জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা ২ /অমিতাভ সরকার

গুচ্ছ কবিতা ২

অমিতাভ সরকার 

অভিযোজন

আজ ভিন্নতাটা একটু অন্য রকম।
আসা-যাওয়ার জ্যাকেট পেট্রাপোলে ভাবনার কাঁটাতারে আবদ্ধ ভ্রামক জীবন, যেখানে পারাপার মানেই মনের ভালো লাগার ঋণশোষের ক্ষোভ জমা পেটে দুঃখের আয়কর পকেট কাটা। 

অতৃপ্তির প্রাপ্তি ক্ষুধায় সীমান্ত আজও একলার কষ্ট নিয়ে রোজকারমতো ধুঁকছে।

নেশার বে গুণ দেখানদারির ঘোরে প্রতিদিন কয়েক কোটি প্রণাম বিক্রি হয়। 

এর মধ্যে প্রতারকের দোর্দণ্ড প্রতাপও অনেকখানি ক্ষমতাশালী।
মানবতার স্কুটি চড়ে স্বার্থ রাজনীতি শিখে যাচ্ছে।
বিয়োগান্তক প্রেমের শীর্ণ বয়সভারে এই মকর সংক্রান্তির দিনেও শীতের সংক্রমণ ঠিক মতো জমল না।
যাপনা বাড়ি ফেরার পথে... 

জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇


জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে... 

প্রান্তিকের ছবি টানে 

সারাদিন বেশ ঘোরাঘুরি করে কাটল। 
বেরোনোটা খুবই দরকার ছিল যে।

আপনাদের সবার সাথে একসঙ্গে ফিরতে বেশ ভালোই লাগছে।
ঠাণ্ডাটা আজ খুব একটা পড়েনি।
পথে দেরি হলেও মনটা দারুণ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।
জানুয়ারির ভিড়টাও অনুভূতির হিমেল শরীরে কিন্তু খুব একটা খারাপ লাগছে না।
ট্রেনগুলো বড্ড তাড়াতাড়িই স্টেশন ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
বুঝতে পারছি না, তাই...

চাইলে আরও অনেক কথা বলা যেত।
বেশি আর বলে কাজ কি!
এই তো ঘরের কাছে চলে এসেছি।
আর একটু।
তারপরেই।
অপেক্ষারও তো বাড়ি বলে কিছু আছে নাকি!



লাস্ট মিনিট সাজেশন 

ছুটি হতে এখনও বেশ দেরি।
অস্থিরতা স্থবিরতার নেশা কাড়ছে। ধৈর্য্যের স্থৈর্য্যও থিতু হতে গিয়ে কাজ নিয়ে রোজ অনেকগুলো কথা শোনায়।জীবনের ফুটো বিকেলে অশান্তির বাদামী পারদস্তম্ভে মুখ লুকানো দায়।

আকাশে চাঁদের কালি দেখতে দেখতে কবিই চাঁদে যাওয়ার যোগাড়। না-পাওয়া জমির দাম মনের বাজারে এখনও কম।

আগ্রহীরা প্রি-বুকিংএর জন্যে যোগাযোগ করুন।

সময় পেরিয়ে গেলে মৃত্যুপদযাত্রীও কিন্তু আর 'সিঙ্গল’ থাকবে না।



সংসার

রাস্তায় ঢুকে গেছি। পথ যে দিকে নিয়ে যাচ্ছে সেইদিকেই যাচ্ছি। পরে মনে হচ্ছে, অন্য রাস্তায় ঢুকলে ভালো হত। এখন আর কিছু করার নেই।

যেটা ভাবি বা আশা করি, সেটা যে সবসময় হবে এমন তো কোনো কথা নেই। মুখে যা বলি, বুঝে বলি না। ভাবি না, কোন কথার কী প্রেক্ষিতে কোন মানে হতে পারে।
আমরা যখন সামনে এগিয়ে যাই, ভাবি না, এত কিছু স্মৃতি পিছনে ফেলে এসেছি।
অপেক্ষার সুদীর্ঘ এই দুস্তর টানাপোড়ে মনটা নিছকই অসহায়।

গানগুলো শুনে গানটা ভালোই লাগে, কিন্তু যে জন্য গাওয়া সেইটা আর সে-ই থাকে না।

মেয়েরা সারাজীবন ক্যাবলা থাকলেও বিয়ের পর সব বুঝে বেশ রাগী হয়ে যায়।



প্রেম নিয়েঃ কবি

কবিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এত নাম করেছেন, এত প্রেমের কথা লেখেন, জীবনে কোনোদিন সত্যিকার প্রেম করেছিলেন? কবি আক্ষেপের স্বরে জানালেন, সে আর কী বলব, যাকেই ভালোবাসতে গিয়েছি, সেই দেখি আমায় দাদার মত দেখছে, এমনকি বিবাহিত হওয়ার পরও দিদি-বৌদির বয়সীরাও আমায় সেই হিসাবেই ভাবছে। মেয়েদের জীবনে প্রকৃত দাদার সত্যিই বড়ই অভাব। তাই সেইটাই মেনে নিয়েছি। এতে সম্মান পাই অনেক, কিন্তু প্রেমটা আর হয়ে উঠল না। স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করা যায়, আডজাস্টমেন্ট করা যায়, কিন্তু সময় চলে গেলে সেই ফেলে আসা প্রেম কি আর পাওয়া যায়!



মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন 

সারাবছরে ছেলেটা হাতে গোনা দু-এক দিন ছাড়া  কোনোদিনই স্কুলে আসেনি। 

আমার ক্লাসেও দেখেছি কেবল একদিনই। 

নানান অজুহাতে পড়াশোনার সময়ের দিনগুলো পেরিয়ে পরীক্ষা এখন ওদের দোরগোড়ায় এসে হাজির।

কাল স্পোর্টস ছিল। 

আজ শনিবার। দুপুর দুটোয় স্কুল-গেটে এসে ও আমায় বলছে, 'স্যার, একটা বন্ধুর সাথে দেখা করতে এসেছি, আর আজই এত তাড়াতাড়ি ছুটি হয়ে গেল!'

Post a Comment

0 Comments