিল্ম মানেই কম্প্যাক্ট, তাই সব সময় অপ্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু এড়িয়ে যেতে হবে। সব সময় মাথায় অবশ্য রাখতে হবে গ্রামার।

যেখানে কোনও বার্তা থাকে না, তা কখনোই শিল্পের তকমা পায় না। তাই খেয়াল রাখতে হবে ওই বিশেষ 'মেসেজ'- এর দিকে।

যেহেতু প্রসঙ্গ কনসেপ্ট, তাই এখানে বিশেষ করে বলার বিষয় হিউমার। বিভিন্ন ধরণের শর্ট ফিল্ম তো বটেই, অ্যাড ফিল্ম থেকেও হারিয়ে যাচ্ছে ওই যথাযথ পাঞ্চ। স্বল্পদৈর্ঘ্যর চলচ্চিত্রে 'হিউমার' টাই অন্যধারা। আজকাল এর বড্ড অভাব। 

শর্ট ফিল্ম অনেক হয়। তবে 'শিশুদের জন্য' বিষয় কমে আসছে প্রতি মুহূর্তে। আর কমতে শুরু করেছে 'হাসি'। হাসা মানে দর্শক- শ্রোতাকে  জোর করে হাসানো নয়। হাসি মানেই অশ্লীলতা নয়। আসলে, হাসির ব্যাপারটা এতটা চিপ নয়। এই অমূল্য হাসি বের হয়ে আসে শর্ট ফিল্ম প্রেমীদের ভেতর থেকে। তা বার করে আনতে জানতে হয়।

কী বিষয়ে শর্ট ফিল্ম তৈরি হবে তা ভেবে চরিত্র, পোষাক, স্থান, আনুষঙ্গিক জিনিস ঠিক  করতে হয়। 

যেমন, আমি রাজ পরিবারের দৃশ্য শুধু রাজা-রানি-রাজকন্যা-রাজপুত্র-রাজমাতাকে সঠিক পোষাক পরালাম কিন্তু সামঞ্জস্য না রেখে রাজবাড়ির বা সেটের বদলে ব্যবহার করলাম কোনও আধুনিক বাড়ি, সেই ব্যর্থতা আমার। আবার, প্রতিটি নারীর মধ্যে আজও কোথাও 'রাধা' বা 'মৃণালিনী' আছে বোঝাতে তাকে রাধা বা মৃণালিনীর মতো সাজাতেই হবে বা স্থান বাগান-নুপুর-হাঁড়ি-জোড়াসাঁকো থাকতেই হবে, এ ধারণাও নিছক বোকামি।
আবার বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে কাজে যেন সম্পূর্ণ নিজস্বতা থাকে। তা যেন কপি না হয়ে যায়। অবশ্যই কাউকে অনুসরণ করতে পারেন কিন্তু কবিতার মতোই এখানে জারি থাকা উচিত নিজেকে ভেঙে নিজেকে নতুন করে গড়া।

কনসেপ্ট-এর আগে কনসেপ্ট নিয়ে বারবার ভাবতেই হবে। এক্ষেত্রে ঋত্বিক উবাচের কোনও বিকল্প নেই। মাথার মধ্যে সারাক্ষণ যেন অনুরণিত হতে থাকে 'ভাবো ভাবো ভাবা প্র্যাকটিস করো'। কারণ আপনি চিরজীবী নন কিন্তু 'কাজ রয়ে যাবে'।

সংযোজন: খুব শীঘ্রই মেদিনীপুর উপহার পেতে চলেছে আরশির তরফ থেকে 'বনলতা সেন' ফটো স্টোরি। শুধু অপেক্ষা মাত্র ইমেজ অ্যান্ড ইমাজিনেশন- এর 'শীতের বনে' মিউজিক ভিডিও। সাম্প্রতি নজর কেড়েছে নির্ভীক কালচারাল ফোরাম- এর 'সহজ পাঠের আসর'। আর আমার নিজের বলার মধ্যে মুক্তি পেতে চলেছে 'দ্রোহ', 'আদর'। আপনাদের সমালোচনার অপেক্ষায় আমরা।
জ্বলদর্চি পেজ- এ লাইক দিন👇


আরও পড়ুন 

Post a Comment

0 Comments