জ্বলদর্চি

প্রথম মহিলা বাঙালি-বৈজ্ঞানিক ড: অসীমা চট্টোপাধ্যায় ― ০৮ /পূর্ণচন্দ্র ভূঞ্যা

বিজ্ঞানের অন্তরালে বিজ্ঞানী ।। পর্ব ― ৬৩


প্রথম মহিলা বাঙালি-বৈজ্ঞানিক ড: অসীমা চট্টোপাধ্যায় ― ০৮

পূর্ণচন্দ্র ভূঞ্যা


(১)
বিশাল লম্বা লাইন। আঁকা বাঁকা। ঢেউ খেলানো। সর্পিল লাইনে সারি সারি লোক। চক্ষু চড়কগাছ হবার জোগাড়! বর্তমান অগোছালো সময়ে এত বিশাল লাইন দেখলে চাকরি প্রার্থী তরুণ-তরুণীর ভীড় বলে ভ্রম হতো, কিংবা কোনও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা আদায় হেতু আমজনতার অসহায় অবস্থা দৃষ্টিগোচর হতো। কিন্তু নাহ! এখানে সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণ। আট থেকে আশি― একলপ্তে এত মানুষের ভীড়! সকাল সকাল হাজির সকলে। একরাশ দুশ্চিন্তা প্রত্যেকের চোখে-মুখে। গভীর চিন্তার স্পষ্ট কালো ছায়া মুখমণ্ডলে। লাইনে দণ্ডায়মান কারও অধৈর্যের বালাই নেই। শুধু প্রার্থিত বস্তু প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা ঘিরে যত দুশ্চিন্তা। কুঁচকে থাকা কপালে সব্বাই তাকিয়ে রয় বিল্ডিং-এর একটি নির্দিষ্ট কক্ষ অভিমুখে। রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজের গেটের বাইরে রোজকার ঘটনা এটা। একদিনও ব্যতিক্রম নেই! প্রথম প্রথম অস্বস্তি হলেও একটা সময় ব্যাপারটা অসীমা দেবীর গা-সওয়া হয়ে গেল। রুটিনমাফিক মনে হতো। তাঁর কাছে এত এত মানুষের ভীড়। ব্যাপারটা বেশ অত্যাশ্চর্য! দূর দূরান্ত থেকে পায়ে হেঁটে, গাড়িতে চড়ে আসা মানুষগুলোর একটাই আবদার― এক ছটাক 'মারসিলিন' চাই।

  একরত্তি 'মারসিলিন'-এর জন্য এত কাঠখড় পোড়ানো কেন বাপু! কী হবে 'মারসিলিন' দিয়ে? বাংলাদেশে তখন মৃগী রুগীর বাড়বাড়ন্ত। মৃগী রোগের প্রচণ্ড প্রাদুর্ভাব। তীব্র শ্বাসকষ্ট! কাশির চোটে প্রাণবায়ু বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম। তার সঙ্গে সীমাহীন খিঁচুনি। সে এক নিদারুণ নরক যন্ত্রণা! এক ফোঁটা স্বস্তি নেই। অথচ, ও রোগের নির্দিষ্ট ওষুধ অমিল। তখনও পর্যন্ত তার ওষুধ-ই আবিষ্কার হয়নি। অথচ লোকমুখে প্রচার― মারসিলিন না-কি মৃগী রোগের কষ্ট খানিক লাঘব করে। এই জন্যে মানুষজনের এত লম্বা লাইন! এত কাঠখড় পোড়ানো! শারীরিক ধকল। অহেতুক কষ্ট সহ্য।
                


ইতিপূর্বে, সায়েন্স কলেজের রসায়ন ল্যাবরেটরিতে নাওয়া-খাওয়া ভুলে দিনরাত ব্যস্ত এক গবেষিকা। বৈজ্ঞানিক অসীমা চ্যাটার্জি। অবশেষে মিলল সাফল্য। আস্তে আস্তে মেসোলিথিক আগুনের আশার আলো উঁকি দেয়। বিজ্ঞান কলেজে নিজের গবেষণাগারে মারসিলিন যৌগ পদার্থটি নিষ্কাশন করতে সক্ষম হলেন তিনি। ডাক্তার সরসীমোহন মুখার্জির সঙ্গে যৌথ গবেষণায় তিনি দেখান যে এ হেন যৌগ পদার্থটি মৃগী রোগের উপশম করে। লক্ষ লক্ষ মানুষের কষ্টের ভার এবার হয়তো কিছুটা লাঘব হবে। কিন্তু, কীভাবে সম্ভব হল মারসিলিন যৌগ পদার্থ নিষ্কাশনের এই অসাধ্য সাধন?


(২)
মারসিলিয়া মিনুটা আর নরডাটাচিস জেটামানসি! ওরে ব্বাস! ত্রিমাত্রিক কিংবা চতুর্মাত্রার শব্দ দুটির মধ্যযুগীয় উচ্চারণে মধ্যবিত্ত পাকস্থলী পর্যন্ত মোচড় দিয়ে ওঠে! এরা কারা? কী এদের পরিচয়? কী তাদের গোপন উদ্দেশ্য?

  মারসিলিয়া মিনুটা আদতে শুষনি শাকের ছদ্মনাম। দ্বিতীয়টিকে আমরা গদাবাংলায় জটামানসি নামে ডাকি। দুটোই গ্রামজ ভেষজ উদ্ভিদ। গ্রামবাংলায় দুটোই ভীষণ জনপ্রিয়। যা জানি না, তা এদের ভেষজ গুণাগুণ। অথচ গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে অজান্তে তাদের ব্যাপক ব্যবহার। ওই দুই ভেষজ উদ্ভিদ নিয়ে অসীমা দেবীর বিস্তর গবেষণা। শুষনি শাক আর জটামানসি মূলের থেকে আয়ুর্বেদ প্রক্রিয়ায় যে সকল পদার্থ নিষ্কাশিত হয়, তাদের সংমিশ্রণে তৈরি হয় এক মারাত্মক রোগের ওষুধ। ওষুধটি আয়ুষ-৫৬, যা মৃগী রুগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করে ব্যাপক সুফল পাওয়া গেছে। আয়ুষ-৫৬ আবিষ্কার নিসন্দেহে বৈজ্ঞানিক অসীমা চ্যাটার্জির প্রথম বড় সাফল্য। যদিও সেখানেই আটকে থাকেনি তাঁর সাধনা। নতুন নতুন আবিষ্কারের নেশায় ছুটে চলেছে তাঁর অশ্বমেধ ঘোড়া।

  আয়ুষ-৫৬ নিষ্কাশনের অব্যাহতি পরে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়লেন অ্যালস্টোনিয়া স্কলারিস (Alstonia Scholaris), সোয়ারটিয়া চিরয়ইটা (Swertia Chirayita, পিক্রোরিজা কুরোয়া (Picrorrhiza Kurroa) আর সিএসাপিনা ক্রিস্টা (Ceasapinna Crista) উদ্ভিদগুলির উপর। এ হেন চারটি দেশীয় ভেষজ গাছগাছড়া থেকে তিনি ম্যালেরিয়ানাশক 'আয়ুষ-৬৪' নামের ভেষজ যৌগ পদার্থ আবিষ্কার করেছেন। আয়ুষ-৬৪ একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ভেষজ যৌগ পদার্থ, যা চারটি উদ্ভিদ থেকে 'সক্রিয় উপাদান নীতি' প্রয়োগ করে প্রস্তুত করা। ম্যালেরিয়া নিবারণে আয়ুষ-৬৪-এর তুলনা মেলা ভার। আয়ুষ-৫৬ আর আয়ুষ-৬৪ ― এই ভেষজ দুটি কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের অধীনস্থ স্বাধীন আয়ুর্বেদ ও সিদ্ধা গবেষণা পরিষদের দ্বারা পেটেন্ট নিয়েছিলেন তিনি। নামিদামি অনেক ওষুধ কোম্পানি ড্রাগ দুটির বাজারজাত করার স্বত্ব কেনে সেসময়।

  ঔষধি গাছ থেকে প্রাপ্ত অ্যালকালয়েড নিয়ে তাঁর গবেষণার কাজ আজ যুগান্তকারী। তাঁর গবেষণা মূলক কাজ আজ ইতিহাস প্রসিদ্ধ। রাউলফিয়া, কপসিয়া রিঝ্যা, অ্যালস্টোনিয়া, ভিনকা প্রভৃতি ঔষধি উদ্ভিদ আজ বেশ বিখ্যাত। এরা সব ইনডোল জাতীয় অ্যালকালয়েডের আধার। ভিনকা অ্যালকালয়েড থেকে ক্যানসার প্রতিরোধকের সন্ধান পাওয়া গেছে। অ্যালস্টোনিয়া বা ছাতিম জাতীয় গাছের বাকলে থাকে অ্যালস্টোনিন, সিলাস্টোনিন ও এচিটামিন অ্যালকালয়েড। রাওলফিয়া'র আরেক নাম সর্পগন্ধা। এর মূলে থাকে অ্যাজমালিন, অ্যাজমালিনিন, অ্যাজমালিসিন, সার্পেন্টাইন, সার্পেন্টিনিন, রেসারপিন আর রেসিন্নামিন। এদের মধ্যে রেসারপিন নামের যৌগ পদার্থটির পরিমাণই মুখ্য। বাকি সব অল্প বিস্তর বিদ্যমান। ভিনকা গাছের ব্যবহারিক পরিচয় নয়নতারা হিসাবে। এ হেন গাছের পাতায় রয়েছে লিউরোক্রিস্টিন কিংবা ভিনক্রিস্টিন, ভিনকা লিউকোব্লাসটিন বা ভিনব্লাসটিন, রেসারপিন, মাজডিন, স্ট্রিকটোসাডিন, অ্যাকুয়ামমিন ইত্যাদি। এই অ্যালকালয়েড যৌগগুলির প্রত্যেকর গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারিক অবদান রয়েছে।
           
 অ্যালকালয়েড কী?
  অ্যালকালয়েড-এর বাংলা তর্জমা 'উপক্ষার'। 'অ্যালকালয়েড' শব্দটির  আবির্ভাব 'অ্যালকালি' থেকে। অ্যালকালি বা ক্ষার জাতীয় পদার্থের সঙ্গে বিভিন্ন অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় লবণ আর জল উৎপন্ন হয়―আমরা জানি। উপক্ষার হল প্রকৃতিজাত এক ধরনের জৈব যৌগ, যা আদতে ক্ষারীয় নাইট্রোজেন অণুর ধারক। এক বা একাধিক নাইট্রোজেনে ঠাসা অ্যালকালয়েড বর্ণহীন, অনুদ্বায়ী কঠিন পদার্থ। মূলত দু'রকমের কাজ এদের। প্রথমত, বিষমচক্রের অংশ হিসাবে বহুল ব্যবহৃত হয়। দ্বিতীয়ত, শারীরিক প্রতিক্রিয়া তৈরিতে সক্ষম। প্রায় চার হাজার উদ্ভিদের দেহে অ্যালকালয়েডের বাস। উদ্ভিদ দেহের নাইট্রোজেন ঘটিত বর্জ্য পদার্থই অ্যালকালয়েড বা উপক্ষার। গাছের নরম মূলে, কচিসবুজ পাতায়, সবুজাভ ছালে, সরস কাণ্ডে, তামাটে কাঠে এবং গোপন বীজে এদের দেখা মেলে। তেতো স্বাদ। কতিপয় আবার বিষাক্ত। জৈব যৌগ হওয়ার সুবাদে সার্বজনীন দ্রাবক জলে অদ্রাব্য। জৈব দ্রাবক অ্যালকোহলে এরা সহজ দ্রাব্য।

  প্রায় দু'শ বছর আগে অ্যালকালয়েডের নামকরণ হয়েছে। সেটা ১৮১৯ সাল। জার্মান রসায়নবিদ কার্ল এফ. ডব্লিউ. মেইসনার প্রথম নাম রেখেছিলেন 'অ্যালকালয়েড'। চিকিৎসা বিজ্ঞানে তার বহুবিধ ব্যবহার। মানব চিকিৎসায় দীর্ঘদিন এর ব্যবহার-সাফল্য। ১৮০৬ সাল নাগাদ আফিম থেকে মরফিন আবিষ্কারের হাত ধরে অ্যালকালয়েডের ব্যাপক ব্যবহার। মরফিন নামটি ফরাসি বৈজ্ঞানিক লুইস গে-লুসাক-এর দেওয়া। এই মরফিন আবিষ্কারের পর প্রায় ১২,০০০ অ্যালকালয়েড আবিষ্কৃত হয়েছে বিশ্বে। আনুমানিক তিন হাজার বছরের বেশি সময় ধরে অ্যালকালয়েড-ধারক উদ্ভিদের ব্যবহার হয়ে চলেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় পোস্ত গাছের তরুক্ষীরের ব্যবহার খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ অব্দে বলে অনুমান। কথিত আছে― ৩৯৯ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে হেমলক পান করে গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস-এর মৃত্যু হয়। হেমলক আদপে কোনিন অ্যালকালয়েড যুক্ত একটি বিষাক্ত পানীয়। কোনিন-এ আছে একটি পাই-পিরিডিন অ্যালকালয়েড। বিষাক্ত এই অ্যালকালয়েড মোটর নার্ভের প্যারালাইসিস পর্যন্ত ঘটায়।

  যে-গাছ থেকে অ্যালকালয়েডের উৎপত্তি, তার বিজ্ঞান সম্মত নামের সঙ্গে 'ইন' (ine) যোগ করে অ্যালকালয়েডের নামকরণ করা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অ্যাট্রোপা বেলাডোনা (Atropa Belladonna) থেকে প্রাপ্ত অ্যালকালয়েডের নাম হয়েছে 'অ্যাট্রোপিন' (Atropine = Atrop + ine)। কেবলমাত্র উদ্ভিদ দেহ নয়; নানান রকম ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক কিংবা অন্যান্য জীব দেহেও অ্যালকালয়েডের সন্ধান পাওয়া গেছে।

 ভেষজ গাছগাছড়া থেকে প্রাপ্ত যৌগ পদার্থ নিয়ে গবেষণার নিরিখে অসীমা দেবীর কাজ মোটামুটি তিন ভাগে বিভক্ত―
           (১) অ্যালকালয়েড গবেষণা
           (২) টারপিনয়েড চর্চা
           (৩) কুমারিন নিষ্কাশন
  
অ্যালকালয়েডের বিস্তারিত অনুসন্ধান উপরে উল্লিখিত রয়েছে। পরবর্তী পর্বগুলোতে টারপিনয়েড আর কুমারিন যৌগ পদার্থ প্রসঙ্গে আলোচনার সুযোগ রইল, প্রিয় পাঠক।

 (৩)
 রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত রসায়ন বৈজ্ঞানিক অসীমা চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘ সময় পদার্থবিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সংস্পর্শে এসেছিলেন। সৌজন্যে রাওলফিয়া ক্যানেসেনস (Rauwolfia Canescens) উদ্ভিদ। এ হেন উদ্ভিদ থেকে পাওয়া উপক্ষারের রাসায়নিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অসীমা দেবীর গবেষণার কাজে আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু (১৮৯৪―১৯৭৪) সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আর তাতেই দারুণ বিস্ময়াবিষ্ট অসীমা দেবী। বিস্মিত আচার্য বসুর জ্ঞানের পরিধি চাক্ষুষ করে। কী ফিজিক্স, কী কেমিস্ট্রি― সবেতেই আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সারল্য-ভরা পরিপূর্ণ জ্ঞান। উভয় সাবজেক্টে তাঁর অনায়াস স্বাচ্ছন্দ্য, অবাধ যাতায়াত। আসলে, রসায়ন শাস্ত্রের প্রতি আচার্য-এর সুগভীর ভালোবাসার কথা খুব কম মানুষ জানে।
           
  
স্মৃতিকথায় বিজ্ঞানী অসীমা চট্টোপাধ্যায় তাই লিখেছেন― "পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক বসু শুধু পদার্থ বিজ্ঞানেই তাঁর জ্ঞান সীমিত রাখেননি। রসায়নশাস্ত্রের প্রতিও তাঁর গভীর অনুরাগ ছিল এবং এই বিষয়ে আপন বহুমুখী প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। দূর্ভাগ্যক্রমে খুব কম লোকই  রসায়নশাস্ত্রে তাঁর পাণ্ডিত্য সম্বন্ধে অবহিত আছেন। ১৯৪৫ সাল থেকে দশ বৎসরাধিক সময় অধ্যাপক বসুর সঙ্গে গবেষণা করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। এই সময় বিভিন্ন উপক্ষার ও অন্যান্য জৈব যৌগের গঠনরীতি ও স্টিরিওকেমিস্ট্রি জানবার ব্যাপারে তাঁর সহযোগিতা পাওয়ার সুযোগ আমার হয়েছিল। রাউলফিয়া (বড়চাঁদর) ক্যানেসেনস (অ্যাপোসাইনাসি) ও রাউলফিয়া'র অন্যান্য উদ্ভিদ থেকে রাউলসিন নামক একটি উপক্ষার পাওয়া যায়। অ্যাড্রেনারজিক ব্লকিং ফল পাকাতে এই যৌগটি ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এই যৌগের গঠনরীতি ও সুনিশ্চিত আপেক্ষিক অবস্থান ঠিক করবার কাজে তাঁর সাহায্য আমি পেয়েছিলাম।"

  আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রসঙ্গে তাঁর স্মৃতির পাতায় আরও অকপট সংযোজন― "একটা পদার্থের রাসায়নিক সংশ্লেষণের জন্য আমার 'ট্রিপটোফ্যান' দরকার হয়, অথচ সংশ্লেষণটি না করতে পারলে আমার ডি. এস. সি. থিসিস হবে না। এমত অবস্থায় আমি অধ্যাপক বসুকে বললাম― ট্রিপটোফ্যান না হলে কাজ আর হবে না।

  তিনি বললেন― বোধ হয় আমার ঢাকা'র গবেষণাগারে ট্রিপটোফ্যান আছে। তাহলে আমি তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দেব। 
 
  দিন কয়েকের মধ্যে তিনি ঢাকা ফিরে গেলেন এবং তাঁর ফেরবার সাতদিনের মধ্যেই আমি ঐ রাসায়নিক পদার্থটি রেজিস্টার্ড পোস্টে পেয়ে গেলাম। দিন কয়েকের মধ্যে থিসিসের কাজ সমাপ্ত হল।"

তথ্যসূত্র :
●'বারোজন বাঙালি রসায়নবিজ্ঞানী'―ড. রবীন্দ্রনাথ পাত্র
●'অর্ধশত বিজ্ঞানী-কথা'― ড. সন্তোষকুমার ঘোড়ই
●'জৈবরসায়নবিজ্ঞানী অসীমা চট্টোপাধ্যায়'― দীপককুমার দাঁ
●বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, দৈনিক সংবাদপত্র
●উইকিপিডিয়া, সায়েন্টিফিক উইমেন পেজ

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments