জ্বলদর্চি

পদ্মপাতায় শিমুল-৭/সীমা ব্যানার্জ্জী-রায়

পদ্মপাতায় শিমুল-৭

সীমা ব্যানার্জ্জী-রায়

মানুষ যেন এক অন্তহীন স্প্রিং, ছোট বাক্সে জড়ানো থাকে। সে বাইরে আসার প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যায়।

মনে পড়ে গেল আবার সেইদিনের কথা। বাচ্চাবেলায় স্কুল ও যেতাম না। যেতাম না মানে, মা এর আদেশ, “সিমটি বাড়ি থেকেই পড়াশুনা করবে।” তাই বাড়িতেই পড়াশুনা আর পুতুলের সংসার সামলানো। ভেতরদিকের বারান্দায় একটা জাফরির ঘরে ছিল আমার পুতুলের বাড়ি। দেখো না এখনও পুতুল দেখেই কিনে ফেলি। একটা মোমের পুতুল, চোখ পিটপিট করা পুতুল, আলুর পুতুল, ড্যান্সিং ফ্রক পরা পুতুল, চিনামাটির পুতুল- কত রকমের পুতুল ছিল।

মজার ব্যাপারটা বলি, বাড়িতে থাকলেও দিদিয়া মাথায় একটা উকুন দেখেছে কি ব্যাস! বাড়িতেই নাপিত ডেকে মাথা ন্যাড়া করা হল। কোঁচকানো চুলগুলো যখন সামনে এসে পড়ত সেগুলো দেখতে পেয়েই আমার সে কী ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না।

মা শুনে বকতেন দিদিয়াকে, “ছেড়ে দে না। কাঁদছে দেখছিস না। রোজ রোজ ন্যাড়াই বা করে দিস কেন? তোকে নিয়ে পারা যায় না বাপু”।

দিদিয়া বলতঃ “ওর চুল থেকে উকুন আমাদের এত বড় চুলেও আসবে তখন। কাজেই মা, যা করছি ভালোর জন্যই করছি।” এদিকে আমি কেঁদেই চলেছি আর মুখে বিড়বিড় করছি, “আমাকে দেখতে বাজে হয়ে গেএল...ও”। তাই না দেখে বাড়ির এক পাশের বান্ধবী শেলুকেও ন্যাড়া করে দিল ওর মা। কি কান্ড! অন্য পাশের বাড়ির লম্বা চুল ওয়ালা বাবলির (পাঞ্জাবী বান্ধবী) কী হাসি। কারণ ওদের তো আর ন্যাড়া হওয়ার ব্যাপার ছিল না, কারণ পাঞ্জাবীদের নাকি জন্মচুল কাটতে নেই। সে তখন 'টাকলু টাকলু' করে হেসেই চলেছে। আর আমরা দুজনে কেঁদেই চলেছি। সে এক দৃশ্য। কিন্তু দিদিয়া মোটেই দমবার পাত্রী ছিল না। ভিষণ জেদী ছিল। তাই শিমুল নামটাই হল ভাল নাম। এটা দিদিয়ারই দেওয়া নাম।

--তো শিমুল নামটাই কেন স্থির হল বলবে একটু?

--কেন শিমুল নাম? জামালপুরে বাংলোর ফটকে একটা মস্ত মাথা উঁচু শিমুল গাছ ছিল। কিছু বছর তাতে ফুল আসে নি। সবাই ভাবত....গাছটা বোধহয় শূন্য হয়ে গেল। আমি যেবার জন্মাই খুব লাল টকটকে ফুল ফুটেছিল সেবারে। সেই লাল ফুল দেখেই বোধ হয় দিদিয়া এই নামটা দেয়। শূন্যস্থান বলে তো কিছু হয় না, তাই নিঃস্ব হয়ে যাওয়া শিমুল গাছের শাখায় নতুন নতুন পাতাদের হঠাৎ করে আসা আরম্ভ হয়েছিল। শীত বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে, পত্রমোচী এই বৃক্ষের ডালে ডালে উঁকি দেয় থোকা থোকা ফুল। শিমুলে ফুলের আগুনলাল রূপ, যেন আগুন-ফাগুনের সার্থক উপমা। 'নীল দিগন্তে' ছুঁড়ে ছুঁড়ে দিয়েছিল 'ফুলের আগুন'। আশ্বিন মাসের এক গাল হাসি মুখ সূর্য্য ওঠার সাথে সাথে সেপ্টেম্বরের পঁচিশ তারিখে সেই শূন্য হয়ে যাওয়া শিমুল ফুলের গাছ যখন ফুলের ভারে অহংকারী, ঠিক তখন জন্ম হয়েছিল আমার। মা-এর শখ ছিল নাম রাখা হোক 'মায়া' । দাদারা-দিদিরা বললেন, “কেন ও নাম কেন মা? ওর যুগে 'মায়া' নামটা বেমানান হবে।”

--দেখছিস মুখটা কি মায়া মাখানো!-মা হাসিমুখে আমাকে আদর করতে করতে বলেছিলেন। তাই তো সেই মায়াদর্পণেই আজও সব দেখতে পাই। দেখতে পাই মায়ের হাসি মুখ।

--না মা। ওর নাম শিমুল হোক। ওর নামের আলোয় সবাই স্নান করবে দেখো-দিদিয়া বলে উঠল। তারপর সেই নাম থেকেই ডাক নাম হয়ে গেল সিমটি। মা অবশ্য 'সিমটি' বলেই ডাকতেন। বড় জামাইবাবুও মাঝে মাঝে 'সিমটি' নামে ডাকতেন। আর বাবা ডাকতেন 'ফাউ'। বাবার দেওয়া নামটা বললেই অভিমান এসে যায়। কেন বলোতো? বন্ধু বান্ধব-দের সামনেও বাবা ওই নামে ডাকতেন। আর ওরা আমাকে খুব রাগাত, “এ মাঃ তুই ফাআউ?” ওরা চলে গেলে কেঁদে কেঁদে বাবাকে বলতাম, “ওদের সামনে আমাকে ওই নামে ডাকো কেন বাবা? ওরা আমাকে রাগায়।”

--এই দেখ তার জন্য কান্না কিসের? আচ্ছা আমি আর বলব না, হাস মা এবার। ব্যাস একগাল হাসি। আমি রাগ বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারি না, আজও। সেটা তো বোঝো। বাবার মত এই গনগনে রাগ, কিছু সময় বাদেই সেই রাগ গলে জল।

--তা ঠিক, একদম ঠিক। আমিও অবাক হই। কি করে এত তাড়াতাড়ি রাগ কমিয়ে ফেলো। পলাশ একটু মজা করার জন্য বলল, “বাহ! 'ফাউ' দারুণ নাম তো। আমার তো খুব আনকমন লেগেছে নামটা। এর দ্ব্যর্থক অন্য মানে আছে মনে হয়। কি বলো, শিমুল?”

--এ বাবা: ! যা: ! কি যে বলো না। লজ্জা লজ্জা মুখ নিয়ে বলে উঠল শিমুল।

বাইরে টিপ টিপ বৃষ্টি পড়ছে। আর সেই টিপ টিপ অগুনতি বৃষ্টির মতন নানান নামে সেজে উঠতে লাগল শিমুল। আদরে আহ্লাদে নেচে বেড়ায় সে বিশাল বাড়ির এ দালান থেকে ও দালান। ছাদে আমারই মতন কচি কচি বন্ধুদের নিয়ে নাচ করতাম।

“ইচিক দানা বিচিক দানা

দানে উপর দানা

ইচিক দানা...ছোটিসি ছোকড়ি লালবাই নাম হ্যায়

পহেনি হুয়া ঘাগড়া এক পয়সা দাম হ্যায়”।

আবার কখনও

“রঘুপতি রাঘব রাজারাম

পতিত পাবন সীতারাম।”

--এটা তো প্রার্থনা, তাই না? হা হা বেশ মজার ছিলে তো।

তখন কি আর বুঝতাম কোনটা গান আর কোনটা প্রার্থনা। সব সময় শুনতাম তাই বোধহয় ভালো লাগত গানটা। সবাই মিলে তাই নাচতাম। সবাই তো ছোট বুঝতাম কই?

এদিকে কথায় কথায় চোখে জল ভরে ওঠে। সারাদিনে বোধহয় কটা কথা বলতাম তা নাকি হাতে গোণা যেত। মা এক বিন্দু ছোট মেয়েকে চোখের আড়াল করতে চাইতেন না।

আমার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়েছিল বাড়িতেই দিদিয়ার কাছে। স্মৃতির বাইরে নামতা টানা দৈর্ঘ্য প্রস্থে এক গ্যালারি। সেই গ্যালারিতেই আহ্লাদে বেড়ে উঠতে লাগলাম।

--ছোটবেলা থেকেই আমি খুব 'টিপি টিপি'-ফ্রকের ভক্ত ছিলাম। দিদিয়া নিজের হাতে আমার সব সুন্দর সুন্দর ফ্রক তৈরী করত। আমার রোজ নতুন নতুন জামা লাগত। দিদিদের কাছে শুনেছি আমাকে রোজ ইস্ত্রি করা জামা পরাতে হত, নয়ত ঠোঁট ফুলে উঠত দুঃখ আর অভিমানে। চোখ দিয়ে নাকি জল বেরুত না। তাই পাশের বাড়ির ভৈরব জ্যেঠু আমাকে “তুতুন তুতুন জামা” বলে ডাকতেন। কি অদ্ভুত সব আশা আকাঙ্ক্ষা ছিল, তাই না?

অবশ্য-ই সেগুলো মেটাত আমার দিদিয়া। বেচারী নাকি রোজ ইস্ত্রি করতে না পেরে আমার জামা বালিশের তলায় রেখে দিত। ইস্ত্রির মত দেখতে লাগত। আদরের ছোট বোনের চোখে জল-দিদিয়া সহ্য করতে পারত না। শুধু দিদিয়া কেন কেউই সহ্য করতে পারত না। তারপর আমাকে চান করিয়ে বালিশের তলা থেকে মিছিমিছি ইস্ত্রি করা নতুন জামা পরিয়ে দিত। বাচ্চাদের ভোলানো কত সহজ, তাই না?

জামার টুকরো গুলো দিয়ে ছোদ্দি আবার পুতুলের শাড়ি- ব্লাউজ- সায়া, গদি-বালিশ-চাদর-মশারি সঅঅব করে দিত। একবার তো পুতুলের বিয়ে দিয়েছিলাম জামালপুরের বাড়ির ছাদে। কলাগাছ চারটে তবে রেখে ছাদনাতলা করে দিয়েছিল। আমরা ছোটরা আবার শাড়ি পরেছিলাম। আমার ছোদ্দা পুরুত হয়েছিল। হি হি হি দারুন ব্যাপার স্যাপার হয়েছিল। মা তখন বেঁচে। লুচি, আলুর দম, মায়ের হাতের তৈরী আমসত্বের চাটনি আর মালপোয়া হয়েছিল সেই বিয়েবাড়ির ভোজ। বিয়ের মত সব আয়োজন হয়েছিল। পাড়ার সব বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করেছিলাম। আবার শুধু তাই নয়, বটি(ছোদ্দা) আর ছোট ভাই-এর বন্ধুদেরও নিমন্ত্রণ করেছিল ওরা। সবাই আবার গিফট এনেছিল। কিভাবে আমাকে ওরা স্পয়েল করেছে ভাবো? কান্নায় গলা বুজে এল আবার শিমুলের। কিন্তু... বিয়ের পর আমার মেয়ে পুতুলকে তো দেব না বান্ধবী মিঠুকে। সে আবার একটা কাগজের বড় বাক্স এনেছে তাতে আমার মেয়েকে আর মেয়ের সব জিনিস নিয়ে যাবে নিজের বাড়িতে। কান্নাকাটি দুজনের। শেষে দিদিয়া বলল, “যার যার পুতুল তার কাছে থাকবে। এবার দুজনে চোখ মুছে গলা জড়িয়ে ধরো। এটা তো মিছিমিছি পুতুলের বিয়ে রে। আমরা কত আনন্দ করলাম, আবার করব।”

আবার হাসিও আসে, সেসব কথা মনে এলে। কি সহজ সরল ছোটবেলা থাকে, তাই না? বাড়ির বড়দের কেউ কোথা থেকে এসে আমাকে কোলে না নিলে, আমি দরজার কোণে চলে গিয়ে চুপচাপ চোখের জল ফেলতাম। তারা আমাকে খুঁজে না পেলে কোণে দেখতে পেয়ে কোলে নিত তবে, আমার মান অভিমান ভাঙত। হাসি মুখে তাদের গলা জড়িয়ে ধরতাম। তবে হাতে থাকত হয় পুতুল নয় আমার ফ্রক, মাথার সরি ম্যাডাম(ব্যান্ড)। পলাশ ভাবল, শিমুল বিচিত্র এক হাসি ফুটিয়েছে ঠোঁটে।

--মন খারাপ কোরো না শিমুল, ভাল তো। আর সবাই তো আর এরকম আদর আহ্লাদে বেড়ে ওঠে না। তুমি ছিলে ব্যানার্জ্জী বাড়ির মনিকৌটোর ভোমরা পাললিকা। কি গো ঠিক বলেছি, না? তারপর বলো......বেলা বাড়ছে তো। চলো এখন উঠে ব্রেকফাস্ট সেরে নি। একটু হেঁটেও আসি। তারপর না হয় আবার বলা যাবে। কি বলো?

--হ্যাঁ তাই তো। এ মা। কত বেলা হয়ে গেল তো? সত্যি আজকাল আমি কথা বলা শুরু করলে আর থামতে চাই না। এ আমার এক মস্ত বাজে অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে। শিমুল কাঁচুমাচু হয়ে বলল।

শিমুলরা উঠে দোতলা থেকে নিচে নেমে গ্রীটস, ডিম সেদ্ধ, অরেঞ্জ জ্যুস আর একটা করে বেকড কার্ব ওয়াচ ব্রেড ফিলাডেলফিয়া চীজ দিয়ে খেল। এইবার বেরুল বাড়ির কাছের পার্কে মর্নিং ওয়াক এ। হাঁটতে হাঁটতে পলাশ বলল: “শিমুল এইবার বলো। দেখবে আমরা অনন্ত পথ পেরিয়ে এসেছি। জগিং ইজ ভেরি বিনিফিসিয়াল। ইটস গুড ফর ইয়োর লেগস এন্ড ইয়োর ফিট, ইটস অলসো গুড ফর দ্য গ্রাউন্ড। ইট মেকস ইট ফিল নীডেড।”

--তারপর ? বলবো? শোনো তাহলে...বোর হচ্ছো না তো? বোর হলে বোলো।

--বোর? আর তোমার গল্পের। কি সুন্দর করে বলো তুমি। একঘেয়েমি নেই। মোলায়েম।

যেন সব চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি এক একটা পর্দা সরিয়ে, বলে শিমুলকে নিজের কাছে টেনে নিল। কানের কাছে ফিসফিসয়ে বলল, “ বেব! ইয়োর স্টোরি ইজ বিউটিফু্লি ওয়েভড এন্ড থট প্রোভোকিং ইণ্ট্রোস্পেকশন। লাভ এন্ড লাইক এগস আর বেস্ট হোয়েন দে আর ফ্রেশ ....”

--ত্যুত! অ্যাই! সত্যি তুমি না... শিমুল একটু সরে গিয়ে একটা গোলাপি জংলী ফুল তুলে নিল হাতে। দেখল এক মধ্য বয়সী আমেরিকান দম্পতি ওদের দেখে হাসি মুখে দুহাতের বুড়ো আঙ্গুল দেখাচ্ছে। এরা সুখী দম্পতি দেখতে খুব ভালোবাসে। এদের তো হাজার রকম অশান্তি, তাই না? এদের মধ্যেও সুখী দম্পতি আছে, তবে সংখ্যায় খুবই কম। অবশ্য এখন আমাদের দেশের মানুষদের মধ্যেও অসুখী দম্পতিরা বেশ প্রবল আকার ধারণ করেছে।

--শোনো না! এবার ফেরা যাক। আজ তো সেই কাকভোরে উঠেছি আমরা। তুমি দরজা খুলতেই আমার ঘুম ভেঙ্গে গেছিল। সোজা নিচে গিয়ে তাই চা আর টা নিয়ে এসেছিলাম। ফের খেয়ে দেয়ে বসলেই হবে আবার নাকি? না বিছানায় রোদ্দুর মেখে? পলাশ আবার একটু চুটকি ছাড়ল।

--অ্যাই না। আজ তাহলে থাক। লাঞ্চ, পুজো সেরে কোথাও একটু ঘুরে আসি। মাথাটা ফ্রেস হয়ে যাক। দিনটা আজ যেন বড্ড ঝকঝকে তকতকে। এক একদিন যেন কেমন থম মেরে থাকে মাথাটা।

--পুজো করতে বসলে তো আবার অনেক দেরী করে ফেলবে। আজ শঠে-শঠ্যম সারো তো দেখি, মাই ডিয়ার। কে বলবে এত বছর আমেরিকায় আছো তুমি। আমার তো খুব আশ্চর্য লাগে তোমাকে দেখে। গল্প শোনার মুড আজ আমার। পলাশ নিজের আঙুলগুলো আওয়াজ করে মটমট করে মটকালো।

সব সেরে ওরা এইবার পার্কে গেল। শিমুল বলল, -চলো ওই বেঞ্চটায় 'পিঙ্ক ডগউড' গাছটার নিচে বসে নি। ঝিরঝিরে পাতাগুলো হাওয়ায় কাঁপছে কী সুন্দর। একটা মিস্টি গন্ধ উড়ছে তাই না? বসে আর একটু বলে নি। মাঝে আমার দুই দাদা মারা যান।

জানো? আমার বড়দা -কে মেরে ফেলা হয়। হ্যাঁ, আমার মা। আমার সেই মিষ্টি মা, যে মা সবাইকে ক্ষমা করতে শিখিয়েছিলেন। যে মা কে আমার আবছা মনে পড়ে। শুধু মনে পড়ে ছোট্ট কপালে লাল টকটকে বড় সিঁদুরের টিপ আর হাসি হাসি মুখ। আর পান খেয়ে ঠোঁট দুটো লাল টকটকে। মায়ের গলায় একটা চওড়া হার, হাতে শাঁখা-পলা আর চুরি থাকত। নাকে থাকত চুনি দেওয়া নাকছাবি। আমি কলেজে থাকতে নাক বিঁধিয়েছিলাম। তখন খুব ফ্যাসন উঠেছিল। বাবা আমকে নাক বাঁধাতে দেখে খুব খুশি হয়েছিলেন। দিদিয়াকে বলেছিলেন, “তোর মায়ের ওই চুনী বসানো নাকছাবিটা ওকে পরতে দে।” মায়ের ওই নাকছাবিটাই পরতাম। যথারীতি হারিয়েছি। দিদিয়া বলত, “হাডডোগলা”। তবে বকত না বেশি। সাদাসিধে করে পরা লাল পাড় সাদা শাড়িতে মাকে মনে পড়ে আজও। মা সাদা ব্লাউজই বেশি পরতেন। তবে ব্লাউজের হাতায় কাজ করা থাকত। আমি প্রথম সেলাই শিখে মায়ের ব্লাউজের হাতায় কাজ করে দিয়েছিলাম। কিছু তো করেছি, মায়ের জন্য। তাই না?মুখটা করুণ করে বলল শিমুল।

(চলবে)

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇


Post a Comment

0 Comments