Gen Z poem and the pioneer of Gen Z poem, Poet Arun-4/Dr. Ranjit Kumar Sinha
Gen Z poem and the pioneer of Gen Z poem, Poet Arun-4
Dr. Ranjit Kumar Sinha
কবি অরুণ Gen Z কবিতা ভাবনার পথপ্রদর্শক ৷ তাঁর মতে পরমচেতনাই Gen Z এর কবিতাভাবনার সূচক , নিয়তি ও পরিণাম ৷
অরুণ শুধু কবি নন, তিনি একজন দার্শনিকও৷ তাঁর কবিসত্ত্বার পাশাপাশি সমান্তরালভাবে এগিয়ে চলেছে এক দার্শনিক সত্ত্বাও ৷ যার সাহায্যে তিনি খুব সহজেই মেলে ধরেন কবিতার কঠিন সব সমীকরণের অভ্যন্তরীণ সহজ দর্শন ৷
তাঁর অনুভবে কবি ও কবিতার সম্পর্ক , কবি মনন, কবিতা সৃষ্টির রহস্য , কবিতার অন্তর্নিহিত দর্শন ধরা পড়ে সহজ , সাবলীল ও স্পষ্টভাবে ৷
কবি অরুণের কবিতা বিষয়ক বিভিন্ন অনুভব তুলে ধরলেন কবি-প্রাবন্ধিক-অধ্যাপক ড. রঞ্জিত কুমার সিন্হা ৷
Part-4
আবেগবর্জিত কবিতা
সব শিল্প সৃষ্টির সময় আবেগের প্রয়োজন হয়। বাস্তবে কোনো কিছুতে সম্পূর্ণরূপে আবেগের বর্জন অসম্ভব। আবেগের নিয়ন্ত্রণ হয়, বর্জন নয়। সুতরাং আবেগবর্জিত কবিতা অর্থহীন। নিজস্ব রীতি, ভাবনার কোনো অনুভূতি কবিতার মধ্যে তৈরি করতে গেলে প্রয়োজন আবেগের উপর কর্তৃত্ব রাখা। আবেগের নিয়ন্ত্রণ। আবেগের নিয়ন্ত্রণ না ঘটলে কবিতায় পুনরাবৃত্তি চলে আসে। অর্থাৎ পূর্ববর্তী কোনো কবির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়েন পরবর্তী প্রজন্মের কবিরা।
বিষয়ের কবিতা
অনেকে প্রশ্ন করেন— কেন অন্তমিল, ছন্দ, বিষয়ের কবিতা লিখবো না ? এর সহজ উত্তর, এসব বিষয়ে অনেক কাজ হয়েছে তাই। বিষয়হীনতা একটা নতুন পথ। এটা সত্য যে বিষয়হীনতা কবিকে মুক্ত করেছে। অন্যদিকে বিষয় তাকে একটি গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ রাখতে চায়।
বিষয়হীনতার পথ
বিষয়হীনতা হল বহু বিষয়ের সমন্বয়। অন্যভাবে বলা যায় প্রতিটি কবিতাই বহু অণুকবিতার সমন্বয়। প্রতিটি অণুকবিতা নানা বিষয়ের হতে পারে। কিন্তু মূল কবিতা কোনো বিষয়কে নির্দেশ করবে না।
বিষয়হীনতা কবিকে মুক্ত করে। কবিকে অজস্র উপদানে সমৃদ্ধ করে। বিষয়হীনতা কবির বিস্তার পথ, ভ্রমণ পথ, যাত্রাপথ। এই যাত্রা নানাভাবে হতে পারে।
এক
প্রাথমিক অনুরণন থেকে কবি তাঁর যাত্রা শুরু করে অন্য কোনো জায়গায় নিজেকে মুক্ত করেন। তাঁর যাত্রাপথে পাওয়া অজস্র অনুভূতির সাহায্যে গড়ে উঠল কবিতা। এক্ষেত্রে সৃষ্টির প্রাথমিক অনুভূতি আর ফিরে আসে না।
দুই
কবি প্রাথমিক অনুভূতিকে সঙ্গে নিয়ে চললেন। তাঁর চলার পথে বিভিন্ন অনুভূতি নিয়ে গড়া কবিতার মধ্যে আবার কখনো প্রাথমিক অনুভূতির পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। পুনরাবৃত্তি ঘটলেই যে কবি বিষয় নিয়ে লিখেছেন এটা বলা যায় না।
তিন
প্রাথমিক অনুভূতি থেকে কবি যাত্রা শুরু করলেন। অবশেষে এক জায়গায় নিজেকে মুক্ত করলেন। আবার প্রাথমিক অনুভূতি থেকে নতুনভাবে নতুনপথে যাত্রা শুরু করলেন। ব্যাপারটা অনেকটা একই ঘর থেকে বিভিন্ন দিন বিভিন্ন দিকে যাত্রা করার মতো।
কবিতা সমাজেরই কথা বলে
কবিতার উপাদানগুলো সমাজের মধ্যে ছড়ানো থাকে। সুতরাং কবিতা সমাজেরই অজস্র উপাদানের কথা বলে। কবিকে আলোড়িত করা সমাজের বিভিন্ন অনুভূতি, কবি লেখেন তাঁর কবিতায়। কিন্তু বিভিন্ন কবির উপলব্ধির, বলার ভাষা স্বতন্ত্র। কবির বলার প্রকৃতি, ভাষা রাজনৈতিক নেতার মতো হবে না। সুতরাং কবিতার মধ্যে নেতার মতো বক্তব্য খোঁজার চেষ্টা করা অনুচিত।
কবির ভূমিকা অনেকটা পাচকের মতো
প্রকৃতিই কবিতার উপাদান তৈরি করে রাখে। কবির ভূমিকা পাচকের মতো। রান্নার উপাদানগুলো আমাদের হাতের কাছে ছড়িয়ে আছে। 'কতটা' কী নিলে রান্নাটি সুন্দর, সুস্বাদু হবে তার দায় পাচকের। শুধু হরেক মশলা ছড়িয়ে রান্নাকে সুন্দর করা যায় না। জল, আগুনের পরিমাণের ধারণাও বিশেষ প্রয়োজন। কবিতার এই আগুনই হল চেতনা। উপাদানগুলিকে সঠিক মাত্রায় সাজিয়ে তাকে নিজস্ব আবেগ-চেতনা-অতিচেতনা কিংবা পরমচেতনার সমন্বয়ে সাজিয়ে কবিতা সৃষ্টি করাই কবির কাজ।
শব্দের কোনো অর্থ নেই
কবিতায় ব্যবহৃত শব্দের অর্থ আছে। কিন্তু শব্দকে শুধু আভিধানিক অর্থে ব্যবহার করে। তাকে সীমাবদ্ধ করার প্রয়োজন নেই। যে কোনো শব্দকে একটি নির্দিষ্ট অর্থের বাইরে গিয়েও ব্যবহার করা যায়। প্রয়োগ দক্ষতায় যে কোনো শব্দ অর্থগত ব্যাপকতা, বৈচিত্র্য পায়।
নতুন শব্দ সৃষ্টি
নতুন শব্দ সৃষ্টি আসলে শব্দের নতুন রূপের সৃষ্টি। কোনো শব্দ শুধু প্রয়োগেই অর্থগত ব্যাপকতা, বৈচিত্র্য পায়। শব্দের রূপ পরিবর্তনের দ্বারা শব্দের অর্থগত, অনুভূতিগত বৈচিত্র্য তৈরি করা হয়। এবং সেই সঙ্গে ব্যবহারের পরিধিকে বাড়ানো যায়।
কবিতায় সুর থাকবেই
শব্দের একটি সুর আছে, ধ্বনি আছে। সুর আছে বাক্যেরও। কোনো কিছু সুরবর্জিত নয়। তবে দেখতে হবে ব্যাপারটা যেন সুরেলা না হয়ে দাঁড়ায়। সুরেলা ধ্বনি স্রোতের মতো। পাঠককে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এর ফলে সুরেলা স্রোতে অনুভূতি নষ্ট হয়। প্রকৃত অনুভূতি পেতে হলে কবিতায় সুরের অনিয়মিত উত্থান-পতন জরুরি।
কবিতার শরীর : ১ম সুর + ২য় সুর + ৩য় সুর + ১ম সুর + ৩য় সুর +....... ইত্যাদি।
Comments
Post a Comment