জ্বলদর্চি

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা -৬০



সময়াদকীয়,

‘মোরা ছুটব, মোরা খেলব, বসে কুঁড়ে হয়ে থাকব না। ছাতি ফাটবে, মাথা ভাঙবে, তবু খেলা ছেড়ে উঠব না!’ কে লিখেছেন জানো? গুরুসদয় দত্ত। উনি ছিলেন ব্রতচারী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। আমাদের সময় স্কুলে স্কুলে ব্রতচারী ছিল। তাই তো, তোমরা স্কুল না গেলে কেমন করেই বা জানবে এসব কথা। তবে, এসব প্রয়োজনীয় জানা অজানা কথা উপন্যাসের মধ্যে অপূর্ব ভাবে বলে রতনতনু জ্যেঠু ফুলকুসুমপুর খুব কাছে লিখছেন। আমিও তোমাদের মতো কতো ভুলে যাওয়া জানা কথাগুলো মনে করে নিচ্ছি। আবার বলি, কুঁড়েদের কথা। কুঁড়েরা কেমন হয় জানো? ঐযে পি পু ফি সু র মতো। সেটা একদম ঠিক বলেছে মৌসুমী মাসি তার গল্পে। ঋভুর কথা মতো তোমরা কুঁড়েমি না করে রোজ প্রাণায়াম করবে কেমন? নাহলে ভানুপ্রিয়া দিদির ঘোষ স্যারের মতো মট্টু হয়ে যাবে। কখন প্রাণায়াম করবে? আরে পলাশ জ্যেঠু ছড়ায় যেমন লিখেছেন, রোজ ভোরে সূর্য যখন লাল টুকটুকে গাল নিয়ে ওঠে ঠিক তখন। আমি বেশ দেখতে পাচ্ছি। শীতের সকালে তোমাদের ঘুম থেকে উঠতে বলছি বলে তোমরা রেগে গেছো আমার ওপর। আর যদি বলি, শীতকাল এসে গেলো, চলো কোথাও ঘুরে আসি। তাহলে নিশ্চয়ই আনন্দে লাফিয়ে উঠবে? হ্যাঁ,  তোমাদের আনন্দ দিতে এবার থেকে প্রতি রবিবার বাসবদত্তা আন্টি বলবে ভ্রমণের গল্প। শুধু বেড়াতে গেলেই কিন্তু হবে না। ছবি তোলা চাই। দেখছ না অপু দাদা কত সুন্দর একটা নদীর ছবি তুলে উপহার দিয়েছে আমাদের। শেষ করার আগে আরো একটা কথা মনে করিয়ে দিই, ৩ রা ডিসেম্বর ছিল ক্ষুদিরামের জন্মদিন। বাকিটা বলবেন পীযূষ আঙ্কেল। এবার তোমরা চটপট লিখে ফেলো অসিতাভ, অনুশ্রুতি, পৃথা আর তুলিকার আঁকা তোমাদের কেমন লাগলো। - মৌসুমী ঘোষ।


ফুলকুসুমপুর খুব কাছে ২৬

রতনতনু ঘাটী

বাড়ি ফিরতে ফিরতে সন্ধে পেরিয়ে রাত নেমে পড়ল ফুলকুসুমপুর গ্রামে। যদিও ফুলকুসুমপুরের রাস্তায় ইলেক্ট্রিকের আলো আছে, তবু সন্ধে নামলে কেমন এক আশ্চর্য আলো-আঁধারি খেলা করতে থাকে গাছে-পালায়। যে কুঁড়ির রাতে ফুল হয়ে ফুটে ওঠার কথা, সেও সন্ধেবেলাতেই আনমনা হতে শুরু করে। আর যে ভোরের ফুল নিয়ে কবিরা কবিতা লেখেন, সেই ভোরের ফুল কখন যে রাত থাকতে-থাকতেই ফুটে উঠেছে, সে নিজে টেরই পায় না। 

   অনিচ্ছে ঠাকুরমা যে কথাটা দাদুকে বলতে সাহস পেলেন না, সে কথাই ছোট্ট বুম্বাকে বলার জন্যে ডাকলেন, ‘হ্যাঁ রে বুম্বা, বিলম্ব তো এখনও এল না? ও তো সন্ধের পর ভূতের ভয়ে কাঠ হয়ে থাকে সব সময়। ও একটা কী করে বাড়ি ফিরবে বল তো?’ 

   বুম্বা বিজ্ঞের ভঙ্গিতে ঘাড় নাড়ল খানিক। ঠাকুরমা গলাটা নিচু করে বললেন, ‘ওর আসার পথের দিকে তোতে-আমাতে খানিক এগিয়ে যাবি নাকি?’

   বুম্বা বলল, ‘ঠাকুরমা, দাদু দেখতে পেলে আর রক্ষে থাকবে না! এখনই পড়ার ঘরে সকলকে যেতে বলেছেন। আজ নাকি কবিতা আবৃত্তির ক্লাস নেবেন ইচ্ছেদাদু।’

   ঠাকুরমা চোখ দুটো ভুরুর দিকে তুলে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাই নাকি?’

   বুম্বাও তেমনই চোখ দুটো বড়-বড় করে বলল, ‘ও মা, তোমার মনে নেই ঠাকুরমা, আজ সকালে আমাদের গান্ধী আশ্রমে যাওয়ার কথা ছিল বলে ফোন করে বিপদভঞ্জনস্যারকে দাদু সকালে আসতে না বলে দিয়েছিলেন। আমাদের ক্লাস গোটা একটা দিন বন্ধ থাকবে তা তো হয় না। তাই দাদু সন্ধেবেলা আবৃত্তির ক্লাস নেবেন!’ 

   ‘তবে শুনেছি,’ অনিচ্ছে ঠাকুরমা বলতে লাগলেন, ‘তোর ইচ্ছেদাদু যখন স্কুলে পড়তেন, তখন ফুলকুসুমপুরে কোনও স্কুলই ছিল না। দাদুকে পড়তে যেতে হত অনেকটা দূরের মোহিনীমোহন হাই স্কুলে। ভাল আবৃত্তির জন্যে তোর দাদুর খুব নাম ছিলা! উনি তখন গুরুসদয় দত্তর দেশাত্মবোধক কবিতাই বেশি আবৃত্তি করতেন। সে ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়ের কথা! সেই যে কবিতাটা---‘মোরা ছুটব, মোরা খেলব, বসে কুঁড়ে হয়ে থাকব না। ছাতি ফাটবে, মাথা ভাঙবে, তবু খেলা ছেড়ে উঠব না!’

   বুম্বা গালে হাত দিয়ে বলল, ‘এ কী গো ঠাকুরমা? এ কবিতায় খেলা ছেড়ে ওঠার কথাই নেই। তা হলে পড়াশোনা হবে কখন?’

   ঠাকুরমা বললেন, ‘খেলাধুলোতে শরীর গঠন হয়। পড়াশোনা তো থাকবেই।’

   এমন সময় নীচে বিলম্বদাদুর গলা পাওয়া গেল। তা শুনে দাদু গম্ভীর গলায় দোতলা থেকে হুঙ্কার দিলেন, ‘বিলম্ব, এই কি তোর বাড়ি ফেরার সময় হল রে, হনুমান কোথাকার! তোকে এবার তোর মতো করে এখানে থাকার ব্যবস্থা করে নিতে হবে!’

   ততক্ষণে বিলম্বদাদু দোতলায় উঠে এসেছে। অনিচ্ছে ঠাকুরমাকে সামনে দেখতে পেয়ে বলে উঠল, ‘আপনি বলেন তো বড়মা, বড়বাবুর এ কী কথার ধরন হল? সব সময় এ বাড়িতে থাকা নিয়ে ঠেস দিয়ে কথা বললে কার আর এ বাড়িতে থাকতে ভাল লাগে বলুন? আমি এ বাড়িতে পড়ে আছি শুধু ছেলেমেয়ে ক’টার জন্যে! এদের মায়া কাটিয়ে উঠতে পারছি না তো! তা যদি পারতাম, তা হলে কবেই কেটে পড়তাম!’

   এবার অনিচ্ছে ঠাকুরমার গলায় দুঃখ ঝরে পড়ল, ‘সে কী রে বিলম্ব? আমার জন্যে তোর একটুও মায়া-মমতা নেই?’

   নিজের ভুল শুধরে নিল সঙ্গে-সঙ্গে বিলম্বদাদু, ‘এ কি অলক্ষুনে কথা গো বড়মা! আপনের জন্যে মায়া-মমতা হবে না, এ কী হয়? এ কি গলা বড় করে বলার অপেক্ষা রাখে নাকি? আপনি ভালবাসেন বলেই না এ বাড়িতে আমি পড়ে আছি! না হলে কবেই তেমোহানি সাঁতরে নিজের দেশে চলে যেতাম।’

   বুম্বা ফুট করে কথা ছুড়ে দিল, ‘ওই নদীর নামটা তো সকলে জানে। কিন্তু তোমার দেশটার নাম কেউ কখনও শুনেছে বলে তো মনে হয় না।’

   বিলম্বদাদু গলায় কান্না ঝরিয়ে বলল, ‘তুমিও আমাকে দাগা দিয়ে কথা বলবে বুম্বাদা? নাঃ! কাল সকালেই আমাকে আমার পথ দেখে নিতে হবে!’ তারপর একটু থেমে বলল, ‘নাঃ! ঠিক কালই বা কেন বড়মা? সরস্বতী প্রতিমা বায়না করেই এসেছি যখন, তখন এবারের সরস্বতী পুজোটা ভালয়-ভালয় মিটে যাক। তাপরের দিনই যেদিকে দু’ চোখ যায়...’ 

   বুম্বা হাসতে হাসতে বলল, ‘ততদিনে তোমার রাগ জল হয়ে যাবে! এ বাড়ি ছেড়ে আর তুমি যেতে পারবেই না!’

   অনিচ্ছেঠাকুরমা বললেন, ‘ততদিনে তোর দাদুরও রাগ আর থাকবে না। বিলম্বকে এক পলক দেখতে না পেলে যিনি অস্থির হয়ে ওঠেন, অতদিন কি আর তিনি রাগ ধরে রাখতে পারবেন? মনে তো হয় না!’

   বিলম্বদাদু অকারণে আমার পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে-দিতে বলল, ‘তবে বড়মা, বড়বাবু কিন্তু মানুষটি বড় ভাল! মনে কখনও রাগ পুষে রাখতে পারেন না।’ তারপর চোখ নাচিয়ে বলল, ‘না হলে কি আর মানুষ এমনি এমনি অত বড় হয় গো?’

   বুম্বা বিলম্বদাদুর এই গায়ে হাত বুলিয়ে দেওয়ার মানে বুঝতে বাকি রইল না। এ আসলে বুম্বাকে খুশি করার জন্যে এক রকমের ঘুষ দেওয়া ছাড়া আর কী?

   এমন সময় ইচ্ছেদাদুর গলা ভেসে এল, ‘বুম্বা, তুমি এখনও আসতে পারলে না আবৃত্তির ক্লাসে? যে মানুষটা সারা জীবন সব কাজে দেরি করে বলে তার নাম ‘বিলম্ব’ ছাড়া আর কী-ই বা হতে পারে? তুমি ওর সঙ্গে থেকে বিলম্বের গুণটাই রপ্ত করতে চাইছ নাকি?’

   বুম্বা দৌড় শুরু করার আগে চেঁচিয়ে বলল, ‘আমি এক্ষুনি আসছি দাদু! এক্ষুনি!’ 

   আবৃত্তির ক্লাসে পৌঁছতেই দাদু ঘোষণা করলেন, ‘আজ ক্লাসের প্রথম কবিতা আবৃত্তি করবে বুম্বা!’

   বুম্বা আবৃত্তি করার জন্যে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। বার কয়েক ঢোক গিলল। তারপর অন্নদাশঙ্কর রায়ের ‘খুকু ও খোকা’ কবিতা আবৃত্তি করতে শুরু করল:

‘তেলের শিশি ভাঙল ব’লে

খুকুর ’পরে রাগ করো।

তোমরা যে সব বুড়ো খোকা

ভারত ভেঙে ভাগ করো!

তার বেলা?’

   আরও খানিকটা আবৃত্তির পর দাদু হাত তুলে বুম্বাকে থামিয়ে দিয়ে ভরাট গলায় বললেন, ‘শাবাশ, বুম্বা! আমি জানতাম, তুই এই কবিতাটাই নির্বাচন করবি!’

   ইচ্ছেদাদুর সামনে কবিতা নির্বাচনের কৌশলটা শুধু বুম্বা একাই নয়, আজকের আবৃত্তির ক্লাসের সক্কলেই জানে। সে কৌশলটা আর কিছুই নয়। দাদুর সবচেয়ে পছন্দ হল দেশাত্মবোধের কবিতা। দেশাত্মবোধক কবিতা আবৃত্তি করলেই দাদুর মন জয় করা কুব সহজ। 

   এর পর দাদু তিন্নির দিকে তাকিয়ে হাত তুলে শুরু করতে ইঙ্গিত করে বললেন, ‘এবার তিন্নি!’ 

   তিন্নি গলাটা পরিষ্কার করে নিয়ে শুরু করল—‘আমি যতীন্দ্রমোহন বাগচীর একটা কবিতা বলছি। বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই/ মাগো আমার শোলোক-বলা কাজলাদিদি কই?/ পুকুর ধারে লেবুর তলে,/থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে/ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না একলা জেগে রই,/মাগো আমার কোলের কাছে কাজলাদিদি কই?’

   দাদু উদাস ভঙ্গিতে শুনছিলেন তিন্নির আবৃত্তি। বললেন, ‘আঃ! মনটা ভরে গেল রে!’ তারপর একটু থেমে থেকে বললেন, ‘তিন্নি তুই শুরর সময় ‘একটা কবিতা’ বললি কেন? ‘একটি’ কবিতা বলতে শিখিসনি? ‘একটা’ বললে কীরকম একটা তুচ্ছতার রেশ জড়িয়ে যায় না? এর পর থেকে ‘একটি’ বলবি, কেমন?’

   দাদুর কথায় ঘাড় নেড়ে সায় দিল তিন্নি। দাদুর মুখে হাসি ছড়িয়ে পড়ল। এবার দাদু বললেন, ‘শুরু কর বিন্নি, কোন কবিতা তোর নির্বাচনে?’

   বিন্নি বলল, ‘দাদু আমি একটি ছোট্ট কবিতা বলব। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা কবিতা ‘স্বাধীনতা’---‘শর ভাবে, ছুটে চলি, আমি তো স্বাধীন!/ ধনুকটা একঠাঁই বদ্ধ চিরদিন।/ধনু হেসে বলে, শর, জান না সে কথা--/আমারি অধীন জেনো তব স্বাধীনতা।’

   ইচ্ছেদাদু হাততালি দিয়ে উঠলেন, ‘আঃ! কী সুন্দর! তুই কবিতাটি বললিও চমৎকার!’

   এমন সময় অনিচ্ছে ঠাকুরমা এসে ঢুকলেন আবৃত্তির ক্লাসে।  হাসতে হাসতে দাদুকে বললেন, ‘ছোটরা কবিতা আবৃত্তি করল, তুমিও একটি কবিতা শোনাও না!’

   দাদু বললেন, ‘তুমি কী যে বলো অনিচ্ছে, এই বুড়ো বয়সে কবিতা বলব?’

   ঠাকুরমা বললেন, ‘কবিতা বলার আবার বয়স লাগে নাকি?  তুমি যেসব দেশপ্রেমের কবিতা বলে ছেলেবেলায় পুরস্কার পেতে, তার থেকে একটি কবিতা শোনাও। ওরা কখনও তো তোমার আবৃত্তি শোনেনি?’

   ইচ্ছেদাদু হাসতে-হাসতে বললেন, ‘এখন আর অত স্মৃতিশক্তির জোর নেই, বুঝলে অনিচ্ছে।’

   বুম্বা অনুরোধের গলায় বলল, ‘দাদু, তোমার কবিতা শুনবই। কবিতা বলো!’

   অগত্যা ইচ্ছেদাদু শুরু করলেন, ‘কুসুমকুমারী দাশের ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতাটি বলার চেষ্টা করছি। জানি না সবটা মনে পড়বে কিনা। আটকে গেলে তোরা হাসিস না যেন?’

   এই কথাতেই সকলে হি-হি করে হেসে উঠল। এর পর ইচ্ছেদাদু শুরু করলেন, ‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে/কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?/মুখে হাসি বুকে বল তেজে ভরা মন/মানুষ হইতে হবে এই যার পণ/ বিপদ আসিলে কাছে হও আগুয়ান/ নাই কি শরীরে তব রক্ত, মাংস, প্রাণ/ হাত পা সবারই আছে, মিছে কেন ভয়?’---এই পর্যন্ত বলে দাদু আটকে গেলেন। লাজুক মুখ করে বললেন, ‘এই যাঃ! আর তো মনে পড়ছে না!’

   অনিচ্ছে ঠাকুরমা এর পরের লাইনটা বলে দিলেন, ‘চেতনা রয়েছে যার সে কি পড়ে রয়?’

   সঙ্গে-সঙ্গে ইচ্ছেদাদু উঠে পড়লেন, ‘আজ এবার আবৃত্তির ক্লাস বন্ধ হোক। আমার বড্ড খিদে পেয়েছে!’ বলে রান্নাঘরের দিকে তাকিয়ে জোরে হাঁক পাড়লেন, ‘কই গো মাধুরী, খেতে দাও! সেই কখন গান্ধী আশ্রমে দু’ মুঠো ভাত খেয়েছি।’

   অনিচ্ছে ঠাকুরমাও উঠে পড়লেন, ‘চলো!’

   সকলে চলল খাওয়ার টেবিলের দিকে। পরিপালনকাকু চিড়িয়াখানার মেম্বারদের খাইয়ে বাড়ির উদ্দেশে যাবেন বলে দাদুর কাছে অনুমতির ভঙ্গিতে বললেন, ‘আমি আজ আসি বড়বাবু?’ 

   ইচ্ছেদাদু পরিপালনকাকুকে বললেন, ‘যাবে তো যাও! তবে একটা কথা শুনে যাও, আমাদের ফুলকুসুমপুর স্কুলমাঠের পাশে এবার গ্রামীণ কৃষিমেলা বসছে, শুনেছ তো? টানা তিন বছর এই মেলা বন্ধ ছিল। তা এবার তিনদিনের সেই মেলায় আমাদের হযবরল চিড়িয়াখানার মেম্বারদের নিয়ে একটা স্টল দেওয়া হবে। আমি অহেতুকপুর পঞ্চায়েত প্রধানকে ফোন করে বলেছি, একটা স্টলের জন্যে। গল্পকাকা তো ওই পঞ্চায়েত অফিসেই কাজ করে। ও স্টল পাওয়ার জন্যে সব ব্যবস্থা করে ফেলবে। শুধু ওকে মাঝে-মাঝে মনে করিয়ে দিতে হবে, এটাই তোমার কাজ। গল্পকাকার যা ভুলো মন!’ 

  একটু থেমে দাদু বললেন, ‘তা ছাড়া, পরিপালন, তুই তো আমাকে বলেছিলি ‘বড়বাবু, আমার খুব ইচ্ছে, আমাদের অহেতুকপুর অঞ্চলে যখন কৃষিমেলা আর পুষ্প প্রদর্শনী বসবে, তখন আমাদের হযবরল চিড়িয়াখানার জন্যে শুধুকাকাকে দিয়ে একটা স্টল নেবেন। আমাদের রাধাগোবিন্দ, মিঁউ, বিংগো আর কুমিকে নিয়ে যাব স্টলে। স্টলটার ভিতরে একসঙ্গে ওরা ছাড়াই থাকবে। কিন্তু কেউ কারও সঙ্গে ঝগড়া বা মারামারি করবে না, একসঙ্গে মিলমিশ করে থাকবে, খুনসুটি করবে বটে। তবে তা দর্শকদের কাছে ভারী মজার ব্যাপার হবে। তখন দেখবেন, মেলার সব লোকই এসে ভিড় করবে আমাদের হযবরল চিড়িয়াখানার স্টলের সামনে। চারদিকে আমাদের চিড়িয়াখানার সুনাম ছড়িয়ে পড়বে।’

   পরিপালনকাকা ঘাড় নেড়ে সায় বললেন, ‘হ্যাঁ, বলেছিলাম তো!।’ 

    গল্পকাকা দাদুর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘বাবা, আমি মনে করে স্টলের বুকিং করেই ফেলেছি। এখন স্টল কেমন করে সাজানো হবে, সে তুমি আর পরিপালন মিলে ঠিক করো! পারলে শুধুকাকাকেও সঙ্গে নিও। আমি ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকে জানানোর ব্যবস্থা করছি।’

      মিডিয়ার কথা শুনে বুম্বা বিন্নিদির মুখের দিকে তাকিয়ে কী যেন একটা ইঙ্গিত করল। বিন্নি কোনও উত্তর দিচ্ছে না দেখে বুম্বা গল্পকাকাকে জিজ্ঞেস করল, ‘মিডিয়া মানে কি টিভির লোকজনও আসবে?’

   গল্পকাকা গম্ভীর গলায় বললেন, ‘চেষ্টা তো করব ওদের আনতে!’

   দাদু বললেন, ‘খামোখা মিডিয়া-টিডিয়াকে বলতে যাবি কেন? এ তো আমাদের ত্রিপাঠী বাড়ির নিজেদের ব্যাপার? ওসব ঝামেলায় গিয়ে কাজ কী?’

   ততক্ষণে বড়বাবু আর শুধুকাকা কোথা থেকে যেন হন্তদন্ত হয়ে বাড়িতে ঢুকলেন। সামনে গল্পকাকাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বড়বাবু জিজ্ঞেস করলেন, ‘হ্যাঁ রে গল্প, আমরা নাকি এবার গ্রামীণ কৃষিমেলায় স্টল নিচ্ছি? লোহাপুলের ওদিকে লোকজনের মুখে কানাঘুষো শুনে এলাম?’

   ‘হ্যাঁ, নিচ্ছিই তো। বাবা বলেছেন। আমাদের হযবরল চিড়িয়াখানার মেম্বাররা এত ভাল, সকলে এমন মিলমিশ করে ছাড়া হয়ে থাকে বাড়িতে, এটা লোকে শুনলে বিশ্বাস করতে চায় না। এ কি আমরা বানিয়ে-বানিয়ে বলি নাকি? আজই গান্ধী আশ্রমে নিজের কানেই তো শুনলে,  অনন্ত দণ্ডপাট এ নিয়ে কত প্রশংসা করলেন।’

   শুধুকাকা বললেন, ‘আমাকে এ ব্যাপারে কিছু কাজ তো করতে দাও দাদা! আমি তা হলে খবরের কাগজকে ডাকার দায়িত্বটা নিচ্ছি? আমার স্কুলের বন্ধু দীপজয়ের দাদা এখন বড় খবরের কাগজের নিউজ এডিটর। আমি দীপজয়কে দিয়ে বলাব। তখন নিশ্চয়ই ওরা আমাদের নিউঝটা কভার করতে রিপোর্টার পাঠাবে।’  

   ঘাড় নেড়ে সায় দিলেন গল্পকাকা। ঠাকুরমা বললেন, ‘তোরা সব খাওয়ার টেবিলে চলে আয়। তোর বাবার খুব খিদে পেয়েছে!’

   ইচ্ছেদাদু বিরক্ত মুখে বললেন, ‘অনিচ্ছে, তুমি সব সময় যে-কোনও জরুরি কাজে বাগড়া দাও কেন বলো তো? এখন একটা জরুরি বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হচ্ছে। খাওয়াটা কি বড় হয়ে গেল?’

   ঠাকুরমা মিচকে হাসি চেপে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে চলে গেলেন। এবার দাদু বললেন, ‘চল, আমরা সকলে না হয় খেতে-খেতে এ নিয়ে একটা প্ল্যান রেডি করে ফেলি? ছোটরা সকলে চলো!’

   অনেক কথার পর ঠিক হল, হযবরল চিড়িয়াখানা এবার যেন অহেতুকপুর গ্রামীণ কৃষিমেলায় একটা মস্ত হইচই ফেলে দিতে পারে। সেইমতো সকলকে উদ্যোগ নিতে হবে। 

   হঠাৎ বিন্নি গল্পকাকাকে জিজ্ঞেস করল, ‘আমাদের বাড়ির নাম গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বইতে উঠবে না? তুমি যে মাকে একবার একবার বলেছিলে?’

   ইচ্ছেদাদু ঘাড় নেড়ে বললেন, ‘হ্যাঁ, সে চেষ্টাটাও তো করতে হবে রে! আমি একেবারে ভুলেই গিয়েছিলাম! ভাগ্যিস বিন্নিটা ঠিক সময়ে মনে করিয়ে দিল!’

   বুম্বা চোখ বড়-বড় করে বলল, ‘আমাদের বাড়ির নাম গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বইতে উঠবে? সত্যি বলো না গল্পকাকা!’

   কী মনে হল বুম্বার কে জানে? সে দাদুর এ কথার উত্তরে এঁটো হাতে চিৎকার করে উঠল, ‘বিন্নিদি, হিপ হিপ হুররে!’   

   তিন্নি, বিন্নি আর বুম্বা ঘুমোতে গিয়ে তাদের বড় খাটের এদিক থেকে ওদিকে গড়াগড়ি খেতে লাগল আনন্দে! অনিচ্ছে ঠাকুরমার রাধাগোবিন্দ কী বুঝল কে জানে! এদের হট্টগোলে তার হয়তো ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। সে বারান্দার সিলিং ফ্যানের ব্লেডের উপর বসে ঢুলছিল। এবার আনন্দে ‘ট্যাঁ-ট্যাঁ’ করে ডেকে উঠল।

   বুম্বা তিন্নিকে বলল, ‘কী যে মজা হবে রে তিন্নিদি, আমার এখন থেকে ভেবে ভীষণ আনন্দ হচ্ছে রে!’

   তিন্নির কাছ থেকে কোনও উত্তর এল না। বুন্বা ভাবল, তিন্নিদি মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছে। এরকম রোমাঞ্চকর ঘটনা আলোচনার সময় কেউ ঘুমিয়ে পড়তে পারে? এ কথা ভাবতে-ভাবতে একটু পরে বুম্বাও ঘুমিয়ে পড়ল!


খোকার সাধ
পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়


সুয্যিমামা ভোরবেলাতে 
লাল টুকটুক গাল।
মাতলা নদী, নৌকা চলে
উড়ছে রাঙা পাল।
ছোট্টখোকা নৌকা চড়ে,
বই খুলে তার,নামতা পড়ে,
আজ রবিবার,ইশকুলে তার
বলতে হবে কাল।।

ছোট্ট খোকার, বাপ ধরে মাছ
নদীর ধারে ঘর।
কাজ করে মা,বাবুর বাড়ি
তিনবেলা দিনভর।
বাপ মা গরিব-গুরবো ভারী,
পয়সা এলে চড়বে হাঁড়ি,
কেউ পাশে নেই,দেখবে তাকে
আত্মীয় বা পর।

ছোট্ট খোকার ইশকুলে রোজ
ছাত্র কত আসে।
সবার বাবার পয়সা অনেক
বন্ধু অনেক পাশে।
তাদের বুকে স্বপ্ন বাঁচে,
কিন্তু খোকার বাবার কাছে,
মাছ যবে নেই,ভাগ্যদেবী 
কাঁদিয়ে তাকে,হাসে।

ছোট্ট খোকার বুদ্ধি আছে
সব পড়া বেশ সোজা।
কক্ষনো তার অংক কষা
হয়না মনে,বোঝা।
ইচ্ছে, হলে এর চে বড়,
করবে খানিক পয়সা জড়ো,
কিনবে খাবার,আর ছোট ঘর
সঙ্গে,মাথা গোঁজা।

বাপ মা বড় কষ্টে থাকে
এই,সে খোকা দেখে।
বুদ্ধি করে, নিজের মতন
শান্তি পেতে শেখে।
বুদ্ধিটা তার বড্ড কাঁচা,
প্রার্থনাতে হয় কি বাঁচা?
ভাগ্যগুনে ইচ্ছেপূরণ
সাধ হয়ে কি টেকে?

তবুও খোকার,মনটা জেদী
জিততে হবে,তাতে।
বাবার খেয়ায় মন দিয়ে সে
নামতা শেখায় মাতে।
ঠিক জানে সে একটা ভোরে,
সুয্যিমামা স্বপ্নঘোরে,
মাথায় দেবে আলতো চুমো,
বর দেবে তার সাথে।।


প্রাণায়াম আর পানিপুরি
মৌসুমী রায় 


সেদিন ঋভুদের বাড়ির পাশ দিয়ে যেতে যেতে শুনি, ঋভু আর মামমামের টক!  আরে সেই টক টক চাটনি নয় বাপু! টকটকাটক। একেবারে হটকেকের মতই‌। নরম গরম! আবার টক ঝাল মিষ্টিও হতে পারে। কিম্বা মিষ্টিরিয়াস।হাইলারিয়াস?  সবটা শুনে তোমরাই বলো...

-মামমাম, তুমি লাষ্ট কবে ফুচকা খেয়েছ?

-টপাস!(জিভ দিয়ে সড়াৎ করে জল টেনে নিয়ে)
আবার ভর সন্ধেবেলা এসব কথা কেন? জিভটা কেমন ভিজে জ্যাবজেবে হয়ে গেল!

-উফ্ মামমাম! ইউ আর ইম্পসিবল। একটা ছোট বাচ্চা লোভ কন্ট্রোল করতে পারে আর তুমি পারছ না?
কন্ট্রোল, মামমাম কন্ট্রোল!

-পারি না ,পারি না যে একদম। বুকটা কেমন টনটন টনটন করে!( মামমামের চোখ দুটো ছলছল ছলছল করছে। বোঝা যাচ্ছে বহু কষ্টে আবেগ সংবরন করছেন।)

-শিখতে হবে। এমনিতে না পারলে দুই বেলা প্রাণায়াম করতে হবে তোমাকে।

-পা পা প্রাণায়াম! ফুচকার জন্য প্রাণায়াম! বলিস কি?

মামমামের চক্ষু চড়কগাছ। কারন তাঁর জীবনের মহামন্ত্র পি পু ফি শু ! তোমরা জানো তো ,পি পু ফি শুর গল্পটা? সেই যে দুই বিশ্ব অলস বন্ধু সারাদিন কেবল বিশ্রাম করত ,একদিন হয়েছে কি , তাদের ঘরে আগুন লেগেছে। দাউদাউ করে জ্বলছে চারদিক। আগুনের শিখা এমনকি বিছানা অবধি পৌ়ছে গেছে। এক অলস অন্যজনকে বলছে,
পি পু অর্থাৎ পিঠ পুড়ছে। তাতে অন্যজন বুদ্ধি বাতলে দিল, ফি শু মানে ফিরে শুতে! পুরো বাক্যটা বলতেও তাদের এত আলিস্যি!
তাহলেই বোঝো , আমাদের মামমাম কেমন কুঁড়ের হদ্দ! আর তিনি করবেন প্রাণায়াম।

-হ্যাঁ প্রাণায়াম। আমি অ্যালার্ম দিয়ে রাখব‌। কাল থেকেই শুরু করে দাও। 

-আর ফুচকা? 
মামমাম প্রায় কে়ঁদেই ফেলেন আরকি।

-সেও হবে! 
চোখ বন্ধ করে ঋভু বরাভয় মুদ্রায় মামমামকে অভয় দেয়। প্রাচীন কালের মুনীঋষিদের মত।

-তুমি টানা এক সপ্তাহ যদি রিগোরাসলী প্রাণায়াম করো...

-এক সপ্তাহ!তাও আবার রিগ্  ইয়ে মানে ঠিকঠাক করে! একটুও ফাঁকি দিলে...

-ফুচকা ক্যানসেল!

-ফুচকা  ক্যানসেল?
(মামমামের বুকে যেন লক্ষ্মণের শক্তিশেল!)
আচ্ছা বেশ। তাই নাহয় হল।
কিন্তু ,পানিপুরী ,গোলগাপ্পা, গুপচুপ এইসব ?
এগুলোও চলবে না? 
(মামমাম অ্যাপ্লিকেশনটা ঠুকে দিয়ে হাত জোড় করে ঋভুর সামনে!)

-নোওওও! ডোন্ট ট্রাই টু বি ওভারস্মার্ট মামমাম।
তুমি কি ভেবেছ, আমি ফুচকা সম্পর্কে কিছুই জানি না?
লাষ্ট ইয়ার হবিক্লাবের নাটকে আমি আর অনুভব যে ফুচকা আর ফুচকাওয়ালা সেজেছিলাম সে কথা কি ভুলে গেলে?

-ওরে বাবা! সে কথা কি ভোলা যায়? কর্পূর নাকি! ভোলাটাইল? ফুচকা ফুচকা করে
সেই ফুচকাপাড়া অবধি দৌড় করিয়েছিলিস।
সেখান থেকে ফুচকার ঝুড়ি ,ফুচকার বেতের স্ট্যান্ড যোগাড় করে আনা। তারপরে ইয়ে মানে এক ব্যাগ ফুচকা বানানো!

-ওরে বাবা ! সে এক কান্ড হয়েছিল, বলো মামমাম? সেই ফুচকার আটা যোগাড় কর রে। ময়দা, সুজি, বেকিং সোডা। ঠাসো বেলে মাখো।
কৌটার ঢাকনি দিয়ে কাটো। এক কড়াই তেলে ভাজো।ঠান্ডা করো ,তারপরে আবার রোদ্দুরে দাও। তবে গিয়ে হোলো ফুচকা রেডি!

-কেন? তারপর আলু,কাঁচালঙ্কা সেদ্ধ করো রে। মটর ভেজাও, তেঁতুল জল। ঝালঝাল ভাজা মশলা শুকনো খোলায় সেঁকে নাও। ধনেপাতা, গন্ধরাজ লেবু? আর টক দই? বাপ রে বাপ!

-আর তারপর নাটকের শেষে সবাই মিলে ফুচকা খাওয়া!  মনে আছে , মামমাম ,রিনিকা আন্টি কেমন , আরো ঝাল দাও, আরো ঝাল দাও বলে বাচ্চাদের মত বায়না জুড়ে দিলেন?


-তোদের যে কে বুদ্ধি দিয়েছিল, ফুচকা আর ফুচকাওয়ালা সাজতে! অনুভবকে কত্ত কষ্ট করে ফুচকার আত্মজীবনী মুখস্থ করালাম। সেই স্টেজে গিয়ে গোলগাপ্পা নিয়ে গোলমাল করলোই করল!

-হে হে হে ,দিব্বি বলছিল,  "আমি ফুচকা। তোমরা সবাই আমাকে চেনো। পানিপুরি, গোলগাপ্পা ,গুপচুপ ,পানি কা পঠাকা ,এমন কত্ত নাম ,তোমরা আমাকে দিয়েছ ভালবেসে।আমার জন্ম উত্তরভারতে।আরো নির্দিষ্ট করে বললে ,উত্তরপ্রদেশে। পূর্বপুরুষ রাজকচৌরী, ঐ তোমরা যাকে বলো, রাজকচুরি। নানান রকম পুরে ভরা ইয়া মস্ত কচুরি ,ইয়াম ইয়াম, উল্লুস ,ইয়ে মানে তার পরে কি যেন একটা...
ও আন্টি, এরপরে কি বলেছিলে? আন্টি আন্টি ...
ভ্যাঁ...
খিক খিক খিক!

- আমি যত বলে দিই, ওরে সেউ ভাজা।,সেউ ভাজা! কে কার কথা শোনে? সে তো ভেঁউ ভেঁউ...

-সে যাই হোক মামমাম, কথার ভুলভুলাইয়াতে ভুলিয়ে প্রাণায়ামটা ভুলোনা কিন্তু!

-আবার প্রাণায়াম!" তারে ভোলানো গেলোনা কিছুতে!"
(মামমাম প্রায় কাঁদোকাঁদো)

-ইয়েস, সকাল বিকাল।

-আবার বিকাল!

-ইয়েস ,বিকাল!

-সন্ধেটা অন্তত বাদ রাখিস। ঐ সময়ে আমরা দুজন মিলে একটু প্রকাশ মামার ফুচকার দোকানে...

-মামমাম! আবার ফুচকা?

-তাহলে কি ভেলপুরী ? নাকি আলুকাবলি?
বল ,বল
মামমামের মুখটা হাসিহাসি।

-নট অ্যাট কল ! অনুলোম বিলোম আর কপালভাতি প্রাণায়াম! গুণে গুণে একশবার...

-ওহো, নো! আমার বুকটা কেমন টনটন করছে...

-সে ক্ষেত্রে শীতলী ভস্ত্রিকা আর উজ্জ্বায়ী

-আমি আর নাই...

-কেন সূর্যপ্রণাম? সেটিকেও বাদ দিলে চলবে না।

-তুই আমাকে ফাঁসি দে।

-ছি ,মামমাম ছি! ছোটদের সঙ্গে কেউ এসব কথা বলে!

-ইয়ে মানে বলছিলুম  তুই আমাকে বেবাক ফাঁ ফাঁ ফাঁসিয়ে দিলি (  ফেঁসে গিয়ে মামমামের মুখটা দেখবার মত হয়েছে)

-কেন ? স্টাডিলিভের সময় তুমি বুঝি আমাকে মাথায় তুলে নাচো?
য‍্যায়সী করনী ব্যায়সী ভরনী! সিম্পল মামমাম সিম্পল! টিট ফর ট্যাট...

এই বলে ঋভু গ্যাঁট গ্যাঁট করে বেরিয়ে গেল।
বুঝিবা ফুচকা খেতেই গেল। মামমাম ফ্যালফ্যাল করে সেদিক পানে চেয়ে প্রশ্বাস টেনে ফোঁসফোঁস শুরু করলেন...
ঔম্!






ঘোষ স্যার 

ভানুপ্রিয়া মাহাত 
অষ্টম শ্রেণী, জওহর নবদয় বিদ্যালয়
পশ্চিম মেদিনীপুর


আমাদের এক স্যার আছে 👨🏻‍🏫 
কোকড়ানো তার চুল 👦🏻
হোমওয়ার্কের খাতায় তিনি 📗
খুঁজতে থাকেন ভুল 👀

চোখে চশমা ,🤓 একটু মোটা 😃
 পড়ান তিনি বেশ  👨🏻‍🏫
হোমওয়ার্ক না নিয়ে গেলে 📝
আমরা সবাই শেষ 🤐

স্যারের তৈরি 3কে রুল 🤓
ভুলিনি তো আজও 🙂
স্যার বলতেন সময় করে ⏰
ডায়েরি লেখা শেখো 📒

ডায়েরি লিখে তৈরি করো 🖋️
নিজের টাইম মেশিন ⌚🕹️
ভ্রমণ করো নিজের অতীত 📌
Enjoy your time ⏳




ধারাবাহিক 
চলো যাই
রাঁচি ( পর্ব ১)
কলমে - বাসবদত্তা কদম

   
তোমরা নিশ্চয়ই অনেকেই রাঁচি ঘুরে এসেছ। দেখত তোমাদের সাথে আমার রাঁচি ভ্রমণের গল্পটা মেলা কিনা? 
সেবার আমরা যখন রাঁচি গেলাম, আমি তখন বেশ ছোট। ক্লাস থ্রি। দুর্গাপুজো পেরিয়ে কিন্তু লক্ষীপুজোর আগে। আর রাঁচিও এখনকার মত এত চকচকে স্মার্ট হয়নি, সে তখনও পুরোমাত্রায় বিহারী। ঝাড়খন্ডী হয়েছে সে অনেক পরে দুহাজার সালে। স্মার্ট সিটি হোল এই তো সেদিন। রাঁচি যে এখন ঝাড়খন্ডের রাজধানী তা তোমরা জানো। এটা তার অনেক আগের কথা। এটা সেই ক-বে-কার কথা জানো? ১৯৮২/৮৩ সালের। না চোখ কপালে তুলো না প্লিজ। আমরা তখনই ছোট ছিলাম যে। বিশ্বাস না হয় বাড়িতে জিজ্ঞেস করে দেখ। তা বলে আমাকে বুড়ো ঠাউরো না, আমি আসলে তোমাদের থেকেও খানিকটা ছোট, বয়স বাড়তে গেলেই ঘুরিয়ে দিই চাকাটা উল্টোদিকে। সেই খেলাটা নাহয় পরে শিখিয়ে দেব। এখন সেই কবেকার রাঁচিকে দেখ তোমরা। অত পুরনো ছবি তো আমার কাছে নেই। যদিও বাবা তুলেছিল ছবি, কিন্তু সেসব কোথায় যে গেল। আমার বোন গল্প শুনে শুনে যেমন এঁকেছে, কারণ ওর তো তখনও জন্মই হয় নি। আর কয়েকটা ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া। অন্তর্জাল জানো তো? ইন্টারনেট গো। খুব হাসি এবার?

ট্রেন থেকে রাঁচি প্ল্যাটফর্মে নামলাম সকালবেলা। বেশ সকাল, ঠান্ডা ভাব। প্ল্যাটফর্মের লোকজন টুপি আর সোয়েটার পরা। একটা অদ্ভুত মজা আমি লক্ষ্য করেছি সব ঠান্ডার জায়গায় গিয়ে, স্থানীয় অধিবাসীরা কিন্তু সোয়েটার আর মাফলার পরেন সবার আগে। তুমি আমি তখনও হাফ হাতা জামা/শার্ট গায়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। ওনারা আসলে জানেন কখন থেকে গরম জামা পরা শুরু করতে হবে। তা না হলেই ঠান্ডা লেগে যাবে। আর শীতের শুরুতে ঠান্ডা একবার লাগলে সে চট্‌ করে যায় না, এ সবাই জানে। 

রাঁচীর স্টেশনে নেমে রেললাইন ক্রশ করে একটুখানি এগোলেই রিক্সা স্ট্যান্ড সেখান থেকে রিক্সা নিয়ে আমরা রওয়ানা হলাম বাবার অফিসের হলিডেহোমের উদ্দেশ্যে।
বিশাল এক সবুজ প্রান্তর জুড়ে ছিল সে হলিডেহোম। বাবার বন্ধু ব্রজেন কাকু, কাকিমা, কাকুর মেয়ে টুকুন আর ওর ভাই মুকুট। ওরা চার আর আমরা তিনজন মিলে আমরা সাতজন। আমরা সেই সাতজন, দুটো রিক্সায় চেপে, বেডিং বাক্স নিয়ে হলিডেহোমের গেটে পৌঁছলাম। সেখানে পাগড়ীপরা দারোয়ানের খাতায় আমাদের নাম লেখা হোল। আমাদের পাড়াতেই থাকতেন কাকুরা। ওনার মেয়ে টুকুন আর আমি একই স্কুলে পড়ি। ওর ভাই মুকুট তখন সদ্য দুলে দুলে হাঁটতে শিখছে।

হলিডেহোমের বাইরের গেটের মাথায় গোলের আধখানা কেটে তার উপর সাউথ ইস্টার্ণ রেলওয়ে লেখা। মেরুণ রঙের ওপর বোধহয় সোনালী দিয়ে লেখা হয়েছিল। তার তখন মেরুণ রং উঠে টিন টিন একটা রং বেরিয়ে পড়েছে। সেই বড় চাঁদার দুদিকে দুটো গাছ, একটা বোগনভলিয়া, আরেকট লতানো কোনো ফুলের গাছ। দুটোতেই অল্প অল্প ফুল হয়েছিল তখনও। হলিডেহোমের হাতায় প্রচুর জায়গা। ঢালাও সবুজ ঘাস, সেখানে আবার কয়েকখানা স্লিপ, মেরি গো রাউন্ড আর দোলনাও বসানো আছে, টুকুন আমায় দেখে, আমি ওকে। আমাদের আর পায় কে। হলিডেহোম ঘিরে বড় উঁচু প্রাচীর। প্রাচীরের গায়ে আবার গোল করে কাঁটাতার দেওয়া। প্রাচীরের ধার দিয়ে দেবদারু গাছের সারি। যেমন যেমন পাঁচিল গেছে, দেবদারুও সঙ্গে সঙ্গে ঘুরছে। ভিতরে আরো অনেক গাছ ছিল, যার মধ্যে একটা ছিল বিশাল কালোজাম গাছ। আম আর কাঁঠাল গাছ আমি তখনও চিনতাম।

রাঁচিতে অবশ্য আম কাঁঠাল ছাড়াও প্রচুর গাছ হয় যেখানেই গেছি, শাল গাছ দেখেছি প্রচুর। এছাড়া ওখানে মহুয়া, সেগুন, বহেড়া, শিরিষ, কেন্দুয়া এসব গাছও অনেক। এসব ওখানের জঙ্গলের স্বাভাবিক সাধারন গাছ। মাইলের পর মাইলের জঙ্গলে হয়ে থাকে আপনা থেকেই। আর আছে কত যে পাখি। অবশ্য গাছ থাকলে পাখি থাকবেই, সে তো তোমরা জানোই। কোকিল আর বুলবুল তো আমাদের দেশের প্রায় সব জায়গাতেই দেখতে পাওয়া যায়। সেই যে কুহু, কুহূ ডাকা কোকিল Asian Koel সেই এখন ঝাড়খন্ডের জাতীয় পাখি। কি চেনা আমাদের সবার। অবশ্য ঝাড়খণ্ডও একেবারেই পাশের রাজ্য আমাদের। হলিডেহোমের বাগানে অনেক পাখি আসত। তার মধ্যে চড়াইয়ের সাইজের ছোট ছোট অন্য অনেক পাখি আসত। তবে তারা যেমন ছিল, আমাদের চেনা ছাতার, চড়াই এরাও ছিল।  

হলিডেহোমে ঢুকতে, আমাদের জন্য বরাদ্দ হলো একটা ছোট বাংলো। মাঝখানের বাংলোটায় অন্য এক জেঠু আর জেঠিমা, তার পরেরটায় টুকুনরা। এবাবা পাশেরটা টুকুনদের নয়, মনটা একটু খারাপ হোল। বাংলোয় ঢুকে একটা বারান্দা, তারপর একটা ঘর, তার পর আবার বারান্দা। এর পরেই সিমেন্ট বাঁধানো উঠোন আর তার ডানদিকে প্রথমে রান্নাঘর, এরপর বাথরুম। রান্নাঘরে আমার ঠাকুমার উনুনের মতন দুটো উনুন। ঠিক পাশাপাশি। বাঁধানো উঠোনের শেষেই আরেকটা দরজা। সেটা খুলে দিতেই, সবুজ ঘাস, দেবদারু গাছ আর বাংলোর সেই পাঁচিল। ঘুরে এদিকে এসেছে। দরজা খুলতেই দেখি ঘাসের ওপর কয়েকটা খরগোশ; কি সব খুঁটে, খুঁটে খাচ্ছে। ওদের ধরতে যেই দৌড়েছি অমনি ওরা কোথায় যে গিয়ে লুকিয়ে পড়ল। খুব দুষ্টু। ফিরে এসে দরজা বন্ধ করে ওপরে তাকিয়েছি ওমা! দেখি কি (ক্রমশঃ)


স্মরণীয়
(ক্ষুদিরাম বসু)
কলমে - পীযূষ প্রতিহার

কিশোর স্বাধীনতা সংগ্রামী বা কিশোর শহীদ বললে আমাদের যে নামটি প্রথম মনে আসে সেটি ক্ষুদিরাম বসুর। ১৮৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর নিকটস্থ মৌবনী/মোহবনী (হাবিবপুর) গ্রামে। তার পিতার নাম ছিল ত্রৈলোক্যনাথ বসু এবং মাতা ছিলেন লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী। ক্ষুদিরামের আগে তার দুই ভাই অকালে মারা গিয়েছিল বলে এই সন্তানকেও অকালে হারানোর ভয় হয়েছিল তার মা-বাবার। তাই তখনকার বিশ্বাস অনুসারে তিনি এই সন্তানকে তার দিদির কাছে তিন মুঠো খুদের( ভাঙা চালের অংশ) বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। খুদের বিনিময়ে কেনা হয়েছিল বলে তার নাম রাখা হয় ক্ষুদিরাম। ক্ষুদিরাম তার পাঁচ বছর বয়সে মা কে হারান, তার একবছর পর বাবাকে। এরপর তার বড় দিদি অপরূপা তাকে নিজের কাছে রেখে মানুষ করেন। অপরূপার স্বামী অমৃতলাল রায় ক্ষুদিরামকে পড়াশোনার জন্য তমলুকের হ্যামিল্টন হাইস্কুলে ভর্তি করে দেন।১৯০৩ খ্রীষ্টাব্দে তমলুক ছেড়ে মেদিনীপুর চলে আসেন ও মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন। এই স্কুলে পড়ার সময় থেকেই ক্ষুদিরাম শ্রী অরবিন্দ ঘোষ ও সিস্টার নিবেদিতার স্বাধীনতা বিষয়ক বক্তৃতায় উদ্বুদ্ধ হন ও অনুশীলন সমিতিতে যোগদান করেন। ১৫ বছর বয়সে প্রথমবার ব্রিটিশ শাসন বিরোধী পুস্তিকা বিতরণের অপরাধে গ্রেফতার হন। মেদিনীপুরে তিনি হেমচন্দ্র দাস কানুনগো, সত্যেন্দ্রনাথ বসুর মতো বিপ্লবীদের সংস্পর্শে আসেন এবং অল্পদিনেই সকলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। এদিকে আলিপুর প্রেসিডেন্সী বিচারালয়ের মূখ্য বিচারক(হাকিম) ডগলাস কিংসফোর্ড তার কঠোর শারীরিক সাজা দেওয়ার জন্য কুখ্যাত হয়ে ওঠেন বিপ্লবীদের কাছে। এই সময় হেমচন্দ্র কানুনগো ও বারীন্দ্র ঘোষ মিলে কিংসফোর্ডকে মারার লক্ষ্য স্থির করেন। ১৯০৮ সালে ব্রিটিশ পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে কিংসফোর্ডকে বিহারের মুজফফরপুরে বদলি করে দেয়। সেখানেও বিপ্লবীরা হাজির হয় তাকে হত্যা করতে। প্রফুল্ল চাকী ক্ষুদিরামকে সঙ্গে করে ছদ্মবেশে মুজফফরপুর যান। ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল যথাক্রমে হরেন সরকার ও দীনেশ চন্দ্র রায় ছদ্মনামে একটি সরাইখানায় প্রায় তিন সপ্তাহের বেশি সময় থেকে কিংসফোর্ডের গতিবিধি লক্ষ্য করে ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারা ভুল করে প্রিঙ্গল কেনেডি ও তার মায়ের গাড়ীতে বোমা মারেন। তারপর প্রায় পঁচিশ মাইল হেঁটে ওয়াইনি স্টেশনে পৌঁছেও ধরা পড়ে যান। এদিকে প্রফুল্ল চাকীও ধরা পড়ার পূর্বমুহূর্তে নিজ মুখে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন। ১৯০৮ সালের ২১ মে তার বিচার শুরু হয়। মামলাটি পরিচিতি পায় আলিপুর বোমা মামলা নামে। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়। ১৯০৮ সালের ১১ আগষ্ট মাত্র ১৮ বছর ৭ মাস ১১ দিন বয়সে তিনি হাসিমুখে ফাঁসির দড়ি গলায় পরেন।

পাঠপ্রতিক্রিয়া
( জ্বলদর্চি ছোটবেলা উৎসব সংখ্যা -৭ পড়ে কবি গল্পকার পারমিতা মন্ডল যা লিখলেন)  

জ্বলদর্চি ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা ৫৮,উৎসব সংখ্যা ৭

সবার মন কেড়ে নিয়েছে ছোটোবেলা জ্বলদর্চি
তারই উৎসব সাত সংখ্যার আলোচনা আমি করছি।
সারপা নাচের ছবি এবার প্রচ্ছদে জ্বলজ্বল 
সুদীপ পাত্র মহাশয়ের চিত্রে উৎসব ঝলমল।
সম্পাদকীয় পড়ার আমার ভীষণ আছে লোভ
এটা না পড়লে থাকে মনের ভেতর ক্ষোভ।
মৌসুমী দিকে এটার জন্য অনেক ভালোবাসা
এটা পড়েই পত্রিকা পড়ার জাগে মনে আশা।
জয়া চৌধুরীর স্প্যানিশ থেকে বাংলায় অনুবাদ
গল্পটি পড়ে পেলাম আমি অন্যরকম স্বাদ।
কেমন করে ক্লারিতা দেখো দুষ্টুমি গুলো করে
অদৃশ্য হয় কেমন করে, আবার কেমন ফেরে!
সন্দীপন রায় ছড়া লিখেছেন, আমার খুশি নাম
ছড়া পড়ে মনটি ভরে,মন ছিল ফাঁকা খাম।
খাড়াপাড়ার ছড়া পড়ে আমি হেসেই কুটোপাটি
স্বপ্ননীল রুদ্র মশাই, ভাবি বসে থাকাই মাটি।
গৌতম বাড়ই এর ফুলবাড়ী ছড়া মনে আঁচড় কাটে
ফুল এলো ফুলবাড়ী যখন সূয্যি গেছে পাটে।
আসছে পুজো রচনা হয়েছে মলয় সরকারের হাতে
আনন্দ বিষাদ সব মিলিয়ে ছড়ায় যে মন মাতে।
অদিতি দিদির মায়া,মায়ায় জড়ায় আমার মনকে
বুতুল ভুল বুঝলেও শেষে, বুঝতে পারে মাকে।
বাবা-মা সবাইকেই অনেক অনেক ভালোবাসে
একটু ভালোবাসা ভাগ হোক না,তাতে কি যায় আসে?
সুব্রত দেবের গল্প ভালো, জন্মদিনের উপহার 
বই তো সবচেয়ে ভালো বন্ধু, ভালো বন্ধু কি আছে আর? 

তবে এখানে মনোজ আশিস মনের দুজন সখা
এইরকম ভালো বন্ধু পেলে মন খায় না ধোঁকা।
সুহেনা মন্ডলের সিংহের খোঁজে ভালো লাগলো খুব
কন্যা আমার ছটফটে তবে লেখাটি অপরূপ।
আশুদাদার বিপদ পড়ে বুঝলাম একটা কথা
আরশোলার ও দুঃখ হয়, মনে লাগে ব্যথা।
অমিত দাদার গল্প নিয়ে কিছুই বলার নেই
আনন্দে মন ভরে উঠলো, গল্প পড়লাম যেই।
জলের পোকা জলে যা, সবার মন কেড়ে নেবেই
ভাষার এমন কারুকার্য মনে গ্ৰন্থিত হবেই।
এবার আসি ভ্রমণে, লিখেছেন বাসবদত্তাদি
আব্বে জলপ্রপাত ছাড়াও দেখ,আছে কত কি!
এমন ভ্রমণ কাহিনী পড়ে যেতে ইচ্ছা করে
কবে করোনা যাবে বল একদম যে মরে।
ছবিগুলোও ভারি সুন্দর, হয়েছে ভীষণ খাসা
সমস্ত চিত্রশিল্পীদের জানাই অনেক ভালোবাসা।
সেই ছোটোবেলা আসে ফিরে এটাই মনে হয়
অবশেষে বলি আমি জ্বলদর্চির জয়!

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

আরও পড়ুন 

Post a Comment

0 Comments