জ্বলদর্চি

নেপালের লোকগল্প /চিন্ময় দাশ

দূরদেশের লোকগল্প—  ৭৬
নেপালের লোকগল্প 

এক চাওয়াতেই সব পাওয়া

চিন্ময় দাশ

দেশের রাজার ভারি সুনাম। যেমন তাঁর ন্যায়বিচার, তেমনি ভালো বাসেন প্রজাদের। বড়লোক থেকে দীন-দুঃখী সকল প্রজাই তাঁর কাছে নিজের সন্তানের মত। সকলের ভালো মন্দের দিকে নজর রাখেন তিনি।
আসলে অনেক গুপ্তচর আছে রাজার। সারা রাজ্যে ছড়িয়ে আছে সেসব লোক। প্রজাদের ভালো-মন্দের সব খবর রাজাকে জানিয়ে যায় তারা। রাজাও সাথে সাথে সেসবের দরকার মতো বন্দোবস্ত করে দেন।
শুধু কি তাই? মাঝে মাঝে রাজা নিজেও বের হন প্রজাদের অবস্থা নিজের চোখে দেখতে। তবে রাজার মত ধড়াচুড়া পরে বের হন না তিনি। রাজা যান ছদ্মবেশে। তা-ও আবার রাতের বেলা, দিনে কখনও নয়। 
একদিন এমনই অভিযানে বেরিয়েছেন রাজা। রাত হয়েছে প্রহরখানিক। এক জায়গায় কয়েকজন লোককে বসে থাকতে দেখে কেমন খটকা লাগল। আড়াল থেকে নজর রাখলেন। আর কান পেতে রইলেন কথাবার্তা শুনবেন বলে। 
কথা কানে যেতেই চমকে গেলেন তিনি। লোকগুলো চুরি করবার মতলবে জড়ো হয়েছে এখানে। রাজা তো আকাশ থেকে পড়লেন। তাঁর রাজ্যে চুরি! মেজাজ বিগড়ে গেল রাজার। তেড়ে গেলেন লোকগুলোর দিকে।
লোকগুলো তো চেনে না, মানুষটা এই দেশের রাজা। তারা দেখল, একা একজন লোক। তারা সবাই মিলে রুখে দাঁড়াল রাজাকে। ঠিক কী ঘটতে যাচ্ছিল, বলা যাবে না। কপাল গুণে সেসময় পাঁচটি যুবক ছেলে বাড়ি ফিরছিল সেই পথে। তারা দেখল, কয়েকজন লোক দল বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়তে যাচ্ছে একজনের উপর। তারা দৌড়ে এসে রাজার সাথে যোগ দিল। 
বেশি কিছু করতে গেলে, ছদ্মবেশী রাজাকে চিনে ফেলবে সবাই। রাজা সেটা কোন মতেই চান না। সবাই মিলে উত্তম মধ্যম কয়েক ঘা দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হোল লোকগুলোকে।
যুবকরা বলল—এটা কিন্তু তোমার দুঃসাহসের কাজ হয়ে যাচ্ছিল। ওরা অতোগুলো লোক। তুমি একা মানুষ। বিবাদ করতে গেলে কেন? কী হতে পারত কে জানে!
আর একজন বলল—যাকগে, যা হবার হয়েছে। চল, আমরা তোমাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসি। 
রাজা বললেন—ঠিক আছে, তার দরকার নাই। আমি একাই চলে যেতে পারব। তাছাড়া, এখন তো দেখছি, যে দেশে তোমাদের মতো সাহসী যুবকরা আছে, সে রাজ্যে কেউ একা নয়।
একটু ফারাক রেখে পাঁচজনের সাথে কথা বলতে বলতে চলেছেন রাজামশাই। কথায় কথায় জেনে নিলেন, আলাদা আলাদা গ্রাম থেকে এসেছে পাঁচ বন্ধু। একটা মোড়ে পৌঁছে, যে যার বাড়ির পথ ধরল। রাজাও ফিরে চললেন রাজবাড়ির পথে।
পরদিন সকাল না হতেই, পাঁচ যুবকের অবাক হবার পালা। দেশের রাজার পেয়াদা এসে হাজির প্রত্যেকের বাড়ির সামনে। রাজদরবারে হাজির হবার ডাক পড়েছে তাদের পাঁচজনেরই। 
হোলটা কী? রাজা তলব করবে, এমন কোন কুকর্ম তো করেনি তারা! কিন্তু রাজার হুকুম বলে কথা। অমান্য করার মত বুকের পাটা আছে না কি কারও? 
সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে রওণা দিয়েছে তারা। পাঁচ গ্রাম থেকে পাঁচ জন। রাজবাড়ির সদর দেউড়িতে পৌঁছে, মুখোমুখী  দেখা হয়ে গেল পাঁচ জনের। কারও মুখে কথা নাই। বেশ ভয়ও করছে তাদের। 
দেউড়ির সেপাইরা এসে বলল—চলো এবার। তোমাদের নিয়ে সোজা একেবারে দরবারে হাজির করবার হুকুম আছে আমাদের উপর। 
দুরু দুরু বুকে ভিতরে এসে ঢুকল পাঁচজন। কখনো দরবার দেখেনি তারা। মন্ত্রী-সান্ত্রী, লোক-লস্কর। গমগম করছে দরবার। আর, কী সাজানো গোছানো। ঝলমল করছে গোটা সভা।
চার দিক চেয়ে দেখতে দেখতে তাদের চোখ গেল সিংহাসনের দিকে। ঝলমলে পোষাক পরে বসে আছেন রাজামশাই। মুখটা যেন চেনা চেনা লাগছে।
হাসিতে ঝকঝক করছে রাজার মুখটিও। উঠে দাঁড়িয়ে পড়লেন রাজা—এসো বন্ধুরা। কাল রাতে আমাকে সাহায্য করতেই এগিয়ে এসেছিলে তোমরা। কাল রাত থেকেই আমরা বন্ধু হয়ে গিয়েছি। 
একে একে পাঁচজনকেই বুকে জড়িয়ে আলিঙ্গন করলেন তিনি। সমাদর করে বসালেন পাঁচজনকে।
রাজা বললেন—কাল তোমরা কেবল সাহস দেখাওনি। তোমরা যে পরোপকারী, সে পরিচয়টাও দিয়েছ তোমরা। আমি খুব খুশি হয়েছি তোমাদের উপর। বলো, কী চাই তোমাদের। তবে, প্রত্যেকেই কেবল একটা কিছু চাইতে পারবে। একটাই। বলো, কে কী চাও। যা চাইবে, সেটাই পাবে তোমরা। 
পাঁচজনেরই হতচকিত অবস্থা। বলে কী রাজামশাই। যা চাইব, তাই দেবেন? 
ইতস্তত করে, একজন বলল—রাজামশাই, যে বাড়িতে থাকি আমরা, ভারি ভাঙাচোরা। যদি একটু সারিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন, খুব উপকার হয়। 
রাজা তাঁর গোমস্তাকে ডেকে বলে দিলেন—পুরানো বাড়িটা ভেঙে, ভাল মতন নতুন একটা বাড়ি বানিয়ে দাও একে। 
দ্বিতীয় ছেলেটি বলল—রাজামশাই, ভারি গরীব বাড়ির ছেলে আমি। সংসার চলে না ঠিক মত। ছোটখাটো কিছু একটা ব্যবসা বাণিজ্যের ব্যবস্থা করে দিলে, আমাদের আর অভাব থাকবে না। 
খাজাঞ্চিকে ডেকে রাজা বললেন—ছোটখাটো ব্যবসা নয়, বুঝলে। কাল বড়সড় বিপদ থেকে আমাকে উদ্ধার করেছে এরা। বেশ বড়সড় একটা ব্যবসার ব্যবস্থা করে দাও একে।
তৃতীয় যুবকটি বলল—আমি পড়াশুনো করেছি। কিন্তু উপার্জনের কোন উপায় হয়নি। যে কোনও একটা বন্দোবস্ত হলে, মা-বাবাকে একটু সুখের মুখ দেখাতে পারি। 
রাজামশাই ভারি খুশি এ কথা শুনে। রাজবাড়িতেই তাকে কাজে নিয়োগ করে দিলেন।
চতুর্থ যুবক বলল—রাজামশাই, আমি এসেছি অনেকটা দূরের এক গ্রাম থেকে। পথঘাট একেবারেই ভালো নয়। বলে কয়ে সারিয়ে নেওয়া হয় মাঝে মধ্যে। কিন্তু আবার বর্ষা নামলে, যে কে সেই। সব ভেঙেচুরে একাকার। আবার নাজেহাল অবস্থা। সারা বছর সবাই ভালোভাবে যাওয়া-আসা করতে পারি, এমন রাস্তা হলে সকলের বেশ উপকার হয়। 
রাজা বললেন—এর গ্রাম থেকে যে ক’টা রাস্তা বেরিয়েছে, সগুলোই নতুন করে বানিয়ে দাও। 
এবার পঞ্চম যুবকের পালা। সে বেশ বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। ভেবে উঠতে পারছে না, কী চাইবে রাজার কাছে। তার চার বন্ধুই যা চেয়েছে, তারই ব্যবস্থা করে দিয়েছেন রাজামশাই।
ঠিক কী চাইলে, ভালো হবে, বুঝে উঠতে পারছে না সে। মনের ভাব, এমন একটা কিছু চাইতে হবে, যাতে এক চাহিদাতেই অনেক কিছুর বন্দোবস্ত হয়ে যায়।
তার বিহ্বল ভাব দেখে, রাজা বললেন—দোনামনা কোর না, বন্ধু। মন যা চায়, তাই বলো। আমি অবশ্যই পূরণ করব। তবে, ঐ যে বলেছি। একটাই চাওয়া কিন্তু। দুটি নয়।
কী আর করে? গোটা দরবার তাকিয়ে আছে তার দিকে। রাজামশাইকেও বেশিক্ষণ অপেক্ষা করিয়ে রাখা যায় না। লম্বা একটা শ্বাস ছেড়ে, যুবকটি বলল—আমার নিজের জন্য কিছুই চাই না আমি বন্ধুর কাছে। শুধু একটাই দাবী আছে আমার।
শুনে, রাজা হেসে উঠলেন—প্রার্থনা নয়, দাবী! খুব ভালো কথা। ঠিক আছে। তাই বলো। নির্ভয়েই বলো। তোমার দাবী পূরণ করা হবে।
যুবকটি বলল—আমার দাবী খুবই ছোট। বছরে একবার করে আপনি আমার বাড়িতে অতিথি হবেন। এটুকুই। আমি, আমার পরিবার, গোটা গ্রাম পরম সৌভাগ্যবান মনে করব নিজেদের। 
তার চারজন বন্ধু তো চমকে উঠেছে এমন কথা শুনে। মাথা খারাপ হয়ে গেল না কি এর? নিজেদেরই অন্ন জোটে না ভালো করে। রাজাকে নেমন্তন্ন! 
রাজাও এবার বিভ্রান্ত কথা শুনে। এমন চাহিদা হতে পারে, ভাবেনইনি। কিন্তু কথা দিয়েছেন তিনি। একেবারে ভরা দরবারে। হাসি হাসি মুখ করে, রাজা বললেন—ঠিক আছে, তাই হবে। এবার খুশি? 
--আমরা সবাই খুশি। খুব খুশি। বলে পাঁচ যুবক বেরিয়ে গেল দরবার থেকে। যাওয়ার আগে লম্বা করে পেন্নাম ঠুকে গেল দেশের রাজাকে। যা চেয়েছে, তা-ই পেয়েছে রাজার কাছ থেকে। সারা রাজ্যে তাদের মত ভাগ্যবান কে আছে? 
সেদিন দরবার শেষ হোল। মন্ত্রী বলল—উঠবেন না, রাজামশাই। একটু বসে যান। ‌খাজাঞ্চি, গোমস্তা, সেনাপতি-- সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসল মন্ত্রী। 
রাজা কথা দিয়েছেন ছেলেটির বাড়িতে যাবেন। তা-ও আবার নিয়ম করে ফি-বছর অন্তত একবার। যাবেন কী করে? বসবেন কোথায়? রাজামশাইর দেখভাল করবে কে? ভালো-মন্দ কিছু হয়ে গেলে, ঠেকাবে কে? এইসব হাজারটা কূট প্রশ্ন। এক এক করে ঝরে পড়তে লাগল মন্ত্রীর মাথা থেকে। 
একটা প্রশ্ন বেরোয়, অমনি রাজা মাথা নেড়ে বলেন—ঠিক বলেছেন তো।।
এই ভাবে অনেকগুলো বিষয় ফয়সালা করে ফেলা হোল—রাজধানি থেকে যুবকটির গ্রাম পর্যন্ত নতুন একটা রাজপথ তৈরি হবে। রাজামশাই জুড়িগাড়ী হাঁকিয়ে, সৈন্য-সামন্ত, লোক-লস্কর নিয়ে মহা সমারোহে যাত্রা করতে পারেন, এমন চোখ ধাঁধানো রাজপথ। 
থাকবেন বড়জোর প্রহরখানেক। কিন্তু বসবেন কোথায় সেখানে? রাজার আসন পাতারই জায়গা কোথায় গরীবের কুঁড়েঘরে? অতএব, একটা প্রাসাদ নির্মাণ করা হবে সেখানে নতুন করে। 
রাজার সাথে পাত্র-মিত্ররাও তো যাবে! বসতে দেবে কী সেই ছেলে? উপযুক্ত আসনের ব্যবস্থা চাই। এইভাবে সমস্ত ব্যবস্থার বিধান নিয়ে, সভা যখন শেষ হোল, মন্ত্রীর মুখজোড়া হাসি। 
রাজা বললেন— এর মধ্যে হাসির কী হোল, মন্ত্রীমশাই?
--হাসবো না? মগজ আছে বলতে হয় ছেলেটির। তারিফ করবার মত মগজ। এমন ছেলে এক লাখেও একটা মেলে না। 
স্বীকার না করে পারা যায় না। রাজাও বললেন—তা যা বলেছেন। 
উপস্থিত সকলেই প্রশংসা করল ছেলেটির।
একে একে রাজপথ তৈরি হোল। বড় আকারের প্রাসাদ। লোক-লস্কর। দাস-দাসী। সেপাই-সান্ত্রী। যুবকের পরিবারকে তুলে এনে, বাস করানো হোল নতুন প্রাসাদে। 
দরবারে বসে, রাজা বললেন—মন্ত্রীমশাই! এত খরচের বহর সামলাবে কী করে ঐ ছেলে? আপনি ভালো মতন একটা মাসোহারার ব্যবস্থা করে দিন।
শুনে মন্ত্রীর মুখ গম্ভীর। জবাব দিল না। রাজা বললেন—হোলটা কী? জবাব নাই কেন?
--এতে আমার সায় নাই, রাজামশাই।
--কেন, কেন? সায় নাই কেন আপনার?
মুখ গম্ভীর রেখেই, মন্ত্রী বললেন—সে ছেলে মাসোহারা নেবে বলে মনে হয় না। আমি যতটুকু বুঝেছি, দয়ার দান নেবার পাত্র সে নয়। শুধু বুদ্ধিমান নয়, সে ছেলে মানীও।
--তাহলে, একটা কাজ করা যাক। দরবারেই কোন একটা উঁচু পদে নিয়োগ করে দিন ছেলেটিকে। বেতনের নামে, পুরো মাসোহারা যেন চলে যায় তার বাড়িতে। 
সেই ব্যবস্থাই বহাল হোল। একটা তেজিয়ান ঘোড়া দেওয়া হোল ছেলেটিকে। ঘোড়ায় চড়ে দরবারের কাজে আসা-যাওয়া করতে লাগল সে। সারা রাজ্য চোখ কপালে তুলে দেখতে লাগল ভাগ্যবান ছেলেটাকে।
কেউ জানত না, ভাগ্যের খেলা এখনও কিছু বাকি আছে তার। 
এইভাবে কিছু দিন কেটে গেল। একদিন দরবারের শেষে, হাত জড়ো করে রাজার সামনে এসে দাঁড়াল যুবকটি।
রাজা বললেন—কিছু বলতে চাও? বলো।
--যা আমি চাইনি, যা আমার স্বপ্নেও আসেনি কোন দিন, আমাকে দিয়েছেন। আমি, আমার পরিবার, আমাদের গ্রাম সবাই আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু যা আমি চেয়েছিলাম, এই দরবারেই আপনি কথা দিয়েছিলেন, তা এখনও পাইনি। 
ছেলেটির দুঃসাহসে গোটা দরবার থ। কথা নাই কারও মুখে। রাজা কিন্তু খুশী। হাসি ফুটেছে তাঁর মুখে। আরও বেশি খুশী হয়েছে মন্ত্রীমশাই। ছেলেটিকে চিনতে ভুল হয়নি তার। 
রাজামশাই কিছু বলবার আগে, মন্ত্রী বলল—ঠিক আছে। তুমি এখন যাও। পুরুত মশাইকে ডাকি। শুভদিন দেখা হোক। রাজামশাইর যাওয়ার দিন ঠিক করা হোক। সময় মতো তোমাকে জানিয়ে দেওয়া হবে। 
সেদিনও দবার শেষ হোল। সেদিনও মন্ত্রী বলল—একটু বসে যান, রাজামশাই। আবার সেনাপতি, গোমস্তা, খাজাঞ্চি, অমাত্যদের কয়েকজনকে নিয়ে বৈঠক করল মন্ত্রী।
মন্ত্রী গম্ভীর মুখে বলল-- যত বুদ্ধিমানই হোক না কেন, সাধারণ একজন কর্মচারীর বাড়িতে অতিথি হয়ে যাওয়া দেশের রাজাকে মানায় না। কোন দেশে কোন রাজা কোনও দিন যাননি।
--তবে? আমি কথা দিয়েছি এই ভরা দরবারে। তার কী হবে? কথার খেলাপ আমি করতে পারব না। তাতেও তো মান যাবে রাজার। রাজা বেশ অখুশি।
মুখ উজ্বল করে, মন্ত্রীই বলল—উপায় আছে, মহারাজ! কুটুম্বিতা করে নিন যুবকটির সাথে। রাজকুমারীর বেমানান হবে না এই ছেলে। 
সবাই সায় দিল এ কথায়। হাসি মুখ সবারই। মন্ত্রী বলল—আমাদের মনের কথা জানালাম। তবুও আপনি একবার রানিমা আর মেয়ের সাথে  পরামর্শ করে নিলে ভালো হবে। 
এত বড়ো প্রাসাদ বানানো, রাজপথ নির্মাণ, লোক-লস্কর, আসবাবপত্র পাঠানো—কাণ্ডকারখানা জেনে গেছে গোটা রাজ্য। রানিমা জেনেছে। রাজকুমারী জেনেছে। 
রাজবাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছেলেটিকে ঘোড়ায় চড়ে আসতে যেতে দেখেছেও রাজকুমারী। বেশ ভালোই লেগেছে তার। বিয়ের প্রস্তাব শুনে, সে বেশ খুশী।
ঘরের মেয়ে বলতে গেলে ঘরেই থেকে যেতে পারছে। ভিন দেশে কোথাও যেতে হচ্ছে না। রানিমা এজন্য একটু বেশিই খুশী।
মহা সমারোহ করে বিয়ে হোল রাজকুমারীর। চোখ ধাঁধানো আলোর রোশনাই। রোশনচৌকি বসেছে। তার সুরে আকাশ-বাতাস মাতোয়ারা। মেরাপ বাঁধা হয়েছে রাজবাড়ির সামনের মাঠ জুড়ে। সাত দিন ধরে ভোজ খেল প্রজারা।
সাত দিন কেটে আট দিনের দিন। জুড়িগাড়ি চড়ে, শ্বশুরবাড়ি  চলল রাজার মেয়ে। রাজামশাই কথা দিয়েছিলেন। সেদিন তিনিও চললেন মেয়ের সাথে।  
এক চাওয়াতেই সব পেয়ে গিয়েছে ছেলেটি। তবে, ব্যাপারটা হোল, এই যজ্ঞের সলতে পাকিয়েছিল মন্ত্রীমশাই। কিন্তু রাজামশাই খুশি হয়ে তাকে খেলাত দিয়েছিলেন কি না, জানাই হয়নি। ভোজবাড়ির আনন্দে মেতে, সে খবরটাই নেওয়া হয়নি আমাদের।

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇
 

Post a Comment

0 Comments