জ্বলদর্চি

মাটিমাখা মহাপ্রাণ-আট /শুভঙ্কর দাস

মাটিমাখা মহাপ্রাণ-আট
শুভঙ্কর দাস 

সরল-সাধাসিধে গতানুগতিক  জীবনপ্রবাহে অবাক হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা সেভাবে ঘটে না! মহানগরে প্রতিটি দিনে যেমন কোনো না কোনো অবাক হওয়ার ঘটনা ঘটেই থাকে,তেমন কিন্তু  অজ-পাড়াগাঁয়ে হয় না!
কিন্তু বাসুদেবপুর ও পরাণচক গ্রামের মাঝখানে যে শ্যাওলাধরা,বটের ঝুরি নামানো হরিমঞ্চ রয়েছে, সেখানে অবাক হয়ে ওঠার মতো ঘটনা ঘটল।
ধনী ও সম্ভ্রান্ত গৃহস্থ গিরিশচন্দ্র হরিমঞ্চে কৃষ্ণকীর্তনের আয়োজন করেছেন।ঠিক সন্ধ্যায় শুরু হবে।চারটি বড় বড় হ্যাজাক আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। হরিমঞ্চটিকে গাঁদা ও রজনীগন্ধা দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। হরিমঞ্চের মাঝখানে ধবধবে সাদা কাপড় ও একটি নকশা করা আসন পাতা।তার ওপর বসে প্রধান কীর্তনীয়া কীর্তন পরিবেশন করবেন।মঞ্চটির তিনদিকে চট ও খড় দিয়ে দর্শকাসন তৈরি।এখনও সন্ধ্যে নামেনি,তার আগেই দর্শাকাসন পরিপূর্ণ। ঢোল-ডাকি প্রস্তুতি প্রায় সারা।কৃষ্ণকীর্তনের পূর্বে কৃষ্ণমাহাত্ম্য ব্যাখ্যা হবে। সেই ব্যাখ্যা যত সুন্দর হবে,ততোবেশি কীর্তন শুনতে ভালো লাগে।কীর্তনীয়ার সুসজ্জিত আসনের পাশের আরও একটি আসন পাতা।
আসর শুরু হতে সেই আসনে যে এসে বসল,তার গায়ে নতুন ফতুয়া, ধুতি এবং গলায় গাঁদার মালা।তাকে দেখেই এবার অবাক হওয়ার পালা।
দর্শকাসনে বসে থাকা মুদিদোকানী গোপাল, রাজমিস্ত্রীর কাজ করা মুনির, রাখালের কাজ করা জগাই এবং জনমজুরের কাজ করা গোকুল পর্যন্ত হাঁ হয়ে গেল!
এই সেই ছেলেটি যাকে গোপাল মাথায় তুলে দিয়েছে চালের বস্তা,মুনির দেখেছে,কীভাবে ইঁট বয়ে এনে তার জোগাড়ে হয়েছে, জগাই দেখেছে,তার গরু চরানোর সময় পাশাপাশি গরু চরাতে আর গোকুল দেখেছে,বাবুর বাড়িতে পুকুর কাটার সময় তাকে কী পরিমাণ মাটি মাথায় করে তুলেছিল,সেই কি না কৃষ্ণকথা শোনাবে!
এরকম আজব ব্যাপার কেউ গাঁ-ঘরে দেখেছে!
গোয়ালিনী কালুর মা তো আবেগে চেঁচিয়ে উঠল,ও মা গো, একে তো মুই চিনি,এতো কুমার গো, মোর গোয়ালের গরুগুলিকে কী যত্ন করে...যখন মোর জ্বর হলি,তখন  দুধ বিক্রি করে দিয়ে এসেছে হাটে, হাতে পয়সা তুলে দিয়েছে অথচ এক পাই পয়সা লেয়নি কোনোদিন! এতো হাবাক ছেলে গো!
আবার ধনীব্যক্তির গিরিশচন্দ্রের গৃহের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও অবাক হয়েছে। কারণ তারা দেখেছে,কুমারদা, তাদের জন্য পড়ার সময় খাবার এনে খাইয়েছে অথবা তাদের সঙ্গে গিয়ে মাঠে খেলার সময় ঘোড়া হয়েছে,তারা অবিরাম তাদের কুমারদার পিঠে চড়েছে,কোনোদিন গরু নিয়ে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে ,সেই সময় তাদের পড়ার মাঝখানে গিয়ে শুনিয়েছে,

"পাখি সব করে রব,রাতি পোহাইল।
কাননে কুসুমকলি, সকলি ফুটিল। 
রাখাল গোরুর পাল,লয়ে যায় মাঠে।
শিশুগণ দেয় মন, নিজ নিজ পাঠে।"

তারপর শুধু ছড়া, যখনই কোনো কঠিন অঙ্ক এসেছে, তখন কেউ না পারুক,কুমারদা পারবেই। বাপরে বাপ, একবার কী কঠিন আঁক ছিল,এক যোজন মানে কত হাত দূরত্ব হবে?
কেউ করতে পারল না,শেষে কুমারদা বললে,১২,০০০ হাজার হাত হবে।
কীরকম?  ব্যাখ্যাও দিল।
৪ হাত ১ ধনু,২০০ ধনুতে অর্থাৎ ৮০০০ হাতে ১ ক্রোশ হয়, আর ৪ ক্রোশে ১ যোজন।
তাই ৮০০০×৪= ১২,০০০ হাত।
ধনীগৃহের ছোটো ছোটো ছেলে-মেয়েরা চোখ ফেরাতে পারছে না!
যাকে নিয়ে এইসব অবাকের পালা,সেই কুমার যখন আসনে বসল,তখন চোখ বন্ধ করে সে একজনের মুখ মনে করল। তিনি কুমারের দিদি। কৃষ্ণসাধিকা।প্রতিদিন ভোরে উঠে স্নান সেরে শুভ্রবসস্ত্র পরিধান করে কৃষ্ণনামগান করতেন।তখন তার মুখ দেখার মতো ছিল,গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে তন্ময় হয়ে যেত,যেন একটি শিশিরভেজা পুষ্প।
দিদির মুখ স্মরণ করে কুমার শুরু করল,

" শ্রিত-কমলা-কুচমণ্ডল ধৃত-কুণ্ডল
কলিত-ললিত-বনমাল
জয় জয় দেব হরে
দিনমণি-মণ্ডল-মণ্ডন ভব-খণ্ডন
মুনিজন-মানস-হংস
জয় জয় দেব হরে।।
কালিয়-বিষধর-গঞ্জন জন-রঞ্জন
যদুকুল-নলিন-দিনেশ
জয় জয় দেব হরে 
মধু-মুর-নরক-বিনাশক গরুড়াসন
সুরকুল-কেলি-নিদান
জয় জয় দেব হরে।। 
অমল-কমল-দললোচন ভবমোচন
ত্রিভুবন-ভবন-নিধান
জয় জয় দেব হরে।। "

কবি জয়দেবের এই পদখানি পাঠান্তে কুমার পরিষ্কার কণ্ঠে বলে উঠল,জয় কৃষ্ণ জয় হরি জয় জয় হে।
বলা মাত্র দর্শকাসনে সকলেই কৃষ্ণনামে মাথায় হাত ঠেকাল।
কুমার বলে চলল,
এই আপনারা কৃষ্ণ নাম শুনে মাথায় হাত ঠেকালেন।এই নামের মহিমা। কৃষ্ণ শব্দটি এসেছে কৃষ্ ধাতু থেকে।অর্থাৎ যিনি আকর্ষণ করেন তিনি কৃষ্ণ। আর যিনি আরাধনা করেন তিনি হলেন রাধা।কৃষ্ণ হলেন পরমাত্মা এবং রাধা হলেন জীবাত্মা। মানুষের একই দেহবৃক্ষের শাখায় বসা দুটি পাখি।পরমাত্মা ও জীবাত্মা। মায়ায় আবদ্ধ হয়ে জীবাত্মা কর্মফল ভোগ করে।পরে মানুষ রাধার মতো আরাধনা করে পরমাত্মা লয়ে মিলিত হয় এবং ভবসাগর পার হয়ে যায়।কিন্তু রাধার সাধন ও ভাব বোঝা অত সহজ নয়। তাই আমাদের মধ্যে এসেছিলেন নদীয়ার গৌর।শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু।

মহাপ্রভুর নাম উচ্চারণ করতে করতে সকলেই জয়ধ্বনি দিয়ে দিল। জয় মহাপ্রভুর জয়। 
কুমার বলে চলল,তাই রাধারহস্য বুঝতে হলে আমাদের গৌরচন্দ্রিকা ও গৌরাঙ্গ বিষয়ক পদে শুনতে হবে।বাসু ঘোষ তো বলেই গেছেন,

" যদি গৌরাঙ্গ নহিত/ কিমনে হইত
কেমন ধরিতাম দে
রাধার মহিমা / প্রেমরসসীমা
জগতে জানাত কে? "

আহ্  সাধু সাধু, একথা বলতে বলতে কীর্তনীয়া দলের প্রধান মঞ্চে উঠলেন।এবং কুমারের মাথায় রেখে আশীর্বাদ করলেন।
দর্শকাসনে বসে থাকা সকলেই হাততালি দিয়ে উঠল।
সহসা হরিকীর্তণ আয়োজক ধনীগৃহকর্তার কাছে প্রধানশিক্ষক ক্ষীরোদচন্দ্র উঠে গেলেন এবং বলে উঠলেন,"গিরিশ, এই ছেলেটিকে আমাকে দিতে হবে,পড়াশুনা শিখলে একদিন অনেক দূর যেতে পারবে"
গিরিশচন্দ্র জানা সানন্দে সম্মতি দিলেন।

এরপর অবাক হওয়ার ঘটনা সেই ক্ষীরোদচন্দ্রের বিদ্যালয়ে।যথারীতি মনোযোগ সহকারে কুমার পড়াশোনা করতে লাগল।
বেশকিছুদিন পর বিদ্যালয়ে একজন পরিদর্শক এলেন। যোগেন্দ্রনাথ বসু।স্বভাবে রাশভারি এবং কড়া মেজাজের। স্কুল পরিদর্শক হিসেবে বেশির ভাগ স্কুলে ভুয়ো পরিকাঠামো এবং সর্বোপরি ভুয়ো ছাত্র ধরতে তিনি একেবারে ওস্তাদ। কত জায়গায় যে সাজানো ছাত্র ধরেছেন এবং সেই সব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কালঘাম ছুটিয়ে দিয়েছেন, তার ইয়ত্তা নেই। যোগেন্দ্রনাথকে সন্তুষ্ট করা কঠিন।তাই যখন ক্ষীরোদচন্দ্র শুনলেন,তাঁর বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসছেন যোগেন্দ্রনাথ, তিনি তটস্থ হয়ে রইলেন।
যোগেন্দ্রনাথ একেবারে কাঁটায় কাঁটায় প্রার্থনার সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত। 
তিনি ছোট ছোট ছেলেদের প্রার্থনা দেখলেন।তারপর প্রবেশ করলেন ক্লাসে। তিনি প্রথমেই জিজ্ঞেস করলেন,এই ক্লাসে কেউ রামায়ণ পড়েছো?
সামনের সারিতে বসে কুমার হাত তুলল।
আচ্ছা, কী রামায়ণ পড়েছো?

আজ্ঞে, শ্রীরাম পাঁচালি।

বেশ,এটা শোনা আছে,
"মরা মরা বলিতে আইল রাম-নাম।
পাইল সকল পাপে দস্যু-পরিত্রাণ।।
নামের মহিমা দেখি ব্রহ্মার তরাস।
আদিকাণ্ড গাইল পণ্ডিত কৃত্তিবাস।। 
এখানে দস্যু-পরিত্রাণ যে বলা হয়েছে, তা কোন্ দস্যুর কথা বলা হয়েছে?

আদিকবি বাল্মিকীর কথা বলা হয়েছে, তিনি প্রথম জীবনে দস্যু রত্নাকর ছিলেন।রাম নাম ভক্তিভরে উচ্চারণ করে পরিত্রাণ পান।

বাহ্, বেশ,আচ্ছা বলতো,
" তৃণাদপি সুনীচেন তরোরপি সহিষ্ণুনা।
অমানিনা মানদেন কীর্তনীয়ঃ সদা হরি।।
এটি কার শ্লোক?

শ্রীচৈতন্যদেবের

মানে জানো?

হা, স্যর

বলো?

তৃণ হতে অবনত হও এবং বৃক্ষ হতে সহিষ্ণু হও,নিজে অভিমান ত্যাগ করে অপরকে সম্মান দেখানো। সর্বদা শ্রীহরির নাম কীর্তন করা উচিত।

দারুণ সুন্দর।
বলেই রোল নম্বর জেনে নিয়ে যোগেন্দ্রনাথ বসু উপস্থিতির খাতায় চোখ বোলালেন। তারপর কুমারের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন,আচ্ছা, বলতে পারবে,এক কথায় প্রকাশ,একই গুরুর ছাত্র। 
কুমারের পাশে বসা একটি ছেলে চেঁচিয়ে উঠল,আমি পারব স্যর
সে অনেকক্ষণ ধরে কুমারের উত্তর শুনে পরিদর্শকের অবাক হওয়া দেখে সেও লাফিয়ে উঠল।
আচ্ছা, বলো?

আজ্ঞে, বন্ধু। 

না,আর কেউ বলতে পারবে?

সার, আমি তো বললাম,বন্ধু, এ আমার বন্ধু, বলেই সে কুমারের দিলে আঙুল তুলে দেখাল।

যোগেন্দ্রনাথ কুমারের দিকে তাকালেন।

আজ্ঞে, সতীর্থ। 

এবার যোগেন্দ্রনাথের সন্দেহ হল।মধ্য-বাংলায় পড়া একটা ছেলে এতো সুন্দর করে উত্তর দিচ্ছে, একের পর এক। এ নিশ্চিত উঁচু ক্লাসের ছাত্র। এই ক্লাসে ভুয়ো ছাত্র  সেজে বসেছে এবং বদমাশি করছে।
তিনি এবার সরাসরি কুমারের দিকে তাকিয়ে বললেন,আচ্ছা, বলতো,ইংরেজিতে এমন একটা শব্দ বলো,যার কোনো ফর্মে পরিবর্তন হয় না, যেমন ধরো,যাওয়া ইংরেজিতে  Go, went,  gone হয়, কিন্তু এমন একটা শব্দ বলো,কোনো পরিবর্তন হয় না?

কুমার একটু নীরব থাকল।
তারপর বলে উঠল,Put,Hit এইধরনের শব্দ। 

ভেতরে চমকিত হলেন পরিদর্শক। দীর্ঘদিন এই পরিদর্শনের কাজ করছেন,কিন্তু এই ধরণের মেধাবী ও বুদ্ধিমান ছাত্র দেখেননি!

আচ্ছা, তোমাকে আমি ১০০ পয়সা,৫০ টি সিকি, ২৫ টি আধুলি  দিলাম,বলোতো, এতে কত টাকা হতে পারে?

একটু চিন্তা করে নিয়ে কুমার উত্তর দিল,এগারো টাকা

এবার অবাক হওয়ার পালা পরিদর্শকের।
কিন্তু তাতে একটু সন্দেহ মিশে আছে। তাই জিজ্ঞেস করলেন,

তুমি কি সত্যি এই ক্লাসের ছাত্র?  জবাব দাও বলছি?

আজ্ঞা 

নাম কী?

আজ্ঞা, কুমারনারায়ণ জানা।

যা ধরেছি,তুমি একটা মিথ্যুক।তোমার নাম তো এই রেজিস্ট্রার খাতায় নেই, হেড মাস্টারমহাশয়কে এখানে ডেকে আনো, মিথ্যা বলা আমি মোটেই পছন্দ করি না।

আজ্ঞে স্যর,আমি মিথ্যা বলি না।

সে দেখা যাবে,কত বড় সত্যিবাদী তুমি! মিথ্যার ওপর কোনোকিছু দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না,তুমি ভুয়ো ছাত্র তা আজ প্রমাণ করে দেবো..

স্যর, আমি ভালো করে জানি,মিথ্যার সত্যিকারের কোনো শক্তি থাকে না, বলেই কুমার শুনিয়ে দিল

"পুস্তকস্থা তু যা বিদ্যা পরহস্তগতঃ ধনং। 
কার্য্যকালে সমুৎপন্নে ন সা বিদ্যান তদ্ধনম্।। 

যা শুনে যোগেন্দ্রনাথ আপন মনে বলে উঠলেন,চানক্য শ্লোক! 
তারই মধ্যে প্রধানশিক্ষক ক্ষীরোদচন্দ্র হন্তদন্ত হয়ে উপস্থিত। 

একটু খোলসা বলবেন,আপনার এই ছাত্রটি চালাকি করছে না কি আপনি করছেন?
প্রধানশিক্ষক মহাশয় প্রথমে থতমত খেয়ে, পরক্ষণেই সামলে নিয়ে বললেন,আসলে এই ছাত্রটি সঠিক বলেছেন এবং আপনিও সঠিক বলেছেন, তবে নামের ধরাটি ভুল হয়েছে। 

মানে? আমি রেজিস্ট্রারে দেখছি,এই বালকটির নাম কুমারচন্দ্র, কিন্তু বালকটি নিজের মুখে বলছে,কুমারনারায়ণ। 
তাহলে? কোনটা ঠিক?

আসলে দুটোই

এই বালকটির নাম সত্যি সত্যি  কুমারনারায়ণ, কিন্তু ভুল করে বিদ্যালয়-রেজিস্টারে তোলা হয়, কুমারচন্দ্র। আসলে একজনের দুই নাম।

না,না,তা করবেন না,এতে ভুল বোঝাবুঝি  বাড়বে, আজ থেকে এই বালকটি কুমারচন্দ্র নামে পরিচিত হোক।
তারপর কুমারের দিকে তাকিয়ে পরিদর্শক জিজ্ঞেস করলেন,কী কোনো আপত্তি আছে নাকি?

তখন কুমারচন্দ্র মৃদু হেসে বলে উঠল,নামের চেয়ে স্যর,কর্মই বড়।কর্মই মানুষের সবচেয়ে পরিচয়। 
গীতায় পড়েছিলাম, " ত্যক্ত্বা কর্মফলাসঙ্গং নিত্যতৃপ্তো নিরাশ্রয়ঃ/ কর্মণ্যভিপ্রবৃত্তোহপি নৈব কিঞ্চিৎ করোতি সঃ।। "

বেশ,বেশ। আনন্দসূচক সম্মতিপ্রদান করে পরিদর্শক যোগেন্দ্রনাথ বলে উঠলেন,এর মানেটা জানো?

আজ্ঞে, যিনি কর্মফলের আসক্তি সম্পূর্ণরূপে ত্যাগ করে সর্বদা তৃপ্ত এবং কোন রকম আশ্রয়ের অপেক্ষা করেন না,তিনি সব রকম কর্মে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও কর্মফলের আশায় কোন কিছু করেন না।

আহ্ সাধু সাধু খুশিতে মুখচোখ ভরে উঠল যোগেন্দ্রনাথ বসুর। তারপর বালক কুমারচন্দ্রের মাথায় হাত রেখে বললেন,বড় হও, বাবা, সত্যিকারের বড় হও,কর্মের মধ্য দিয়ে.. 
কুমার এগিয়ে গিয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করল।

পরিদর্শক একটা অবাক হওয়ার হাওয়ায় চলে যাওয়ার আগে প্রধানশিক্ষক ক্ষীরোদচন্দ্রের দিকে তাকিয়ে শুধু বললেন,কুমারচন্দ্রকে লক্ষ্য রাখুন,একদিন এই ছেলেটি আপনাদের মুখ উজ্জ্বল করবে!

ক্রমশ...

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments