গুচ্ছ কবিতা
ঈশিতা পাল
নদী পাওয়া
পাহাড় ভাঙছে,
জল শুধু জল-
খরস্রোতা নয় তিরতিরে জলধারা ঝরে পড়ছে,
পাকদণ্ডীতে লুকিয়ে রাখা অভিমান আক্রোশ আস্ফালন।
উস্রি নদী এরকম একটি যাত্রায় আমাকে প্রফেসর শঙ্কু বানিয়েছিল-
জীবনের সুখদুঃখের উপর তৎপর নজরদারি,
সেবার হেরে গেলাম।
উপত্যকা ছুঁয়ে এখন এই জলধারা অতলস্পর্শী,
খোঁজ চলছে অববাহিকার-
নদীর দেখা পাবে বলে।
ঈশ্বর ও নাইটল্যাম্প
আমি ঈশ্বর আর নাইটল্যাম্পের মধ্যে ফারাক খুঁজি রোজ-
বাইলেন দিয়ে চলছে দুজনেই,
অবিরাম প্রতিযোগিতা সেয়ানে সেয়ানে।
পরস্পর নির্ভরশীল অস্তিত্ব-
বিষাক্ত রাতেরা ঘুমন্ত শুভ চেতনা ঈশ্বরের ঘুম ভাঙার অপেক্ষায়,
চোখ মেলে চায় নতুন ভোর মৃত রাতের কাঁধে পা রেখে।
ঈশ্বর আর নাইটল্যাম্প পরিপূরক একজন সৃষ্টি আর ধ্বংসের আদিখেলায় উন্মত্ত-
আর টিমটিমে রাতগুলোয় শয়তান স্বপ্নে আসে,
স্বার্থপর জাল বিস্তার করে মায়ার পৃথিবীতে।
সে চায় ধ্বংস অন্ধকার আলোর ঝাঁঝ অসহ্য লাগে তার,
পূর্ণিমা আর অমানিশার মত জেগে থাকে ভগবান ও শয়তান-
পুবালি ভোর ও নিশিরাত।
ঠিকানা
অবশেষে ভাড়াবাড়ির পর্দা ঠেলে সকালের রোদ,
নিজের বাড়ি
সত্যিই কি নিজের?
নিজের বলতে ঠিক কি বোঝায় সংজ্ঞাটা কোন ক্লাসরুম আমাকে শেখাতে পারেনি-
হাওয়ায় ভাসে কাব্যিক ঠিকানা,
এলোচুলে ঘর খোঁজে ভালবাসা।
প্রতিটি খননকার্যে বেরিয়ে আসে এক একটি সভ্যতা-
পৃথিবী উলটে পাল্টে দেখি আমার আস্তানাটা কোথায় ছিল,
একেই হয়তো ভূমিকম্প বলে।
রিখটার স্কেল কতটা রিডিং দিলে আরেকটা নতুন পৃথিবী জন্ম নেয়?
ভূগোল মানে পৃথিবী গোল পুঁথিগত বিদ্যা ঠিক খাটেনা
যখন চৌখুপ্পিতে নিজেকে খুঁজতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলি-
আসল নকলের কোন ফারাক নেই,
এ কোন অলীক সুখ নিয়ে ঘর করছি?
আয়না
ভ্রু জোড়ার নীচে ওই দুটি আয়না-
তোমায় দেখি নির্নিমেষ,
কাকচক্ষু জল ডুব দিই পানকৌড়ি হয়ে।
ঢিল ছুঁড়ে ওই নিস্তরঙ্গ সরোবরকে চঞ্চল করে তুলবনা-
শ্রান্ত পথিক তোমার দ্বারে বসে দুদণ্ড জিরোন,
তারপর অনন্ত পথচলা অসীমে ধরা দিতে।
তোমার আয়নায় নিজেরই প্রতিচ্ছবি নিক্তি দিয়ে বিচার করি,
এখানে শান্ত নিস্তব্ধ মহীরুহ আমার দেবতা-
প্রতিবিম্বে ধরা থাক আমার ফেলে যাওয়া সময়।
মূল্যবান নুড়ি পাথর,
চাওয়া পাওয়া
পুরনো আমি।
মনখারাপের জন্মদিন
রাত নামে,নিশ্বাস গুনি আমার কাঁধে,
এক দুই তিন....এক সমুদ্র ক্লান্তি-
ঘুমাও বিষণ্ণতা।
কাকটা ঠুকরে খাচ্ছে মাছের কাঁটাপোঁটা,
দাঁড়িয়ে দেখছে সকালের রোদ-
আর ঠোঁটকাটার দল।
এককাপ চায়ে আড়মোড়া ভাঙা সকাল,
ঠোঁটে মেখে নিই সেদিনের গোলাপ আতরদান-
আরেকটা বাসিপচা দিনের যাত্রা শুরু।
তুকতাক করছে কবিতার যাবতীয় গুণাবলী-
আমাদের স্বপ্ন বইমেলার গন্ধ মাখছে মনখারাপ ধুলো,
পরেরবার সময় করে নিস ব্যস্ততা।
জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇
1 Comments
bhalo laglo
ReplyDelete