জ্বলদর্চি

গুচ্ছ ছড়া /(উৎসব ১৪২৮)/মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় দাস

গুচ্ছ ছড়া 

মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় দাস 


অবনীন্দ্র ১৫০ 


শুকতারা 

প্রথম আলোর প্রদীপগুলো
উঠলো হয়ে শিখাধারী,
মস্ত রবির সলতে তাপে
দীপ্ত পুরো ঠাকুরবাড়ি৷
যে যার মতো জ্বাললো আলো
সংস্কৃতির সব কানাচে,
বঙ্গ হল বিভূষিত
সে গৌরবের পরম আঁচে৷
এমনই এক কৃতি ছিলেন
পরম প্রিয় অবন ঠাকুর,
রবি কাকার আকাশ তলে
নীল ঝিলমিল রঙ রোদ্দুর৷ 

সাধনা 

রবি ঠাকুরের সাধনার ধন
সাহিত্যভরা 'সাধনা'য়
অবনীন্দ্রর প্রথম প্রকাশ
রঙ তুলি আর ভাবনায়৷
'স্বপ্নপ্রয়াণ' কাব্য মধুর,
দ্বিজেন্দ্রনাথ সৃষ্টি,
সে কাব্যের মাধুরী ধরতে
অবনী দিলেন দৃষ্টি৷
উৎসাহদাতা রবিকাকা তাঁকে
সুযোগ দিলেন স্বর্ণ,
তরুণ শিল্পী সেই শুরু পাওয়া
বহু প্রতিভার বর্ণ৷ 


তুলি 

নতুন দিশার খোঁজ দেখালেন
ভারতীয় চিত্রকলায়,
দেশ ও কালের গন্ডী ছেড়ে
ছড়িয়ে গেল খ্যাতির বলয়৷
স্বাধীনতার দেবী যেন
সন্ন্যাসিনী 'ভারতমাতা',
কি যে মধুর প্রশান্তিতে
আঁকেন 'বুদ্ধ ও সুজাতা'৷
'শেষ সজ্জায় শাহাজাহান' 
করুণ রসের ধারা ঢালে,
অসামান্য 'ওমর খৈয়াম'
আটকে ফেলে মায়া জালে৷
পরিপুষ্ট করে চলেন
শিল্পধারার চিত্রনদী,
অবন ঠাকুর কথা আঁকেন
চোখ দিয়ে রঙ পড়ি যদি৷ 



কলম 

রঙ তুলিতে জীবন বেঁধে
কলমটাকেও নিলেন তুলে,
অবন ঠাকুর ছবি লেখেন,
শব্দতে দেন দৃশ্য গুলে৷
'রাজ কাহিনী' 'শকুন্তলা'
'নালক' 'ক্ষীরের পুতুল' পড়ে
কোন্ ছোটরা হারায় নি মন?
ঘুম ভাঙে নি স্বপ্ন ঘোরে?
'আপন কথা' গেছেন বলে
বসে 'জোড়া সাঁকোর ধারে'৷
'রং বেরং' এর ঝরণা ঝরা
বইগুলো তাঁর হৃদয় কাড়ে৷ 



কাটুম কুটুম 

বয়স তখন ষাট ছুঁয়েছে,
আঁকাতে মন নেই,
কাঠ কুটোতে রূপ ধরাবার
চেষ্টা শুরু সেই৷
কুটুম যেমন যেচেই আসে
তেমন আসে ওরা,
ফেলনা-বাতিল কাঠকুটোরা
করেন কাটা জোড়া৷
খেলনা আদল পায় তারা সব
জানলা নতুন খোলে,
'ওবিন ঠাকুর' নতুন হয়ে
শিল্পতে রঙ গোলে৷


জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇


Post a Comment

0 Comments