জ্বলদর্চি

অন্তরঙ্গ সন্তোষকুমার ঘোষ / ঈশিতা ভাদুড়ী


স্মৃতি ডট কম-১

অন্তরঙ্গ সন্তোষকুমার ঘোষ

ঈশিতা ভাদুড়ী

‘সন্তোষ ঘোষ নই, সন্তোষকুমার ঘোষ আমি' -- আনন্দবাজারে তাঁর ঘরে বসে মজা করে বলেছিলেন। হাতে ছড়া-টড়া, মুখে সেই সুন্দর সজীব হাসি। আমি তাড়াহুড়োয় 'কুমার'-টি বাদ দিয়ে তাঁর নাম লিখেছিলাম। ফলে তাঁর রসিকতা – 'কৌমার্য মোটেই হারাইনি, যদিও বাড়িতে নীহার আছে।' তখনও নীহার বৌদির সঙ্গে পরিচয় হয়নি। সন্তোষকুমার ঘোষকেই তখনও জানা হয়নি কিছুমাত্র। কিছু পত্র-বিনিময় বা বার-দুয়েক সাক্ষাৎ যে তাঁর মতন অসাধারণ ব্যক্তিত্বকে জানার পক্ষে যথেষ্ট নয় সেসব আমি ধীরে ধীরে বুঝেছি। সেইসব প্রতিটি মুহূর্ত অতি অমূল্য সম্পদ।
কিন্তু সেসব তো পরের কথা, শুরুটা অবশ্য আরও আগে অন্য কোথাও, স্বাতীদির বাড়িতে, স্বাতীদির কথায়। স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেছিলেন, “ঈশিতা, সন্তোষদার সঙ্গে তোমার পরিচয় আছে? তিনি ঈশিতা নামটা খুব পছন্দ করেন"...
সেসব বহুকাল আগের কথা। আমার তখন একটি অটোগ্রাফ খাতা ছিল। সেই খাতা ভরে উঠেছিল অনেক বিখ্যাত মানুষের মূল্যবান স্বাক্ষর ও ছবিতে। স্বাতীদির কথার সূত্র ধরেই এবং নেহাৎই আমার অটোগ্রাফ খাতার আরেকটি পৃষ্ঠা ভর্তি করতেই সন্তোষদাকে ভীরু মনে একটি চিঠি লিখেছিলাম এবং মোটেই তাঁর জবাব আশা না করে পোস্ট করেছিলাম। কিন্তু অদ্ভূত অবাক করে সপ্তাহ না ঘুরতেই জবাব যখন এসে গেল হাতের মুঠোয়, তখন আর আমায় দেখে কে! আবার চিঠি, আবার উত্তর। কোনো একবার খামের ওপর আমার বাবার নামের শেষে Esq লেখা, অর্থ-উদ্ধার করতে হিমশিম, একে তো নিজের ভাষাই জানি না, তার ওপর ইংরেজি, শ্রী বা মিষ্টার তো বুঝি, কিন্তু নামের লেজে কেন Esq! সেটা বুঝতে অবশ্য আমাকে তাঁরই শরনাপন্ন হতে হয়েছিল। সাহেবরা নাকি সম্মান প্রদর্শন করতে নামের শেষে Esquire ব্যবহার করে!
বারংবার বলা সত্ত্বেও ফোন না করেই একদিন আনন্দবাজার অফিসে গিয়ে হাজির। তখন আনন্দবাজার অফিসে প্রবেশ নিয়ে এত বিধি-ব্যবস্থা ছিল না। তবে, আমি কিনা যাচ্ছি সম্পাদকের ঘরে! রিসেপশন থেকে ফোন করা মাত্রই লোক পাঠিয়ে নিয়ে গেলেন তাঁর চারতলার ঘরে, সেই ঘর এখন আর নেই।
তখনও মুখোমুখি পরিচয় ঘটেনি, সেই প্রথম দেখলাম, পরনে ধুতি পাঞ্জাবী, শিশুর মতো চঞ্চল, অন্যরকম মানুষ একজন। আমাকে, আমার মতো সামান্য একটি মানুষকে দেখে তাঁর খুশীর আন্তরিকতা সারা ঘরে কেমন ছড়িয়ে পড়ল আমি আজও তা' দেখতে পাই। কত রকম বাক্যালাপে ভরে উঠল ঘর, “বলো.. তোমার কি খবর বলো... ছড়ার বই প্রকাশ করছো, ভূমিকা লিখবে না? ভূমিকা লিখতে গেলে আমি কিছু বলতে পারি। শোনো, ছড়া দুরকম হয়। একরকম হলো আশ্চর্য কল্পনায় গড়া, আরেক রকম হলো শব্দের মিল। সুকুমার রায় আর রবীন্দ্রনাথ দুজনের ছড়া পাশাপাশি দেখলেই বুঝতে পারবে।” 
— আপনি রবীন্দ্রনাথকে দেখেছেন?
— দেখেছিলাম। এখন এখানে যারা আছে তারা তো বিশেষ কেউ তাকে দেখেনি। দু'চারজন বাদে। সাগরবাবু দেখেছেন। যা হোক্, যা বলছিলাম, আমি তাঁকে দেখেছিলাম, তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি, সেদিক থেকে আমি ভাগ্যবান। রবীন্দ্রনাথকে দেখা মানে কাশ্মীর অথবা সুইজারল্যান্ড দেখা নয়। তাঁকে দেখা মানে তাঁর নাক-চোখ-মুখ দেখা নয়। তাঁর একটা আলাদা কী যেন ছিল! তার আসাটা অনেকটা আবির্ভাবের মত। তিনি অত্যন্ত সুপুরুষ ছিলেন। সেই তিনিও বঙ্কিমচন্দ্রকে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন, জীবনস্মৃতিতে পড়েছো নিশ্চয়ই। তাঁর একটা আলাদা ব্যক্তিত্ব ছিল। তুমি ভাবছো, আমি রবীন্দ্রনাথে আচ্ছন্ন। তা' আচ্ছন্ন হওয়ারই কথা। তোমাকে ‘বোর’ করছি না তো? জানো তো, রবীন্দ্রনাথের মতো সুপুরুষ আরও অনেকেই ছিলেন, তবুও তিনি বিদেশের পথে হেঁটে গেলে অনেক বিদেশি মহিলা মুগ্ধ হয়েছেন। তাঁর প্রতি অনেক মেয়ে আকৃষ্ট হয়েছিল। তিনি সেই সব আকর্ষণ মাড়িয়ে হেঁটে চলে গেছেন। আবার অনেক সময়ে তিনি মরমে মরেছেন। তার পরিচয় রবীন্দ্রনাথের গানে, কবিতায় আছে। বিশেষভাবে কিছু জানা যায়নি অবশ্য। আমি তোমাকে ঠিক বোঝাতে পারছি না।
– আপনি শান্তিনিকেতনে যেতেন? 
– হুঁ, প্রায়ই যেতাম। তুমি কোনোদিন গিয়েছো?
– একবার, পৌষমেলায়, ভীষণ ভিড়ে।
- জানো, তখন এখনকার মত এত ভিড় ছিল না, এত সবুজও ছিল না, ভীষণ রুক্ষ ছিল শান্তিনিকেতন। ইন্দিরা দেবী একবার ঠাট্টা করে বলেছিলেন 'রবিকাকা সমস্ত দরজা জানলা খুলে দুপুর বেলায় লিখতে বসতেন, গরম হাওয়া আসতো, ওঁর কিছু যেতো আসতো না। কারণ উনি ঋষি ছিলেন। কিন্তু আমরা তো সাধারণ মানুষ, তাই আমাদের এয়ারকুলার না হলে চলে না।' রবীন্দ্রনাথ কিন্তু সত্যিই ঋষি ছিলেন। উনি প্রাচুর্য ভালোবাসতেন না। শ্যামলী ইত্যাদি ছোট ছোট বাড়িই বেশী ভালোবাসতেন। এই যে উত্তরায়ণ করা হয়েছিল ওঁর জন্য, উনি কিন্তু পারতপক্ষে সেখানে থাকতেন না। বিশেষ অতিথি এলে তাঁদের আপ্যায়ন করার জন্য থাকতেন।

... আমার যখন ২২ বছর, তখন উনি মারা যান। এখনকার মানুষ তাঁর লেখা পাবে, কিন্তু তাঁর সেই আলোটা দেখতে পাবে না।...আচ্ছা আমি কি তোমাকে ‘বোর’ করছি?
– মোটেই না, বেশ ভালো লাগছে।
হঠাৎ বললেন, “তোমার একটা লেখা পড়াও না!" তখন বয়স অল্প, সঙ্গে কবিতার খাতা থাকতো। 'শব্দেরা কথা বলে' নামে একটি দীর্ঘ কবিতা ছিল। পড়লেন। ঐ সামান্য লেখার মধ্যেও আকণ্ঠ রস অনুভব করলেন। বললেন... "তোমার অনুভূতি তো খুব গভীর, প্রকাশও ভীষণ সূক্ষ্ম... তোমার ভাষা অভিধান ছাড়িয়ে চলে গেছে। জানো তো অভিধানের ভাষা সমতলের, তোমারটা তার ওপরে, মানে.... মনে করো আমি আমার বাড়ীর ব্যালকনিতে দাঁড়ালে পৃথিবীর কিছুটা দেখতে পাই, ছাদে দাঁড়ালে আরও অনেকটা।” তিনি সন্তোষকুমার ঘোষ, তিনি 'নতুনত্বের উপাসক'। তাই তাঁর স্বভাব মতো প্রশংসা করলেন অনেক বেশী, আমি জানি না সবটুকু আমার প্রাপ্য ছিল কিনা। কিন্তু লেখালিখির শুরুতে সেই প্রাপ্তি আমার কাছে অমূল্য সম্পদ আজও। আমি অবশ্য তখনও জানতাম না সন্তোষদা নতুনদের লেখা পড়তে সর্বদা আগ্রহী ছিলেন এবং ভালো লেখা পড়ে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতেন, আমি এসব কিছুই জানতাম না তখন। সন্তোষকুমার ঘোষকে আমি খুব স্বল্প সময় পেয়েছি। যতটুকু দেখেছি ততটুকুতে তাঁকে আগাগোড়া জানা অত্যন্ত দুষ্কর। ঈষৎ তির্যক ভঙ্গিতে তাঁর ঠোট চাপা হাসি, তাঁর অসামান্য বাকপটুতা, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, সব মিলিয়ে উজ্জ্বল এক ব্যক্তিত্ব, অত্যন্ত সজীব এক মানুষ। সন্তোষকুমার রবীন্দ্রনাথে আচ্ছন্ন ছিলেন, আমি ধীরে ধীরে সস্তোষকুমারে আচ্ছন্ন হতে থাকলাম।
সন্তোষদা মুহূর্তের মধ্যে প্রসঙ্গ বদলে ফেলতেন। এখনই হয়তো রবীন্দ্রনাথ নিয়ে কথা বলছেন, তারপর হয়তো আমার কবিতা, তারপরেই “তোমার সঙ্গে স্বাতীর পরিচয় আছে?" 

—একবার হয়েছিল, তখন স্বাতীদি বলেছিলেন আমার নামটা আপনার খুব প্রিয়।
- তার বানানটা আলাদা, অর্থাৎ ইশিতা। তোমাকে লিখেছিলাম বোধহয়। আসলে আমি একটি মেয়েকে ভালোবাসতাম। তাকে আমি 'ইশিতা' বলতাম, যদিও তার নাম অন্য ছিল। স্বাতী সেসব জানে৷ সেই মেয়েটির সঙ্গে বছর দেড়েক কোনো যোগাযোগ নেই।...যাক্ ওসব কথা থাক্। তুমি আমার কবিতা পড়েছো?
সন্তোষদা তার 'কবিতার প্রায়' বইটি আমাকে উপহার দিলেন। চলে আসার সময় বললেন, “তুমি আবার এসো”। মনে মনে বললাম, না এসে উপায় কি?
একদিন হাসতে হাসতে বললেন, “তুমি চিঠিতে কিসব লিখেছিলে? আমার ‘ইশিতা' মোটেও কোনো রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়িকা নয়। অধিকাংশ রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়ক গায়িকার সঙ্গেই আমার খুব ভাল সম্পর্ক। আসলে আমি রবীন্দ্রনাথকে ভালোবাসি, তাঁর সব কিছুই... আমি যে মেয়েটিকে ভালোবাসি তার নাম বললে তোমরা চিনবে না, সে খুব সাধারণ একটি মেয়ে।"
বললেন, “একদিন এসো আমাদের বাড়িতে। আমার কাছে কোনো মেয়ে এলে মোটেই আমার স্ত্রী আপত্তি করেন না।” হেসে ফেললাম, "এই ভরা ষাটেও আপত্তি?” হাসির জবাবে হাসি, “না. চল্লিশেও আসেনি।” পরে অবশ্য বাড়ি গিয়ে নীহারবৌদির সঙ্গে পরিচয় যখন হলো দেখলাম যথার্থই বলেছেন সন্তোষদা। খুবই সহজ সরল ভালোমানুষ। 

নীরেনদার সঙ্গে পরিচয় আমার সন্তোষদার ঘরেই হয়েছিল, দীর্ঘকায় ঋজু। সন্তোষদা বললেন “আমার বেয়াই”, তারপরে নীরেনদার দিকে তাকিয়ে বললেন “ঈশিতাকে একটা ছড়া দাও এক্ষুনি, ও ছড়ার বই বার করবে”। নীরেনদা ঘর থেকে চলে যাওয়ার পর বললেন, “আমরা দুই বাবা মিলে যুক্তি করে আমাদের ছেলে-মেয়েদের ঘর বদল করেছি।”
সন্তোষদার কাছে আমার অনেক কিছুই শেখার ছিল। একবার কোনো একটি গল্পে লিখেছিলাম, ‘প্রতি রাতে কিংশুকের গন্ধ নিই'। সন্তোষদা পড়ে বললেন, "ভুল লিখেছো, লাল ফুলেরা সচরাচর গন্ধবিহীন হয়। তুমি বরং ওখানে লিখো, কিংশুকেরও গন্ধ নিই'। অর্থাৎ তুমি তোমার অনুভূতি দিয়ে যেটা নেই সেটাও অনুভব করছ।”
একবার কোনো এক লেখকের লেখায় 'শ্রদ্ধাম্মিতাসু' শব্দ পেয়ে বলেছিলেন, “শব্দটি সঠিক নয়, ক্লীবলিঙ্গ হয়ে যাচ্ছে, অনেকে 'শ্রদ্ধাস্পদাষু' লেখে, সেটিও সঠিক নয়।”
তখন 'সানন্দা' পত্রিকার জন্ম হয়নি, সবেমাত্র ভাবা হচ্ছে আনন্দবাজার থেকে একটি মেয়েদের পত্রিকা প্রকাশ করার কথা, সন্তোষদা হবেন সম্পাদক। সেটি আর তাঁর জীবদ্দশায় সম্ভব হয়নি। তবে সন্তোষদার সম্পাদনায় পত্রিকাটি নিশ্চয়ই অন্যরকম হতো, অনেক গভীরতা থাকতো।

শেষ জীবনে সাংবাদিকতার জন্যে তিনি সাহিত্যকে অবহেলা করেছিলেন। তার জন্যে তাঁর নিজের দুঃখ আমাদের চেয়েও শতগুণ ছিল। একদিন প্রশ্ন করেছিলাম, “আপনি বড় কিছু লিখছেন না কেন ?"
—সেইটাই দুঃখ। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, “আমার হার্টের অসুখ, তার ওপর আমার অফিস আমায় চেপে ধরেছে। ইচ্ছে আছে মরার আগে শেষ একটা উপন্যাস লিখে যাবো, যার পরে আর কিছু না লিখলেও চলে।” আমাদের দুর্ভাগ্য, 'শেষ নমস্কার'-এর পর সেরকম আর কিছু লিখে যেতে পারেননি সন্তোষকুমার ঘোষ।
সন্তোষদা স্বভাবে খুব রসিক ছিলেন। 'ঠুংরী' নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করবো বলে তাঁর কাছে কবিতা চাইতে গিয়েছি। তিনি বললেন “ঠুংরী বেশ একটা ছেলের নাম। সে প্রেম করবে চিংড়ি নামের একটি মেয়ের সঙ্গে। কি বলো?”
সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য রসিকতা বাদ দিয়ে বললেন, “তুমি যাই বলো, নামটা তেমন গভীর হয়নি।" আমি তখন পত্রিকা বার করার আনন্দে আছি। তাঁর কথা মানতে পারছি না। বললাম, “কী যে বলেন, ঠুংরীর মধ্যে গভীরতা পাচ্ছেন না?” হাসতে হাসতে মাথা নেড়ে বললেন “পাচ্ছি, দুষ্টুমি মেশানো। অর্থাৎ খেয়াল যদি চওড়া রাজপথ হয়, ঠুংরী তবে সরু গলি।” এমন সুন্দর উপমা আমার বোধোদয়ের জন্যে অবশ্যই যথেষ্ট উপযুক্ত ছিল।

একজন মানুষ একই সঙ্গে এত গভীরতা এত চঞ্চলতা নিয়ে যে বাস করতে পারেন, তাঁকে না দেখলে জানতাম না। তাঁর কথা ভাবলে কন্যাকুমারিকার সমুদ্রের কথা মনে পড়ে। তাঁর কথা মনে করেই একটি কবিতায় কখনো লিখেছিলাম, “কন্যাকুমারিকা সমুদ্র তুমি, অস্থিরতা একমাত্র তোমারই প্রাপ্য"।
সন্তোষদা শিশুর মতো চঞ্চল যেমন ছিলেন, খুব অভিমানীও ছিলেন। কত সময় শিশুর মতো অভিমান করে দূরে থেকেছেন, আবার কাছে গেলে বুকে টেনে ‘বড়’র মতো মাপ করেছেন। যদিও আমি তার অভিমানের কারণ কখনো হইনি, কিন্তু অনেক বড় বড় মানুষের ওপর সময় অসময় অনেক অভিমান করতে দেখেছি আমি তাঁকে। 
তাঁর সম্বন্ধে এত কিছু লেখার আছে যে সেসব লিখে শেষ হওয়ার নয়। লেখা সম্ভবও নয়। সেসব টুকরো টুকরো ঘটনা হৃদয়ে হৃৎপিণ্ডে আজও।

....সন্তোষদা কথা বলতে খুব ভালোবাসতেন। বলতেন, “অমুক রবীন্দ্রনাথের সমালোচনাকরবে কেন? আমি করতে পারি। কেননা, আমি  সম্পূর্ণ রবীন্দ্রনাথ পড়েছি। শুধু পড়েছি তাই নয়, রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুভব করেছি”। ...এইভাবে কথা বলতে বলতেই সন্তোষকুমার ঘোষ, সাহিত্যে মহীরুহ, সাংবাদিকতায় প্রবাদপুরুষ, সেই বিরল ব্যক্তিত্ব, প্রকাণ্ড গভীরতার অধিকারী প্রাণবন্ত সেই মানুষ ধীরে ধীরে চলে গেলেন অন্তরালে। মুচকি হেসে পিতৃসুলভ ভঙ্গিমাতে আর কোনোদিন বলে উঠলেন না, “সুখী হও, সুকন্যা হও”।


জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇


Post a Comment

3 Comments

  1. চোখের সামনে মানুষ টিকে যেন দেখতে পেলাম। যদিও তাঁকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয় নি।

    ReplyDelete