জ্বলদর্চি

অনূঢ়া শ্যামাঙ্গিনী /শুভাশিস ঘোষ

অনূঢ়া শ্যামাঙ্গিনী

শুভাশিস ঘোষ 

কাঁটায় কাঁটায় ঠিক বেলা দু'টোয় সিঁড়িতে পা দিল লাবণ্য। দোতলায় উঠে এদিক ওদিক তাকিয়ে, সবকটা টেবিলের চারদিকটা নিরীক্ষণ করে নিয়ে নিশ্চিত হল যে, আহুতের তাড়া যতই থাক না, আমন্ত্রণকারির সে বালাই নেই। দরজার পাশের কোণের টেবিলটা ফাঁকা। একটা চেয়ার টেনে নিয়ে ওখানেই বসল সে। আহ্বায়কের সময় ছিল বেলা দু'টো, কিন্তু লাবণ্য পৌঁছেছে একটা চল্লিশে। নিচে দাঁড়িয়ে, বার ক'য়েক রাস্তার এ মাথা থেকে ও মাথা করেও কুড়ি মিনিট সময় আর কাটতে পারে নি লাবণ্য। তারপর ইউনিভার্সিটির গেটের সামনে গিয়ে একটু উদ্দেশ্যহীন ঘোরাফেরা করে অবশেষে ঠিক দু'টোয় দোতলায়। জীবনে দ্বিতীয়বার এখানে এল সে। তখন তার সেকেন্ড ইয়ার, বছর বারো আগে প্রথমবার এসেছিল কলেজের বন্ধুদের সাথে। তারপর আজ।
রোহিত মফস্বলের ছেলে হলেও অভিনয় করে কলকাতার দলে। থিয়েটারে ইদানিং বেশ নামডাকও হয়েছে। আজ দুপুরে কফি হাউসে রোহিত ই ডেকেছে লাবণ্যকে। আর লাবণ্য ? ঠিক পরিচয় দেবার মতো কোনো গুনই যে নেই তার! শহরতলির অতি সাধারণ এক মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। রবীন্দ্র-অনুরাগী বাবা মেয়ের নাম রাখেছিলেন লাবণ্য। যদিও চেহারায় লাবণ্যর লেশমাত্র নেই। শ্রী-হীন শ্যামবর্ণা এই লাবণ্য ছোট থেকেই অন্তর্মুখীন স্বভাবের। চেহারা নিয়ে ভোগে হীনমন্যতায়। পড়াশোনায় গড়পড়তা মেয়ের না হল গান, না হল নাচ। যদিও বাবার চেষ্টার ত্রুটি ছিল না, কিন্তু মেয়ের সব ব্যাপারে নিস্পৃহতাই তাকে আর বেশি দূর টেনে তুলতে পারল না। তবে এ নিয়ে বাবার খুব একটা অনুযোগও ছিল না। আত্মীয়, প্রতিবেশী সবার কাছে অবহেলার পাত্রী মেয়েকে আগলে রাখতে গিয়েই তার অসাফল্যের কথা ভুলে ছিলেন ভদ্রলোক। হঠাৎ বিপর্যয় নামল ওই সংসারে। পেশায় শিক্ষক লাবণ্যর বাবা চোখ বুজলেন। সেরিব্রাল এ্যাটাক। লাবণ্যর তখন ফাইনাল ইয়ার, বি এ। তারপর মা-মেয়ের সংসার ক্রমশই হয়েছে বিবর্ণ ! কুশ্রী মেয়ের বিয়ের চিন্তাতেই দিন কাটে লাবণ্যর মায়ের। লাবণ্যর টিউশনি আর মায়ের পেনশনের দৌলতে স্বচ্ছলতার অভাব না থাকলেও এ সংসারে সুখের অভাব প্রকট। ঘটক, দৈনিক পত্রিকার পাত্র-পাত্রী কলম, মেট্রিমনিয়াল সাইট - সব কিছুই যখন নিস্ফলা তখন এক চমকপ্রদ কান্ড ঘটালো লাবণ্য। যদিও আইডিয়াটা পেয়েছিল একমাত্র মামা সুফলের কাছে। বহু বছর আগে নাকি এমন ই এক ঘটনা বেশ সাড়া ফেলেছিল রাজ্যে।

বহুল প্রচারিত দৈনিকে পাঠকের কলমে ছাপা হল এক চিঠি। পত্র-প্রেরক লাবণ্য রায় লিখল , " আমি এক শ্যামবর্ণা অতি সাধারণ মেয়ে। কলা বিভাগের স্নাতক। বয়স একত্রিশ। গৃহশিক্ষিকার পেশায় যৎসামান্য আয়। উল্লেখ করার মতো নেই কোনো বিশেষ গুণ। আছে এক কোমল হৃদয়। শহরতলীর মধ্যবিত্ত পরিবার । মা-মেয়ের সংসারে কন্যাদায় ই একমাত্র দায় । কোনো শিক্ষিত, উদারমনা, বাঙালি পুরুষ যদি রূপের মোহ কাটিয়ে কেবলমাত্র সুন্দর হৃদয়ের আশায় আমার সাথে ঘর বাঁধতে চান, অনুগ্রহ করে যোগাযোগ করুন আমার মামার মোবাইল নম্বরে ... ।"  অবিশ্বাস্য ভাবে এক দিন পরেই ওই দৈনিকে একই জায়গায় ছাপা হল পাল্টা চিঠি। " লাবণ্য দেবী, আমি একজন থিয়েটার কর্মী। মানবতা আমার ধর্ম। কোনো সংকীর্ণতায় আমার বিশ্বাস নেই। বাহ্যিক রূপের মোহ আমার কোনোদিনই ছিল না, আজও নেই। তাই একজন ভালো মানুষ, যে আমার বন্ধু হয়ে উঠবে ,আমার সাফল্য ব্যর্থতায় পাশে থাকবে, আমার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সাথী হবে, হবে আমার প্রেরণা, তার সাথে ঘর বাঁধতে আমার আপত্তি নেই । ইতি - রোহিত দাশগুপ্ত, মোবাইল নং... ..।"  লাবণ্যের মামা সুফল বাবুর সাথে সেই রাতেই কথা বলে রোহিত। নিয়েছে লাবণ্যর ফোন নম্বরও। সামনেই ওদের দলের নতুন প্রোডাকশন নামবে। তাই ব্যস্ততা এখন চূড়ান্ত। এখন লাবণ্যর সাথে কথা বলে মনোসংযোগে চিড় ধরাতে চায় না। পরে সময় মত সে নিজেই ফোন করবে। সেই রাতের পর হঠাৎ বদলে যায় লাবণ্যদের বাড়ির পরিবেশ। বহুদিন পর প্রাণ খুলে হাসতে দেখা গেল লাবণ্যর মা প্রভাবতীকে। পরের দিন ছিল ভাই সুফলের জন্মদিন। তাদেরও মা গত হয়েছেন বহুদিন আগে। তাই মায়ের মৃত্যুর পর জন্মদিনে আর কেউ পায়েস রান্না করে, প্রদীপ জ্বেলে পঞ্চ-ব্যঞ্জনে থালা সাজিয়ে ধরেনি সুফলের সামনে। এবার দিদি প্রভাবতী মায়ের ভূমিকায় জন্মদিন পালন করল ভাইয়ের। চিরকুমার সুফলও অনেক দিন পর বেশ তৃপ্তিসহ  করল খাওয়া-দাওয়া। এক লহমায় যেন বদলে গেল বাড়িটা।

তারপর অবশ্য বহু প্রতীক্ষিত রোহিতের ফোন আর আসেনি লাবণ্যর মোবাইলে। মাস দেড়েকের অপেক্ষাতেও সেই ফোন পায়নি সে। অবশেষে নিজেই চেষ্টা করেছে রোহিতের সাথে ফোনে কথা বলতে, ওপার থেকে মেলেনি সাড়া। একদিন হঠাৎ ফেসবুকে রোহিতকে খুঁজে পায় লাবণ্য। অসুন্দর শ্যামবর্ণা মেয়েকে প্রকাশ্যে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার বীরত্বপূর্ণ কাজের প্রসংশায় উপচে পড়ছে রোহিতের ফেসবুকের দেওয়াল। কত বাহবা! অসংখ্য অভিনন্দন আর শুভেচ্ছা। নাট্যকর্মীদের নতুন অহঙ্কার হয়ে উঠেছে রোহিত। এ সব দেখে মনে মনে বেশ গর্বিত ই হল লাবণ্য। পাঠাল ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। কিন্তু দিন কুড়ি কেটে গেলেও একসেপ্টেড হয় না সেই রিকোয়েস্ট। ক্রমশঃ হতাশা গ্রাস করে লাবণ্যকে। বৃদ্ধি পায় তার দিক থেকে ব্যর্থ ফোনকল আর হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা। অবশেষে আসে লাবণ্যের কাঙ্খিত সেই ফোনকল। অত্যন্ত মার্জিত, সৌজন্য বোধের বিন্দুমাত্র অভাব নেই এমন একজন পুরুষ কন্ঠের ফোনালাপে কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল লাবণ্য। মনে মনে নিজেকেই সেদিন অপরাধী প্রতিপন্ন করেছিল সে। এমন মানুষ সম্পর্কে কিনা সে মিথ্যে আশঙ্কার বীজ বুনছিল মনে মনে ! নিজেকে সেদিন ছিঃ বলেছিল লাবণ্য। মিনিট পনেরোর ফোনালাপ শেষ হয়েছিল আজকের এই সাক্ষাৎকারের প্রস্তাব আর সম্মতিতে।

অয়দিপাউস, দলের এই নতুন নাটকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করবে রোহিত। এটাই তার প্রথম বড় সুযোগ। অসম্ভব পরিশ্রম করছে সে। চরিত্রের সাথে নিজেকে মিলিয়ে দিতে নিজের সব টুকু উজাড় করে দিতে চাইছে রোহিত। মফস্বল থেকে লোকাল ট্রেনে চড়ে কলকাতায় এসে মহড়া, তারপর প্রায় মাঝরাতে বাড়ি ফেরা। সকালে বাড়িতে বসেই দু'টো ব্যাচ পড়িয়ে একটু নিভৃতচর্চা। কোনোদিন থিয়েটারের পড়াশোনা, কোনোদিন বা সংলাপ বলা, স্বরক্ষেপণ অভ্যাস। নাকেমুখে দু'টো গুঁজেই আবার ষ্টেশনে দৌড়। ব্যস্ত রুটিনের মাঝে এক মিনিটও নিজের জন্য সময় বের করতে পারে না রোহিত। দাদা-বৌদির সংসারে মাসান্তে কিছু টাকা ফেলে ই দায়িত্ব সারে রোহিত। তাই বৌদির টিপ্পনী আর বাঁকা কথা গায়ে মাখার মতো ভুল সে কোনোদিনই করে নি। থিয়েটার আর জীবনযুদ্ধ, এর বাইরে কিছুই নেই। এত ব্যস্ততার মাঝেও যে তার জন্য সময় বের করেছে রোহিত, এটা ভেবেই লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে লাবণ্যর।

দু'টো বেজে পঞ্চাশ মিনিট। বেজে উঠল লাবণ্যর ফোন। " কোথায় আপনি ?"

" বাঁদিকের দরজার পাশে কোণের টেবিলে। দেখবেন একমাত্র শাড়ি পরা মেয়ে। "

" ও কে, আমি খুঁজে নিচ্ছি।"

অবশেষে মুখোমুখি রোহিত লাবণ্য :

" সরি লাবণ্য । অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হল আপনাকে। আই অ্যাম এক্সট্রিমলি সরি।"

" না, না ঠিক আছে "

"আসলে একটা জরুরী কাজে আটকে পড়ে ঠিক সময়ে আসতে পারলাম না। আর আপনাকে যে সেটা সময় মতো জানাব, সে সুযোগটাও ছিল না। "

"আরে না না। এভাবে বলার কী আছে ? এটা তো হতেই পারে। "

" না না, মানুষকে কথা দিয়ে না রাখতে পারাটা অন্যায়। তার জন্য মার্জনা চেয়ে নেওয়াটাই বিধেয় "

"দেখুন এবার কিন্তু আমি ভীষন লজ্জা পাচ্ছি।"

" আচ্ছা ঠিক আছে। এখন বলুন কি নেবেন ? ব্ল্যাক না কোল্ড কফি ? সাথে আর কিছু ? "

" না না কিচ্ছু না। এ সময় চা, কফি খাওয়ার অভ্যেস আমার নেই। আপনি চাইলে নিতে পারেন।"

"তা কী করে হয় ? এক যাত্রায় পৃথক ফল ?"

অগত্যা দু'টো কফির অর্ডার করে রোহিত। এমন সজ্জন, সংস্কৃত মানুষ রোহিতকে দেখে ক'য়েক মুহূর্তেই তার প্রতি শ্রদ্ধা আরো বেড়ে গেল লাবণ্যর। মনে মনে তাকে কুর্নিশ করে সে।

"হ্যাঁ লাবণ্য, আমি কিন্তু আপনাকে নাম ধরেই ডাকছি। কিছু মনে করছেন না তো ? "

"আরে না না। বলুন"

"আমার মনে হয় আপনি অকারণে এক হীনমন্যতায় ভোগেন, রাইট ? কিন্তু কেন ? "

"দেখুন, আমি ভালো করেই জানি যে, আমার গায়ের রং কালো। তারিফ করার মতো শ্রী আমার নেই। আজকের দিনে এমন মেয়ে হীনমন্যতায় ভুগবে না তো কী ? "

"আপনি নিশ্চই মার্টিন লুথার কিং-এর নাম শুনেছেন। নেলসন ম্যান্ডেলা, বেন জনসন -এরা কেউই কিন্তু সাদা চামড়ার মানুষ না। তবুও সারা দুনিয়া এদের স্মরণ করে তাদের কীর্তির জন্য। সেখানে গায়ের চামড়া একেবারেই বিবেচ্য নয়। মাইকেল জ্যাকসন কোটি কোটি ডলার খরচ করেও নিজেকে সুশ্রী বানাতে পারেনি। কিন্তু মানুষ তাকে মনে রাখে তার গুণের জন্য । তাই এই গায়ের রং, রূপ এসব কোনো বিষয় ই নয়।"

"আমার যে তেমন কোনো গুণ নেই!"

"কে বলেছে ? আপনি নিজে কখনো ভেবে দেখেছেন, আপনি কী পারেন আর কী কী চেষ্টা করে আরো ভালো করতে পারেন ? আমি নিশ্চিত আপনি কোনো দিন এ ভাবে ভাবেন নি। এমন কিছু দক্ষতা আপনার নিশ্চই আছে যা অনেক সুশ্রী মেয়ের নেই। আপনি নিজেকে কাল্টিভেট করুন। "

"দেখুন আমি কিন্তু একেবারেই গুছিয়ে কথা বলতে পারি না। আপনি এতো সুন্দর করে কথা বলছেন, তার উত্তরে যে কী বলতে হয়, আমি জানি না। এ সব ক্ষেত্রে আমি এতোটাই নার্ভাস হয়ে যাই যে, ঠিক ঠাক কথাই বেরোয় না। "

"এটাই হলো ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্স। এর থেকে আপনাকে বেরোতেই হবে। "

"যাক, এবার বলুন আজ এখানে কেন ডেকেছেন ?"

"দেখুন এই পৃথিবীতে প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু করার আছে। নিজের দক্ষতা প্রমাণের জন্য বিশাল ক্ষেত্র পড়ে আছে। প্রয়োজন শুধু নিজেকে আবিষ্কার করা আর সঠিক ক্ষেত্রে প্রমাণ করা। "

"দেখুন, আমি ভেবেছিলাম... "

"বিয়ে তো ? আচ্ছা লাবণ্য, বিয়েটাই কি জীবনের সব ? ওটাই কি মোক্ষ ? এর বাইরে বেরিয়ে কি কিছু ভাবা যায় না ? "

"মানে ?"

"মানে বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানের দাসত্ব আজকের নারী  কেন করবে ? কেন সে নিজের শর্তে বাঁচতে চাইবে না ? "

"আপনার ওই ভারি ভারি কথা গুলো আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। দেখুন, আমি একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। আজ মায়ের পারমিশন নিয়ে এখানে এসেছি নিজের বিয়ের পাকা কথা বলতে। এটাকেই একটা রেভেলিউশনারি স্টেপ বলে আমি মনে করি ।"

"একজাক্টলি ! এ রকম বাধা আরো ভাঙতে হবে। এই মধ্যবিত্ত মানসিকতার সামনে এমন অজস্র বাধার হিমালয় দাঁড়িয়ে আছে। নিজের ভাবনা চিন্তার পরিসরকে আরো বিস্তৃত করুন। বিয়ে নামক সেকেলে সেন্টিমেন্টে আটকে থাকবেন না লাবণ্য। বিপরীত লিঙ্গের সান্নিধ্যের জন্য বিয়ে ই কি কেবল একমাত্র বিকল্প ? আমি অন্তত সেটা বিশ্বাস করি না। "

"সরি ! আমি কিন্তু বিয়ের কথাই বলতে এসেছিলাম"

" হুম... দেখুন আমি আপনার স্পিরিটকে শ্রদ্ধা করি। বলতে পারেন আমি আপনার সহমর্মী। কিন্তু ব্যাপার কি জানেন, আমি এখন যে অবস্থায় আছি , তাতে এখুনি বিয়ে করার মত সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। দলের মধ্যে সবে বড়ো রোল পেতে শুরু করেছি। এখনো আমাকে অনেকটা পথ যেতে হবে। আমার জন্য পৃথিবীটা কিন্তু অ নে ক  বড়ো! তাই এখুনি বিয়ে...না না না ...সরি। কিছু মনে করবেন না লাবণ্য, সরি।

দুজনের কয়েক মুহূর্তের নীরবতা যেন গ্রাস করল সমগ্র এ্যলবার্ট হলকে। কফি হাউজের সেই বিরামহীন কোলাহল যেন হঠাৎ স্তব্ধ হয়ে গেল। এত মানুষের হৈচৈ, ওয়েটারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিভিন্ন টেবিল থেকে উড়ে আসা বিশেষ ধরনের শিস,  কোনোকিছুই কানে আসছে না লাবণ্যর। হঠাৎ কোনো মহাজাগতিক কারণে আস্ত পৃথিবীটাই যেন থমকে গেছে তার কক্ষপথে।

নীরবতা ভাঙল রোহিতের কথায়, "হ্যাঁ, এবার যে আমাকে উঠতে হবে। পরে নিশ্চই কথা হতে পারে। বি পজিটিভ লাবণ্য। ভালো থাকবেন।"

চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ে রোহিত। বিহ্বল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে লাবণ্য। কানে আসছে পাশের টেবিলের জমজমাট আলোচনা । বিষয় - উত্তর-আধুনিকতা !

                        ।।    সমাপ্ত   ।।


জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇


Post a Comment

0 Comments