জ্বলদর্চি

অশোক মহান্তীর কবিতা : জীবন ভাঙা পথে ঈশ্বরের গান-১১/দিলীপ মহান্তী

অশোক মহান্তীর কবিতা : জীবন ভাঙা পথে ঈশ্বরের গান

দিলীপ মহান্তী
                               
 ১১.

অশোক মহান্তী প্রখরভাবে কাল সচেতন। কাল সচেতন বলেই বর্তমান অতীত ভবিষ্যৎ নিয়ে যেমন চিন্তিত তেমনি তাঁর অনুভবে ধরা পড়ে এক অনন্ত মহাকালের কথা। তাঁর কবিতা বিশ্বে এই কালের প্রভাব বিরাট। এই জন্য তাঁর সম্পাদিত দুটি পত্রিকার নামেও কালের অনিবার্য প্রভাব। সত্তরের দশকে তিনি ‘সাম্প্রতিককাল’ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন আবার ২০০০ খৃস্টাব্দ থেকে ‘মহাকাল’ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন মৃত্যুর আগে পর্যন্ত। এর থেকেও বোঝা যায় তিনি কতটা কাল সচেতন।

   এই কাল চেতনায় একদিকে যেমন আছে বৃহত্তর ভাবে সময়চেতনা তেমনি অন্যদিকে তার মধ্যেই ইতিহাসচেতনাও। এই সময়চেতনা ও ইতিহাসচেতনা খুব স্বাভাবিক নিয়মেই ঐতিহ্যানুসারী। বিশেষ করে বলতে হয় রবীন্দ্রনাথ থেকে জীবনানন্দ হয়ে অশোক মহান্তীর কাছেও সময়ের ও শিল্পের দাবী মেনেই পৌঁছেছে। যদিও তাঁর জগৎ সম্পূর্ণ আলাদা। এই পথে তিনি গভীরভাবে স্বদেশচেতনাতেও নিবদ্ধ।  তাঁর স্বদেশানুরাগের পরতে পরতে সমাজের ভগ্নরূপ, ক্ষুধার পীড়নে মানুষের অসহায় বেঁচে থাকা, তাদের প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি অভাব অভিযোগ, উন্নয়ন-অনুন্নয়ন বলা ভালো উন্নয়ন যেখানে অসমান ও অসম্পূর্ণ,  রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির শিকড়, সেই সঙ্গে শ্রেণীসংগ্রামের চাপা কান্নায় ঢুকরে ওঠা কাঁপতে থাকা এক বিপন্ন স্বদেশকে পাই। যে স্বদেশে ফেলে আসা সময়ের জন্য সভ্যতার জন্য এক পিছুটান থাকে আর অনাগত ভবিষ্যৎ, যন্ত্রসভ্যতার অভিঘাতের জন্য থাকে হা হুতাস। যা ধ্বংসকে ডেকে আনার পূর্বাভাষ দেয়। এক ভয়ংকর দুর্দিনের কড়া নাড়ার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়।

১. ‘আমাদের চতুর্দিকে এগিয়ে চলেছে এক মায়াবী স্বদেশ।
   পিছিয়ে –পড়ার আগে আরও একবার গূঢ় ভেতরে তাকিয়ে
   দেখেছে নিজের মুখ। যে-মুখ অশিক্ষা আর অজ্ঞতার দোষে আজও
   অনর্হ, মলিন। যে-হাত নিজের নয়, সেই হাতে প্রতীকের ধারণা-বর্জিত
   অবার্য উন্মাদ সমস্ত জীবন ছুঁয়ে ধ্বংস করে প্রেম, স্বাজাত্য ও সাম্যবাদ।
   আর যা ছিল নিজের, তার ক্ষয়।

   ঘোর-অন্ধকারে এক সরীসৃপ হেঁটে যাচ্ছে আগামী বিশ্বের দিকে মুখ
   দেহে তার জাতপাত, ক্রোধ। সে সকল খাবে, যদি সব-বিনষ্টির আগে
   তাকে না থামানো যায়।

   স্বদেশপ্রেমের মুখে আজ যে-মুখোশ সে মুখোশ মানুষের।
   আজ ওই মুখোশ সরিয়ে নাও,দ্যাখো, মুখোশের অন্তরালে
   প্রকৃত স্বদেশ আছে কিনা! যাদের সকল থেকে সব নেই তাদের বুকের স্তম্ভে
   আজও জ্বলে ওঠে যে-আলোক সে আলোকই সার্বভৌম,স্বাধীনতা, স্বদেশের মুখ
   যার কোনো ছায়া নেই।

   তেত্রিশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে আরও সাতাত্তর। শাসনযন্ত্রের তলে
   আজ ঢের স্বদেশী সাংসদ, তবু মুক্তি হয়নি ভারতবর্ষের
   শেষ হয়নি নির্বিকল্প না-র। চারদিকে ঘিরে আছে কূটবিষ
   রাজনীতি, সভ্যতার জ্বর, অজস্র বধিরগ্রাম।
   আমাদের চারদিকে আলো নেই, পুষ্টি নেই, শাশ্বত সমাজ আছে তবু।
   খাদ্য নেই, খাদ্যের সারিতে আছে একশো কোটি স্বদেশ-বিশ্বাসী।

   আমি বিশ-শতাব্দীর শেষের দশকে দেখেছি এ ভারতবর্ষের মুখ।
   তুমি, জগৎসভায় তার শ্রেষ্ঠত্বের অমোঘ আসন দেখেছিলে।
     ( নির্বিকল্প নাঃ আলোক শিশির )

২. ‘মাটি থেকে ক্রমাগত উপরে ও নিচে যতটা আকাশ,শূন্য, মহাশূন্য
   সবটাই কি তোমার স্বদেশ? তা যদি না হয়, তবে কেন এই স্বদেশ চেতনা?
   তোমার পায়ের নিচে যতটুকু মাটি, আকাশ সেখান থেকে উঠে গেছে
   অনেক উপরে, তোমার পাশেই যারা, তাদেরও মাথায় এমনি আকাশ।
   তোমার স্বদেশ বলতে এতখানি।
   যতটুকু তুমি, ঠিক তোমার পায়ের নিচে যতখানি ঘাস, ধুলো, পাথরের স্তর
   মাটির গভীর নিচে নেমে গেছে, একেবারে মাটি ভেদ করে
   আরো নিচের আকাশে, এছাড়া স্বদেশ বলতে আর কিছু নেই।

   তোমরা যা স্বদেশ ভেবেছো এতদিন, ভেবে দ্যাখো, সে সীমানা
   মানুষ ভেঙেছে কতবার।
   কতবার পাথর ভেঙেছে স্রোত, পৃথিবী ভেঙেছে তার স্থির বর্ণমালা
   সূর্যকে সে কতবার, কতদিক থেকে ঘুরে গেছে।

   আর তুমি, এখনও বালির বাঁধ বেঁধে রেখে বলতে চাইছো এ জল আমার
   আমি কাউকে দেবোনা, এই বাতাস আমার, আমি কাউকে দেবোনা,
   আর, অস্ত্র ও আগুন নিয়ে বসে আছো, সকলের সব খেলা
   ভেঙে দেবে বলে।
   কিন্তু দ্যাখো, জল নিজে ফুঁসে উঠছে অন্তর্গত স্রোতের তাগিদে
   জল নিজে ঘূর্ণি হচ্ছে অন্তর্গত স্রোতের তাগিদে
   জল নিজে ফুঁসে উঠে, ভেঙে পড়ছে অন্তর্গত স্রোতের তাগিদে

   অফুরান জল, মাঠে-বনে ছুটে যাওয়া বাধা ও বন্ধনহীন রোগা-ভোগা জল
   গর্জে উঠছে অন্তর্গত শান্তির তাগিদে

   তাকে কীভাবে নিরস্ত করবে বলো?
    ( শান্তিঃ মাটির মন )

  যে স্বদেশ তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন তা অশিক্ষা ও অজ্ঞতার আবরণে মোড়া। যেখানে প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে প্রেম, স্বাজাত্যবোধ আর সাম্যবাদ। জাতপাত ও ক্রোধের আগুনসম খিদে নিয়ে এক সরীসৃপ আগামী বিশ্বের দিকে ছুটে চলেছে তাকে থামানো না গেলে সমস্ত কিছু নষ্ট হবে। চারদিকে কূটবিষ, রাজনীতি, সভ্যতার জ্বর আর অজস্র বধিরগ্রাম চোখ মেলে আছে কিন্তু আলো নেই, খাদ্য নেই, পুষ্টি নেই তবু শাশ্বত সমাজ আছে। এই যদি ভারতবর্ষের মুখ হয় তবে কীভাবে তা জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন পাবে? অস্ত্র ও আগুন নিয়ে শুধু ধ্বংস করা যায়, সৃষ্টি করা যায় না। মনে পড়তে পারে, মহাভারতের সেই অমোঘ বার্তা ‘কালঃ পচতি’। সময়ের প্রভাবে সবকিছুই জীর্ণ হয়ে যায়। নষ্ট হয়ে যায়। বলা বাহুল্য এই সমাজ বহু মাত্রিক। তিনি সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের ভাঙন, নৈতিক অধঃপতন ও সভ্যতার সর্বনাশ প্রত্যক্ষ করেছিলেন। মানুষের কান্না, ক্ষুধার হাহাকার, মানবতার লাঞ্ছনা ও বেদনাকে বহু কবিতায় তুলে ধরেছেন। জীবনের প্রতি স্বদেশের প্রতি তাঁর হৃদয় মমতায় ভরপুর। এরকম সমাজে এরকম স্বদেশে তিনি নিরন্তর ঈশ্বরকে খুঁজে গেছেন। এই পৃথিবীর মাটি ও মানুষের জন্য তাঁর স্নেহ ভলোবাসা কৃতজ্ঞতার অভাব নেই। যদিও তিনি সভ‍্যতা ও স্বদেশের কিছু কিছু বিষয় নিয়ে নিজস্ব উপলব্ধি প্রকাশ করেন এবং সারা বিশ্বের প্রতিতুলনায় নিজের অবস্থান ব‍্যক্ত করেন তবুও এই প্রকৃতি এই স্বদেশ এই আকাশ তাঁর জীবনে অন্য আলো নিয়ে আসে। যা সবকিছু সমালোচনার উর্ধ্বে রহস্যময় জগতে পৃথিবীর বুকে খেলে বেড়ানো অজস্র প্রাণের কাছে ধ্রুব সত্য।

১. ‘পাথর নির্জন অরণ্যের হাড়-হাভাতে স্তব্ধতায় এরকম অসংখ্য ছায়াকে
   ছুটে বেড়াতে দেখেছে মানুষ।
   তখনো ঘঙ পাতার ছাতা তৈরি হয়নি, উদূখলের বিছানা তৈরি হয়নি
   জেট প্লেন, টাকা অথবা টিভি হয়নি

   নগর বসানোর অনেক পরে আমরা বন বসিয়েছি।
   বনের বীর বাঘকে বসিয়ে রেখেছি চিড়িয়াখানায়।
   আর ধূর্ত শেয়ালকে বলেছি ‘হাঁটো তো, পৃথিবীর শেষ দেখে আসি।‘

   এভাবে হাঁটতে হাঁটতে 
   কুড়ি লক্ষ বছরের পর, হঠাৎ খেয়াল হলো, সেই সব শেয়ালেরা কই?
   কীজানি হয়তো কোনো ঝোপের আড়ালে গিয়ে লুকিয়ে রয়েছে
   এই ভেবে, মানুষ যখনই তার কাছে গেছে, সে বেচারা, সভ্যতাবিমুখ
   মাটির রহস্যে আরও মিশে যায়।
  
   মিশে যেতে যেতে শোনে, ছায়ার ম্যামথমূর্তি পরিবেশ বিজ্ঞানীর কানে কানে বলে যাচ্ছে
   মানুষই এ-পৃথিবীতে মহাপ্রস্থানের পথে অন্তিম পথিক একা, নিঃসঙ্গ, নির্মম,

   পথ, এখনো অনেকদূর বাকি।
      (অন্তপথিকঃ মাটির মন )

২. 'বহুদিন এখানেই আছি তাই বাংলা ও বাঙালীর মন আমাকে আকৃষ্ট করে।
আমি মনীষার হেতু ছুটে গেছি ফ্রান্সে ও য়োরোপে, জার্মানে ও
ইউফ্রেটিসের তীরে, বার্লিন বন্দরে, ডুয়িনো দুর্গের ক্লিশ ছায়া- অন্ধকারে।
যেহেতু বাঙ্গালী বলতে আজ আমাদের খুব গর্ব হয় তাই, আমরা রবীন্দ্রনাথ
নজরুল ও নেতাজীর নামে ছুটি উপভোগ করি, যেহেতু আমরাই দেশ
ভাগ করে দু টুকরো করেছি, আমরা তাই হিন্দু আর মুসলমান ভাই ভাই বোধে
মিছিলে আওয়াজ তুলি, বিচ্ছিন্নতা মানিনি, মানবো না।

কিছু না- করেও কিছু পাওয়া যায় এই বোধ সঞ্চারিত হয়েছে মাথায়
আর অমনি তা বুলি হয়ে ছুটে গ‍্যাছে বেতারে বেতারে সাধারণ মানুষের
অস্থিতে মজ্জায় নাকে কানে।

মাথার উপরে ঝুলছো যে- আকাশ শোনো, এই দূর সিন্ধু তীরে গাঙ্গেয় বাংলায়
আমি তোমাকে তাকিয়ে দেখছি, তুমি কত সুন্দর, মহান। কত পবিত্র ও
নিরলস, দামি। তোমার আলোক আসে এখানেও। এই পাড়াগাঁর ঘরে
মফস্বল শহর ঝাড়গ্রামে তোমার সুবর্ণ আলো দিয়ে গ‍্যাছে কতশত রহস‍্যময়তা।
কত পূর্বপুরুষের চেনা এই মাটি তোমার আলোর জলে প্রভাময় স্ফটিক হয়েছে।

হয়তো তুমিও স্থির সত্য নও, তবু যে আলোক জ্বেলে দিয়ে গ‍্যাছো তার
অনন্তআকুলআভা ছড়িয়ে রয়েছে এই পৃথিবী ও বাংলার মাঠে
সত্যচেতনার কাছে, বাবুই ও দোয়েল পাখির কাছে, ঝড়ে-ভাঙা
বট গাছটির কাছে এই আলো তবু মিথ্যা নয়।'
    ( নক্ষত্র : দ্বিতীয় সঙ্কেত )

৩. ‘চল্লিশ বছর হলো এখানেই আছি। এইখানে, পোড়া জমিটির বুকে
   উঠেছে সেগুন গাছ- আর, ফুলের অপরাজিত লতা।
   এখানেই কেটে গেছে ৮৪-৮৫, কেটে যাবে ২০০০ সালও।

   মধ্যপ্রাচ্য ঘিরে হুণ ও তাতার, এসেছে মোঘল-আর্য
   লুঠ করে নিয়ে গেছে এ-মাটির সরস সবুজ।
   সেই গল্পগুলি আজ মন দিয়ে পড়ি যতবার
   ততবারই মনে হয়, হয়তো দস্যুর জাত আমি।

   আমিও তো লুন্ঠন করেছি জল, এই যে মাটির তীব্র ক্ষুধা
   তা থেকে শস্যের দানা কুড়িয়ে কুড়িয়ে এই ইষ্টক-নির্মিত গৃহ
   নির্মাণ করেছি। উদরস্থ করেছি যা-কিছু, তা আর দিইনি ফিরে
   ঋণ নামে কোনো বস্তু স্বীকার করিনি।

   আজ যদি আমাকে সে ছুঁড়ে দেয় অনন্তগহ্বরে
   যদি আত্মসাৎ করে, যদি ঘাসে ঢেকে দেয় অবশিষ্ট দেহাংশ আমার
   সেটুকুই প্রেম তার, জানি।
    ( জন্মভূমিঃ মাটির মন )

এই রকম স্বদেশই তাঁর প্রিয় জন্মভূমি, তাঁর জীবিকা ভূমি। এখানেই তিনি খুঁজে পেয়েছেন তাঁর প্রিয় নারীকে।  তাঁর সাধনসঙ্গিনীকে। তাঁর বিশল‍্যকরণীকে। তাঁর নারীকে ঘিরে প্রেম স্বপ্ন ও সাধনার লোকায়ত পটভূমি রচিত হয়েছে এই স্বদেশেই। যা তাঁর কাছে হয়ে উঠেছে তীর্থস্থান। এই মাটির মধ্যেই, প্রকৃতির মধ্যেই তিনি জীবন খুঁজে পথে নেমেছেন। যাবতীয় আঞ্চলিকতা, অসুস্থতা, অসুন্দরকে সযত্নে দূরে সরিয়ে তিনিও নিজের জন্মভূমি ও কর্মভূমিকে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন সারা বিশ্বে।

    এই পথে তাঁর প্রধান সঙ্গী নারী। স্বপ্নের ও বাস্তবের নারী। ইতিহাসের নারী। সেই জন্য তাঁর কবিতার প্রধান বিষয় প্রেম। যত কবিতা লিখেছেন তার বেশিরভাগই প্রেমের কবিতা। রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ, বুদ্ধদেব বসুর মতো তাঁর কবিতায় অনেক নারীর নাম পাই। এই নারীদের মধ্যে যেমন তাঁর স্ত্রী আভা বা সাধনা আছেন, তেমনি অন্য নারীও আছেন -  রঞ্জনা, শিবানী, অণিমা, কোনো এক মহিলা কবির বোন ইত্যাদি যেমন আছেন তেমনি আছেন তাঁর দেখা অন্য নারীও, যাঁদের মধ্যে কেউ কেউ শ্রেণী সংগ্রামের ইতিহাস বেয়ে তাঁর চোখে মহীয়সী নারী হয়ে উঠেছেন, যেমন, শকুন্তলা মাহাত ও রঞ্জনা সরেন। ভারতী মাহাত, অনীতা ঘোষ, সোমা মিত্র, তনুশ্রী সাহাও নানা ঘটনা ও সম্পর্কের বাঁধনে উঠে এসেছেন। এছাড়াও মীরা, কাদম্বরী  দেবী, কৃষ্ণা, জাহানারা, ওকাম্পো, বিনোদিনী, নন্দিনী প্রভৃতি নামও পাই। এমনকি লিচা হাচিনসন নামের বিদেশিনীও আছেন।

তিনি যা পেয়েছেন নারীদের কাছেই পেয়েছেন, এমন কথাও বলতে শোনা যায় : 

‘বিশ্বাস করিনি কিছু। অবিশ্বাস? তাও তো করিনি।
শুধু জীবনের দ্বন্দ্ব দেখে গেছি, সীমাহীন আঁধার- বিস্তার
দেখেছি আলোক, জল, আকাশ ও কবিতা।

মাঝখানে দুর্বহ পাষাণভার। ভাষা, গতি, প্রবহমানতা।

চাইনি কিছুই। আর না-চেয়ে কি নিশ্চেষ্ট থেকেছি?
অবিরাম হেঁটেছি সামনের দিকে, যদি কিছু পাই, কিছু পাই।

কিছু কি পেয়েছি?
সত্য, অস্থিরতা, কিম্বা অমর শৈশব?
প্রেম, হাহাকার, রৌদ্র, উন্মাদনা, বিস্মৃতি, বিষাদ?
কিছু কি পাইনি তবে?

হাজার প্রশ্নের মুখে অসহায় দাঁড়িয়ে কেটেছে কতদিন।
 কতদিন সেই সব প্রশ্নগুলি আবার তোমার দিকে ছুঁড়ে
আবার নিজের দিকে ছুঁড়ে, অবশেষে বুঝতে পারি
অনেক পেয়েছি।
আর যা- কিছু পেয়েছি সব তোমার জন্যই নারী
ওজোবতী নারীরা আমার।'
  (প্রতীতি : দ্বিতীয় সঙ্কেত)
       (  ক্রমশ )

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments