কয়েকটি রম্য কবিতা-৬ / শুভশ্রী রায়
ঠিকঠাক জুড়ি
সময় পেলেই তুক কর,
কাউকে দিয়ে তাক করাও,
মন্ত্র বলে মন্দ তাড়াও।
স্বামীর গায়ে গন্ধ পেয়ে
কত কিছু সন্দ বাড়াও,
তারপরেও, তারপরেও
পতির হয়ে মুখ নাড়াও!
যখন কেউ কেউ বলে
"তেনার যা-তা ছাড়াও,
আহা! ওই দোষটি তাড়াও।"
এত কিছু জেনে বুঝেও
তার থেকে বাগিয়ে নিতে
স্যাকরা'র দোকান মাড়াও!
এত কিছু, হাহাহা এত কিছুর
পরে চলে না তাকে ছাড়াও
বারোমাসের মাঝে অতএব
বাড়ে অবিশ্বাসের চারাও
শুনে ফেলে গোটা পাড়াও!
ফের জোরে জোরে বল,
"ছাদ, মেঝের ফুটো সারাও
থাকতে হবে দু'জন মিলে
যদি এ ওর হাতে পড়ি মারাও।"
ও লালন, ও ফকির!
রোজ রোজ নতুন আয়না চাই!
বল দেখি মন, কেমন করে পাই?
পড়শির কাছ থেকে যদি করি ধার
কষ্টকর চড়া সুদ চাইবে আবার।
কত সুদ, বুঝিসনি অবুঝ মন তুই!
সে চাইবে নি:শর্ত ভালোবাসা তোর,
একখানা দর্পণ ধার করতে গিয়ে
হয়ে যাবে সারা জীবনের চক্কোর।
আমি-হাল
সব সময়ে "আমি, আমি", প্রতি পলে শুধু "আমার আমার"
দিন-রাত এই চলছে, ভাবভঙ্গী যেন দুনিয়া আমারই চিরকাল!
আমিময় চেতনায় ঈশ্বরের কতটুকু ছায়া পড়ে, বৃহতের স্পর্শ আসে?
আমিকে ছাড়লে হাত ধরবে অন্তর্যামী , আমিত্ব গেলে পাল্টাবে হাল।
অপরিচিত পাখী
আলাপ করে না যে বিহঙ্গ
তার সঙ্গে পরিচয় হতে পারে না?
অথচ সে মুক্তির মন্ত্র জানে
বাঁধা দানাপানির ধার ধারে না
সে পাখী চিরকাল নির্জনতাপ্রিয়
শত ডাকেও আকাশের হাত ছাড়ে না
আকাশ চিরকাল সে পাখীর জন্য
শেষনীলে আর কেউ থাকতে পারে না।
বাসনা বিলাপ
একা একা আসা, একা একা যাওয়া
মাঝে কত কিছু চেয়ে এতটুকু পাওয়া,
বাঁচা মানে স্বপনের পিছু করা ধাওয়া
আকাঙ্খা পূরণে বাদ নাওয়াখাওয়া।
খালি হাতে এসে ফেরাও ফাঁকা হাতে
রোজ দেহমন পুড়ে যায় বাসনার তাতে,
আরো চাই, আরো চাই ভাব দিনে রাতে
যা পাই, সুপ্রয়োগ বিনা অপচয় খাতে।
0 Comments