জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা /অঞ্জন দাস

গুচ্ছ কবিতা 

অঞ্জন দাস

খোলা বুকে ও পিঠের ছাপ

এক গ্লাস মৃত্যুর রঙে দৈবকী পালক চুবালে
আমাকে অমরাবতী মনে করো না 
!! নিষ্পাপ বর্ণনা 
শাখাতেই স্বর্গ পুষে রাখো
                       পালকের ছিটকে পড়া জল

অমিয় বাগানে স্হল অধ্যায় রেখে 
প্রাচীন হয়ে ওঠো তুমি 
খোলা বুকে ও পিঠের ছাপ
ভিজিয়েছি কালমেঘ
             ডানা ওড়ে আরতির দিকে...
নমোঃ তস্মৈ দিবাকরম্


আমাকে বলছি

গেরস্থের শেষ চিহ্ন
 রইলাম পুজোর দালান
ফলমূল ধূপধুনো আহুতি পুষ্পাঞ্জলি
মিলিত গন্ধের আশ্চর্য মেজাজ বামদিকে গলি
চন্দন গন্ধ তিনিও পালান 
নদী এলে যেভাবে সরতে থাকে গ্রাম 
পর পর ওভারটেক সরে যাচ্ছে ঘর
সমস্ত আপন পর যাকিছু বিশ্বাস
 তাই ভীত তাই তীব্র শীত
কে সরাতে পারে
প্রতিদিন ওপারে একটু রাখি
 বাড়লো না কমলো জানেনা বয়েস
নতুন চয়েস রাখি পাঞ্চালি মহল
শোনো কলাবউ বিনীত তঞ্চন
ভেঙ্গে নিতে হয় ঠিক তোমারি নিজের আয়তন


বিশ্বাস 

সাতশোর সাতশোই একসাথে আছো
এক চাঁদ একই আজান 
এ দায় তোমাদের ভাই
কলমে আগুন নিয়ে এতকাল যারা চেঁচিয়েছ 

তোমাদের অন্ধকার দেখালে তোমাকে 
অন্ধকারে আমি ডুব দিই
এ দায় তোমাদের ভাই
কলমে আগুন নিয়ে কার থেকে হারালেই কাকে 

যুদ্ধ শেখেনি কেউ যুদ্ধ মজ্জাগত 
হিংসা রটালে তুমি  
এ দায় আমাদের ভাই 
কলমে আগুন নিয়ে আমরাই যাবো ক্রমাগত


জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇


জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে... 
মৃত্যু 

লজ্জাখুলে যে শরীর ফেলেছো সেতার 
পাতার বক্ষজলে পৃথিবী  মন্থন 
 দৃশ্য তলিয়ে দেখি গভীরে সাঁতার
 জাগতিক অমরতা- সেলাই পার্বণ

শিখাহীন সেতারের পাথেয় কঙ্কাল  
কার্বন চুরি গেলে হত্যার আগুনে
গ্রামার ছিঁড়ে দেয় ভূগোল কিশোরী 
আততায়ী শিক্ষক রং ঢালে বনে 

বারান্দা খুললেই পৃথিবী প্রস্তুতি    
কানে ও কবিতা ঝোলে ছবি শব্দ হয়    
বিনিময় প্রথা ভেঙে কে লিখেছে নদী    
আমি আছি আমি নেই তুলে নিও জয়


হেনার জঙ্গল

 মঞ্চপত্রে তোমার সম্মাননা পাঠকরে দেখি
ছুতোর মোড়ে যত পুরনো কাঠের গুঁড়ি
ভাগ হচ্ছে চেরাই মেশিনে
স্রোতাদের যাবতীয় আসবাবে সেজে ওঠে ঘর
মেপে নেওয়া ফিতের অহঙ্কার পরপর গুটিয়ে পড়েছে

যাবতীয় জ্যোতি কেড়ে নিচ্ছে পূজক নলিনী
পোক্ত বুকের পাটা ;
হেনার জঙ্গল
যেখানে বিষাক্ত সাপ আশ্রয় নেয়
কাদামমী প্রান্ত জঙ্গলে বেড়ে ওঠে অর্কিড
আলোহীন সভ্যতার অদৃশ্য পাখি 
ডেকে চলে যাও ছোট নদী মুথা তুলসী বুকে
পাখার ভেতর থেকে খসে পড়ে অনন্ত জিজ্ঞাসা
জাগে অন্ধকার নখীয় ভদ্রতা

আমাদের শান্তি ঘাটে এখন বাজার বসে
সহজ দামে বিক্রি হয় গভীর জলের মাছ
নাপিত চুল কাটে তোমাদের মস্তদাড়ি ছর করে নিও
আর নিও দরিদ্র মানুষের গ্রাস
নলিনী বেরার আর একটি উপন্যাস  মেটাবে সেসব

মঞ্চপত্রে তোমার সম্মাননা পাঠকরে দেখি


দেহ ভাঙে বরফের ঘর

আপদকালীন সব পাখি এক গান গায় 
এক রং  একই গন্ধ সব সততার
চুপ নগরী- খোলস ফেলে গেল কেউ
গাঁয়ের পড়শী ও নিজের মতোই    
তৈলাক্ত  অবসর দেহ ভাঙ্গে  বরফের ঘর  
আর এক  জন্ম  শুনশান রাস্তা ধরে হাঁটে 
 প্রকৃতিও থ ; দূরপাল্লা স্নায়ু - চূড়ান্ত আবেগ    
 জীবনের সমস্ত ব্যস্ততা  নত হল
নত হল   সমস্ত হুঙ্কার, জিয়ানো প্রভূত্ব 
 গেলাসের ফরেন লিকার,  মারা গেছে
দেশের ছেলেরা ফিরতে চায় ঘরে... 
আসন্ন মৃত্যুর ধূসরতা সবটাই  হেমন্ত মাঠ
      
আসন্ন মৃত্যুর ধূসরতা সবটাই  হেমন্ত মাঠ
চেনা পৃথিবীর ছবি পাল্টে গিয়েছে     
বাদূড় সন্ধ্যার দিনভর নাব্যতা দিগন্ত ঢাকে
ঢেকুর তুলছে ভবিষ্য উদর,উদ্বায়ী সমস্ত ফড়েমি  

আমাদের উদ্ধার দ্বিতীয় ভগবান, ডাক্তার জেনেছি
প্রথম ও তৃতীয় ভগবান  ঈশ্বরও আমি
তাঁকে  ডাকেন আমাকে বাঁচান          
চতুর্থতঃ  
তুমি ও তোমরা  আমার ক্ষুদ্র আয়ু নাও
আবার সাজিয়ে দাও মৃত্যুজয়ে মন্ত্রপূত বেদী
তোমাদের অবিরাম জেগেথাকা নিষ্ঠা সেবাশ্রম 
 হতাশ নগর গাঁয়ের মুক্তি ভগীরথ  সুরক্ষা বলয় 
 
শোনো মৃত্যুপুরী-তুচ্ছতার রাতছিল মনে  
মৃত্যুর শ্বাসনে ভীত  ইতালিয়ান সোয়ালো  
জানাতে এসেই মারা গেছে 
 সারা সপ্তাহ           
দাওয়ায় বসে আছেন বৃদ্ধ পিতামহ 
আমাদের সচেতক বয়স্কজীবন   

একত্র প্রার্থনার বিশেষ প্রহর আজ অবাক পৃথিবী 
অপেক্ষার শ্রেষ্ঠধ্বনী আমাদের রোপিত সীমায়
অথবা অসীমে শ্রেষ্ঠ নাভিশ্বাস ফেরত পাঠাবে   

নত ভয় সহজ পাঠের শৈশব সারল্য সময়
জীবন বাঁচাবে তুমি দেখো  
ঘৃণা গুছিয়ে রাখো নষ্টমানুষ করোনা আবিষ্কার।

Post a Comment

0 Comments