দূর্জ্ঞেয় সেই জিরাফ
গৌতম বাড়ই
বাবা অসুস্থ হলে পাশ থেকে দেখতাম
বুকের ধুকপুকুনি ওঠানামা
আর এইভাবে দেখতে দেখতেই একদিন
বাবা আর মায়ের নিঃসাড় দেহের দিকে
অবাক হয়ে চেয়েছিলাম
এক একদিন স্বপ্নের মৃত্যুগুলোও
কেমন যেন সত্যি হয়ে ওঠে
আর সত্যিগুলোকে মিথ্যে ভাবি আর
মিথ্যেগুলো সত্যি হয়ে ওঠে পরপর
ভাবনার সতেজে মিহি মখমল কোমল উষ্ণতা
রাকা! রাকা! রাকা! বলে ছুটে গিয়েছি
বালির প্রান্তরে যেখানে পা ভিজেছে সাগরজলে
সাগর মানেই তো নীলজল মৃত্যুর হাতছানি
আয় তবে আখড়াই ছেড়ে অনন্তসিন্ধু
সাঁজালিতে গলে পড়ছে আহ্লাদী চাঁদ
কে তুমি শিখিয়েছিলে ভৈরবী মৈথুন?
কে তুমি দিয়েছিলে অনন্ত মৃত্যুর স্বাদ?
আমি ছেড়ে গেলে তুমি, তুমি ছেড়ে গেলে
রেখে যাবে শত শত সন্তান সন্ততি
নোনাজল বালিচর সহস্রাব্দের স্তম্ভ
চুপচাপ চুমু খায় আকাশের ঠোঁটে
যেখানে দাঁড়িয়ে থাকে আজও কিলিমাঞ্জারো
চাঁদেরপাহাড় ছোটোনাগপুর মালভূমি
আমি বাতাসার থেকেও ছোটো
চিনির দানার মতন মিষ্টিমানুষের গল্প শুনেছি
বৃষ্টির এক ফোঁটা জলে গলে গলে
নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিল উদ্বায়ীদের মতন
অনেক রাতের শেষে মুচলেকা দেওয়া
এক সুতীব্র ভোর হয় অগাধ
অনভ্রবৃষ্টির মতন চিন্তন মধুর হয়ে ওঠে
উড়ন্ত বকের ঝাঁকে তারপর
মিঠে রোদ লাগে
এক আলোকিত বৈতালিক তান
রাকা! রাকা! রাকা! বলে যেই ছুটে যাওয়া
এক পোড়ো মাঠের ওপর ভিত গাড়ছিল
সুবর্ণ চাঁদের দেওয়াল
যেখানে মলয়বাতাসের প্রজাপতি ওড়ে
হিম হয়ে আসে পূর্বপুরুষের কঙ্কাল হাড়গোড়
বাদুড়ের নিঃশ্বাসে শত ভাইরাস শুনি
আসলে তো ভাইরাস সেজেগুজে থাকে
পবিত্র পিলেচমকানি কথারা ঘরবাড় পেরিয়ে
চিলকোঠায় জমা করা থাকে
প্রেমের লগ্নে তুমি যে প্রেম পাও
সেই প্রেম আর কেউ মেখে করে খেলা?
যে খেলা উনিশে বিশে মৃত্যুর ক্লিশে
তফাৎ শুধু থাকে রাত্রির আর দিনের
গোলাপের আর কাঁটার
পাপড়ির সাথে পাতার
তুমি এসে চলে গেলে নির্বাক দিনের শেষে
যে রাতের আকাশে উড়ছিল ভালোবাসার ছাই
আলো বাতাস ছাই রাত আকাশ চরাচর প্রান্তর
বড় রহস্যময় হয়ে ওঠে
এ ভালোবাসার কবিতা নয় রহস্যেরও নয়
এ সৃষ্টির নয় অনাসৃষ্টির নয়
এ দূর্জ্ঞেয় জীব কিংবা জিরাফের পাগলামো
যেখানে হায়নার হাসি মুঠোমুঠো ঝরে
পদ্মের সরোবরে জিরাফের জিহ্বার লেহন
আমি আলো হতে হতে কালো হতে পারি
আমি তো পারি
আমি তো পারি সব
এ রহস্য নয় এ এক ভেসে চলা আমাদেরই
পৃথিবীর যে বৃহত্তরে থাকি
যে জলসেচন করি
যে উর্বরতা মাখি রোজ
বিষ্ণুপ্রিয়া বলেছিল স্খলিত শাড়ির ঝালর ছুঁয়ে
ক্লিভেজে আঁকা ছিল অনাস্বাদিত এক গৌরপ্রেম
সেখানেও ঐ বৃহত্তর পৃথিবী আর
দূজ্ঞেয় জিরাফের উঁচুতে ওঠা গলা
আমি মরতে মরতে যেটুকু বাঁচি
তাই নিয়ে স্মরণ করি মরণে
প্রণাম করি দূর্জ্ঞেয় জীবনে
ব্যথা ক্লান্তি ভয় কাটিয়ে চেপেছি
সমুদ্র সাম্পানে
চিনির দানার মতন অনেক
মিষ্টি মানুষের সঙ্গ পেয়েছি
রাকা! রাকা! রাকা!
এক আলোকিত ভৈরবী রাত্রি
1 Comments
খুব ভালো লাগল।
ReplyDelete