গুচ্ছ কবিতা
তুলি মুখার্জি চক্রবর্তী
খেলাঘর
আমাদের খেলা ঘরে তুই আমি
সারারাত বৃষ্টিতে ভিজেছে মাটির বুক
সুখ সুখ গন্ধের নেশায় জেগে থাকে দিন
স্ট্রবেরি চাঁদের নাগাল পেতে রাত দিন এক হয়ে যায়
চোখাচোখি হতেই হাসিতে লুটোপুটি জ্যোৎস্না
বর্ষা ভেজা বনজ ঘ্রাণে আলগা হয় শিকারীর তূণ
লক্ষ্যভেদ হবার আগেই পরের ধাপে পা রাখা
খেলাঘর আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রাখে আমাদের।
সুখ যন্ত্রণা
ভালোবাসি বলাটাই ভুল
বাসলে তো বুঝবেই মন
আঁচড়িয়ে দেখি পাকা চুল
স্মৃতিগুলো জমাট এখন
অর্ধ শতক পার করে
হাতে থাকা যতটুকু পাই
আঁচলেতে বাঁধি লুট করে
পুরোনো দিনের আশনাই
চলে গেছে কলেজের দিন
ঘুরে দেখি বাইফোকালে
কারশেড চালে ভেজা টিন
ছুটছে সাতটার লোকালে
গিলে চলি কষ্টের ঢোক
সাতরঙে স্বপ্নেরা আসে
পশরায় সাজা যত শোক
কাগজের ফুল হয়ে হাসে
সামলে নিয়েছি সংসার
তিনদশকের সব খেলা
ডাউন মেমরিতে ছাড়
ঘর বর অফিসের ঠেলা
তুইও ব্যস্ত মিঠে ঝড়ে
সাতপাকে বাঁধা পড়েছিস
সুখি গৃহকোণে হাত ধরে
সুর তালে ঘর গড়েছিস
ভেঙে গেলে ঘুম মাঝরাতে
যন্ত্রণা সুখ দিয়ে যায়
ভেজেনা বালিশ কান্নাতে
থাকি ভোরের চিঠির আশায়
🍂
ট্রেনে তখন আমরা
হাওড়া থেকে ছুটবে ট্রেন
যাবে অনেক দূর
ট্রেন মানে তো আমার কাছে
যাচ্ছি খড়্গপুর
ধানের ক্ষেত আকাশ ছুঁয়ে
নুয়ে তখন আসে
ছুটন্ত ট্রেন, অচেনা ভিড়
তোর মুখটাই ভাসে
নয়ানজুলির ওপাশে তে
রঙের আগুন ফুলে
তোর পাঠানো খেরোর খাতা
দেখছি আমি খুলে
সব লিখেছিস মনের কথা
সোনালী কলেজ বেলা
দেউলটিতে আজো বসে
আউল বাউল মেলা
দেখতে দেখতে এসে গেছি
রাধামোহনপুরে
করমণ্ডল একটু পরেই
যাবে হিজলি ঘুরে
বিকেল গড়ায় সন্ধে নামে
সোনামুখীর মাঠে
অবাক হয়ে দেখতে গিয়ে
সূর্যি নামে পাটে
আই আই টি র উঁচু টাওয়ার
হাতছানিতে ডাকে
মিসেস লোনো'র ভুত বাংলো
দিচ্ছে উঁকি ফাঁকে
লম্বা সফর রাতের ট্রেনে
চিল্কা ছুঁয়ে ভোরে
সুর করে ঐ চাওয়ালা টা
ডাক লাগাবে জোরে
ঘুমের দেশে আমিও তো
স্বপ্নে ঘরের কোণে
রাজ সিমরণ প্রেমের সীন
0 Comments