জ্বলদর্চি

গর্ভচরিত /শ্রীজিৎ জানা

গর্ভচরিত

শ্রীজিৎ জানা



খুব ভোরেই রওনা দিলো বিতান। দিল্লি যেতে হবে তাকে অফিসের কাজে। দমদম থেকে ফ্লাইট ধরবে। দিন পাঁচেক দিল্লিতে কাটাতে হতে পারে।  কদিন আগেই বিতানের কাছে দিল্লি যাবার অফারটা আসে। নিউজটা বাড়িতে একঝলক রোদ্দুর ঢেলে দিলেও,শোনা অব্দি মেঘ ছেয়ে আছে রঞ্জিনীর চোখেমুখে।  দু-এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে বারকয়েক।  তারপর আদর করা দুটো হাত নোনা বৃষ্টি মুছিয়ে টেনে নিয়েছে বুকের উপরে। রঞ্জিনীও বাধা দেয়নি। সেই আদরমাখা  দুটো হাত বিতানের। বেরোবার আগে আজও একপ্রস্থ সোহাগে ভিজেছে পরস্পর।  রঞ্জিনী নিজের হাতেই সব গুছিয়েটুছিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বিতান ঘর থেকে দৃষ্টির বাইরে চলে যাওয়া মাত্রই মনটাকে কিছুতেই সহজ করতে পারছে না সে। অথচ এখন তো তার ঘর ভর্ত্তি  জোড়া আনন্দের আলো ইলিকঝিলিক করছে চারদিকে। একদিকে বিধানের প্রমোশন, তার উপর শরীরের ভিতর নতুন প্রাণের স্পন্দন! শোনামাত্র  বিতানের আনন্দে পাগল হবার যোগাড়। অফিস থেকে ফেরার পথে গুচ্ছের  চকলেট,টেডি আর ফ্লাওয়ার বুকে নিয়ে হাজির।
 --আই এম সো লাকি মাই সুইট হার্ট। নাউ টেক কেয়ার ইয়োরসেল্ফ। ডোন্ট নেগলেট অ্যাটঅল।
 কথার মধ্যে কখন যে বিছানায় বিতানের কোলের ভেতর কুণ্ডলী পাকিয়ে লেপ্টে গেছে  রঞ্জিনী খেয়াল করেনি।
সেসব আন্দঘন মুহুর্ত এখন তাকে কিছুতেই খুশি করতে পারছে না।রোবোটিক এরাতে কোন দুরত্বই তো অসহনীয় দূর নয়। রঞ্জিনী তবু মনকে বোঝাতে পারছে না। এখন আবার হ্যালো বলা মাত্রই স্ক্রিনে ভেসে উঠবে শোবার ঘরের সমস্ত অলিগলি। কত সহজেই মুঠোফোনের দৌলতে ইথার বেয়ে প্রিয়জনের কাছে পৌঁছে যাবে রাগ দুঃখ অভিমান প্রেম ও প্রত্যাখান।  অনেক সময় আবার বেআব্রু হয়ে যায় যাপনের নিজস্ব মুহুর্ত। শরীর এবং সহবাস। ওই যে কথা হয়, দেখাও হয় শুধু স্পর্শের ওম্ টুকু অধরা থেকে যায়। মানুষটাকে পুরোপুরি  ছুঁতে পারা যায় না। রঞ্জিনী নিবিড় করে পেতে চায়। বারান্দায় রেলিঙটাকে  যেভাবে আঁকড়ে ধরেছে বেগম বাহার লতা, ঠিক সেভাবে পেতে চায় রঞ্জিনী। উদাস দৃষ্টিতে রঞ্জিনী দেখছে একবার বেগম বাহার লতাকে আর একবার সামনের দিকে, যে পথ দিয়ে বিতানের গাড়ি গড়িয়ে গেছে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে।
রঞ্জিনীর এই কদিন বাড়িটাকে শূন্যপুরী  বলে মনে হবে। একআধ দিন তার মা কাছে এসে থাকবে বলেছে। তার উপর কাজের মেয়ে প্রতিমা তো রয়েছে। তবু ঘর জুড়ে থোকা থোকা শূন্যতা আনাচে-কানাচে লেগে থাকবে।এর আগে টানা এতদিন বিতানকে ছেড়ে সে থাকেনি। একা থাকতে তার  ভালো লাগে না। সবে মাত্র তিন মাসে পড়েছে সে। রঞ্জিনীকে নিয়ে বিতানেরও  ভাবনা অন্তহীন। তাদের ভালবাসার প্রথম বীজ ধীরে ধীরে পল্লবিত হচ্ছে রঞ্জিনীর জঠোরে। তাদের গাঢ় প্রেমের অনুরাগ!  চিলতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে চোখে ভেসে উঠছে খুশির দৃশ্যপট! মনের পরতে পরতে জমা হচ্ছে আশ্চর্য সব কথামালা! একপ্রকার ঘোর রঞ্জিনীকে গ্রাস করছে এখন। ক্রমশ সে তলিয়ে যাচ্ছে আনন্দের অতলে, ভাবনার অন্ধকারে! সেখানে বিতানের মুখ ভেসে উঠছে না। সেই অজানা আনন্দভূমিতে  রঞ্জিনী যেন নতুন  অথবা ভীষণ পুরাতন একজন কুশীলব! 
                              ১.
এ মেয়ে রঞ্জিনী নয়।তার ছোট্টবেলা। আদর করে সবাই ডাকে -টুকুন । পুতুল পুতুল মেয়ে সে। মা রিবন দিয়ে কোঁকড়ানো চুল বেঁধে দেয়।  পাড়ার মান্তুর সঙ্গে খেলে বেড়ায় দিনমান। ছোট গ্রাম, ছোট নদী। নদীর পাড়ে হিজল বন। ভাই তখনো তার হয়নি। বাবাকে রোজ শহরে যেতে হয়। কোন এক বড় অফিসে বাবা চাকরি করে। টুকুনের যত আদর তার বাবার কোলে। মা পড়ার কথায় বকুনি দিলেও বাবা বলে- ওর যখন ইচ্ছে হয় পড়তে বসুক। অমনি কথাগুলো শুনে দুটো ফিরফিরে ডানা উড়িয়ে টুকুন যেন হলদেগুঁড়ি পাখি হয়ে উড়ুত ফুড়ুত করে! দৌড়ঝাঁপে মান্তু তার সঙ্গে পেরে উঠতে পারেনা। ওদের খেলাঘর নদী পাড়ের হিজল বন। খেলা হিজফুল পাড়া আর হিজল গাছে দোল খাওয়া।
সেই এক  রূপকথা বিকেল। কুমড়ো ফুলের রঙে রোদ নাচানাচি করছে নদীর জলে,হিজল গাছের মাথায়। গাছতলায় মান্তু -টুকুন  আর কেউ নেই।
-- মান্তু দে না ওই ডালটা ধরে!
--- কি করে পারবো? অনেকটা লাফাতে হবে!
---হয় হোক।তুই লাফা। ওই ফুলের গোছাটা দে না পেড়ে।
--- দাঁড়া,লাফিয়ে ধরছি।
--- ইস্! তোর তো প্যান্ট খুলে গেল!
---খুব হাসি পাচ্ছে তোর? তোরও আছে।
---তোর মতো নয়।
----দেখি
কতকিছু দেখলো দুজনে। রাশি রাশি হিজল ফুল মাখলো গায়ে। কতো নরম! কত সুবাস! কাউকে তারা বলবে না হিজল ফুল গায়ে মাখার কথা!
                                 ২.

শহর থেকে টুকুনরা এসেছে গ্রামের বাড়িতে।গাঁয়ের শীতলা পুজো। বাবা বছর দুয়েক হোলো শহরে  বাড়ি করেছে। কত সুন্দর করে সাজানো-গোছানো তার মায়ের ঘরসংসার! গাঁয়ে দাদু,ঠাকুন,ছোটো পিসিমণি, কাকাই- সকলে  একসাথে থাকে। শুধু তারাই সবার থেকে আলাদা থাকে। মা'কে টুকুন এর কারণ জিজ্ঞেস করতে ভীষণ বকা খেয়েছিল। সেই থেকে আর প্রশ্ন করেনি। দাদু স্কুলে চাকরি করতেন। টুকুন আজকাল ফ্রক পরেনা। মা পরতে দেয়না, বলে -তুমি বড় হয়েছো। টুকুনও একটুআধটু বুঝতে পারে।স্নান করার সময় নিজেকে রোজ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে। চেহারাতে কত পরিবর্তন হচ্ছে দিন দিন। আগের মতো টুকুন  আজকাল হুটহাট করে কাউকে জড়িয়ে ধরতে দ্যায়  না নিজেকে। দাদুর কোলে আগের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে না।  কাকাই গান গায়, গান শেখায়। টুকুনের গান বড় প্রিয়। কাকাইকেও তার বেশ ভালো লাগে।তার সাথে   নদীর পাড় ধরে ঘুরে বেড়ায়। নদীতে সাঁতার কাটা শেখে।  একসাথে খায়। কাকাই গান গাইতে গাইতে তাকে ঘুম পাড়ায়। টুকুনের চোখে ঘুম নামে। অস্বস্তির নাকি আবেশের বুঝে উঠতে পারে না। কাকাই গান থামায় না। গেয়েই চলে অবিরাম। তার কোলের কাছে একটা নরম বাদ্যযন্ত্র ঘুমিয়ে। হারমোনিয়াম নাকি তানপুরা শুধু জানে কাকাইয়ের হাতের ক্ষুধার্ত আঙুলগুলো।  বাদ্যযন্ত্র ক্রমশ কুঁকড়ে বুকের ভেতর ঢুকে যায়। সারা গায়ে স্বরলিপি লেখা হয়। বাদ্যযন্ত্র তখন ঘুমে অচৈতন্য। বাদ্যযন্ত্রের ভেতরে  বেজে ওঠে একধরনের ভয় মিশ্রিত গোঙানি পরিবারের কেউ তা কোনদিন শুনতে পায়নি।
                               ৩.

রঞ্জিনীর এখন দশম শ্রেণী। বসন্তকুমারী বালিকা বিদ্যালয়। শিক্ষা সজ্জা সখ্যতা সবেতেই যেন সকলের চোখে মায়া ছড়িয়ে দেয় সে।পাশের বাড়ির তন্ময় তার একমাত্র বন্ধু। এই শহরে এসেছে দু'বছর হলো। বাবার ট্রান্সফারেবল্ জব্।  তন্ময়দের বাড়ির সঙ্গে এদের বেশ  মাখমাখ ভাব।বাহবা  ইদানিং তন্ময় রঞ্জিনীর বাবাকে কাকু বলে। তন্ময়ের  মা রঞ্জিনীকে এত্ আদর করে যে নিজের মেয়ে থাকলে তাকে অতখানি কোরতো কিনা সন্দেহ।  দুটো পরিবারের এমন সহজ মিশুকে আবহে  চোখের আড়ালে একটা পারিজাত বৃক্ষ শাখা মেলে ধরে। তন্ময়ের কথা বলার একমাত্র সঙ্গী  রঞ্জিনী। ওর পড়ার ঘরে কথা হয়। পড়ার কথা, না পড়ার কথা। কথা যেন ফুরোতে চায় না।  ধীরে ধীরে রঞ্জিনী এক ধরনের ভালোলাগা অনুভব করে।
সন্ধ্যেবেলা পড়ার ফাঁকে ছাদে যায়  রঞ্জিনী।আকাশ পানে চোখ মেলে দেয়। তারাদের দেখে আপনমনে কথা বলে। গান গায়।  আজকাল অনেকটা সময় নিয়ে নিজেকে সাজায়। রাস্তার ভিখিরি দেখলে পয়সা দেয়। মাঝে মাঝে হারিয়ে যায় কোনো অজানা ভাবের জগতে।  মনে হয় তন্ময় সব সময় তার পাশে থাকুক। তার সঙ্গে কথা বলুক।পড়ার কথা, না পড়ার কথা। অনেক অনেক কথা। রঞ্জিনী কিসব যেন বলতে চায় তন্ময়কে। কেমন যেন ভয় করে তার। 

এই সন্ধ্যেবেলা তন্ময় ওর পাশে বিছানায় বসে আছে। কথা হচ্ছে দুজনের। তন্ময়ের কথা শুনতে ভালো লাগে তার। কথা গুলো তাকে ছুঁয়ে যাচ্ছে অবিশ্রান্ত । প্রজাপতি যেমন করে ফুল ছুঁয়ে ছুঁয়ে উড়ে যায় দূরে বহুদূরে। তন্ময় প্রজাপতি  হয়ে মাখিয়ে দিচ্ছে তার সারা শরীরে কথার পরাগ! রঞ্জিনী নামের সূর্যমুখী ফুল ধারণ করছে সমস্ত রেণু! সেই পরাগ নিয়ে পরাগ সংযোগ! পুংকেশর! গর্ভকেশর! ফুল থেকে ফল জন্মাবে। তারপর সম্পূর্ণতা পাবে কুসুম জীবন। রঞ্জিনী এমনই সম্পূর্ণতা পেতে চায়।  নীচে মায়ের সঙ্গে কথায় ডুবে আছে ততন্ময়ের  মা। রঞ্জিনী ভিতর একটা কীট দংশন করছে দীর্ঘক্ষণ। তার নিরাময় দরকার। 
 হঠাৎ লোডশেডিং। রাত নেমে আসে ঘরের ভেতরে। চাপা অন্ধকার। নিজেদের ছায়া দেখে আঁতকে ওঠে রঞ্জিনী। তন্ময়কে জড়িয়ে ধরে। তন্ময় কিছু বলে না। সে বলতে চায় না। বলতে পারেনা। শুধু অন্ধকার বলে দেয় কত কথা। কত কত কথা। তারপর সিঁড়ি দিয়ে কারো উঠে আসার শব্দ তাদের সম্বিৎ ফেরায়। রঞ্জিনীর মা অন্ধকার মুছে দিতে আলো নিয়ে আসে।

দুদিন কথা হয়নি। পরস্পরের দেখা করেনি লজ্জায়। এমনকি লুকিয়ে-চুরিয়েও না। রঞ্জিনী দিনমান ভাবে সারা গায়ে তার আলো নাকি অন্ধকার যেন লেগে আছে! কি যে লেগে আছে ভেবে উঠতে পারেনা! তন্ময় কি এসব কথা ভাবছে? কতবার স্নান করেছে সে।সাবান ঘষেছে। নিজেকে আয়নার সামনে মেলে ধরেছে। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছে যে নিজের শরীর কোথাও কিছু আছে কিনা!তবু যেন মনে হয় লেগে আছে  পরাগরেণু! তা শুধু রঞ্জিনী। আর তন্ময় বোধহয় জানে!

তন্ময়রা চলে গেল হঠাৎ করে। ওদের চলে যেতে হল। সেদিন, সেই দিনই, কিংবা তারও আগে থেকে কিংবা ওইদিন টাই হঠাৎ লোডশেডিং কেন হোলো!কেন কেউ কাউকে সরিয়ে নিতে পারিনি অন্ধকারের মধ্যে! দুদিন কিছু বলতে না পারা, কত কিছু ভাবনার মুহুর্ত  বৃষ্টিতে ভিজতে থাকল দীর্ঘক্ষন। কতক্ষণ বৃষ্টি হলো সেদিন ছোট্ট ঘরটাতে তারা দুজনেই জানে। চলে যাবার আগের ক্ষণটুকু এমনই নিস্তরঙ্গ আর নির্বাকভাবে কাটাতে চাইল পরস্পর। 


রঞ্জিনীর চারদিকটা ক্রমে ফর্সা হতে থাকে। আস্তে আস্তে সে উঠে আসে ভাবনার গহ্বর থেকে, যেখানে  ডুবে ছিল এতক্ষণ। কতকি পেয়েছে সে ডুব দিয়ে। এবার সে একটা মালা গাঁথবে! ঝিনুক মালা! পরাগরেণুর মালা! কিন্তু কাকে পরাবে সেই বরমাল্য!  বিতানকে পরানো উচিত।বিতান বাড়িতে নেই, দিল্লিতে। বিতান আছে তার শরীরের ভেতর। ঘরের ভেতর বিতানের গায়ের ওম্ টের পাচ্ছে রঞ্জিনী।  পরম স্নেহে হাত বুলোতে থাকে জঠরে। চোখ-মুখ কনক চাঁপা ফুলের মত হয়ে ওঠে স্বর্নাভ! গুনগুনিয়ে গান উঠে আসে গলা বেয়ে! বেগম বাহার ফুলের উপর কোথা থেকে উড়ে এসে বসে প্রজাপতি! প্রজাপতি পরাগমিলন  ঘটায়। এক ফুল থেকে আরেক ফুল! পাখানায় কত ফুলের পরাগ লেগে থাকে!  রঞ্জিনীর শরীরের অনেক অনেক পরাগ রেনু! একটি একটি করে লুকোনো আছে তার গোপন প্রকোষ্ঠে। রঞ্জিনীর  কাছে পরাগমিলন মানে মুহূর্তের বীর্যপতন ও ধারণ নয়। যাপনকালের ভালো লাগার মুহুর্তের অনুভূতি মিশে থাকে গর্ভাশয়ের জমিতে।
এই নিয়ে বিদিশার সঙ্গে তুমুল তর্ক করেছিল রঞ্জিনী। অভিমন্যুর জন্ম বৃতান্ত টেনে এনেছে সে। সুভদ্রার গর্ভে থেকে যদি অর্জুনেে অস্ত্র শিক্ষা অভিমন্যু শিখতে পারে তবে তারও রোমাঞ্চ সঞ্চারিত হবে গর্ভে। রঞ্জিনী প্রেগিনেন্সি ব্যাপারটাকে শুধুই বায়োলজিক্যাল গন্ডিতে শুক্রানু ডিম্বাণুর মধ্যে রাখতে নারাজ।তার ধারনায় জন্মের পর থেকেই রেনু সঞ্চয়। তার পর ফলবতী হোয়ে ওঠা। মনের অনুভূতি মিশে যায় শরীর মৃত্তিকায়। সে পরাগ মেখেছে মান্তুর  কাছ থেকে, কাকাই-এর কাছ থেকে, তন্ময়ের  কাছ থেকে, বিতানের কাছথেকে। রঞ্জিনী হাত পা কেঁপে উঠে। পরক্ষণেই  নিজেকে সামলে নেয়। স্ফীত জঠরে আরো একবার হাত রাখে। চোখের নদীটি হঠাৎ করে দুকূল ছাপায়। গত রাতের ছবি আবার একবার ভেসে ওঠে তার চোখের সামনে। রঞ্জিনীর বুকের উপর শুয়ে আছে বিতানের ডান হাত।  অস্ফুট স্বরে কথা বলছে বিতান --- এখানে কে আছে রঞ্জিনী --তুমি 
--আমি, হ্যাঁ,  তুমি -তুমি
তাহলে এখন  কেন তার মাথার ভেতর ভিড় করছে আশ্চর্য সব ভাবনা! তার শরীরের ভেতর ঘুমিয়ে আছে সে কি তবে বিতান নয়! সে ছাড়া আর কে জানবে জন্মরহস্য,পরাগমিলনের ইতিকথা । মা ছাড়া কারো জানা সম্ভব নয়।  রঞ্জিনী আরো একবার পাড়ি দেয় দিগন্ত রেখার দিকে!'
হঠাৎ করে ঘরের ভেতর থেকে প্রতিমা ডেকে ওঠে -বৌদি, ঘরের ভেতরে এসো।  বাইরে থেকো না। সেই কখন সন্ধ্যা নেমেছে। তোমাকে ঠান্ডা লাগবে। তুমি এখন যে আর একা নও...

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇
 

Post a Comment

0 Comments