জ্বলদর্চি

গেহরাইয়ান - বিশ্বাসভঙ্গ আর যৌনতার গভীরতায় হাবুডুবু সম্পর্কের গল্প /রাকেশ সিংহ দেব

গেহরাইয়ান - বিশ্বাসভঙ্গ আর যৌনতার গভীরতায় হাবুডুবু সম্পর্কের গল্প

রাকেশ সিংহ দেব


পরিচালক - শাকুন বাত্রা

অভিনয় - দীপিকা পাড়ুকোন, সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী, অনন্যা পান্ডে, ধৈর্য কারভা, নাসিরুদ্দিন শাহ, রজত কাপুর।

মুক্তি - অ্যামাজন প্রাইম অরিজিনাল, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২

রেটিং : 2/5


মুভি দর্শকদের যদি দুটি দলে ভাগ করা হয় তাহলে দেখা যাবে প্রথম দল মুভি দেখতে যায় শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য। এরা বিনোদন ছাড়া অন্যকিছু নিয়ে মাথা ঘামায়না। দ্বিতীয় দল যায় মুভি উপভোগের জন্য। এরা বিনোদনের বাইরেও মুভি নিয়ে চিন্তা চর্চা করে। এদের নিজস্ব মতামত থাকে। এরা সংখ্যায় হাতোগোনা হলেও এদের মতামত অনেককে প্রভাবিত করে। আর এখানেই বাধে গোল। এই দুই দলের বাইরের মানুষজন দ্বিতীয় দলের মতামতকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। অমুক দাদার এই মুভি দেখে ভালো লেগেছে মানে ওটি দেখা যায়, আবার উল্টোটাও। এভাবেই অন্যের মতামত ফলো করে নিজেকে সর্বসম‌ক্ষে 'কুল' প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করতে গিয়ে অনেক সময় ওঠে বদহজমের ঢেঁকুর। বলিউডে এমন অনেক ছবি তৈরি হয়েছে যাতে  সম্পর্কের জটিলতা, প্রেমের সম্পর্কে বিশ্বাসঘাতকতার মতো বিষয়গুলি দেখানো হয়েছে। বর্তমান সময়ের মানুষ নিজের প্রয়োজনে সম্পর্ক তৈরি করে এবং একসাথে বসবাস করে। সম্পর্কে শরীর থাকলেও  কিন্তু তারা বছরের পর বছর হৃদয় ও মন থেকে দূরত্ব বজায় রাখে। দম্পতিদের মধ্যে প্রায়ই এই ধরনের পরিস্থিতি দেখা যায়। যেখানে দম্পতিরা সামাজিক সম্পর্কে আবদ্ধ হলেও অন্তরে একে অপরের প্রতি ভালবাসা নেই। 'গেহরাইয়ান' আজকের সম্পর্কের সত্যতাও বলে। এই গল্পটি মূলত চারজনকে ঘিরে। যার মধ্যে দর্শক প্রেম, বিশ্বাস, বিশ্বাসঘাতকতা, লালসাও দেখতে পাবেন।
এই ক্যাটাগরিতে মুক্তি পেয়েছে পরিচালক শাকুন বাত্রার নতুন মুভি 'গেহরাইয়ান'। 

দীপিকা পাড়ুকোন, অনন্যা পান্ডে, সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী এবং ধৈর্য কারভা অভিনীত শাকুন বাত্রার গেহরাইয়ান আজকের আধুনিক সময়ের প্রেমের গল্প। এখানে সম্পর্কে সাতো জনম কে রিস্তের প্রতিশ্রুতি নেই। আলিশা (দীপিকা) এবং করণ (ধৈর্য) ছয় বছর ধরে একসাথে রয়েছে এবং তার খুড়তুতো বোন টিয়া (অনন্যা) এবং তার বাগদত্তা জেইনের সাথে দেখা করার পরিকল্পনা করছে। চারজনের দেখা হয়, উভয় দম্পতি ছুটিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। এদিকে, আলিশা এবং জেইনের মধ্যে কিছু রোমান্টিক শব্দ এবং মিষ্টি দৃষ্টি বিনিময়ের পরে দ্রুত একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট হয়। তার নিজের জগতে ব্যস্ত টিয়া তার পিছনে কী ঘটছে সে সম্পর্কে উদাসীন। এসবের মাঝেই ঝুলি থেকে পরকীয়ার বিড়াল ম্যাঁও করে ওঠে। সম্পর্কে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করা হয়। ক্লাইম্যাক্সে একটি খুব দর্শনীয় উদ্ঘাটন রয়েছে। চারজনের মুখ থেকে ক্রমাগত fu#k f**k শুনতে শুনতে ধ্যাড়ধ্যাড়ে গল্প যে কখন হালকা থ্রিলার হয়ে ওঠে তা জানতে হলে আপনাকে সিনেমাটি দেখতে হবে। তবে এতো মন্থর গতির মুভি দেখতে হলে অসীম ধৈর্যের প্রয়োজন। 

অভিনয়ের কথা বলতে গেলে, দীপিকা পাড়ুকোন ছবিতে ভালো কাজ করেছেন। কিন্তু এই মুভি নিয়ে হয়েছে এক আজব বিড়ম্বনা! মুভি ছেড়ে প্রধান চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে মুভিতে দীপিকা পাডুকোনের বোল্ড সিন ঠিক কতটা বোল্ড? দীপিকা সিদ্ধান্তের রোমান্স কতটা উষ্ণতার পারদ ছুঁলো? দীপিকার কাপড়ের মাপ ঠিক কতটা বিপদসীমা ছুঁলো? ইত্যাদি ইত্যাদি। সিদ্ধান্ত চতুর্বেদীকে একটি নতুন  আলোতে জেইন হিসাবে দেখি, ছবিতে তার কাজটি শালীন তবে তিনি এখনও রোমান্টিক এবং অন্তরঙ্গ দৃশ্যের জন্য তৈরি নন। অনেক চেষ্টা করেও, জেইন এবং আলিশার মধ্যে রসায়ন যথেষ্ট গভীর বলে মনে হয়নি। মুভির গানগুলি বেশ শ্রুতিমধুর। তবে এত ধীর গতির জটিল চিত্রনাট্য মুভিকে বিরক্তিকর গভীরতায় নিমজ্জিত করেছে। 



রেটিং

5 - অসাধারণ
4 - খুব ভালো
3 - ভালো
2 - দেখতে পারেন
1 - না দেখলেও চলবে

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇


Post a Comment

0 Comments