জ্বলদর্চি

ড. শ্যামল বেরা (শিক্ষক, আঞ্চলিক ইতিহাস - লোকসংস্কৃতি ও পুথি চর্চাকারি) /ভাস্করব্রত পতি

মেদিনীপুরের মানুষ রতন, পর্ব -- ২৭

ড. শ্যামল বেরা (শিক্ষক, আঞ্চলিক ইতিহাস - লোকসংস্কৃতি ও পুথি চর্চাকারি)

ভাস্করব্রত পতি


অনেকেই তাঁকে 'পুথিবাবু' বলে জানেন। নানা ধরনের পুথি তাঁর সংগ্রহে আছে। শিক্ষকতা তাঁর পেশা। অন্তত ৪০০ পুথি তাঁর জিম্মায় বর্তমান। যাদবপুরের CENTRE FOR STUDIES IN SOCIAL SCIENCES তাঁর সংগৃহীত ১৫৮ টি পুথি ডিজিটালাইজড করে ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে। এর ফলে যে কেউ সেগুলি দেখতে ও পড়তে পারবে। আসলে পুথিকে কুক্ষিগত না করে পুথি অনুরাগীদের জন্য এই কাজ।

এহেন মানুষটির আসল পরিচয় অবশ্য অন্য। গ্রাম বাংলার লৌকিক জনজীবন ধরা পড়েছে তাঁর কাজের বর্ণমালায়। একাজে তিনি জেলার একমেবাদ্বিতীয়ম। তিনি ড. শ্যামল বেরা। আজ তাঁর কাজের নিরিখে তিনি হয়ে উঠেছেন মেদিনীপুরের মুখ। সত্যিকারেই 'মেদিনীপুরের মানুষ রতন'। 

১৯৬৩ র ১৬ জানুয়ারি জন্ম পূর্ব মেদিনীপুরের জশাড় গ্রামে। ১৯৯০ তে প্রথম যোগদান কোলা ইউনিয়ন হাইস্কুলে। এরপর ১৯৯১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ক্ষারুই ইউনিয়ন হাইস্কুলে কাটিয়ে এখন হাওড়ার নিউ কোলড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। ২০১৪ তে 'উত্তর পূর্ব মেদিনীপুরের লোকজীবন ও সংস্কৃতি' নিয়ে পি এইচ ডি করেছেন। মূলতঃ তমলুক, ঘাটাল ও হলদিয়া মহকুমা ছিল তাঁর গবেষণার ক্ষেত্রভূমি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ পান গবেষণার বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখার জন্য।
একসময় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের সদস্য (২০০১-২০১১) ছিলেন। নিজের উদ্যোগে গড়েছিলেন কোলাঘাট লোকসংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র ও সংগ্রহশালা (সূচনা ১ মে, ২০০০, নিবন্ধীকৃত সংখ্যা : এস / ১ এল / ৩৫০৯৭)। এখন চাকরির প্রয়োজনে হাওড়ার আন্দুলে থাকলেও মেদিনীপুরের সাথে নিবিড় সম্পর্ক। এখানে তিনি গঠন করেছেন "দ্বিজ হরিদেব সংগ্রহশালা ও গবেষণা কেন্দ্র" (সূচনা ২৭ জানুয়ারি, ২০০৯)। 'সমীক্ষাপত্র লোকায়ত' (নিবন্ধীকৃত সংখ্যা : ডব্লুবিবিইএন / ০৩ / ১১২৩৩) নামে একটি পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন। সব কিছুতেই লৌকিক ভাবনা জড়িয়ে ড. শ্যামল বেরার লোক অনুসন্ধিৎসায়। তারাপদ সাঁতরার জীবনের শেষ ১২ বছর সান্নিধ্য পেয়েছিলেন তিনি। এখন তাঁর সান্নিধ্যে থাকেন বহু তরুণ লোক গবেষক।

ড. শ্যামল বেরার কাজের পরিধি এবং ব্যাপ্তি বহুমুখী। ক্ষেত্রসমীক্ষার ক্ষেত্রে তাঁর কর্মচঞ্চলতা ঈর্ষণীয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের লোকসংস্কৃতি বিষয়ক প্রকল্পে মেদিনীপুর ও হাওড়া জেলার পঞ্চায়েত সমিতি ভিত্তিক সমীক্ষা (১৯৯৮-৯৯) করেছেন। এখন অবশ্য তাঁর কাজের পরিসরে দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম সহ হাওড়া এবং বীরভূম যুক্ত হয়েছে। পূর্ব ভারত প্রত্নতত্ত্ব পাঠ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকল্পে মেদিনীপুর জেলার পুথি নিয়ে কাজ (১৯৯৯) করার পাশাপাশি 'নৌকা : গঠন প্রযুক্তি'র সমীক্ষা (২০০১) তে তিনি ছিলেন অন্যতম গবেষক। খড়্গপুর আই. আই. টি. -র 'আর্কিটেক্‌চার অ্যাণ্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং' বিভাগের প্রকল্পে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার মন্দির স্থাপত্য শিল্পকর্ম নিয়ে ক্ষেত্রসমীক্ষা (২০০৫) করেছেন। যার ফলে মেদিনীপুর জেলার অনেক ইতিহাস তুলে আনতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। রাজ্যব্যাপী রাষ্ট্রীয় পুথি সমীক্ষা অভিযানে পূর্ব মেদিনীপুরের সমীক্ষক (২০০৬) ছিলেন এই গবেষক। 'বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ' এর 'মৃৎশিল্প ও ধাতুশিল্প সমীক্ষা ২০০৬-২০০৭' প্রকল্পেও সমীক্ষার কাজ করেছেন। লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের লোককথা সংগ্রহ প্রকল্পে (২০০৬) এবং 'বাংলার গৃহকুটির স্থাপত্য শিল্প' (২০০৭) প্রকল্পেও সমীক্ষার কাজ করেছেন। 
অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার লোকযাত্রা পালাগুলিকে মূলতঃ চারটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। লোককথাশ্রয়ী যাত্রাপালা, পুরানো কোরানশ্রয়ী যাত্রাপালা, মঙ্গলকাব্যাশ্রয়ী যাত্রাপালা এবং স্বতন্ত্র ধারাশ্রয়ী যাত্রাপালা। দুই মেদিনীপুরের এমন বহু মানুষ রয়েছেন। যাঁদের ব্যক্তিগত সংগ্রহে এই চার ধরনের যাত্রাপালার বেশ কিছু লুপ্তপ্রায় লোকযাত্রাপালা রয়েছে। কিন্তু বাংলার শিক্ষক ড. শ্যামল বেরা যেন একটু স্বতন্ত্র, একটু আলাদা। ফিলাটেলিস্ট বা ফিলুমেনিস্টদের মতো ডাকটিকিট বা দেশলাই বাক্স সংগ্রহ নয়, কেবল লুপ্তপ্রায় লোকনাটক সংগ্রহ তাঁকে আলাদা পরিচিতি দিয়েছে। বহু দুষ্প্রাপ্য নথি, পুরোনো দিনের মামলা মোকদ্দমা এবং জমি যায়গার নথিপত্র সহ শতবর্ষ অতিক্রান্ত প্রাচীন বইয়ের সংগ্রাহক তিনি।

১৩৬৫ বঙ্গাব্দে লেখা 'চড়িয়া চড়িয়ানী'র একটি লুপ্তপ্রায় পাণ্ডুলিপি তাঁর সংগ্রহে। শবর গোষ্ঠীর আনন্দ বিনোদন, সুখ দুঃখ এই পালায় বিধৃত। এটি আসলে 'সতী মালতী পালা' বা 'চড়িয়া মালতী পালা"। একদা সুবর্ণরেখা তীরবর্তী জনপদে এসব যাত্রাপালার খুব চল ছিল। ঝাড়গ্রামের ড. সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতোই শ্যামল বেরার সংগ্রহে আছে ‘শবর শবরী', 'ললিতা শবর', 'বাগাম্বর' পালাগুলি। কিন্তু অনেকেই এইসব পালা কাব্যকারে নয়, পালাকারে সংগ্রহ আছে তাঁর কাছে। নৌকাবিলাস, কলঙ্কভঞ্জন, যোগীমিলন, মুক্তাচুরি, কল্পমালা, নিমাই সন্ন্যাস, বিদ্যাবতী মিলন ইত্যাদি কৃষ্ণযাত্রা পালার সংগ্রাহকও তিনি। মঙ্গল কাব্যাশ্রয়ী বেশ কিছু লুপ্তপ্রায় যাত্রাপালা ড. শ্যামল বেরার হেফাজতে। মনসামঙ্গল, শীতলামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, ওলাবিবি, পঞ্চানন্দ, দক্ষিণ রায়, ষষ্ঠীমঙ্গল, ইত্যাদি কাব্যগুলি লোকযাত্রাপালায় রূপান্তরিত হয়ে যাত্রা আকারে প্রায় ২০০ বছর ধরে অভিনীত হচ্ছে।

আজ থেকে ২৮৮ বছর আগে কবি নিত্যানন্দ চক্রবর্তী অনেকগুলি লোককথাশ্রয়ী কাব্য রচনা করেছিলেন। যা আজও কোথাও কোথাও গীত হয়। কালভনিতা থেকে জানা যায় ১৭৪৪ নাগাদ নিত্যানন্দ লিখেছিলেন 'শীতলামঙ্গল'। নিত্যানন্দ ছিলেন পাঁশকুড়ার কাশীজোড়া রাজসভার কবি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কানাইচক গ্রামে তাঁর জন্ম। ড. শ্যামল বেরার সংগ্রহে শীতলামঙ্গল ছাড়াও রয়েছে নিত্যানন্দের লেখা মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, লক্ষ্মীর গান, কপিলামঙ্গল, শিবায়ন, দক্ষিণ রায়ের পাঁচালি, পঞ্চানন্দ মঙ্গল, গঙ্গামঙ্গল, বিশালাক্ষ্মীর গান, যমপালা, পীরের পালা ইত্যাদি।

এক সময় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সবকটি মহকুমায় এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমায় ও হাওড়া জেলায় ব্যাপক অভিনয় হতো 'জামাল জরিনা' বা 'জরিনার কারাগার' পালা। মেদিনীপুরের আরেকটি পালা 'সতী চম্পাবতী'ও অভিনীত হতো নিয়মিত। সুফীবাদ বা পীরবাদের বিস্তারে রচিত এই পালাগুলির সংগ্রাহক তিনি। লোকগল্প কিভাবে লোক যাত্রাপালায় রূপান্তরিত হচ্ছে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ 'জামাল জরিনা' পালা।।
ভোগপুরের কিশোরচক গ্রামে মধ্যযুগের কবি দয়ারাম দাসের লেখা বেশ কিছু পুথিও তাঁর জিম্মায়। সেই ১৯৯৭-৯৮ থেকে লুপ্তপ্রায় লোকযাত্রাপালার পাশাপাশি ড. শ্যামল বেরা সংগ্রহ করেছেন নানা লোকশিল্প, পট, লৌকিক উপাদান এবং অসংখ্য পুথি। সেগুলিকে রেখেছেন অলঙ্কার গচ্ছিত রাখার মতো করে। আঞ্চলিক ইতিহাস ও লোকসংস্কৃতি বিষয়ক প্রচুর বইপত্রও তাঁর মহামূল্যবান সংগ্রহে। 

ড. শ্যামল বেরার লিখিত গবেষণাধর্মী বইগুলি ঋদ্ধ করেছে মেদিনীপুর জেলা তথা সারা রাজ্যের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলকে। তাঁর লেখা নথিপত্রে লোকজীবন, লোকায়ত (২০০৩); ভাঁড়যাত্রা, লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্র (২০০২); কবি নিত্যানন্দের মনসামঙ্গল, সহজিয়া ও মনফকিরা (২০০৬); সোনার নৌকা, সহজিয়া ও মাইগুস্কেপ (২০০৭); পঞ্চানন্দের গীত কবি দয়ারাম, মনফকিরা (২০০৭); কবি নিত্যানন্দের শীতলামঙ্গল, সহজিয়া ও মনফকিরা (২০০৭), রাঢ়বঙ্গের গীতিকা, মনফকিরা (২০১০); চণ্ডালিনী উদ্ধার নীলকন্ঠ মুখোপাধ্যায়ের কৃষ্ণযাত্রার পালা, সহজপাঠ - তারাপদ সাঁতরা স্মারকনিধি ও দ্বিজ হরিদেব আর্কাইভ (২০১১): কবি নিত্যানন্দের সারদামঙ্গল, সহজপাঠ ও সহজিয়া (২০১১); নিত্যানন্দের লোককাব্য রূপ রূপান্তর, সহজপাঠ ও সহজিয়া (২০১১); কবি দয়ারামের সারদামঙ্গল ও লক্ষ্মীমঙ্গল, সূচনা কালচারাল সেন্টার (২০১২); কবি নিত্যানন্দ তিনটি লোককাব্য, সহজপাঠ ও সহজিয়া (২০১৩); কৃষ্ণযাত্রা, পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্র (২০১৩); কবি নিত্যানন্দের শীতলার জাগরণ পালা, সহজপাঠ ও সহজিয়া (২০১৫) গবেষকমহলে চিরপ্রশংসিত বই। এছাড়াও তিনি সম্পাদনা ও গ্রন্থনা করেছেন সুকুমার সৃষ্টির নানাকথা, বিজন পঞ্চানন সংগ্রহশালা ও গবেষণা কেন্দ্র (২০১২); বৃহত্তর বঙ্গ : জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস, সহজপাঠ (২০১৩), হেতমপুর কাহিনী (যৌথ সম্পাদনা), রাঢ় প্রকাশন, ২০১৫ এবং কোলাঘাট : ইতিহাস ও সংস্কৃতি (যৌথ সম্পাদনা), রাঢ় প্রকাশন, ২০১৮ বইগুলি। এইসব বইতে তুলে ধরা হয়েছে মেদিনীপুরের সাহিত্য চর্চা, ইতিহাস চর্চা এবং সংস্কৃতি চর্চা। শুধু গবেষণাধর্মী বই নয় বাংলা সাহিত্যের এই শিক্ষকের কলম থেকে বেরিয়েছে বেশ কিছু কবিতার বই -- বনানী বসন্তে একা (১৯৮৪); পলাশবাড়ির লোককথা (১৯৯০); মহীনের ঘোড়াগুলি (যৌথভাবে) এবং মৃগয়াক্ষেত্র (১৯৯৪)। 

সাম্প্রতিক কাজের তালিকায় রয়েছে কাঁথির বিখ্যাত নীহার প্রেসের ১৯০১ - ১৯৮৯ পর্যন্ত নির্বাচিত প্রবন্ধ ও নিবন্ধ নিয়ে নিরন্তর গবেষণা। কয়েক খণ্ডে প্রকাশিত হতে চলেছে তা। বীরভূমের ইতিহাসে নীলকন্ঠ মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাঁকে নিয়ে গবেষণা এবং তাঁর কৃষ্ণযাত্রার পালাগুলি উদ্ধার এবং সম্পাদনা করার গুরু দায়িত্ব এখন নিয়েছেন। দীর্ঘদিন আঞ্চলিক ইতিহাস ও সংস্কৃতির চর্চা করার পাশাপাশি তারাপদ সাঁতরার তত্ত্বাবধানে হাওড়া জেলা নিয়েও চর্চা শুরু করেছেন ২০০১ এ। "তারাপদ সাঁতরা রচনা সংগ্রহ" গ্রন্থের অন্যতম সম্পাদক তিনি। পশ্চিমবঙ্গ ইতিহাস সংসদের বার্ষিক সম্মেলনে (২০১৭) 'মধ্যযুগের ভারত' বিভাগে সভাপতি সভাপতিত্ব করার দায়িত্বও পেয়েছেন।

পুথি, টেরাকোটা, পট, পুরাতন দলিল, দস্তাবেজ, লোকগান, লোকনাটক ইত্যাদি সংগ্রহ এবং এগুলি নিয়ে নিরন্তর গবেষণা, চর্চা ও লেখার জন্য প্রথম পেয়েছিলেন 'সৃজন সম্মান' (২০০২)। এছাড়া তারাপদ সাঁতরা সম্মান (২০০৩), আলাপ সম্মান (২০০৪), জন্মভূমি দেশরত্ন সম্মান (২০০৫), সৃজনী সম্মান (২০০৬), লোকসংস্কৃতি উৎসব স্মারক সম্মান (২০০৭), পুলিন বেরা স্মৃতি পুরস্কার (২০০৮), নারায়ণ চৌবে স্মৃতি পুরস্কার (২০১০) টেরাকোটা সম্মান (২০১২), তারাপদ সাঁতরা স্মৃতি স্মারক সম্মান (২০১৪), আঁখিপট সাহিত্য সম্মান ১৪২৬ পেয়েছেন মেদিনীপুর এবং রাজ্যের অন্যান্য জেলা থেকে। 'রাঢ়কথা' পত্রিকার 'সত্যপীর সত্যনারায়ণ' সংখ্যায় যৌথ সম্পাদনার জন্য কিশোর কুমার দাসের সঙ্গে একসাথে পেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির 'লিটল ম্যাগাজিন পুরস্কার ২০১৫'। লিটল ম্যাগাজিনের খ্যাতনামা সংগ্রাহক সন্দীপ দত্তের কলিকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র তাঁকে দিয়েছে 'সারস্বত সম্মান ২০১৬'। কোলাঘাট অঙ্কুর কলা কৃষ্টি কেন্দ্র'র সভাপতি থেকে উৎসাহিত করে চলেছেন কচিকাঁচাদের নিয়ে নাট্যচর্চার পথকে। একসময় প্রয়াত মধুসূদন মুখোপাধ্যায়ের 'সহজিয়া' তে ছিলেন ওতোপ্রোতভাবে জড়িত।

তাঁর সংগ্রহের উপাদানগুলিই ভবিষ্যতে গবেষকদের কাছে হয়ে উঠবে সামাজিক ইতিহাস খোঁজার অন্যতম আকর। বিভিন্ন লোকযাত্রা এবং লোকনাটকে রয়েছে বাংলার পুরানো চালচিত্রের প্রধান পরিচয়বাহী প্রতিচ্ছবি। সেসব রক্ষণাবেক্ষণ করে আখেরে ড. শ্যামল বেরা বাঁচিয়ে চলেছেন অনাস্বাদিত ইতিহাসকে। এই মানুষটি আজ অবিভক্ত মেদিনীপুরের ইতিহাস ও লোকসংস্কৃতির জগতে এক অগ্রগণ্য মানুষ রতন।

পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments