জ্বলদর্চি

১৮ এপ্রিল ২০২১

Today is the 18April, 2021
আজকের দিন 
বাংলায় ---৪ বৈশাখ রবিবার ১৪২৮

আজ, বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস( World  Heritage  Day)এই দিন সারা বিশ্বের প্রায় সব ঐতিহ্যবাহী স্থানে নানা ধরনের অনুষ্ঠান হয় স্থানীয় কৃষ্টির কথা মাথায় রেখে। এব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন মনুমেন্টস অ্যান্ড সাইটস। তারা ইউনেস্কোর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণে। এ বছরের থিম হল “Complex Pasts: Diverse Futures”

উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের এক অবিস্মরণীয় নাম হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও।শিক্ষক, কবি, সাংবাদিক এই মানুষটি বাঙালি না হয়েও তাঁর উপলব্ধি আর কর্মোদ্যমে বদলাতে চেয়েছিলেন সমাজটাকে। তাঁর প্রত্যক্ষ ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, রামগোপাল ঘোষ, প্যারীচাঁদ মিত্র, রাধানাথ শিকদার, রামতনু লাহিড়ী, শিবচন্দ্র দেব, দিগম্বর মিত্র প্রমুখ ব্যক্তিগণ। তিনি হয়ে উঠেছিলেন এইসব ছাত্রদের ‘friend philosopher and guide’। তাঁর এই সব ছাত্ররা নব্যবঙ্গ বা ইয়ং বেঙ্গল নামে পরিচিত ছিলেন। ১৮০৯ সালে আজকের দিনে এই প্রাতঃস্মরণীয় পুরুষ জন্মেছিলেন।

ঊনবিংশ শতাব্দীর সর্ব শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন চিন্তা-পরীক্ষার মাধ্যমে পদার্থবিজ্ঞানে এনেছেন যুগান্তকারী পরিবর্তন। মস্তিষ্কই ছিল তাঁর ল্যাবরেটরি। আর যন্ত্রপাতি ছিল পেন্সিল আর খাতা। তাঁর পরীক্ষা সবই চলত চিন্তার অসীম জগতে। যদিও ছেলেবেলায় একদিন তাঁর বাবা তাঁর স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চান, ভবিষ্যতে তাঁর ছেলেটির কোন পেশা বেছে নেওয়া উচিত? শিক্ষক জবাব দিয়েছিলেন, যে পেশাই হোক, তাতে কিছু আসে যায় না, কারণ কোনোটিতেই ও কিছু করতে পারবে না। সেই ছেলেই বড় হয়ে  বিশ্ব ও জগৎ সম্পর্কে  আবিষ্কার করেন ‘থিওরি অব রিলেটিভিটি’ বা ‘আপেক্ষিক তত্ত্ব’। ১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার সম্মানিত আইনস্টাইন তাঁর প্রথম স্ত্রী মিলেভার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের শর্ত অনুসারে নোবেল পুরস্কারের পুরো টাকাটা তাঁকে পাঠিয়ে দেন। ১৯৫৫ সালে আজকের দিনে এই মহান বিজ্ঞানী প্রয়াত হয়েছিলেন।
ভারতে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পথিকৃৎ সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ১৯৪৮ সালে আজকের দিনে প্রয়াত হয়েছিলেন। স্বদেশী আন্দোলনের সূত্রপাত ও সফলতায় তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। খাঁটি দেশপ্রেমিক ও ধর্মপ্রাণ এই সাধু পুরুষ ধর্মীয় গোঁড়ামি, বর্ণপ্রথা এবং প্রাদেশিকতার বিরোধী ছিলেন। সময়োপযোগী উপযুক্ত মানুষ তৈরি করার জন্যই তিনি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।

 বাঙালি সাহিত্যিক এবং গীতিকার হেমেন্দ্রকুমার রায়  ১৯৬৩ সালে আজকের দিনে প্রয়াত হয়েছিলেন।প্রকৃত নাম প্রসাদদাস রায়।কখনও বা মেঘনাদ গুপ্ত নামেও লিখেছেন। তিনি ছোটদের জন্য রহস্য রোমাঞ্চ ও গোয়েন্দা গল্প লেখার জন্য বিখ্যাত। তাঁর কয়েকটি গল্প ও উপন্যাস চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে।

কলকাতার ৩২ নং মুরারিপুকুরের বাগানবাড়ি যাঁর পরিকল্পনায় বোমা তৈরির কারখানারূপে ব্যবহৃত হতো, সেই অগ্নিযুগের বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষ  ১৯৫৯ সালে আজকের দিনে প্রয়াত হয়েছিলেন। শেষ জীবনে অবশ্য তাঁর  রাজনৈতিক ও বিপ্লবী মতাদর্শ বিতর্কিত হয়ে পড়ে। ১৯৩৬ সালে পূর্বতন কাজের সমালোচনা করে 'ভারত কোন পথে' পুস্তিকা লেখেন। এছাড়াও দ্বীপান্তরের বাঁশি, পথের ইঙ্গিত, আমার আত্মকথা, অগ্নিযুগ, ঋষি রাজনারায়ণ ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা।

ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব অতুল্য ঘোষ ১৯৮৬ সালে আজকের দিনে প্রয়াত হয়েছিলেন। ইনি ছিলেন  ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা, লোকসভার প্রাক্তন সদস্য। তিনি হিজলি বন্দি নিবাসে রাজবন্দীরূপে দিন কাটিয়েছিলেন।

 লোকসঙ্গীতশিল্পী নির্মলেন্দু  চৌধুরী ১৯৮১ সালে আজকের দিনে প্রয়াত হয়েছিলেন। প্রথমজীবনে ময়মনসিংহে লোকসঙ্গীত ও লোকবাদ্যে তালিম গ্রহণ করেন। পরে শান্তিনিকেতনে অশোকবিজয় রাহার নিকট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিক্ষালাভ করেন। তিনি প্রগতি লেখক সংঘ ও ভারতীয় গণনাট্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি কলকাতায় লোকভারতী নামে একটি লোকসঙ্গীত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

মনীষী উবাচ :
প্রয়োজনের খাতিরে অনেক ক্রূর কর্ম মানুষকে করতে হয়, কিন্তু সেগুলোকে ভুলতে পারাই মনুষ্যত্ব।(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) 
-------------------------
সংকলক- রুম্পা প্রতিহার 
-------------------------
জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments