জ্বলদর্চি

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ছেলেবেলা/সূর্যকান্ত মাহাতো

জঙ্গলমহলের জীবন ও প্রকৃতি
পর্ব - ১৯
হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ছেলেবেলা

সূর্যকান্ত মাহাতো

প্রতিটি দিন আমরা একটু একটু করে সভ্য হচ্ছি। একটু একটু করে উৎকর্ষতার শিখরে পৌঁছচ্ছি। শিক্ষায় দীক্ষায়, জ্ঞানে বিজ্ঞানে, প্রযুক্তিতে সাফল্য লাভ করে চলেছি। জঙ্গলমহলও তার ব্যতিক্রম নয়। জঙ্গলমহলও আর আগের মতো নেই। মোবাইল বিপ্লবে তারও আমুল পরিবর্তন ঘটেছে। এখন হাতের তালুতেই গোটা দুনিয়া বন্দি। ঘড়ি, টর্চ লাইট, ক্যালকুলেটর, ক্যামেরা, বই, খাতা, কলমের সব কাজ এই পুচকে মোবাইলেই হয়ে যাচ্ছে। শুধু কী তাই! ব্যাংকটাই উঠে চলে এসেছে হাতের মোবাইলে। স্কুলের আস্ত ক্লাসরুমটাও এখন হাতের মুঠোয়। বালিশে মাথা রেখে শুয়ে শুয়েই পড়াশোনা ও ক্লাস হচ্ছে। ঘরে বসেই সবকিছু মিলে যাচ্ছে। সবই এখন নাগালের মধ্যে। মোবাইলে একবার হাত দিলেই হল। বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ এখন কত সহজ হয়ে গেছে। ভিডিও কল করে তাদের হাসি মুখখানি পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। জঙ্গলমহল আর জঙ্গলে পড়ে নেই। আধুনিকতার মোড়কে একটু একটু করে সেজে উঠেছে। উঁচু উঁচু শাল গাছের ফাঁকে ফাঁকেই এখন মাথা তুলে আছে মোবাইলের বড় বড় সব টাওয়ারগুলো।

আমার কথাগুলো শুনছিলেন শুভেন্দু জ্যেঠু। কথাগুলো শুনে বললেন, "তোমার কথাগুলো অসত্য নয়। বরং দারুণ রকমের সত্যি। কিন্তু মোবাইল সেই সঙ্গে কেড়ে নিয়েছে গ্রামীণ ছেলেবেলাটাও। কেড়ে নিয়েছে গ্রামীণ খেলাধুলোগুলো। কেড়ে নিয়েছে পুরনো কত অভ্যাস। এটা যে কত বড় একটা ক্ষতি তা ব্যাখ্যা করা যায় না।" বলেই রাস্তার পাশে সারি সারি বসে থাকা ছেলেগুলোর দিকে ইশারা করলেন।

"ডাইনে যা! ডাইনে! এবার সোজা! ওই দ্যাখ! সামনে! সামনে! মার! মার! মার!"

  না। এটা কোন শিকার বা শত্রুপক্ষকে আক্রমণ নয়। মোবাইল গেম। নাম ফ্রী ফায়ার। পাড়ার দশ পনেরো জন কিশোর রাস্তার পাশে বসে খেলছে। কোনও দিকে ওদের হুঁশ নেই। সকলে বুঁদ হয়ে আছে মোবাইলের স্ক্রিনের উপর। ঝুঁকে পড়েছে মাথা। আর মাঝে মাঝেই মুখ দিয়ে উপরের কথাগুলো বলে চলেছে। কখনো তারা উত্তেজিত। কখনো আবার হতাশ।

 আরও কয়েকটা জায়গায় ছোট বড় গ্রুপে ইতি উতি ছড়িয়ে আছে পাড়ার বাকি ছেলেগুলো। প্রায় সকলের হাতেই মোবাইল। তাদের কেউ কেউ দক্ষিণী সিনেমা দেখছে। কিছু বলতে গেলেই 'পুষ্পা' কিংবা 'কেজিএফ- ২' এর ডায়লগ শুনিয়ে দিচ্ছে। কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় ডুবে আছে। ইউটিউব দেখছে কেউ কেউ।। কেউ বা কার্টুন খুলে মিটিমিটি হাসছে। কেউই ফাঁকা বসে নেই। যাদের হাতে মোবাইল নেই তারাও অন্যের মোবাইলে উঁকি পাড়ছে। ওতেই ওদের আনন্দ। আর এভাবেই ঘাড় গুঁজে পড়ে আছে জঙ্গলমহলের একটা বড় অংশের কৈশোর সমাজ। কোনও কিছুতেই ওরা বেশিক্ষন মনোযোগ রাখতে পারছে না। ধৈর্যচ্যুতি ঘটছে বারেবারেই।

   বেচারা খেলার মাঠগুলো। শ্মশানের নিস্তব্ধতা সেখানে। বুক চিতিয়ে পড়ে আছে কেবল। অথচ দাপিয়ে বেড়ানোর কেউ নেই। কোল শূন্য মায়ের মতো তার নীরব হাহাকার। শোনার কেউ নেই। বুকের নরম সবুজ ঘাসে গড়াগড়ি দেওয়ার কেউ নেই। আছে কেবল কয়েকটা ঘাসফড়িং। ওরাই লাফিয়ে লাফিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আছে দু একটা প্রজাপতি আর  ফড়িং। রঙিন ডানা মেলে ওরা মিছেই উড়াউড়ি করছে। পূর্বকোনে বসে আছে দুটো শালিক। কিসের যেন গল্প করছে! তবে কি এই অদ্ভুত শূণ্যতার? নাকি শৈশব ও কৈশোর যেভাবে গৃহবন্দি হয়ে পড়ছে তার? কী জানি! ওপাশে দুটো গোরু চরে বেড়াচ্ছে। খেলার মাঠটার কাছে এখন এগুলোই সান্ত্বনা।

  গ্রামের বড় জ্যেঠু, সুজয় কাকা, নীতিশ দা, মাস্টার দাদু সহ সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করছেন যে, গ্রামীণ ছেলেবেলার সেই সব দিন এখন আর নেই। শৈশব ও কৈশোরের অদম্য প্রাণশক্তি, নিষ্পাপ আনন্দ, আর দাপিয়ে বেড়ানো গ্রামীণ খেলাধুলো এখন অতীত। গ্রীষ্মের দুপুরে নেই কোনও আম কুড়ানোর ধুম। বরং অভিভাবকের চাপে আছে তাদের অলস ঘুম। বেশ বড় ঝুঁকি নিয়ে তালগাছের কচি কচি তালের শাঁস খাওয়া নেই। বড়দের নজর এড়িয়ে পেয়ারা, আতা, আম, জাম, তেঁতুল, কুল খাওয়া নেই। পাহারাদারদের নজর এড়িয়ে কাজু বাদাম পেড়ে খাওয়া নেই। লংকা ও নুন বেঁটে জামির(লেবুর মতো) খাওয়া, কাঁচা আম বাঁটা, লবণ মাখিয়ে তেঁতুল খাওয়ার শেষে বীজগুলো নিয়ে খেলা করা নেই। কোনওটাই এখন আর নেই। নেই কোনও গাছে চড়া। আছে শুধু গাছ তলায় বসে থাকা। লাফ দিয়ে জলে নামা নেই। বরং জলে নামতে ভয় পাওয়া আছে। উঁচু ডাল থেকে বা পাড় থেকে নেই কোনও ডিগবাজি শেখা। নেই ঘন্টার পর ঘন্টা সাঁতার কাটা। কত সব সাঁতার খেলা। ডুব সাঁতার। মড়া সাঁতার। আরও কত কী। আর এখন আছে মগ ও বালতির জলে স্নান করা। আছে অভিভাবকের মনে জ্বর-সর্দির ভয়।

   আজকের দিনে ওরা আর সাইকেলের টায়ার কিংবা রিং ঠেঙিয়ে দৌড়ায় না। কেবলমাত্র ভয় পেলে শুধু দৌড়ায়। গরমে টো টো করে অন্যের গাছে চড়ে আম জাম আর খেজুর পাড়ে না। নিজে থেকে পড়ে ঝড়ে রক্তাক্ত হয়ে সাইকেলও শিখে না। শিখিয়ে দিতে হয়।

  যে সব খেলাগুলো একান্তই ওদের সেই খেলাগুলোও এখন বিলুপ্তির পথে। মার্বেল, গুলতি, ডাং-গুলি, হা-ডু-ডু, দাঁড়িয়া, কানামাছি, লুকোচুরি, লোমচুরি, বউ চুরি, রুমাল চুরি, ডিম চুরি, গাছ পাকোড়, কপাল টোকা, চু- কিত কিত, পুতুল খেলা সহ অসংখ্য গ্রামীণ খেলাগুলোতে এখন আর কারও আগ্রহ নেই। ধীরে ধীরে তাই সেগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে।

  তাদের খেলার সময়টুকুকে মোবাইল আর অভিভাবকদের সীমাহীন চাহিদা চুরি করে নিয়েছে। তাই মোবাইলকেই একমাত্র দায়ী করা যায় না। অভিভাবকেরাও তার জন্য সমানভাবে দায়ী। সন্তানদের খেলার সময় কোথায়! স্কুল টিউশনের পর নাচের ক্লাস, গানের ক্লাস, আঁকার ক্লাস সহ কতরকমের ক্লাস থাকে ওদের। সেইসঙ্গে ছেলেমেয়েদেরকে তারা অন্যদের সঙ্গে মিশতেও দিচ্ছেন না। সন্তানের ক্ষতি হবে ভেবে জোর করে তাকে গৃহবন্দী করে রাখছেন। তাকে একাধিক ইঁদুর দৌড়ে সামিল করে তুলছেন। প্রেসারের যাঁতাকলে পড়ে বেচারা শিশুগুলোর গুঁড়িয়ে যাচ্ছে ছেলেবেলাটা। ওদেরকে ওদের মতো হয়ে উঠতে দিচ্ছি না। দিনরাত কেবল আমাদের মতো করেই ওদের গড়ে তুলছি। বাড়ির বাইরে যাওয়ার থেকে ঘরে বসে মোবাইল নিয়ে খেলা করাকেই অনেক বেশি নিরাপদ ভাবছি। আর আফসোস করছি, "এখনকার ছেলেমেয়েরা খেলাধুলা আর করছে কোথায়? সবাই তো মোবাইলেই ব্যস্ত হয়ে পড়ছে।" এটা কি আমাদের একরকমের দ্বিচারিতা নয়?

  খেলার সেই সুন্দর সুন্দর ছড়াগুলো বাচ্চাদের মুখে এখন আর শোনাই যায় না। 

ইকির মিকির চাম চিকির
চাম কাটে মজুমদার
ধেয়ে এলো দামোদর
দামোদরের হাঁড়িকুড়ি
দুয়ারে বসে চাল কাঁড়ি।
চাল কাড়তে হল বেলা
ভাত খাওসে দুপুর বেলা।
ভাতে পড়ল মাছি
কোদাল দিয়ে চাঁছি।
কোদাল হলো ভোঁতা
খা শিয়ালের মাথা।

আর একটি হল---
এলাটিং বেলাটিং সই লো
কিসের খবর হইল।

  কিংবা নামতা বলার মতো ডিঙিয়ে ডিঙিয়ে খেলার ছড়া হল---
একে চন্দ, হাঁড়ি পচার গন্ধ।
দুই এ দুই, আমড়া গাছের টুই।
তিন এ তিন, বিহা ঘরের দিন।
চার এ চুকুটি, গেঁদা গাছে ঘুগুটি।
পাঁচ এ পাঁচ, কয়লার আঁচ।
ছয় এ ছক্কা, হাতে হাতে ধাক্কা।
সাত এ সাত, কচি মুলার গাছ।

  এমনই আরও কতসব খেলার ছড়া রয়েছে। কিন্তু সে সবের চর্চা এখনকার ছেলেমেয়েরা আর করে না। ওরা আধুনিক প্রযুক্তির খেলায় মেতে ওঠেছে। 

"পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই
 একসাথে খেলি আর পাঠশালে যাই।" 

এখন একসাথে ওদের আর খেলতে দেখা যায় না। মুখে বলে না, কানামাছি ভোঁ ভোঁ, যাকে পাবি তাকে ছোঁ। বাবা-মায়ের নির্দেশে ওদের এখন দিনরাত কেবল একটাই খেলা। সে খেলার নাম 'পড়া পড়া খেলা'। শিশুর নিরস এই খেলায় বাবা-মায়েরাই কেবল আত্ম তৃপ্তি পায়। কিন্তু ওরা পায় না। বরং ওদের শিশুমন চাপা পড়ে থাকে। তাই ওরা বিরক্ত হলেই মোবাইলের লোভ দেখানো হয়। শারীরিকভাবে ওদের দৌড়ঝাঁপ করার তীব্র ইচ্ছাটা তখন হারিয়ে যায় মনের কৃত্রিম আনন্দের কাছে।

  অথচ গ্রামীণ খেলাগুলো কি কেবলই বিনোদনমূলক খেলা? সেগুলো কি শিক্ষনীয় নয়? 'কানামাছি' খেলায় শ্রবণশক্তির দারুণ উন্নতি ঘটে। চোখ বাঁধা অবস্থায় কান খাড়া করে সঙ্গীদের উপস্থিতি টের পেতে হয়। শোনার এই উদগ্র বাসনা শ্রবণেন্দ্রীয়কে দারুণ রকমের তীক্ষ্ণ করে তুলে। "কপাল টোকা" খেলায় বাড়ে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পড়ার ক্ষমতা বা দক্ষতা। কারণ কে কপালে টোকা দিয়েছে তার ব্যতিক্রমী আচরণ যেমন হাসিমুখ, শরীর ও মুখের গতিবিধির পরিবর্তনকে শিশুরা দারুণ রকমের পড়তে শিখে। তারপর কল্পনার সঙ্গে যুক্তি দিয়ে সিআইডির মতো আসল মানুষটিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করে। ভুল হয়। তবু চেষ্টা করে। এতে ওদের মস্তিষ্কও অনেকটা ক্ষুরধার হয়। মেয়েরা পুতুল খেলা খেলতে খেলতে কতসব কল্পনার জাল বুনে। মা, কাকিমা, জেঠিমাদের কাজগুলোকে নকল করতে শিখে। রান্নার কতসব সরঞ্জাম ওদের। দলগত ভাবে খেলে বলে বন্ধুদেরকে আপন করার মানসিকতা গড়ে ওঠে। সেইসঙ্গে প্রতিটি খেলায় শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিকাশ তো ঘটেই ঘটে।

  ছোটদের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম। কিন্তু কিশোর ও যুবকেরাও আজকাল খেলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। নিজেরা এখন আর সেরকমভাবে ক্রিকেট খেলে না। উল্টে বসে বসে মোবাইলে আই পি এল খেলা দেখে। ফুটবলেও উৎসাহ হারাচ্ছে। তাই তো উৎসাহ বাড়াতে প্রতি বছর জঙ্গলমহল কাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেরা খেলোয়াড়দের চাকরিও দেওয়া হচ্ছে। তারপরেও বিরাট কিছু পরিবর্তন ঘটছে বলে মনে হচ্ছে না। সকলেই মাঠে কিংবা টিভিতে বসে খেলা দেখতে পছন্দ করছে। কেন এই অনীহা? অভিভাবকেরা ওদের তো বারণ করে না। তাহলে? কারণ একটাই। মোবাইল! নয় তো প্রচণ্ড কেরিয়ারমুখী জীবন। অর্থ রোজগারেও কোথাও না কোথাও কাজে যুক্ত হয়ে পড়ছে। সময় অনেক বদলে গেছে। আগের মতো আর দীর্ঘ অবসর নেই। অর্থনীতিও এখন বদলে গেছে। খেলার সময় কোথায়! সারাদিনে এ কাজ সে কাজের পর, অবসর সময়টা ওরা মোবাইল ঘেঁটেই কাটিয়ে দেয়। ওটাতেই ওরা বেশি স্বাচ্ছন্দ্য। তাই মাঠে গিয়ে পরিশ্রম করে খেলার কথা ওরা চিন্তাই করে না। যতটুকু আনন্দ-বিনোদন হাতের ওই মোবাইলেই।

  অনেক আগে যখন জঙ্গলমহলের মানুষের কাছে দাবা কিংবা লুডোর গুটি পৌঁছায়নি। তখন কি তারা বুদ্ধিদীপ্ত খেলা খেলত না? অবশ্যই খেলত। বাঘ- ছাগল, পাঁত, অষ্টা-চোখ, ষোলঘর, দশ পঁচিশ, আড়াই ঘর এমন আরও কতসব বুদ্ধিদীপ্ত খেলা খেলত। খেলার কোনও নির্দিষ্ট গুটি ছিল না। তাতে কী হয়েছে। সরু কাঠির টুকরো কিংবা পাথরকেই গুটি সাজিয়ে খেলায় মেতে উঠত সকলে। টানটান উত্তেজনায় সেসব খেলা কত দীর্ঘায়িত হত। বাড়ির মা-বোনেরাও সমানে পাল্লা দিয়ে খেলত। এখন ওরাও আর খেলে না। টিভি দেখে। সিরিয়াল দেখে। নয় তো মোবাইল ঘাঁটে।

  যাই হোক সময়কে তো আমরা কোনওভাবেই অস্বীকার করতে পারি না। আধুনিকতাকে আমাদের মেনে নিতেই হবে। পাশাপাশি ওদের শৈশব আর কৈশোরটুকু যেন হারিয়ে না যায় সেদিকটাও আমাদের ভেবে দেখা উচিত। নয় তো একটা প্রজন্মের স্বাভাবিক বিকাশটাই রুদ্ধ হয়ে যাবে। তখন এর প্রভাব অন্য কিছুতে পড়বে না তো?

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

2 Comments

  1. খুব সুন্দর হয়েছে। সমাজের ‌‌ক্ষতিকর দিক গুলো সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ধন্যবাদ।

    ReplyDelete