গুচ্ছ কবিতা-২
হাবিবুর রহমান
পুতুল নাচ
যে ঠোঁটে ঠোঁট রাখি
সে ঠোঁটে পোড়া দাগ,
ধোঁয়া ওঠে কাঁচের ঘরে
কুণ্ডলী পাকাতে পাকাতে
চাদর জড়ানো রাতে।
সর্বস্বান্ত মানুষদের সঙ্গে
পুতুল নাচ দেখি
আলো-আঁধারে বসে।
বাস্তুতন্ত্র
খাল কেটে আনা কুমির
গিলে নিচ্ছে আমাদের সন্তান
হর হামেশাই ডানে বামে,
বাস্তুতন্ত্রে এত বদল দেখি
আজ ছায়ার পৃথিবী জুড়ে।
ভালোবাসার পায়রা
ফুলকে ফুল লিখি,গানকে লিখি গান,
ভালোবাসা লিখতে গেলেই
হাত কেঁপে ওঠে,বুক কেঁপে ওঠে,
কত ভালোবাসা মাটিচাপা দিয়েছি দুই হাতে
এই আকাশি নীল বুকের ভেতর!
বিজোড় শালিখ গুলো এখনো কিচিরমিচির করে
বালি খুঁড়ছে শীতের রোদ গায়ে মেখে।
হৃদয় পোড়া কয়লা গুলো ছড়ানো ছিটানো,
বাকুম বাকুম ডাক আবদ্ধ কুঠুরির ভেতর,
শুঁয়োপোকার মতো লেজ নাড়ে।
জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇
বসন্ত বকুল
বিনম্র সকালে
পাখিদের ঠোঁট থেকে
উষ্ণতা ঝরে,
শীতের ভ্রূণ ছিঁড়ে
গজিয়ে ওঠে
একগুচ্ছ বসন্ত বকুল।
আয়ুরেখা
কন্ঠনালী থেকে ওঠে আসে
ডিসেম্বরের শীর্ণ কবিতা,
কবির মেদহীন শরীরে আগুনের আঁচ লাগে,
আয়ুরেখা ছিঁড়ে যায় ঝুরঝুরে বালির ভেতর,
কানে গোঁজা পালক
ভেসে ওঠে স্রোত প্রতিস্রোতে,
বুক সেলফে নির্দিষ্ট কোনো আয়ুরেখা নেই,
কবিতারা নড়েচড়ে ওঠে পাঠকের আঙুলের স্পর্শে।
স্বতন্ত্র
চাঁদ গলা রাতে
জোনাকিদের শরীরে
পুরুষের ঘামের গন্ধ,
বিনুনি থেকে খসে পড়ে
মেয়েদের স্বতন্ত্র পৃথিবী
আমাদের বুকের ওপর।
নূপুর
সেতার গিটারে আওয়াজ ওঠে না,
দুচোখ বন্ধ করি
মুখ ভেসে ওঠে মায়ায়-ছায়ায়।
পাঁজর ভাঙে
ঝাউপাতায়
বেজে ওঠে বিষাদ নূপুর।
লিখে চলি
শত শত মুক্ত ডানার পাখি
বৃষ্টির ফোঁটায় ঝরে
কাঁচভাঙা ভোরে,
হলুদ জোনাকিরা
বাতাসের উদাসী ঠোঁটে
কাছে দূরে কি যেন খোঁজে।
খুব ইচ্ছে করে
কোনো স্পেস না দিয়ে
লিখে চলি অনন্ত ভালোবাসা ।
তুমি
বালিয়াড়ি খুঁড়লে
একটি চোরাস্রোত
উপচে ওঠে হৃদয়ে,
জোছনা ভরা রাতে
জল ফড়িঙের মতো
তুমি ডানা মেললে
মৌচাক ভেঙে
ভালোবাসার বৃষ্টি নামে।
তুমি পাঁজর ছুলে
সুখের আলো জ্বলে ওঠে
নিঝুম বিছানায়,
রাত গভীরে
যখন সুনামি ঢেউ ওঠে
হলুদ পাতা খসানো ব্যথা ঝরতে থাকে।
দুঃখের পদাবলী
পাতা ঝরা গানে
হৃদ্স্পন্দন থামে,
তোমার কোমল গান্ধারে
বেজে ওঠে বিষাদ-নূপুর
একফালি রোদেলা দুপুরে।
শল্কমোচনে
ঝুড়ি ঝুড়ি প্রেমের শব্দ
খসে পড়ে
নিকষ কালো অন্ধকারে,
তিরতিরে স্রোতে
ভেসে আসে দুঃখের পদাবলী
ছাদহীন ঘরে।
3 Comments
ভালো
ReplyDeleteপ্রতিটি কবিতা খুব ভালো লাগলো।
ReplyDeleteধন্যবাদ অফুরান
ReplyDelete