জ্বলদর্চি

ঢেঁকি ও জঙ্গলমহল /সূর্যকান্ত মাহাতো

জঙ্গলমহলের জীবন ও প্রকৃতি
পর্ব - ১১

ঢেঁকি ও জঙ্গলমহল

সূর্যকান্ত মাহাতো

আমি ঢেঁকি। বঙ্গ নারীদের রাঙা চরণের স্পর্শে বা পদাঘাতেই আমি নেচে নেচে উঠি। সাধে কী রবি ঠাকুর বলেছেন---
"প্রিয়ে, তোমার ঢেঁকি হলে যেতাম বেঁচে
রাঙা চরণতলে নেচে নেচে।"

 দেবর্ষি নারদের বাহন আমি। ত্রিভুবনে এতকিছু থাকতে আমাকেই কেন বাহন রূপে গ্রহণ করলেন, সেটা উনিই ভালো বলতে পারবেন। অতটা বিদ্বান বা পন্ডিত আমি নই। না, না, আমি সে কথা বলছি না। তোরাই তো বলিস, আমি নাকি 'বুদ্ধির ঢেঁকি'। শুধু বুদ্ধি নয়। আমার কর্ম ক্ষমতাকেও উপহাস করিস। অথচ দিনরাত পরিশ্রম করি। মুষল মেরে মেরে ধান ভেঙ্গে চাল তৈরি করি। চাল ভেঙে পিঠে তৈরীর গুঁড়ি তৈরি করি। তারপরেও আমাকে ডাকিস 'অকম্মার ঢেঁকি' বলে।

আমার বিদ্যা বুদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুললেই ভাবিস না আমি বোকা!কিছু বোঝার মত ক্ষমতা বা বুদ্ধি আমার যে একেবারেই নেই তা নয়। দেবর্ষি নারদকে কাঁধে চড়িয়ে তার ছোঁয়ায় সেটুকু অন্তত ঘটেছে। আরে বাবা আমার কাঁধে চেপেই তো দেবর্ষি ত্রিভুবনের খবর সংগ্রহ করেন। তাই আমিও মর্ত্যের সব গোপন খবর জানি। জানিস তো মেয়েদের পেটে কথা থাকে না। আর ওরা সব গোপন কথা ঢেঁকিশালেই আলোচনা করে, আমার লেজে পাড় দিতে দিতে। সুতরাং আমাকে একেবারেই বোকা ভাবিস না।

তোদের ভারতচন্দ্র তো অন্নদামঙ্গলের "কন্দল ও শিবনিন্দা" অধ্যায়ে আমার চরিত্র নিয়ে দু চার কথা শুনিয়েও দিয়েছেন---

"কন্দলে পরমানন্দ নারদের ঢেঁকি
আঁকশলী পোয়া মোনা গড়ে মেকামেকি
পাখ নাহি তবু ঢেঁকি উড়িয়া বেড়ায়
কোণের বহুড়ী লয়ে কন্দলে জড়ায়।"

আমার তো আবার বেশি কথা বলাও চলে না। না হলে, তোদের প্যারীচাঁদ মিত্রের মত "আলালের ঘরের দুলাল" বইয়ের সেই সংলাপ শুনিয়ে দিবি, "ঢেঁকির কচকচি করিতেছেন"! আচ্ছা তোরাই বল, দুটো মনের কথা বলতে চাওয়া কি দোষের? সেই চেষ্টা যেই করলাম, অমনি তোদের রামনারায়ন তর্করত্ন 'নবনাটক' নাটকের একটি সংলাপে মুখের উপর বলে দিলেন, "আমি অতো ঢেঁকির কচকচানি শুনতে চাইনে"। ভাই, কিছু বলতে চাওয়াটা কি কচকচানি?

তোরা বড় বড় সব জ্ঞানের কথা বলিস, কাজের নাকি কোনও বড়-ছোট নেই। তাহলে আমাদের কাজগুলোকে ছোট করা কেন! যতটুকু কাজ করি সে তো তোদের উপকারেই। তাও শেষে কী বলিস! 'ঢেঁকির কচকচি আর ঢাকের বদ্যি থামলেই ভালো'। শুধু তাই নয়, 'ঘরের ঢেঁকি কুমির' বলে অপবাদও জুটে কপালে।

আমাকে যত রকম ভাবে হেনস্থা করা যায়, দুর্ণাম, অপবাদে ফালাফালা করা যায় তার সবটুকুই তো তোরা করেছিস। আমাকে তোরা কী না বলেছিস! 'চাল না চুলো, ঢেঁকি না কুলো'। কোলে নেই কাচা/ ঢেঁকি তুল্যা নাচা'। 'ঘরে নেই খড়, ঢেঁকিশালে পরচালা'। 'লাথির ঢেঁকি মাথায় চড়ে'। আরও অজস্র আছে। তার কয়েকটা নমুনা দিলাম মাত্র।

আমাকে দেওয়া এই অপবাদগুলো একবার অন্যের উপর প্রয়োগ করে দেখিস ভাই। পিঠের ছাল চামড়া তখন যে আস্ত থাকবে না, এটা আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি। তারপরেও সেটা না ঘটলে আমাকে বলিস। আমি তখন কিছুটা শান্তি পাবো। ভাবব যাক, কেবল আমিই নয় মনুষ্যকুলও এই অপবাদের শিকার। যাইহোক, বেশি কচকচানি না করাই ভালো।

তবে আমারও সম্মান আছে। ঠাকুর রামকৃষ্ণ কিন্তু ঢেঁকিশালেই জন্মেছিলেন। এটা কম বড় গৌরবের নয়। এছাড়াও যতটুকু কদর পাই, তা তোদের ওই সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের কমলাকান্তের কাছ থেকেই পাওয়া। লোকটা আফিম খেলেও ঢেঁকি হওয়ার যে বাসনা প্রকাশ করেছেন, তাতে আমি বেশ আহ্লাদিত। উনি কী বলেছেন শুনেছিস!  "আমি শ্রীকমলাকান্ত ঢেঁকি--- স্বর্গে ধান ভানিব"। আহা! এ বড় কম কথা নয় হে। ওই তোরা যেমন বলিস, সচিনের মতো হব। অমিতাভ বচ্চনের মতো হব। রবি ঠাকুরের মতো হব। অনেকটা সেইরকম আর কী!

অতীতে তো আমিই তোদের মুখে অন্ন জুগিয়েছি। সে কথা তো বঙ্কিমচন্দ্রের কমলাকান্ত স্বীকারও করেছেন, এই বলে---"যদি পৃথিবীতে ঢেঁকি না থাকিত, তবে খাইতাম কি?"
চন্ডীমঙ্গলের ভাঁড়ু দত্তও আমাকে চেয়েছিলেন---
"হাল বলদ দিবে খুড়া
 দিবে হে বীচের পুড়া
ভেনে খাইতে ঢেঁকি কুলা দিবে।"

আমি কি অশুভ? তাহলে তোদের রবি ঠাকুরের "শেষের কবিতা"-য়  অমিতকুমার আর লাবণ্যের বিবাহ প্রসঙ্গে মাসিমা যোগমায়াদেবী কেন বলেছিলেন---"ভয় নেই বাবা ঢেঁকিতে পা পড়ছে। ধরেই নাও লাবণ্যকে তুমি পেয়েইছ।"

তারপরেও আমাকে নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপের শেষ নেই। অবজ্ঞা করা হয়েছে পদে পদে। কী সাহিত্যে, কী প্রবাদে, কী লোকগানে সর্বত্র। তোদের আর কী দোষ দেবো! আমার অঙ্গই আমাকে ছেড়ে কথা বলে না। লোকগানে কী বলে শোন---
"আঁকশোয়েলাটা বলে রে, ভাই, আমি এক রিত্যে কাঠ
আমি না থাকলে ঢেঁকি চিৎ পট্টাং কাত।" 

না, আর বেশি কচকচানি করলাম না। বাকিটা তুই লিখ ভাই।


ঢেঁকির এই কল্পিত আত্মকথন সত্যিই বড় অভিমানের। সেইসঙ্গে কষ্টেরও। কারণ সেও আজ বিলুপ্তির পথে। তবে আশার আলো হল জঙ্গলমহল। জঙ্গলমহলের গ্রামগুলোতে এখনও ঢেঁকি তার অস্তিত্ব কিছুটা হলেও টিকিয়ে রেখেছে। সেই স্বর্ণযুগ হয় তো তার নেই। তবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হলেও আছে। শহরের মতো জঙ্গলমহলে একেবারেই হারিয়ে যায়নি। এখনও পরবের সময় কান পাতলেই ঢেঁকির ঢক ঢক শব্দ শোনা যায়।

ঢেঁকি দিয়ে ধান ভেঙে চাল তৈরি করার দিন এখন প্রায় পুরোপুরি শেষ। ঢেঁকি ছাঁটা চাল এখন ইতিহাস। অথচ তার স্বাদ ও পুষ্টিগুণ ছিল অতুলনীয়। এখন ধান ভানা কল বা হাস্কিং মেশিন বসেছে গ্রামে গ্রামে। সেখানেই সকলে ধান ভেঙে চাল তৈরি করে। বয়স্করা বলেন, "ঢেঁকি ছাঁটা চালের  মাড়ের সঙ্গে কলে ভানা চালের মাড় ভাত কিছুই নয়। না স্বাদে, না আহারে। রেশনের চালের বাড়-বাড়ন্তে এখন তো হাস্কিং মেশিনও গ্রামাঞ্চলে দীর্ঘ অবসরে। নিতান্তই যে কাজে ঢেঁকি জঙ্গলমহলের গ্রামগুলোতে ব্যবহৃত হচ্ছে তা হল উৎসব বা পরবের সময় পিঠে তৈরির জন্য চাল ভেঙে গুঁড়ি তৈরি করার কাজে।

মকর বা বাঁদনার আগের দিনটিকে অনেকে গুঁড়িকুটার দিন বলে থাকেন। কারণ ওই দিন সকলে পিঠে তৈরির জন্য ভিজিয়ে রাখা চালের গুঁড়ি কুটে ঢেঁকি দিয়ে। তখন বেশ উৎসব উৎসব ভাব। ফিরে আসে ঢেঁকির সেই অতীত ঐতিহ্য। ঢেঁকিশালে বসে উপস্থিত নারীদের বৈঠকি আড্ডা। সুখ দুঃখের কত সব কথাবার্তা। চলে পরনিন্দা ও পরচর্চার জমাটি আসর। ফুটে উঠে গানের সেই দৃশ্য---

"ও বউ ধান ভানেরে
ঢেঁকিতে পাড় দিয়া
ঢেঁকি নাচে, বউ নাচে
হেলিয়া দুলিয়া
ও বউ ধান ভানেরে।"

শুধু পরব বা উৎসবের দিনগুলোতেই  ঢেঁকির সঙ্গে বউকে নাচতে দেখা যায় না। চৈত্র মাসে ছাতু তৈরি বা ছাতু কুটার সময়ও সেই দৃশ্য দেখা যায়। মুড়ি, গম, ছোলা, বাদামকে একসঙ্গে ভেজে ঢেঁকি দিয়ে কুটে ছাতু বানানো হয়। জঙ্গলমহলের গ্রামাঞ্চলে ঢেঁকি কুটা এই ছাতু দারুণ জনপ্রিয়। 

হলুদ, লংকা, জিরা প্রভৃতি মশলা কুটতেও ঢেঁকি ব্যবহৃত হত। তবে এখন সেটাও আর হয় না। বছরের ওই কয়েকটা সময় ছাড়া নারদের বাহন গড়ে মুখ গুঁজেই পড়ে থাকে সারাবছর।

জঙ্গলমহলের মেয়েরাও ঢেঁকিকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করে। নিত্যদিন ঢেঁকিশালে সন্ধ্যা প্রদীপ দেখানো হয়। আলপনা দেওয়া হয়। গোবর জল দিয়ে ঢেঁকিশাল পরিষ্কারও করা হয়।

ঢেঁকি সকলের বাড়িতে নেই। যাদের বাড়িতে আছে তারা সকলেই স্বচ্ছল পরিবার। ব্যতিক্রম দু একটা যে নেই তা নয়। আসলে ঢেঁকি বসানোর খরচ সকলের নেই। যাদের বাড়িতে ঢেঁকি আছে, তারা একটা আলাদা গৌরবও অনুভব করেন। তাই গৃহকর্তার অনুমতি ছাড়া অন্যেরা তাদের ঢেঁকি ব্যবহার করতে পারে না। খুব ভোরে কিংবা অধিক রাত পর্যন্ত ঢেঁকি তাঁরা ব্যবহার করতে দিতেন না। কারণ ঢেঁকির ঢক ঢক ঢুকুর ঢুকুর শব্দে তাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

ঢেঁকি নিয়ে অনেক সংস্কারও আছে। ঢেঁকি মালিকের কোনও শুভ কাজ পড়লে অন্যকে তখন তারা ঢেঁকি ব্যবহার করতে দেয় না। হয় তো অমঙ্গলের আশঙ্কায়। 

ঢেঁকির গঠন বৈশিষ্ট্যও দারুন। একটি মোটা শক্ত ভারী গাছ যেমন শাল, বাবলা, কুল, কাঁঠালের মতো শক্ত ও ভারি কাঠের কাণ্ড বা গুড়ি দিয়ে ঢেঁকি বানানো হয়। হালকা কাঠের হয় না বলে "আমড়া কাঠের ঢেঁকি" নামে উপহাস বা ব্যঙ্গও করা হয়। এটি চার তল বিশিষ্ট হয়।

এক হাতের সমান পা দানি থাকে। পা- দানির কিছুটা পরেই ঢেঁকির শরীরের মাঝখান দিয়ে একটা ছিদ্র বা গর্ত করা হয়। সেখানে একটি গোলাকার বা লম্বাটে কাঠ ঢোকানো হয়। একে বলে 'তোসলি' বা আঁসলাই বা হুড়কো। ঢেঁকি ওঠা নামার সময় এটি বৃত্তাকারে ঘোরে।

'তোসলি'-কে কাঁধে চাপিয়ে রাখে দুই পাশে দুটি হাঁড়িকাঠ বা কাষ্ঠ দন্ড। একে পায়া বলে। এর উপরে অংশটা দেখতে অনেকটা 'U' অক্ষরের মতো। এর উপরেই ঢেঁকি ভর দিয়ে থাকে। পায়াগুলো মাটির অনেকটা গভীর পর্যন্ত পোঁতা থাকে।

পা- দানির পরের লম্বা অংশকে বলে 'ঢ্যাঙা'। ঢ্যাঙার মাথার কিছুটা পিছনে নিম্নভাগে লাগানো থাকে আর একটি কাষ্ঠ দন্ড। অনেকটা হাতির শুঁড়ের মতো। একে বলে 'মুষুন্ডা'। এর দৈর্ঘ্য প্রায় দেড় হাতের সমান। মুষুন্ডার মাথায় লাগানো থাকে একটি লোহার বেড়ি। একে বলে 'সামিজ' বা শামা।

সামিজ বা শামার লাগানো মুষন্ডটি যেখানে বারবার আঘাত করে তার নাম গড়। লোহা বা কাঠের তৈরি হয় এই গড়। ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি পরিমানের গর্ত হয় এই গড়টি। এই গড়েই চাল ধান গম শস্য ঢুকিয়ে ঢেঁকিতে পাড় দিয়ে দিয়ে কূটতে হয়।

গ্রামের সর্বানী মাহাত। দশ বছর হল বিয়ে হয়ে এসেছেন। ঢেঁকির কথা উঠতেই নস্টালজিয়ায় বিষন্ন হয়ে পড়লেন। এখনও বাপের বাড়ির ঢেঁকিশালের ফেলে আসা স্মৃতিগুলো তাকে বড্ড বেশি নাড়া দেয়। মনটা তখন হু হু করে উঠে। কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগে।  ঢেঁকির সেই ঢক ঢক শব্দ, ঢেঁকিশালের মা কাকিমাদের সেই বৈঠকি আড্ডা, নিপুণ হাতে শৈল জ্যাঠিমার গুঁড়ি চালা আজও কত টাটকা তার মনে। এখন কেবল একটা প্রবাদ মনে পড়ে তার---

শ্বশুরবাড়ি গেলাম কাঁকালে ঘড়া
বাপের বাড়ি এলাম, ঢেঁকিতে বারা(ধান ভানা)।

ঢেঁকি ক্রমশ বিলুপ্ত হয়ে পড়ছে কেন? উত্তরে যে দিকগুলো প্রথমেই উঠে আসবে তা হল--

সময়সাপেক্ষ ও ধীর গতি। ঢেঁকি দিয়ে যে কাজগুলো হয় তা অনেকটা সময় নিয়ে নেয়। এবং কাজের গতিও কম। এতক্ষন সময় ব্যয় করা এখনকার জীবনযাত্রায় অচল। এখন গতির যুগ। একই কাজ অন্যভাবে যদি দ্রুত করা যায় এখন সেদিকেই মানুষ বেশি ঝুঁকছে।

পরিশ্রম বিমুখ। মানুষ দিন দিন পরিশ্রম বিমুখ হয়ে পড়ছে। যন্ত্র সভ্যতাই মানুষকে আরও বেশি অলস করে তুলছে। ঢেঁকিতে পাড় দেওয়া বেশ পরিশ্রমী একটা কাজ।  ভারী ঢেঁকিকে পায়ের চাপে বারবার তোলা অতটা সহজ কাজ নয়। তাই পরিশ্রম এড়াতেই ঢেঁকি থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে সকলে।

খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন। ঢেঁকি ছাঁটা মোটা চাল কিংবা মোটা ছাতুর পরিবর্তে এখন সরু ও পালিশ চালে মজে উঠেছেন সকলে। কলে ভানানো ছাতুও বেশ মিহি। তাই প্যাকেট ছাতুকেই বেশি পছন্দ করছেন সকলে। সুতরাং খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনও অনেকটা দায়ী, ঢেঁকির হারিয়ে যাওয়ার পিছনে।

আধুনিক যন্ত্র সভ্যতার বিকাশ। ধান ভানা কল বা হাস্কিং মেশিন, গম থেকে আটা ভানা কল, চাল ভেঙে গুঁড়ি তৈরির মতো আধুনিক প্রযুক্তির কল এসে যাওয়ায় ঢেঁকির গুরুত্ব হারিয়ে গেছে। 

তবে ঢেঁকির বিলুপ্তির পিছনে অর্থনীতিও কিছুটা দায়ী। অর্থনৈতিক ভাবে মানুষ এখন অনেক বেশি স্বচ্ছল। তাই শ্রম ও সময় বাঁচাতে যন্ত্র সভ্যতাকেই আলিঙ্গন করেছে। জঙ্গলমহলের মানুষও এর ব্যতিক্রম নয়।

এখন ঢেঁকি বললেই সকলে নস্টালজিক হয়ে পড়েন। পড়ারই কথা। কত দীর্ঘ সময় তারা ঢেঁকির সঙ্গে কাটিয়েছেন। কতসব দুঃখ ও কষ্টের, আনন্দের স্মৃতি জড়িয়ে আছে ঢেঁকির সঙ্গে। তাদের জীবন যাত্রার একটা অঙ্গই হয়ে ছিল ঢেঁকি। সুতরাং আর নয়, ঢেঁকিকথা আপাতত এই পর্যন্তই থাকুক।

তথ্যসূত্র: লোক সংস্কৃতি গবেষণা; সম্পাদক - শ্রীসনৎ কুমার মিত্র, (২০ বর্ষ, ৩য় সংখ্যা)

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇
 

Post a Comment

0 Comments