জ্বলদর্চি

আমার অনুভূতিরা /পর্ব - ২ /সুবর্ণা নাগ

আমার অনুভূতিরা 
পর্ব - ২
 সুবর্ণা নাগ


তারা টা ছিল.. 

তোমার সমাজ পিষতে চায়, 
সংসার নেয় শুষে। 
আমার পাতে ভাত বাড়া হয়, 
সবার খাওয়ার শেষে। 

রান্নাঘর,  বালিশ তোষক,
দুপুরের এঁটোকাটা, 
ঝুলঝাড়ু, ঠাকুর ঘর
জীবন সাদামাটা। 

নিঃশব্দে বাটনা বাটা, 
কান্না ঘরের কোণে, 
আদর সোহাগ, ক্লান্ত শরীর
কেই বা রাখে মনে? 

কোমড়, হাঁটু, গিটের  বাত 
ফুটন্ত তেল ছিটকায়, 
অন্যরকম হোক এক দিন, 
দায়িত্ব তা আটকায়। 

দিনের শেষে রাতের কালোয়
মৃত তারার খোঁজ, 
স্কুল কলেজ ভুলের খাতায়, 
ইচ্ছে -কবর রোজ। 

আক্ষেপদের বিসর্জনে
হয়েছি আসল জয়ী, 
আমি তো মেয়ে মানুষ, 
মানুষ তো আর নই।



সূর্যোদয়

জানি তোমার পুড়ছে বুক, 
চোখে বহু দূরের শূন্যতা। 
না হয় তোমার চোখে জল আসুক, 
তারপর আসুক ঘুম। 
চাইছ হয়তো চির বিশ্রাম! 

দেখেছি, কাঞ্চনজঙ্ঘা ছুঁয়ে
শায়িত বুদ্ধ, 
মাঝে মাঝে মেঘের চাদর মুড়ে
গভীর নিদ্রা যান, 
কখনো অন্য হৃদয় স্পর্শ করেন, 
সোনার রঙে। 

স্তব্ধ হও, 
শান্ত হও, 
সূর্য উঠবেই কাল।।



জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇




বালুচরী

পুরুষ, তুমি
ঠিক যেন দামী বালুচরীর মতো। 
কেউ আঁচল লুটিয়ে চলে, 
কেউ বড়ো বেশী ভাঁজে বিশ্বাসী, 
কেউ বা খানিক আঁচল সরিয়ে
বক্ষ বিভাজনে অন্য দৃষ্টি চায়। 

তোমাকে ব্যবহারের পরে 
কেউ সযত্নে তুলে রাখে আলমারিতে। 
কেউ বা দলা পাকিয়ে ফেলে রাখে ঘরের কোনায়। 
  যন্ত্রনা হয় তোমার? 

সেই এক অভাবী ঘরের মেয়ে, 
বুকের মধ্যে আগলে রাখে তোমায়,
 একটু টান টান করে, 
আদর ভরে ভাঁজ করে রাখে , তোষকের নীচে। 

একদিন সে কুঁচকে যাওয়া শাড়িটাকে
 গর্ব করে পরে। 
পাড়া বেড়িয়ে আসে, 
জনে জনে গপ্পো শোনায়। 
কিন্তু শাড়ীটা যখন বলে ওঠে, 
"তোমায় গর্ব দিলাম, 
আমায় তোমার সর্ব দাও।  " 
মেয়েটি বলে, 
"তুমি কি এক দেহে থাকবে জড়িয়ে, যদি অন্য আবার শরীর পাও? "



ফেরা

ভুল হতে পারে, 
ভুলে যাওয়া নয়। 
এভাবেই জেনো  রয়ে যেতে হয়। 

এভাবেই পিছু ফিরে চাও, 
 ত্যাগের অভিমানে
কোনো অভিযোগে নয়।

অমোঘ ভালবাসা ঘিরে রয়, 
তবু কখনো কখনো 
এভাবেই ফেরা হয়।।


শেষের অপেক্ষায়

রাত অমোঘ!
তাকে কি আটকানো যায়?
তার চেয়ে ঘোর অমাবস্যায় 
তুমি চাঁদের আলোর কবিতা লেখো, 
জেনো, এ তোমার সূর্যের কাছে দায়!!
কি হবে আঁধারের কথা ভেবে?
চোখ তাও সয়ে নেয়, 
শেষ টা কে দেখেছে?
অপেক্ষায় থেকো, দেখো
জীবন কি দেয়...?



আবেশ

আমার ঠোঁট আর চুম্বন চায় না। 
সেই দিনের পর, 
তার চৌম্বকত্বে আজো আবিষ্ট হয়ে আছি। 
অদৃশ্য, অকারণ আকর্ষন তার। 
ঠকেছি জেনেও, 
বারবার ঠকতে চাই।  
নেশাতুর মন, বায়না ধরে
'আমার সোনার হরিণ চাই, 
আমার সোনার হরিণ চাই'।।

Post a Comment

0 Comments