জ্বলদর্চি

মকর পরব /ভাস্করব্রত পতি

পশ্চিমবঙ্গের লৌকিক উৎসব -২

মকর পরব

ভাস্করব্রত পতি

নতুন শষ্য সমাগমের আনন্দে হিন্দুদের ঘরে ঘরে পালিত হয় পৌষালি বা পৌষপার্বণ। এই উৎসব রাজ্যের বিভিন্ন যায়গায় বিভিন্ন পদ্ধতিতে পালিত হয়। অঞ্চলভেদে এই উৎসবের গঠন খুবই বৈচিত্র্যময়। এটি এই বাংলার একটি অন্যতম শষ্য উৎসব। 

কথিত আছে, অতি প্রাচীন কালে নতুন বছরের শুরু হত সৌরমাস তথা মাঘের প্রথম দিন থেকে। সূর্যের উত্তরায়ণের গতি শুরু হয় এইসময়। আসলে সূর্য দক্ষিণায়ণ থেকে উত্তরায়ণে প্রবেশকালে মকর সংক্রান্তিতে মকর রাশি (জ্যোতিষ মতে এটি দশম রাশি) পায় এবং ক্রান্তিরেখার উপর সামান্য সময় অবস্থান করে। এইজন্য পৌষ সংক্রান্তিকে বলে 'উত্তরায়ণ সংক্রান্তি' বা 'মকর সংক্রান্তি'। আর তাই এই দিনের উৎসবকে বলি 'মকর পরব'। এই ঋতুতে সূর্যকিরণ খুব আরামদায়ক এবং উদ্ভিদের পুনরার্বিভাব ঘটে। খনার বচনে পাই, "যদি বর্ষে মকরে / ধান হবে টেকরে"।

এদিন পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে শ্রাদ্ধ করা শাস্ত্রসম্মত। বলা হয়ে থাকে যে, নবান্নে শ্রাদ্ধ না করে নতুন চাল গ্রহণ করলে পাপভোগ করতে হয়। তাই হিন্দুরা এইদিনে পিতৃপুরুষ এবং বাস্তুদেবতাকে দেয় তিলের তিলুয়া এবং নতুন চালের পিঠে। সেইজন্য এই মকর সংক্রান্তির অন্য নাম 'পিঠে সংক্রান্তি' বা 'তিলুয়া সংক্রান্তি'।

এদিন বিশেষ বিশেষ উপচার পালিত হতে দেখা যায়। সকালে প্রতিটি গৃহস্থ বাড়িতেই লক্ষ্মী পূজা হয়। যদিও অগ্রহায়ণ মাস থেকেই যা পালিত হয় প্রতি বৃহস্পতিবার। পোড়ামাটির লক্ষী গণেশ কিনে কুলুঙ্গীতে রাখা থাকে। বিশেষত বাড়ির মেয়েরা তা পূজা করেন। সন্ধ্যেতে পড়া হয় লক্ষ্মীচরিত্র। আর অগ্রহায়ণ ও পৌষ এই দুমাস এই দিনটিতে নিরামিষ খাওয়ার রীতি আছে। বৃহস্পতিবার তথা লক্ষ্মীবারের রাতে ভাত হয় না কোনও বাড়িতে। বরং পিঠে পুলি হতে দেখা যায়। 

পৌষ সংক্রান্তির দিন সকালে লক্ষ্মী পূজার পর গ্রামের মন্দিরে প্রায় প্রতি বাড়ি থেকে গোটা চাল, ফল, তিলা বাতাসা, মিষ্টি নিয়ে যাওয়া হয়। এক্ষেত্রে দেখা যায় বাড়ির ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাই নিয়ে যায় এসব। একটা উৎসব লেগে যায় তখন। মন্দিরের বামুন ওই নিয়ে যাওয়া আস্ত ফল, বাতাসা রেখে দেন। বিনিময়ে তৈরি করা প্রসাদ রেকাবিতে দিয়ে দেন। সেগুলি খেতে খেতে বাড়ি ফেরে ছেলেমেয়েরা। ফের সন্ধ্যে বেলায় লক্ষ্মী পূজা হয়।

কিন্তু পৌষ সংক্রান্তির মূল উৎসব বিকেল বেলায়। পড়ন্ত বিকেলে খামার (যেখানে ধান ঝাড়া হয়) এ 'সার ধরা' বা 'সাত ধরা' হয়। 'সার' অর্থে সহকারপল্লব (সহার > সার)। তথা মঙ্গলদ্রব্যবিশেষ। এই উপচারে আম্রপল্লব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মঙ্গল দ্রব্য। চৈতন্য ভাগবতে পাই "পূর্ণঘট দীপ ধান্য দধি আম্রসার"। মাটির উৎপাদকশক্তিবর্ধক গোময়াদিকে বলে 'সার'। এদিন কিন্তু গেরস্থালি জুড়ে গোময় দিয়েই নিকোনো হয়। কারও কারও মতে, 'স্বর' তথা শব্দ ধরা ( পশু পাখির ডাক বা রব বা স্বর শোনার নিয়ম আছে ) থেকেই এসেছে 'সার ধরা'। তবে শালিক তথা বনি পাখিকেই বলা হয় 'সার' (সারক > সার)। এই  লোক উৎসবে বনি পাখির স্বর শোনার রীতি রয়েছে। উল্লেখযোগ্য যে, কোথাও কোথাও এই পূজাকে বলে 'বোনাই পূজা' বা 'বনি পূজা'।
            
সাধারণত তিনবার, পাঁচবার অথবা সাতবার প্রাণীর শব্দ শুনতে হয় এসময়। একেই বলে 'সার ধরা'। এর মধ্যে ফিঙে, ঘুঘু, টিয়া, পেঁচা, মোরগ, পায়রা, বনি পাখি (শালিক), গরু, শেয়ালের ডাক শুনতে হয়। তবে শেয়ালের ডাক হল সবচেয়ে বড় সার!

মকর সংক্রান্তির দিন খামারটিকে গোবর জল দিয়ে ভালো করে নিকিয়ে দেয় বাড়ির মহিলারা। খামার থেকে ঘর পর্যন্ত 'ন্যাতা' দেওয়া হয়। মোটামুটি শুদ্ধাচারে পালিত হয় দিনটি। খামারে একটি খুঁটি পোঁতা হয়। সাধারণত এক্ষেত্রে সেই খুঁটিটি ব্যবহৃত হয় যে খুঁটিতে আগে গরুর গলায় দড়ি বেঁধে পল খড় মাড়াই করা হতো। নাহলে নতুন একটি বাঁশের লাঠি পুঁতে দেওয়া হয়। একে বলা যয় ‘মই খুঁটি'। এই খুঁটির সাথে বেঁধে রাখা হয় 'শুকুর বিড়া' বা 'শুকুর হালা' বা 'মোট বিড়া'। অগ্রহায়ণ মাসের সোমবার বা শুক্রবার মাঠ থেকে পৌষ পার্বণের জন্য রাখা ধানের একটি আঁটি কেটে নিয়ে আসা হয় গৃহস্থের বাড়িতে। তা রাখা হয় বাড়ির চালে। যা পরে পূজা হয় মকর সংক্রান্তির দিন। একেই বলে 'শুকুর বিড়া' (শুক্র > শুকুর)। অনেকে অবশ্য জমিতে ধান কাটার সময় ধানসহ একটা ধানগাছের গোছ না কেটে জমিতেই রেখে দেন শুকনো খড় বা গড়গড়া গাছ চাপা দিয়ে। মোট আড়াই হালা মাপের ধানের গোছ রাখা হয়। মকর সংক্রান্তির দিন গৃহস্থ মাঠে গিয়ে ওই ধানগাছটিকে মাঠেই পূজো করে এক কোপে কেটে মাথায় করে নিয়ে এসে মই খুঁটিতে বেঁধে দেয়। নিয়ে আসার সময় জল ছড়াতে হয় রাস্তায়। ঝাঁঝ বাজানো হয়, শাঁখও বাজে। এখন অবশ্য অনেক আগেই কেটে নিয়ে চলে আসে চাষীরা। ঘরের চালে তুলে রাখা হয়। আসলে উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষের জন্য জমি ফাঁকা থাকছে না। নতুন ধান কেটে নেওয়ার পর ফের বীজতলা ফেলে দিতে হয়। আগে এরকম ছিলনা। যদি মাঠ থেকে মোট বিড়া আনার সময় পূজো করে আনা হয় তবে পৌষ সংক্রান্তির দিন একদম সরাসরি মইখুঁটিতে বেঁধে দেওয়া হয় তা। আর পূজো না করে আনলে ফের সংক্রান্তির দিন ঐ মোট বিড়াটিকে মাঠে নিয়ে যাওয়া হয় পূজোর জন্য। তবে খামার পূজোর পর ঐ মোট বিড়ায় থাকা ধান ঘরে নেওয়া হয়না! গরুকে খাইয়ে দিতে হয়।

এই মইখুঁটির চারপাশে চালবাটা দিয়ে নানা ধরনের আল্পনা আঁকার রীতি আছে। সাধারণত কৃষিকাজ সম্বলিত জিনিসগুলির ছবি আঁকতে হয়। এমনকি মইখুঁটি থেকে হামারঘর (ধানের গোলাঘর) পর্যন্ত চালবাটা দিয়ে অবিচ্ছিন্ন 'ল্যাবা' টানা হয়। একে চালবাটার 'থপা' বা 'ছোপ দেওয়া'ও বলে। কখনও বা পায়ের ছাপ আঁকা হয়। বিশ্বাস যে, এটা দেবী লক্ষ্মীর পদচিহ্ণ। আসলে মাঠের ধান তথা লক্ষ্মীকে গৃহস্থের গোলাঘরে পাকাপাকিভাবেও স্থান দেওয়ার রীতি এটি।

বিকেলে সার ধরার সময় পূর্বোক্ত প্রাণীর শব্দ শুনলেই একজন শুদ্ধাচারে একঘটি জল নিয়ে (একে বলে 'জল ঘেরা') মইখুঁটির চারপাশে ঘুরে জল ছড়াতে ছড়াতে যেখানে লক্ষ্মীর কুলুঙ্গী রয়েছে সেখান পর্যন্ত যায়। জল ছড়ায়। অনেকেই ঐ দিন মইখুঁটির সামনে একটি ঘটিতে আমসার ও ফুল দিয়ে সাজিয়ে ঘটস্থাপন করে। সেখানে নাকি লক্ষ্মীর আগমন ঘটে। আর পশুপাখির শব্দ শুনলে আর অন্য একটা ঘটি থেকে আঁচলা ভরা জল ছড়িয়ে ঐ মইখুঁটি সহ ঘটটিকে প্রদক্ষিণ করে।

তার আগে অবশ্য খড় পাকিয়ে বিনুনি করে অনেকগুলি 'বিচালী' বা 'আউনি বাউনি' বানানো হয়। এই বিচালীতে থাকে আমপাতা, সরিষাফুল, গাঁদাফুল এবং সিঁদুর। চালবাটাও মাখানো হয়। অন্তত ১৫ - ২০ টা এরকম বিচালী বাড়ির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেমন বাক্স প্যাঁটরা, হামারঘর, ঘরের চাল, ধানের গাদা, ঢেঁকিশাল, রান্নাঘর, খামার, মইখুঁটি, ঠাকুর ঘর, লক্ষ্মীর কুলুঙ্গিতে রেখে দেওয়া হয়। আসলে লক্ষ্মীর মঙ্গলের জন্য এই 'সার ধরা' রীতি পালিত হয়। ঐ সময় বাক্স থেকে টাকা দেওয়া হয়না কাউকে। হামার থেকে ধান দেওয়াও হয়না।

যদিও এখন 'সার ধরা' বিষয়টি ফিকে হয়ে গেছে। কেননা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কারণে বিভিন্ন রকম পাখি আর শেয়ালের ডাক শোনা খুব কষ্টকর। হারিয়ে যাচ্ছে এঁরা। গ্রামে গ্রামে আজ শেয়ালের দল ডাকে না। কেননা শহুরে সংস্কৃতি বিপন্ন করে তুলেছে শেয়ালদের।

এই সার ধরার দিন মকর তৈরি হয়। তা লক্ষ্মীদেবীকে পুজো দেওয়া হয়। সকাল সন্ধ্যে দুবেলাই মকর দেওয়া হয়। আদা, পাকা কলা, শাঁকালু, রাঙা আলু, পেয়ারা, কুল, শসা, আখ ইত্যাদিকে কুচি কুচি করে নতুন ধানের চালবাটা, দুধ, ঘি, গুড় দিয়ে মকর বানানো হয়। সুস্বাদু এই মকর বন্ধুত্বের প্রতীক হিসাবে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পরস্পরকে দেওয়া নেওয়া করে। কাঁঠাল পাতায় দেওয়া হয় গুড়। পাঁশকুড়ার গৌরাঙ্গপুর গ্রামে দেখেছি মকর সংক্রান্তির দিন বিকেলে একদল মুসলিম ছেলেমেয়ে বাটি হাতে চলে আসে হিন্দুদের বাড়িতে। লক্ষ্য মকর খাওয়া। হিন্দুরাও তাঁদের জন্য আলাদা করে বালতি বালতি মকর বানাতো। খামারেই সারিবদ্ধভাবে বসিয়ে তাঁদের মকর খাওয়ানো হতো। তখন ওই মুসলিম বাচ্চারা ছড়া কাটতো—'বামুন ঠাকুরো/দাওনা দুটো মকরো।' আজ আর এরকমভাবে কেউ মকর চাইতে আসে না। আসলে তখন আর্থসামাজিক অবস্থা এতো ভালো ছিলনা। এখন সেই দৈন্যতাটুকু নেই। ফলে অর্থের প্রাচুর্যের কাছে হার মানতে হয়েছে বাঙালীর চিরায়ত সংস্কৃতিকে।

রাতে লক্ষ্মীপুজোর শেষে লক্ষ্মীর কুলুঙ্গী থেকে লক্ষ্মীদেবীকে স্থানান্তরিত করে রাখা হয় হামার বা ধানের গোলাঘরে। পাকাপাকিভাবে লক্ষ্মীদেবীকে ঘরে তোলা হলো নতুন ফসলের সাথে। রাতে নতুন ধানের চাল দিয়ে নানা ধরনের পিঠা তৈরি হয় গৃহস্থের বাড়িতে। সাধারণত সরু চাকলি, পুরপিঠা, অ্যাস্কেপিঠা, রসপুলি, গদাপিঠা, মোহনবাঁশি, চিতোই পিঠা, ক্ষীরপুলি, দুধপুলি, মুগসামলি ইত্যাদি নানা স্বাদের পিঠা করতে দেখা যায় বাঙালি ঘরের মহিলাদের। যা তাঁদের একটি অন্যতম হস্তশিল্পের নমুনা। 

তবে জঙ্গলমহলে মকর পরবটা একটু অন্য রকম। এখানে পৌষ সংক্রান্তির আগের রাতটা টুসু পূজার রাত। রাতভর আদিবাসী মূলবাসীদের বাড়িতে চলে সমৃদ্ধির দেবী টুসমনির পূজোর আয়োজন। এই রাতে নানারকম ফলমূল, পিঠের নৈবেদ্য সাজিয়ে ১৬ বার টুসুমণির পুজোর রীতি কুমারী ও এয়োতিদের। সারারাত ভিন্ন স্বাদের গান শুনিয়ে ‘জাগিয়ে রাখা’ হয় টুসুমণিকে। আর বাড়ি-বাড়ি ‘আউছি’ চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি হয় পিঠে। পৌষ সংক্রান্তিতে সেই টুসু ভাসানো হয় নদীর জলে। নতুন জামা কাপড় পরে সবাই। পরের দিন পয়লা মাঘ। কুর্মি বা মাহাতো সম্প্রদায়ের কাছে এদিন নতুন বছর তথা কুর্মালি নববর্ষ। ‘এখ্যান যাত্রা’ অর্থাৎ যে কোনও শুভ কাজের জন্য ভালো বলে মনে করা হয়। কুর্মি নববর্ষে কুর্মি কৃষকেরা জমিতে তিনবার লাঙল চালিয়ে প্রতীকী 'হালচার' করে। গ্রামের ‘গরাম থান' তথা গ্রামদেবতার স্থানে পশু বলিরও চল আছে।

মকর সংক্রান্তিতে মকরস্নান করার রেওয়াজ অনেক যায়গায়। খুব ভোরে জলে ডুব দেওয়ার জন্য আগাম প্রস্তুতি চলত ঠাণ্ডাকে ঠেকাতে। শুকনো ডালপালা জলাশয়ের কাছে জমা করে রাখা হতো ডুব দিয়ে এসে আগুন পোহানোর জন্য। একে বলে 'কুমা জ্বালানো'। ডুলুং নদীর পাড়ে সারি সারি কুমা জ্বালানোর দৃশ্য বেশ জনপ্রিয়। অনেকটা ঠিক দোলের সময় ন্যাড়া পোড়ানোর মতোই। তবে অনেক সময় গর্ত‌ও করা হত এবং তাতে ডালপালা রেখে আগুন জ্বালানো হত। উঠতি যুবকরা সংক্রান্তির আগের রাত্রে ঐ পাতার তৈরি ঘরে থাকতেও দেখা যেত। তবে সেটা প্রথা বা রীতি কিনা জানা যায়না। স্নান সেরে বাড়ি ফিরে রোদে বসে পিঠে খাওয়ার আস্বাদনটাই আলাদা। আর এইদিনে বা এইসময়ে জুয়া খেলা একপ্রকার সমাজ স্বীকৃত ঘটনা।

মেদিনীপুরে মকর সংক্রান্তির দিনেই চলে ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব। যদিও অন্যত্র বিশ্বকর্মা পূজার দিন ঘুড়ি ওড়ে। আসলে মকর সংক্রান্তিতে দেবতারা ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। দেববন্দনার জন্যই তাই আকাশে ঘুড়ি ওড়ানো হয়। মেঘমুক্ত আকাশে এই সময় থাকেনা জলীয় বাষ্প। ঘুড়ি ওড়ানোর পক্ষে উপযুক্ত। মেদিনীপুরের আকাশ রঙিন হয় মকর পরবকে কেন্দ্র করে। মূল উপলক্ষ্য 'বড়াম পূজা'। চিল চিৎকারে ভরে ওঠে মেদিনীপুরের আকাশ আর বড় বড় বাড়ির ছাদ। কর্নেলগোলা থেকে সিপাইবাজার, কিংবা জজকোর্ট থেকে কোৎবাজার -- সর্বত্র একই চিত্র। একই রব। একই আর্তনাদ। একই উন্মাদনা। একই লড়াই। ঘুড়ির লড়াই! গবেষক চিন্ময় দাশ 'পুণ্যিপুকুর' পত্রিকায় লিখেছেন, "কতদিন আগে থেকে বড়াম পূজার আচার হিসাবে ঘুড়ি ওড়াবার এই রীতির প্রচলন, তা উদ্ধার করা দুরূহ কাজ। তবে ঘুড়ি ওড়ানোর মাতামাতিটা বর্তমানে এমন পর্যায়ের যে তিনদিন ধরে মাতিয়ে রাখে সারা শহরকে।"

এই পৌষপার্বন তথা মকরপার্বন আসলে গ্রাম বাংলার কৃষকদের নতুন ফসল ঘরে তোলার উৎসব। এক কথায় সঞ্চয়ের পরিপূর্ণতার উৎসব হিসেবেই পরিগণিত হয়ে আসছে বছরের পর বছর।

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇


Post a Comment

2 Comments