ভাষা দিবসের কাব্য
আবীর ভট্টাচার্য
(১)
যার জন্য আকাশ অরূপ, হৃদহরণী মাটি
'তত্ত্বমসি' বলে ডেকে,যে পাতে শীতলপাটি।
মেঠোধুলোর গন্ধমাখা যে আঁচলের স্নেহে
দ্রোহ ও প্রেম লুকিয়ে থাকে বিন-ঠিকানা মোহে।
আসছি বলে হঠাৎ উধাও যেমন উতল হাওয়া
মনে পড়ায় হারিয়ে যাওয়া কতো কালের চাওয়া
ব্যস্তদিনের সীমারেখায় ডেকে পরস্পরে
আত্মগত আমিকে শুধোয়,'ভালো আছিস ওরে!'
সে যে আমার মুখের ভাষা, আত্মলীন স্বর
ঝঞ্ঝা আকুল জীবন মাঝে আমার ঈশান বর।
একুশে নয়, উনিশে নয়, প্রতিটি সংঘদিনে
আমি যাকে খুঁজে বেড়াই বিজন যাপনগানে।
জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇
(২)
আশ্রয়সুখ ঢের কেড়েছ, ভাঙনে নেই আর ভয়
আলোক মেঘে এঁকেছি আমার আখর পরিচয়।
চক্রাকার ধুম্রজালে খ্যাতি বিড়ম্বনা,
যাপনব্যথা অতিক্রমী বিজন সান্ত্বনা
বর্জিত সে বর্ণমালার বিস্তৃত অক্ষরে
আমার সত্ত্বা প্রকাশ হোক জন্ম জন্ম ধরে।
ফুরোলে কথা প্রয়োজনের; ন্যস্ত বিনির্মাণ
পাখিঠোঁটের আহার্য দেয় ঘরে ফেরার মান
অকস্মাৎ দুটি ফোঁটা চোখের জলে ভেজে
শৈশবসুখ-পাঠশাল-ধুন স্মৃতির মন্তাজে
উথলে ওঠে অযুত প্রেমে মাতৃভাষা টান
ভাষাশহীদ রক্তে ভাসে আজও কিশোর প্রাণ
সুসংহত যে সম্মানবোধ, তার আরব্ধ দায়
আলোক মেঘমায়ায় আঁকে স্বকীয় বরাভয়।
ভাঙনে তাই ভয় তো নেই, মিলে থাকার ঋণ
মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধসম…সে লালন বিকল্পহীন।
0 Comments