কবিতা অ্যাভিনিউ
বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
পর্ব -১৬
আগের পর্বে কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতায় প্রেম কীভাবে আশ্রয় লাভ করেছে তা নিয়ে অল্পবিস্তর আলোকপাত করা হয়েছে। হাসি, দুঃখ, বিষাদ ও বিপ্লবের আবহেও ভালোবাসা দিনের আলোর মতো স্বচ্ছ ও সুন্দর। যখন আমাদের পায়ের নিচ থেকে সরে যায় মাটি, মাথার উপর থেকে হারিয়ে যায় আকাশ তখনও মানুষের হৃদয়ে অস্তিত্বের মর্যাদা নিয়ে জেগে ওঠে প্রেম। কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতার মধ্যে পরিভ্রমণ করতে করতে এই বিশ্বাস আরোও দৃঢ় হয়ে ওঠে।মানুষের প্রতি এই সুগভীর ভালোবাসা আছে বলেই তিনি বারবার বিপন্ন মানবতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। যখন মানুষের উপর নেমে এসেছে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, যখন আক্রান্ত হয়েছে মানুষের অধিকার তিনি হয়ে উঠেছেন সমাজ-বিবেক। ক্ষমতাতন্ত্রের বিরুদ্ধে, প্রতাপের বিরুদ্ধে বারবার উচ্চকিত হয়েছে তাঁর কণ্ঠস্বর। সে তো শুধু অদূর সাম্প্রতিক সময়ে দাঁড়িয়ে নয়। তাঁর কবিতা লেখার একেবারে প্রারম্ভিক বিন্দু ছুঁয়েই তা গর্জে উঠেছিল যখন খাদ্যের দাবিতে মানুষ পথে নামতে বাধ্য হয়েছিল। ১৯৫১ সালে খাদ্যের দাবি মিছিল হয়েছিল কোচবিহারে। তখন সদ্য স্বাধীন দেশ। কোচবিহারে খাদ্য আন্দোলনের মিছিলের উপর গুলি চালিয়েছিল অমানবিক পুলিশ। মারা যায় বছর ষোলোর এক কিশোরী। স্বাধীন ভারতবর্ষে নিজের দেশের পুলিশের হাতে স্বাধীন এক কিশোরীর মৃত্যু। এই মৃত্যু তাঁর ঘুম কেড়ে নিয়েছিল। গুলি যেন এসে লেগেছিল তাঁরই বুকে। নিজের হৃদয়ে সেই ক্ষতচিহ্ন অনুভব করেছিলেন তিনি।তাই নিজেকে নিংড়ে সেদিন লিখেছিলেন- নিভন্ত এই চুল্লিতে মা / একটু আগুন দে/ আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি/ বাঁচার আনন্দে।’ শেষের লাইনটি আরও মারাত্মক।‘ গিয়েছে পথ দিয়ে’। যমুনাবতীর মৃত্যু যেন একটি পথ রচনা করে গেছে। যে পথ দিয়ে অজুত নিযুত হাজার হাজার নরনারীর উপর বারবার নেমে এসেছে রাষ্ট্রীয় আক্রমণ।
বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ডঃ শিশির দাশ তাঁর কাব্যপ্রবাহ সম্পর্কে যে কথাগুলি উচ্চারণ করেছিলেন তা হল-‘ একটি ব্যক্তিমুখী, এর নির্জনতা সন্ধানী ব্যক্তিসত্তার আত্মকথা, সংকেতময় ভাষায় ও প্রতিমায়, মৃদুকোমল ছন্দস্পর্শে অনুত্তেজিত কণ্ঠস্বরে এই কাব্যধারা বিশিষ্ট, অন্যধারাটি চারপাশের সমাজের অসঙ্গতি, সমাজের বৈষম্য ও অমানবিকতার প্রতিক্রিয়ায় বিচলিত ও ক্রুদ্ধ এক ব্যক্তিমনের প্রতিবাদের ধারা, তা মূলত বিদ্রূপে ও ব্যঙ্গে, কখনো স্পষ্ট ও তীব্র, কখনো বেদনায় ও যন্ত্রণায় গভীর।’ সংবেদনশীল মানসলোক এবং অনুভবী হৃদয়ের মানবিক আলোয় তিনি জীবন ও সংসারকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাই তাঁর কবিতা মানবাশ্রয়ী এবং সমাজঘনিষ্ঠ উপাদান সমৃদ্ধ।
‘আগে বলবেন, গতর খাটো
পরে মারবেন লাথি
আগে কথার ধুল ওড়াবেন
পরে দাঁতকপাটি
গাব না আর গান।’
অথবা তিনি যখন লেখেন- “ প্রতিদিন ভোরের কাগজে/ বর্বরতা শব্দ তার নিত্য নব প্রসারণ খোঁজে’’ তখন মনে হয় না তিনি খবরের কাগজ পড়ছেন, মনে হয়ে তিনি জীবন দেখছেন সংবাদপত্রের পাতায়। এখনও কাগজ খুললে বিভীষিকা নিয়ে যে খবরগুলি প্রতিদিন উঠে আসে। আমরা শিউরি উঠি মানুষের বীভৎসতায়, কদর্যতায়। এবং এর থেকে মুখ লুকিয়ে ‘ একমুঠো বাঁচবার মতো প্রাণ খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হই’। এবং এর বিরুদ্ধে বলতে গিয়েই মনে হয় আমরা ফেলছি ভাষা। আমাদের দেশ কি শুধু এক মানচিত্র। যদি মানুষের প্রতি মমত্বই না থাকে।‘ মানচিত্র রেখা, তুমি দেশ নও মাটি নও তুমি’। এ তো শুধু কবিতা নয়, দুর্বার এক প্রত্যাখ্যানের মন্ত্রও। স্বার্থপর বাতাবরণের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনিই ঘোষণা করতে পারেন ‘ মজ্জার ভিতরে গর্ব কই, উপেক্ষা কই? মুখ ঘুরিয়ে উদাসীন সরে দাঁড়ানো কই? আমরা দাম্ভিক কিন্তু গর্বিত নই, নির্জীব কিন্তু উদাসীন নই, লুপ্ত কিন্তু লিপ্ত নই’ আত্মমন্থন জাত নির্যাসে তিনিই লিখতে পারেন নিচের অমোঘ লাইনগুলি।
১
পেটের কাছে উঁচিয়ে আছো ছুরি
কাজেই এখন স্বাধীনমতো ঘুরি
এখন সবই শান্ত, সবই ভালো।
তরল আগুন ভরে পাকস্থলী
যে কথাটাই বলাতে চাও বলি
সত্য এবার হয়েছে জমকালো।
২
অর্থহীন শব্দগুলি আর্তনাদ করে আর তুমি তাই স্তব্ধ হয়ে শোনো
দেশ আমাদের আজও কোনো
দেশ আমাদের আজও কোনো
দেশ আমাদের আজও কোনো মাতৃভাষা দেয়নি এখনও ।
৩
বিকিয়ে গেছে চোখের চাওয়া
… তোমার সঙ্গে ওতপ্রোত
নিয়ন আলোয় পণ্য হল
যা-কিছু আজ ব্যক্তিগত।
মুখের কথা একলা হয়ে
রইল পড়ে গলির কোণে
ক্লান্ত আমার মুখোশ শুধু
ঝুলতে থাকে বিজ্ঞাপনে।
৪
লিখে যাই জলের অক্ষরে
আমার মেয়েরা আজও অবশ ভিক্ষার
হাতে পড়ে আছে সব ঘরে ঘরে।
৫
দেখ খুলে তোর তিন নয়ন
রাস্তা জুড়ে খড়গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন।
৬
চরিত্রই নেই যার তার আবার ধর্ষণ কোথায়
৭
পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ,রক্তে জল ছলছল করে
নৌকোর গলুই ভেঙে উঠে আসে কৃষ্ণা প্রতিপদ
জলজ গুল্মের ভারে ভরে আছে সমস্ত শরীর
আমার অতীত নেই, ভবিষ্যৎ নেই কোনোখানে।
৮
আজকাল বনে কোন মানুষ থাকে না
কোলকাতায় থাকে।
৯
নিশান বদল হল হঠাৎ সকালে
ধ্বনি থেকে গেল, থেকে গেল বানী
আমি যা ছিলাম তাই থেকে গেছি আজও
একই মতো থেকে যায় গ্রাম রাজধানী।
১০
ঠোঁট বাঁকিয়ে বলল সবাই, এইরকমই হবে,
আকাল, মশাই ,আকাল।
গোরুর পিঠে দাঁড়িয়ে যুবা বলে এবার আমিই
এই শহরের রাখাল।
১১
এখনো পরীক্ষা চায় আগুনসমাজ
এ-মাটি আমারও মাটি
সেকথা সবার সামনে
কীভাবে প্রমাণ করবো আজ !
১২
প্রতিদিন ভোরের কাগজে
বর্বরতা শব্দ তার সনাতন অভিধার নিত্য নব
প্রসারণ খোঁজে।
১৩
আর তাছাড়া ভাই আমরা সবাই ভেবেছিলাম হবে
নতুন সমাজ চোখের সামনে বিপ্লবে বিপ্লবে
যাবে খোলনলিচা পাল্টে বিচার করবে নিচু জনে
কিন্তু সেদিন খুব কাছে নয় জানেন সেটা মনে
মিত্র বাবুমশায়’
১৪
অল্প দু-চারজন বাকি থাকে যারা
তেল দেয় নিজের চরকায়
মাঝে মাঝে খড়খড়ি তুলে দেখে নেয়
বিপ্লব এসেছে কতদূর
১৫
কখনও বা মনে হয় সরে যাওয়া তত ভালো নয়
এসব তো বহুদিন হলো।
১৬
আমি কি মৃত্যুর চেয়ে ছোট হয়ে ছিলাম সেদিন?
আমি কি সৃষ্টির দিকে দুয়ার রাখিনি খুলে কাল?
ছিল না কি শষ্পদল আঙুলে আঙুলে ? তবে কেন
হীনতম অপব্যয়ে ফেলে রেখে গেছ এইখানে ?
এই যে এতগুলি কবিতার উদ্ধৃতি দেওয়া হল এই কবিতাগুলি রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন ক্ষতের পরিপ্রেক্ষিতে রচিত হয়েছে। দেশভাগের যন্ত্রণা নিয়ে খাদ্য আন্দোলনের অসহায় দিনগুলি জরুরি অবস্থা নিয়ে তিনি যেমন লিখেছেন সাতের দশকে নকশাল আন্দোলনের পটভূমি থেকেও সেভাবে তাঁর কবিতা উঠে এসেছে।‘ তিমির বিষয়ক দু-টুকরো’ কবিতা আমাদের মনে করিয়ে দেয় তিমিরবরণ সিংহের মর্মান্তিক মৃত্যুর কথা।
‘ময়দান ভারি হয়ে নামে কুয়াশায়
দিগন্তের দিকে মিলিয়ে যায় রুটমার্চ
তার মাঝখানে পথে পড়ে আছে ও কি
কৃষ্ণচূড়া?
নিচু হয়ে বসে হাতে তুলে নিই
তোমার ছিন্ন শির, তিমির।’
জরুরি অবস্থার সেই ভয়ংকর দিনগুলিকে যখন মানুষের কণ্ঠস্বর অবরুদ্ধ হচ্ছিল। মুক্ত স্বাধীন চিন্তার উপর আসছিল আক্রমণ। এই ইমার্জেন্সির বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার হয়েছিলেন বিকল্প কবিতায়।
কথা তবু থেকে কথার মনেই
কঠোর বিকল্পের পরিশ্রম নেই।
পুলিশি সন্ত্রাস, শাসকের অত্যাচার বারবার নেমে এসেছে সাধারণ মানুষের উপর। তিনি চুপ করে বসে থাকতে পারেননি। পুলিশি জুলুমের বিপরীতে তুলে নিয়েছেন বিরুদ্ধতার চাবুক
তিন রাউন্ড গুলি খেয়ে তেইশজন মরে যায়, লোকে
এত বজ্জাত হয়েছে।
‘স্কুলের যে ছেলেগুলো চৌকাঠেই ধ্বসে গেল, অবশ্যই
তারা ছিল সমাজবিরোধী।
ও দিকে তাকিয়ে দেখো ধোয়া তুলসিপাতা
উল্টেও পারে না খেতে ভাজা মাছটি আহা অসহায়
আত্মরক্ষা ছাড়া আর কিছু জানে না বুলেটেরা।
দার্শনিক চোখ শুধু আকাশের তারা বটে দ্যাখে মাঝে মাঝে।
পুলিশ কখনও কোনও অন্যায় করে না তারা যতক্ষণ আমার পুলিশ।’
এন আর সির বিরুদ্ধেও তিনি নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন দ্বিধাহীন ভাষায়-
‘ গোধূলি রঙিন মাচা, ও পাড়ায় উঠেছে আজান
এ দাওয়ায় বসে ভাবি দুনিয়া আমার মেহমান।
এখনও পরীক্ষা চায় আগুনসমাজ
এ মাটি আমারও মাটি সেকথা সবার সামনে কীভাবে প্রমাণ করব আজ’।
তাঁর বিদ্রোহের কবিতা সে অর্থে চিৎকার নয় কখনোই।অথচ তীব্র সূচিমুখ প্রতিবাদ আছে , নীরব অনুভবের সাধনার মধ্য দিয়েই তাকে আত্মস্থ করেছেন তিনি ‘ চুপ করো, শব্দহীন হও’ এই মন্ত্রে আছে নৈঃশব্দ্যের প্রতি আস্থা, অথচ প্রতিবাদের এক প্রস্বর ভঙ্গিমা
‘ঘরে ফিরলে মনে হয় বড় বেশি কথা বলা
হলো ?
চতুরতা, ক্লান্ত লাগে খুব?
মনে হয় ফিরে এসে স্নান করে ধূপ জ্বেলে চুপ
করে নীলকুঠিতে
বসে থাকি?
মনে হয় পিশাচ পোশাক খুলে পরে নিই
মানব শরীর একবার?’
আরেকটি মৃদু অথচ মর্মভেদী কবিতা যা আমাদের নতুনভাবে জাগিয়ে তোলে সেই কবিতার কথাও বলা অত্যন্ত জরুরি
‘হলে হলো, না হলে নেই।
এইভাবেই
জীবনটাকে রেখো
তাছাড়া, কিছু শেখো
পথে বসানো ওই
উলঙ্গিনী ভিখারিনীর
দু’চোখে ধীর
প্রতিবাদের কাছে।
আছে, এসবও আছে।’
আবার আরওয়াল গণহত্যা, রনবীর সেনা নিয়েও তিনি লিখেছেন। যেখানেই ফ্যাসিবাসী সন্ত্রাসের চেহারা দেখেছেন তিনি সক্রিয় থেকেছেন তাঁর লেখায়, তাঁর চিন্তায়। কোন আপসকামীতা নয়, আসলে দেশের যন্ত্রণা দশের যন্ত্রণা তাঁর নিজের যন্ত্রণা হয়ে উঠেছে । বিষাক্ত ছোবল নিয়ে আক্রমণ করেছে কবিকেই।কালুবর্গী হত্যা বা গৌরী লঙ্কেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আক্রমণের বিরুদ্ধেও তিনি হয়ে উঠেছেন রাষ্ট্রের বিবেক।
১
যদিও বধির, তবু ধ্বনিরও তো ছিল কিছু দেনা
সবই কি মিটিয়ে দিয়ে গেল তবে রণবীর সেনা।
২
নারায়ণ নয়, আমি পেয়ে গেছি নারায়ণী সেনা।
যতদূর যেতে বলি যায় এরা, কখনো আসে না
কোন কূট তর্ক নিয়ে, ভাবলেশহীন ধ্বংস হাতে
ছুটে যায়। যদি বলি দিন, বলে দিন,
যদি বলি রাত, বলে রাত।
৩
ওদের ব্রহ্মর্ষি সেনা, ওদের চক্রের ব্যূহ ঘেরা
ওদের রাইফেলে গুলি ওদের পুলিশ সুপারেরা।
৪
তিসরা ঝাঁকি দিকে দিকে, কোনোখানে
কালবর্গী
কোথাও বা গৌরী লঙ্কেশের খরা জরা জলস্রোতে রক্তস্রোতে ভেসে যায়
স্বপ্ন যত ভবিষ্যৎ দেশের
গলায় মুণ্ডুর মালা
তাথৈ তাথৈ নাচে গোটা দেশ হয়েছে ভাস্বর
আজ সে পরীক্ষা হবে আমরা শুধু শববাহক
৫
আমার সবটাই আলো আমার সবটাই অন্ধকার
আমার সবটাই জন্ম আমার সবটাই মৃত্যুদ্বার
আমার ধর্মও নেই আমার অধর্ম নেই কোনো
আমার মৃত্যুর কথা যদি কেউ দূর থেকে শোনো
জেনো – এ আমার মাটি এ কাল আমার দেশকাল
জালিয়ানওয়ালাবাগ এবার হয়েছে আরওয়াল।
নিরন্নের হাহাকার, অত্যাচারিতের কান্না,ছিন্নমূল মানুষের মর্মবেদনা তাঁর হৃদয়ে বারবার অনুরণিত হয়েছে তাই অন্তরের তলদেশ থেকে শাসকের প্রতি, শোষকের প্রতি্ ভ্রান্ত নীতির প্রতি উচ্চারিত হয়েছে প্রাণস্পর্শী ধিক্কার।কিন্তু কখনো তা সংযমকে অতিক্রম করে অসংযত প্রগলভ হয়ে ওঠেনি। তিনি জানেন ক্ষমতাতন্ত্রের বিপ্রতীপে দাঁড়ানো মানুষের সংখ্যা চিরকালই কম। তবু যাঁরা আছেন তাঁরা সজাগ প্রহরী।আরও দৃঢ় হোক শক্তিশালী হোক একত্রিত হোক এই হাতগুলি।
‘কিছুই কোথাও যদি নেই
তবু তো কজন আছি বাকি
আয় আরো হাতে হাত রেখে
আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।’( চলবে)
0 Comments