জ্বলদর্চি

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা -২৯

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা -২৯


সম্পাদকীয়
ছোট্টবন্ধুরা, যেই ভাবছিলে নতুন বছরের গন্ধে স্কুল খোলার মজা মিশে আছে, অমনি কোভিড ১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ল তো?  জানি তোমাদের মন খারাপ হচ্ছে খুব। এখন মনখারাপের সময় নয়। এখন তোমাদের লড়াই করতে হবে। কার সঙ্গে?  কেন কোভিড ভাইরাসের সঙ্গে। কারণ এবারে কোভিড ১৯ চোখ রাঙাচ্ছে ছোটোদের। এসো লড়াই করি। আর লড়াই করতে যা দরকার সেটা হল অস্ত্র শস্ত্র। এক্ষেত্রে অস্ত্র হল কিছু বিধি নিষেধ মেনে চলা। তার আগে জানতে হবে সেগুলো কী কী। তাইতো ডা: সোনালি আন্টি তোমাদের সেগুলো জানিয়ে দিয়েছেন। তোমরা জানো আর অন্যদের জানাও, আর ডা: সোনালি আন্টিকে আমি তোমাদের হয়ে বলে দিলাম, 'থ্যাঙ্কু আন্টি'। লড়াই এর কথাই যখন হচ্ছে তখন প্রচ্ছদের ষাঁড়ের আর ভাই বোনের মজার লড়াইটাই বা বাদ যাবে কেন। প্রচ্ছদের এমন অপূর্ব ছবিটি উপহার দেবার জন্য নীলাব্জ ঘোষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আরে না, লড়াই এখানেই শেষ নয়। ' ফুলকুসুমপুর খুব কাছে' তে যে মিটিং হবার কথা ছিল সেখানেও ইচ্ছেদাদু আর অনিচ্ছে ঠাকুমার কথার লড়াই শুরু হয়ে গেছে তো। এমন জমাটি উপন্যাসটি উপহার দেবার জন্য রতনতনু ঘাটী মহাশয়কে শ্রদ্ধা। আমি যখন তোমাদের মতো ছোটো ছিলাম, তখন প্রতি রবিবার আনন্দবাজারে কাঁদনের গল্প পড়ব বলে বসে থাকতাম। সেই কাঁদনের স্রষ্টা শতদ্রু মজুমদার আবার কাঁদন নিয়ে এসেছেন আমাদের এখানে। শতদ্রু মজুমদার মহাশয়কে শ্রদ্ধা।  তাছাড়াও ছন্দিতা মল্লিকের ছড়া আর সৌমী আচার্যের গল্প পড়ে জানিও কেমন লাগল। তাদেরও ধন্যবাদ। যেটা না বললেই নয় তাহল, নববর্ষের এই ডালি অসম্পূর্ণ থেকে যেত যদি না শ্রীপর্ণা তার গোয়েন্দা গল্প আর সুহেনা তার ছড়া তোমাদের উপহার দিত। উপহারের কি আর শেষ আছে? আছে ছোটো বন্ধুদের পাঠপ্রতিক্রিয়া আর ছবির পর ছবি। করোনাও এত উপহার পেলে লুকিয়ে লুকিয়ে সব নিয়ে নিজের দেশে পালিয়ে যাবে আর জ্বলদর্চি পড়তে পড়তে ভুলেই যাবে লড়াইএর কথা। ঠিক কিনা? ভালো থেকো, সাবধানে থেকো।    মৌসুমী ঘোষ।


ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস

ফুলকুসুমপুর খুব কাছে (২)

রতনতনু ঘাটী

ইচ্ছেদাদুর কথায় সকলে নড়েচড়ে বসলেন। দাদু বললেন, ‘আমি চাই, আমার বাড়িতে শুধু মানুষই থাকবে। কারণ, এটা মানুষেরই বাড়ি। অথছ, গত কাল তেপান্তরের হাট থেকে বাঁশের তৈরি চারটে খাঁচা আমার বাড়িতে এসেছে বলে শুনেছি। আমি ভাবছি, খাঁচায় পশুপাখি থাকে, মানুষ তো আর থাকে না? তা হলে এসব খাঁচা কাদের জন্যে কিনে আনা হয়েছে জানতে চাই?’
   তারপর অনিচ্ছেঠাকুরমার দিকে তাকালেন ইচ্ছেদাদু। মানে এবার তাঁকেই উত্তর দিতে হবে। ছোটরা সকলে টিভিরুমের জানলায় কানখাড়া করে বসে থাকল। ইচ্ছেদাদু বললেন, ‘কই গো, তুমি কিছু বলো! এত খাঁচা এল কেন আমাদের বাড়িতে?’
   অনিচ্ছেঠাকুরমা গলা পরিষ্কার করে নিয়ে বললেন, ‘আমি ক’দিন আগে বড়বাবুকে বলেছিলাম, শেকলে বাঁধা আমার যে একটা পোষা হীরামন পাখি আছে না, ও তো খুব মনোকষ্টে থাকে। দিনরাত শেকলে বাঁধা থাকে। উড়তেও পায় না। তাই বড়বাবুকে বলেছিলাম, ‘আমার হীরামনের জন্যে একটা বাঁশের তৈরি খাঁচা এনে দিবি বড়বাবু তেপান্তরের হাট থেকে?’ তাই মনে হয় ওসব খাঁচার মধ্যে আমার হীরামনেরও একটা খাঁচা আছে। অন্যগুলোর খবর আমি জানি না!’
   ইচ্ছেদাদু একটু কর্কশ গলায় জানতে চাইলেন, ‘অনিচ্ছে, তুমি পাখি পুষবে? তিনজন ছেলে, তিনজন নাতি-নাতনি, তিন-তিনজন বউমা থাকতে কারও আবার পাখি পোষার শখ হয় বলে তো জন্মে শুনিনি? তা ওই যে পাখিটা সারাদিন ট্যাঁ-ট্যাঁ করে কর্কশ গলায় চিৎকার করে সকলের দুপুরের ঘুম ভাঙায়, ওর জন্যে তোমার খাঁচা চাই? ও তো একটা বুনো টিয়াপাখি! ও হীরামন পাখি হতে যাবে কেন? তুমি কি পাগল হয়েছ? এতে খাঁচার অপমান হবে!’
   অনিচ্ছেঠাকুরমা খানিক চুপ করে থেকে গলায় যথেষ্ট সাহস আনলেন। বললেন, ‘আমার রাধাগোবিন্দ হীরামন পাখি নয়? কত সুন্দর কথা বলতে শিখেছে! এখন তুমি এত বড় কথা বলতে পারলে? তুমি আমাকে অপমান করো আর যাই করো। সে তো সারা জীবনে কম করোনি! কিন্তু রাধাগোবিন্দকে নিয়ে অপমানজনক কথা আর-একটা দিন যদি বলেছ, তা হলে আমি আমার বাপের বাড়ি মদনপুরে চলে যাব। নয়তো আমার গুরুদেবের সঙ্গে বেনারসে চলে যাব। হ্যাঁ, সঙ্গে রাধাগোবিন্দকেও নিয়ে যাব। না হলে ও-ই বা একানে থাকবে কোথায়? বুঝতে পেরেছি, এ সংসারে ওর মতো অবলা পাখির জায়গা হবে না। তুমি তোমার সংসার নিয়ে থাকো!’
   ইচ্ছেদাদু দু’ হাত তুলে অনিচ্ছেঠাকুরমাকে বোঝাতে গেলেন, ‘আ-হা-হা! এই তো একটু আগে বললে, তোমার রাধাগোবিন্দ কত কথা বলতে পারে। আবার এখন বলছ ও অবলা পাখি? কোনটা ঠিক?’
   অনিচ্ছেঠাকুরমা এ কথার কোনও উত্তর দিলেন না। সকলে ইতস্তত করছিলেন। ইনিচ্ছেঠাকুরমা বললেন, ‘হয় এ বাড়িতে একটা খাঁচা থাকবে আর আমি থাকব। নয়তো আমি এ বাড়িতে নেই।’
   ইচ্ছেদাদু কথাটা মেনে নিলেন কি না টিভিরুম থেকে স্পষ্ট বুঝতে পারল না ছোটোরা। বিন্নি গলাটা নিচু করে তিন্নির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘তিন্নিদি, রাধাগোবিন্দর জন্যে কি একটা খাঁচা বরাদ্দ হল?’
   তিন্নি বাঁ হাত দিয়ে বিন্নির মুখটা চাপা দিয়ে বলল, ‘দাঁড়া। আর একটু মিটিংটা শুনতে দে।’ তারপর বলছি।’
   শুধুকাকা অনিচ্ছেঠাকুরমার সবচেয়ে আদরের। শুধুকাকা ইচ্ছেদাদুর মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘বাবা, এ সংসারে মা’র কন্ট্রিবিউশান তো কম নয়? তার বিনিময়ে মা কি তার রাধাগোবিন্দর জন্যে একটা খাঁচা পেতে পারে না? তা হলে সংসারে খেটে কী লাভ হল?’
   ইচ্ছেদাদু ঘাড় নেড়ে বললেন, ‘সংসারে কেউ খাটলে তার জন্যে বাড়িতে একটা খাঁচা রাখারও জায়গা দিতে হবে? তার ইচ্ছেমতো একটা এনিম্যালকে বাড়িতে থাকতে দিতে হবে? খেতে দিতে হবে? না না, এ তোমার কীরকম কথা হল? এ বাড়িটা আমার। আমার কথামতোই তো সব হওয়া উচিত?’ একটু চুপ থেকে করে বললেন, ‘তা না হয় হল। অনিচ্ছের রাধাগোবিন্দ একটা খাঁচা পাবে। খাঁচায় থেকে অনিচ্ছের হীরামন কত কথা বলতে শেখে, দেখা যাক!’
   পাশের টিভিরুম থেকে হাততালির শব্দ ভেসে এল। ছোটরা ভীষণ খুশি—রাধাগোবিন্দ এবার থেকে খাঁচায় থাকবে! বুম্বা বিন্নির কাছে সরে এসে বলল, ‘বল বিন্নিদি, এটা বেশ ভাল হল? আমি ওকে কথা বলা শেখাব।’ তারপরেই ওর বলে ফেলা কথাটা ফেরত নিয়ে বুম্বা বলল, ‘না না। ওকে কথা শেখাব না। বরং আমি রাধাগোবিন্দকে একটা রাইমস শেখাব, ‘বা বা ব্যাক শিপ, হ্যাভ ইউ এনি উল? ইয়েস স্যার, ইয়েস স্যার, থ্রি ব্যাগস ফুল।’ 
   হাততালির শব্দে মিটিংয়ে বাধা পড়ল। ইচ্ছেদাদু থমকে গিয়ে তিন্নির বাবার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হ্যাঁ রে বড়বাবু,ছোটোরা হঠাৎ হাততালি দিয়ে উঠল কেন?’
( এর পর আগামী রোববার)

কোভিড করোনা আর তাকে ঠেকানোর উপায় 

ডঃ সোনালি মুখোপাধ্যায় ভট্টাচার্য 

ছোটরা ও সাবধানে থেকো। 
তোমাদের জন্যই ত চিন্তা বেশি। আর তোমাদের মুশকিলও অনেক। 
তোমাদের ইস্কুলে যাওয়ার উপায় নেই। খেলা করার উপায় নেই। বেড়াতে যাবার উপায় ও নেই। তবে সারাদিন করবে কি ? 
ক্লাস হচ্ছে মোবাইল বা ল্যপটপে। সারা দিন হয় টেলিভিশন নয় মোবাইল । 
চোখে ব্যথা। অনেকের চশমার পাওয়ার বেড়ে গেল। 
এবার তাই তোমাদেরকেই জানিয়ে দেওয়া কি করবে আর কি করবে না। 
১ কোভিড ভাইরাস নাক মুখ দিয়ে ভেতরে ঢোকে। তাই মুখ নাক ভালো করে মাস্ক দিয়ে না ঢেকে কেউ কথনো বাইরে যাবে না। 

২ বাইরে গেলেই ফিরে এসে আগে হাতে গায়ে স্যানিটাইজার স্প্রে করবে এবং বা অথবা সাবান দিয়ে হাত মুখ পা ধুয়ে ফেলে, তবে ঘরে বসবে বা ঢুকবে। 

তার আগে কোথাও বসবে না বা বাড়ির ভিতরে কিছুতে হাত দেবে না। 

৩ আগে হাত মুখ ধুয়েই জামাকাপড় বাথরুমে ছেড়ে বাড়ির পরিষ্কার জামা কাপড় পরে অন্য ঘরে ঢুকো। 

৪ খেয়াল রেখো নাকে, চোখে এবং মুখে হাত না লাগালেই ভালো। এই জায়গাগুলি থেকেই ভাইরাস শরীরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। 

৫ রোজ খুব ভালো করে সাবান মেখে চান করে নিও। 

৬ মোবাইলে খেলা এবং পড়াশোনা ত করতে হচ্ছেই। কিছু সময় স্ক্রিন ছাড়াও থাকো। নইলে চোখে, মাথায় ব্যথা করবে। শরীর খারাপ হবে। 

৭ বাবা মাকে বোলো নিজেরাও গরম জল দিয়ে গার্গল করতে, তোমাদের ও করার ব্যবস্থা করে দিতে। 

৮ খোলা ছাদে বা মাঠে ফাঁক পেলেই দৌড়ে এসো। একা একাই। বা দু তিন জনে অনেক দূরে দূরে থেকে। 

১০ ঘরে গান গেও। ছবি এঁকো। খালি হাতে ব্যায়াম বা নাচ কোরো নিয়মিত। 

বাড়ির সকলের শরীর আর মন ভালো রাখার দ্বায়িত্ব অনেকখানিই তোমাদের হাতেই রইল।

রূপকথার ভন্টাই

সৌমী আচার্য্য

-দুটো বাটার টোষ্ট,তিনটে চা পাঁচ নম্বরে।হ‍্যাঁ আঙ্কেল বল আজ কি খাবে?
-নতুন কিছু করেছিস?
-ফালে,পাহাড়ের খাবার হেব্বি টেষ্ট ঝকরুদাদা নারকেল দিয়ে করেছে চিকেনের বদলে?
-দে,কত দাম?
-দুটো চল্লিশ।

ভীষণ ব‍্যস্ত থাকে ভন্টাই ভোর চারটে থেকে সকাল দশটা।তোমরা ওকে চেনোনা তাইনা!এসো আলাপ করাই এই হলো ভন্টাই বয়স তেরো আর ওর সাথে আছে ঝকরু,বিলে।সতেরো আর পনেরো।ঝকরু দারুণ রান্না করে।ভন্টাই আর বিলে অর্ডার নেয়,খাবার দেয় টেবিল মোছে।তোমরা ভাবছো ওদের গল্প কেন তোমাদের বলছি তাইনা!আসলে ওরা রূপকথা তৈরী করেছে এই হাইরোডের ধারে।ওদের তিনজনের বাবা,কাকা আরো সবার সাথে দিল্লীতে কাজ করতো।তারপর একদিন দুষ্টু লোকের চক্রান্ত অনেক মানুষদের একসঙ্গে তারা বানিয়ে দিল বস্তিতে আগুন লাগিয়ে।মায়ের কান্না ছোট ছোট বোনেদের খিদে ভন্টাইকে বিচলিত করে দিল।টাকা দেবার লোভ দেখিয়ে সিড়িঙ্গে জগা ওদের চুরি করতে পাঠিয়েছিল।না ভয় পেওনা।ওরা চুরি করেনি বরং মন খারাপ করে পুন্নিপুকুরের ধারে বসেছিল।

-ভন্টাই অনির্বাণ স‍্যার বলেন তোর মতো পাকা মাথা আর কারো নেই।কিছু একটা বুদ্ধি করনা ভাই।চুরি করতে মন চায় না।

-আমি ভাবছি কোন হোটেলে রান্নার কাজ নেবো।মা তো কবেই মরে গেছে।সেই ছোট থেকে রান্না করি।

-মরে গেছে বলবি না।তোর মনে তো আছেন কাকিমা।দেখ ঝকরুদা অন‍্যের দোকানে কাজ করবি কেন?চল আমরা নিজেরাই দোকান করবো।ঐ হাইরোডের ধারে।

-তুই পড়াশোনা ছেড়ে দিবি ভন্টাই?আমরা নয় গবেট কিন্তু তুই!

-কেউ পড়া ছাড়বো না।চারটে থেকে দশটা চা,জলখাবার।আবার বিকেল পাঁচটা থেকে আটটা চা,মুড়ি,চপ।

এভাবেই একদিন ঝুপড়ি দোকান বানিয়ে ফেললো তিনটেতে মিলে।না গো ছোট্ট বন্ধুরা এটা রূপকথা নয়।এমন তো হামেশাই হয়।ভন্টাই দোকানের লাভ তিনটে সমান ভাগে ভাগ করে।আর ইউ টিউব দেখে নিত‍্য নতুন খাবার ঝকরুকে দিয়ে বানায়।রাতের বেলা দোকান বন্ধ করে তিনজনে পড়াশুনা করে একসাথে।ঝকরু তো এবার মাধ‍্যমিক দেবে।এখন দোকানের আয় বেড়েছে তাই বিলে ওর মাকে ফ্ল‍্যাটে বাসন মাজতে দেয়না।একটা সেলাই মেশিন কিনে দিয়েছে।ভন্টাই মার জন‍্য হুইল চেয়ার চেয়ে ইংরেজিতে এ্যাপ্লাই করেছিলো একটা এনজিওতে।তারা শুধু যে সেটা দিয়েছে তাই না,ভন্টাইয়ের ইংরেজিতে আশ্চর্য হয়ে ওর সাথে দেখা করে গেছে।ও বলাই হয়নি ঐ এনজিওর কর্ণধার ফ্রান্স থেকে এসেছেন এখানে।উনি আজ ভন্টাইয়ের সাথে কথা বলবেন।যাবে!চল যাই।

-স‍্যার ভন্টাই ইজ ভেরি গুড বয়।গিভ আস বিস্কুট,চা ফ্রি।উই শ্রমিক মানে লেবার।ইন নাইট আমাদের পড়ায়।

ভন্টাই লজ্জা পায় সবাই মিলে ওর প্রশংসা করে চলেছে ভুলভাল ইংরেজিতে।মি.আন্দ্রে ওর পিঠে হাত রেখে জানতে চায় ভন্টাই কি চায় জীবনে?

-স‍্যার আমি চাই আমার নাম সবাই জানুক ভালো কাজের জন‍্য।আমার ভালো নাম জগদীশ দেব।কোনকাজ ছোট নয় আবার যে কোন কাজ করে ইচ্ছে থাকলে পড়াশোনা করা যায়।সিড়িঙ্গে জগার মতো খারাপ লোক আছে যেমন তেমন অনির্বাণ স‍্যার,আঙ্কেল টম,পূর্বাদিদির মতো ভালো মানুষেরাও আছে যারা সাহায‍্য করে ভরসা দেয়।

আমার চোখে জল আসছে।ঐ দেখ আমায় দেখে কেমন ছুটতে ছুটতে আসছে।

-স্বপ্ন বুড়িমা,তুমি দেখবে এসো। আমায় রোল মডেল করবে।আমায় দেখে নাকি আরো অনেকে জোর পাবে লড়াইয়ের।আমার ছবি বেরোবে কাগজে এসো এসো।

যাবার আগে তোমাদেরো স্বপ্ন দিয়ে যাই। খুব বড় হও তোমরা, ভালো থেকো।


হুলোর কীর্তি

ছন্দিতা মল্লিক

আমাদের অফিসের সীতানাথ পাল
আড়ালে সবাই ডাকে 'পেটুক বেড়াল!'
ভিজে ভিজে ঘরে ফিরে ভাবে গত রাতে,
"আজ খাবো মাছ ভাজা খিচুড়ির পাতে!"
নোলা গিলে, গিন্নীকে ডেকে বলে হেসে,
"ইলিশ এনেছি দুটো ভাজো দেখি কষে!"
চা মুড়ি তেলেভাজা খেয়ে আয়েশেতে,
টিভি দ্যাখে সীতানাথ ঠেসে বালিশেতে।
ঘরময় ভেসে যায় ইলিশের ঘ্রাণ...
আনচান সীতানাথ আঁকুপাঁকু প্রাণ!
ঢোঁক গিলে টিভি ভুলে যেই ওঠে সবে,
ঝুপ করে আলো নিভে ঘর দোর ডোবে।
গিন্নীর গলা বাজে সকরুণ সুরে,
"ওগো হ্যাঁগো আলো জ্বালো, মাছ গে'ল পুড়ে!"
শুনশান ঘরখান কারো নাই সাড়া,
হাতড়িয়ে আলো জ্বালে গিন্নী বেচারা!
পা টিপে ঘরে গিয়ে চোখ ছানাবড়া..
একমুখ ভাজা মাছে হুলো পড়ে ধরা!


বিদায় পার্বতীপুর 

শতদ্রু মজুমদার 

শ্বশুর বাড়ি থেকে আসার সময় কাঁদনের পকেট মার হয়ে গেল !ঘটনাটা ঘটেছে আমতার বাসে l পকেটে লেডিস রুমালে জড়ানো একটা নাকছাবি ছিল  l যদিও এটাও তার হাতানো জিনিস l একে কি বলে চোরের ওপর বাটপারি ?
তবে নিশ্চয় পার্বতীপুরের চোর !কদিন ধরেই এই তল্লাটে পকেটমারের খুব উৎপাত !সেখানে নাকি পকেটমারের ইস্কুল আছে !অনেকেই বলছে !আস্তো একটা লাউ এর গায়ে ভিজে গামছা জড়িয়ে দেবে ---তোমাকে গামছা এমন ভাবে কাটতে হবে লাউ এর গায়ে আঁচড়টি লাগবে না !এরকম কত !
কথায় বলে :চুরি বিদ্যা বড়ো বিদ্যা যদি না পড়ে ধরা !পার্বতীপুরের কোনও চোর ধরা পড়ে নি l বড়ো বিদ্যাই বলতে হয় !

এই সব ভেবে কাঁদন পরামানিক একদিন পার্বতীপুরে গেল !মাকড়দহ স্টেশন থেকে বাসে এক ঘন্টা !বাস থেকে যখন সে নামলে আকাশে সূর্য কাত l 
পিচের  রাস্তা দিয়ে কাঁদন হাঁটছে তো হাঁটছে !এ তো আর লেখাপড়ার ইস্কুল নয় যে লোককে জিজ্ঞেস করবে !নিজের জিনিস নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে l রাস্তার ধরে একটা তোলা চাখানায় চা খেতে গিয়ে একজনের মুখোমুখি !চোখে কালো চশমা l ঠোঁটে সিগ্রেট :
---কোথথেকে আসা হচ্ছে ?
---ও আপনিই ওস্তাদ ?কি করে জানলেন ?
---রতনে রতন চেনে l
---হক কথা !
বিচ্ছিরি মুখ করে হাসলে লোকটা !তারপর হ্যান্ডসেক করার জন্য হাতটা বাড়িয়ে দিল !সেই হাত দুহাতে জাপটে ধরে জোর ঝাঁকুনি দিল কাঁদন !তারপর খেল খতম ---পয়সা হজম !
উলটো দিক থেকে একটা বাস আসছিল !
---আমি একটু আসছি ওস্তাদ !বলে কাঁদন বাসে উঠে পড়লে !কেমন ওস্তাদ জানা হয়ে গেছে !এক ঝাঁকুনিতে একটা আংটি! ভাগ্যিস তিন পয়সা সোনার নাকছাবিটা চুরি গেল! পাওয়া গেল আট আনা সোনার আংটি !


গোয়েন্দা রিমিল 

 শ্রীপর্ণা ঘোষ
সপ্তম শ্রেণী, জওহর নবোদয় বিদ্যালয়, পশ্চিম মেদিনীপুর

বেশ মন দিয়ে ফোনে শার্লক হোমসের নতুন সিরিজ-টা দেখছিলাম। হাত বাড়িয়ে চারপাশ অনেক খুঁজলাম, কোথায় গেল ওরিও-র প্যাকেটটা? এ নিশ্চয়ই ঝিমিলের কাজ। কান থেকে হেডফোনটা খুলে ‘ঝিমিল’ বলে ডাকার আগেই দেখি ঝিমিল কোণের চেয়ারে বসে বই পড়ছে। আমি বললাম, “ওরিও-র প্যাকেটটা কই রে?”
ঝিমিল বলল, “আমি কী জানি?” 
আমি বললাম, “তুই যে মিথ্যে বলছিস তা তোকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। বল কোথায় লুকিয়ে রেখেছিস, না খেয়ে শেষ করে দিয়েছিস?” 
ঝিমিল বলল, “না এখনও শেষ হয়নি। দেখি ডিটেকটিভ রিমিল নিজের ডিটেকটিভ স্কিল দিয়ে খুঁজে বার করতে পারে কিনা?”
এদিক ওদিক তাকাতেই আমার নজরে পড়ল ঝিমিলের পায়ে মায়ের হিল তলা জুতোটা। ও তো ওটা কখনও পরে না। তবে নিশ্চয়ই কোনো উঁচু জায়গায় রেখেছে। এবার উঁচুতে তাকাতেই চোখ পড়ে গেল দেওয়ালের হুকে ঝুলতে থাকা বাবার চা নিয়ে যাবার ফ্লাক্সের ব্যাগটার দিকে। ওটার চেনটাও একটু ফাঁক। আমি বললাম বাবার চায়ের ফ্লাক্সের ব্যাগটা নিয়ে আয় তো। ঝিমিল বিরক্ত হয়ে বলল, “আবার? তুই কী করে খুঁজে পাস বলতো?”
এটা আমার আর ঝিমিলের রোজকার খেলা। ও জিনিস খুব ভাল লুকাতে পারে। কোনো কোনোবার আমিও খুঁজে পাই না। আমি যদি হই পাক্কা গোয়েন্দা তবে আমার বোন পাক্কা চোর।
সরস্বতী পুজো। সকালে আমি আর মা গেলাম ঠাকুর কিনতে। গোপালকাকু আমাদের সঙ্গে গেল ঠাকুরের ফুল ফল আর পুজোর জিনিসের ব্যাগ ধরতে। পুজো শুরু হবে হঠাৎ দেখি সরস্বতী ঠাকুরের পাশে তার বাহন নেই। চারপাশে দেখলাম, কোথাও তো নেই! আমি ঝিমিলকে কানে কানে জিজ্ঞেস করলাম, “তুই ঠাকুরের বাহন রাজহাঁসকে লুকিয়ে রেখেছিস?”
ঝিমিল বলল, “আমি নিয়ে কী করব?” 
মনে হল সত্যিই নেয়নি।  আমরা সব ব্যাগ খুঁজলাম। সারা বাড়ি খুঁজলাম। কোথাও নেই। তখন আমি আর ঝিমিল যে দোকান থেকে ঠাকুর কেনা হয়েছিল সেখানে দৌড় দিলাম। দোকানকাকু কিন্তু বলল, মূর্তি আর হাঁস দুটোই ব্যাগে পুরে দিয়েছিল। 
ঝিমিল বলল, “তাহলে কী হবে?”
তখন আমার মনে পড়ল ঠাকুর কেনার সময় আমি ছবি তুলে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। মোবাইলে ছবিটা খুলে দেখি, সরস্বতী ঠাকুরের মূর্তি ভরা ব্যাগ মায়ের হাতে। ওদিকে আর একটা ব্যাগে হাঁস। সেটাকে একটা ঝাপসা হাত ধরতে আসছে। আমি বললাম, “ইউরেকা! এই হাত যার সেই চোর।” 
আমি ঝাপসা হাতটাকে জুম করে ভালোভাবে দেখলাম। তারপর ঝিমিলকে বললাম, “আয় আমার সঙ্গে।”  দৌড় দিয়ে আমাদের বাড়ির পিছনের গলি ঢোকার রাস্তাতে হাজির হলাম। আমি ঝিমিলকে দেখালাম, “ওই দেখ ডানদিকের বাড়ির সামনে একটা গাঁদাফুল পড়ে আছে।” 
ঝিমিল বলল, “এটা তাহলে চোরের বাড়ি।”
বাড়ির গেট আর সামনের ঘরের দরজা হাট করে খোলা। আমরা সামনের ঘরে ঢুকতেই দেখলাম ব্যাগটা রাখা। ঝিমিল চেঁচিয়ে উঠল, “এই তো সেই ব্যাগ! ভিতরে রাজহাঁসটা চুপ করে বসে আছে।” 
আমাদের কথা শুনে ভিতরের ঘর থেকে গোপালকাকু বেরিয়ে এল। ঝিমিল অবাক হয়ে বলে উঠল, “গোপালকাকু তুমি?” গোপালকাকুর কব্জিতে বাঁধা পুরনো ঘড়িটা যেটা ছবিতে ছিল ঝাপসা এখন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।
গোপালকাকু সব শুনে জিভ কেটে বলল, “ইস্‌, আজকাল ভুলোমনা হয়ে যাচ্ছি। তোমাদের ফুলের ব্যাগের সঙ্গে হাঁসের ব্যাগটা দেব তা ভুলে গিয়ে এবাড়ির বাজারের ব্যাগের সঙ্গে হাঁসের ব্যাগটা নিয়ে চলে এসেছি। খুব ভুল করেছি খুকুমণি।"
আমি আর ঝিমিল চুপিচুপি বাড়িতে রাজহাঁসটা নিয়ে এলাম। মা আমাদের দেখে রেগেমেগে বলল, “কোথায় ছিলিস তোরা? অঞ্জলি শুরু হল বলে।”
আমি অঞ্জলি দেবার সময় টুক করে সরস্বতী ঠাকুরের পাশে তার বাহন রাজহাঁসকে রেখে দিলাম। একটু পরে কে একজন বলল, “রাজহাঁসটা খুব সুন্দর তো এতক্ষণ খেয়াল করিনি।”
আমরা দু’বোনে শুধু মুচকি হাসলাম।

জাদুর দেশ

সুহেনা মন্ডল
চতুর্থ শ্রেণী, দিল্লী পাবলিক স্কুল, নর্থ কোলকাতা

জাদুর দেশের একটি কোনায়
দুই পরীরা গল্প শোনায়।
তারা দুজনে হাত মিলিয়ে
রাখত সবাইকে খুব হাসিয়ে।
সেই দেশে ছিল রাজকুমার
পক্ষিরাজ ঘোড়া জাদুকুমার।
সেই দেশের দুই মজারু
উটপাখি ও রঙিন সজারু।
সেখানে একটি জমির মালিক
জাদুর দেশের জাদুয়ী শালিক।
জাদুর দেশ থাকে চিরন্তন
অমর হয়ে,হয় না পরিবর্তন।

পাঠ-প্রতিক্রিয়া ১
(২৮ তম ছোটোবেলা সংখ্যা পড়ে সপ্তম শ্রেণীর প্রবাহনীল দাস যা লিখল)

এবারের ছোটবেলা হাতে, থুরি ফোনে পেয়ে খুব আনন্দ পেলাম। প্রচ্ছদের ছবিটা এক ঝলকেই প্রাণ ঠাণ্ডা করে দিল – নৌকো থেকে ছেলেরা লাফিয়ে পড়ছে নদীতে। এছাড়াও পুরো পত্রিকা জুড়ে নানান বিষয়ে নানা রঙে আঁকা ছবি দেখে খুব উৎসাহ পেলাম।
এই প্রচণ্ড গরমে তরমুজের রেসিপি দেখে মনস্থির করে ফেলেছি, এটা আমি বানাবোই। কারণ এটুকু তো জেনে গেছি, গরমকালে তরমুজ শরীরে জল জোগায়, আর এই রেসিপিতে তো কোন শক্ত ধাপও নেই। আর ‘জানো কি’ বিভাগ থেকে অনেক কিছুই জানতে পারি, তাই মনোজিৎ দাদাকেও অনেক ধন্যবাদ।
এবার আসি গল্প-কবিতার কথায়। কবিতাগুলো তো অসম্ভব সুন্দর! আর গল্প? ‘ইন্টারভিউ’ গল্পটা তো রোম খাড়া করে দিল। কিন্তু ‘গাছগুলো’ পুরোটাই আনন্দ দিতে দিতে হঠাৎই শেষের অংশে খুব দুঃখ দিল। সত্যি, কত মানুষের কত খাটনির কাজই ‘সরকারী’ হিসেবে নাম পায়। আর রতনতনু ঘাটীর ‘ফুলকুসুমপুর খুব কাছে’ উপন্যাসটি এক প্রচণ্ড উত্তেজনা তৈরি করল, যা উপন্যাস শেষ না হওয়া অবদি কমার অবকাশ পাবে না।
সব মিলিয়ে এক সুন্দর ও সমৃদ্ধ পত্রিকা উপহার দেওয়ার জন্য সম্পাদক মৌসুমী মাসিকে অনেক ভালোবাসা।

প্রবাহনীল দাস
সপ্তম শ্রেণী
একমি একাডেমী, কালনা
পূর্ব বর্ধমান - ৭১৩৪০৯


পাঠ প্রতিক্রিয়া - ২
ছোটবেলার বিশেষ সংখ্যা ২৮ পড়ে অষ্টম শ্রেণীর সন্দীপ বিশ্বাস যা লিখল) 

আমি সকল বালকের মতো এক সাধারণ বালক। কিন্তু আমার কোনদিনই বাংলা সাহিত্য এবং ইতিহাসের একঘেয়েমি ভাব আমার মনের মধ্যে জায়গা করে নিতে পারেনি । ইদানিং আমার মা অনেক লেখালেখি এবং জ্বলদর্চি পত্রিকায় প্রতিক্রিয়া লেখেন, যার ফলে আমি মাঝে মাঝে এই পত্রিকা পাঠ করি । এই পত্রিকার ছোটবেলার বিশেষ সংখ্যা ২৮ পাঠ করে আমার সাহিত্যের প্রতি এক নতুন মনোভাব জন্ম নেয়। আমার এই পত্রিকা পড়ে মনে হয় যে মানুষের  এই সীমিত জীবনের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হল সাহিত্য। আমার প্রথমেই ভালো লেগেছে শিশু সাহিত্যিক রতনতনু ঘাটীর  মহাশয়ের রচনাংশ "ফুলকুসুমপুরের খুব কাছে"- এর প্রথমাংশ পড়ে এক যৌথ পরিবারের আনন্দের পরিস্ফুটন ঘটেছে।  সঞ্জয় কর্মকার মহাশয় রচিত "বসন্ত সুখ"  কবিতায় ফুটে উঠেছে বসন্তের প্রকৃতির অতুলনীয় রূপ। সুনেত্রা সাধু  মহাশয়ার "যদি হয় রূপকথা" গল্পের একজন রাজকন্যার  মনের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া নতুন জগতের বর্ণনা আমায়  মুগ্ধ করেছে । অমিত মজুমদার মহাশয়ের রচনাংশ  "গাছগুলো" গল্প পড়ে মুগ্ধতার সাথে সাথে দুঃখও পেয়েছি , অত কষ্ট করে বাচ্চাদের হাতে বপন করা গাছগুলো কূটনীতি এর মাধ্যমে তাদের গ্রাম পঞ্চায়েত নিজের নামে প্রচার করেন। ভয়ঙ্কর লোভে নীলকন্ঠপুরগ্রাম পঞ্চায়েতের লোকেদের এই নোংরা কাজ করতে বাঁধেনি।  বন্দনা সেনগুপ্ত মহাশয়ার রচনাংশ "তরমুজ" রচনাটি পড়ে মনে হলো এক্ষুনি একটা তরমুজ খাই ।তিনি তরমুজের এক সুন্দর পদ দেখালেন এবং তরমুজের প্রচুর গুণাগুণ বর্ণনা করলেন। বয়সে আমার দাদা তুল্য সুখময় বিশ্বাস দ্বারা রচিত "ছোটবেলা" কবিতায় তার এবং সকল শিশুর এক অদ্ভুত আনন্দের সময় বিকেল বেলা তুলে ধরেছেন  এবং  ছোটবেলার আরো আনন্দ স্নেহভরা সময়ের কথা তিনি তুলে ধরেছেন। কিন্তু বড় হতে হতে এই সময় কখন হারিয়ে যায় তা বোঝাই যায় না ।  কিন্তু বয়সে আমার সমান অনন্বয় গোস্বামী রচনাংশ "ইন্টারভিউ" গল্প পড়ে আমি অনেক দিন পর রোমাঞ্চিত এবং উৎসাহিত হলাম , কারণ ভৌতিক কথক আমায় সাহিত্যের প্রতি মনোভাব আরো ভালো করে তুলেছে। সর্বশেষে আমি বলতে চাই যে আমার অপু পাল মহাশয় তোলা ছোটবেলা ২৮ এর মূল ছবিটি প্রচন্ড ভালো লেগেছে এবং সায়নী কুন্ডু, সমৃদ্ধ মন্ডল, অস্মিতা ঘোষ , আংশিকা সরকার , অস্মিতা ভৌমিক এবং পূর্ণচন্দ্র ভূঞ্চা  ছবি অংকন প্রতিভা আমায় মুগ্ধ করেছে।

নাম - সন্দীপ বিশ্বাস।
বেথুয়াডহরি, খিদিরপুর পূর্ব পাড়া।
থানা - নাকাশি পাড়া।
জেলা - নদীয়া।


পাঠ প্রতিক্রিয়া-- ৩
নিত্যরঞ্জন দেবনাথ

প্রথমেই সম্পাদক মৌসুমী ঘোষকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই,  ছোটদের উপযোগী এমন সুন্দর একটি ওয়েব ম্যাগাজিন সম্পাদনা করার জন্য। আমি বোধহয় সব সংখ্যাই পড়েছি। হয়ত সঙ্গে সঙ্গে না হলেও দু'দিন পরে হলেও পড়ি।
ছোট বেলা বিশেষ সংখ্যা--২৮ আজই পড়লাম। তাই দু'চার কথা লিখতে ইচ্ছে হল।
প্রচ্ছদ এক কথায় অপূর্ব। চিত্রগ্রাহক অপু পালকে ধন্যবাদ।
সম্পাদকীয় পড়ে আমি মুগ্ধ। মৌসুমী এমন ভাবে লিখেছে, পড়লে, পুরো পত্রিকাটিই পড়তে হবে। লেখার মধ্যে জাদু আছে।
শিশু সাহিত্যিক রতনতনু ঘাটীর ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস---ফুলকুসুমপুর খুব কাছে-- প্রথম থেকেই বেশ টান টান। তারউপর নামকরণ গুলো বেশ মজাদার, খুবই আকর্ষণীয়---ইচ্ছেদাদু, অনিচ্ছেঠাকুমা---ফলে পড়ার ইচ্ছেটাও বাড়িয়ে দিয়েছে।পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
সঞ্জয় কর্মকারের "বসন্ত সুখ" ছড়া টি বেশ লাগলো।
যদি হয় রূপকথা----সুনেত্রা সাধু।
রূপবতী রাজকন্যে বিভাবরী ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পৃথিবীর স্বপ্ন দেখে। সে এক অন্য পৃথিবী, সেখানে প্রাণের উল্লাস আছে। রঙীন রঙীন সব ফুল ফোটে। আরও কত কী !স্বপ্নে রাজপুত্রের দেখা মেলে, বন্ধুত্ব হয়। রাজপুত্র কত গল্প শোনাত। আহারে ! এমন রূপকথার গল্প কার না ভালো লাগে? ধন্যবাদ সুনেত্রাকে।
গাছগুলো---অমিত মজুমদার।
গাছ লাগানো যে কত দরকার তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। লেখক অমিত মজুমদার গল্পের মাধ্যমে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। ভালো লাগলো।
তরমুজ নিয়ে লিখেছেন বন্দনা সেনগুপ্ত। এই গ্রীষ্মকালের প্রিয় ফল। তরমুজের কি কি গুন সুন্দর বুঝিয়েছেন।
সুখময় বিশ্বাসের--ছোটবেলা--ভালো লাগলো।
অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র অনন্বয় গোস্বামীর " ইন্টারভিউ" পড়ে বেশ আনন্দ পেলাম। বেশ রহস্যমূলক।
ছবিগুলো বেশ রুচিশীল। এত ছোট বয়সে এমন সুন্দর সুন্দর ছবি এঁকেছে সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।যাদের ছবি আছে: সায়নী কুন্ডু, সম্মৃদ্ধা মন্ডল, অস্মিতা ঘোষ, অংশিকা সরকার, অস্মিতা ভৌমিক। সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। ভবিষ্যতে আরও ভালো ভালো ছবি দেখতে চাই।
সম্পাদক মৌসুমীকে আরেকবার ধন্যবাদ জানাতেই  হবে। কারণ তার সম্পাদনার দক্ষতা---প্রশংসনীয়। শুভকামনা রইল।
নিত্যরঞ্জন দেবনাথ। চুঁচুড়া, হুগলি।

জানো কি!
--------------
আজকের বিষয় : ভারতরত্ন প্রাপক কিছু ব্যক্তিবর্গ। তাঁরা কোন বিশেষ কাজের জন্য এই পুরস্কার লাভ করেন এবং কত সালে।

১. সচিন তেন্ডুলকর কোন কাজের জন্য এই পুরস্কার পান?
২.সি. এন. আর .রাও কোন কাজের জন্য এই পুরস্কার ভূষিত হন?
৩. ভীমসেন জোসী কোন কাজের জন্য ভারত রত্ন পান?
৪. বিসমিল্লা খান কোন কাজের জন্য ভারত রত্ন পান?
৫.  লতা মঙ্গেশকর কত সালে এই পুরস্কার লাভ করেন?
৬. জয়প্রকাশ নারায়ণ কোন কাজের জন্য এই পুরস্কার পান।
৭. রবিশঙ্কর কোন কাজের জন্য ভারতরত্ন পান?
৮. সত্যজিৎ রায় কত সালে ভারতরত্ন পান?
৯. এ.পি.জে. আব্দুল কালাম কত সালে ভারতরত্নতে ভূষিত হন?
১০.মোরারাজি দেশাই কোন কাজের জন্য ভারতরত্ন পান?

গত সপ্তাহের উত্তর:
১.কলকাতা ২.ক্রিকেট ৩.বাংলাদেশ ৪.কটক ৫.বেঙ্গালোর ৬.ক্রিকেট ৭.ওয়াংখেড়ে ৮.পোলো ৯.কলকাতা ১০.হর্স রেসিং

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇





Post a Comment

1 Comments

  1. মৌসুমী মাসি! আমি বৈভবী বলছি। আমার শ্রীপর্ণা দিদিভাইয়ের গোয়েন্দা গল্পটা পড়ে খুব ভালো লে‌গেছে। আমি অন্য গল্প, কবিতা আর সব লেখা পড়েছি। খুব ভালো ‌‌লেগেছে।

    ReplyDelete