তিনটি কবিতা
গৌতম বাড়ই
বহুমুখী চক: তরাইঅরণ্য
তরাইঅরণ্য খুব মনে পড়ে শীতকাল
শুকনোপাতার জমানো দীর্ঘশ্বাস
খুব গভীরে চলে গেলে
মনে হতো এর চেয়ে আদিম আর
কিছুই হতে পারে না
শিমুলবাড়ি ছাড়িয়ে গেলেই ঝনঝন
টিফিন ক্যারিয়ারে বন্ধুরা সাইকেল
সবুজচাপাতাবনবাগান হাতি-চিতা গন্ধ
গাড়িধুরা এসে দুহাতে দুরাস্তা
শেষে চড়াই গিয়ে ঠেকে
বালাসনের বুকে বিধ্বস্ত পাথরের স্তূপে
আমাদের পিকনিক শেষে বসা দুধিয়ায়
এই দুরাস্তা শুধু নয় বন্ধুদের জীবন ও
প্রতিটি মানুষের জীবন এখনো
রোজ বহুমুখী রাস্তার দর্শনে মগ্ন বিভোর
রক্তঋণ
মা, একটি মাত্র শব্দ
মুছে যাচ্ছে দিন মাস
ভারী হচ্ছে রক্তঋণের বোঝা,
পৃথিবীর সব গতিপথ সামলে
তোমাকে অনুভব করা তো সোজা নয় !
মৃত্যু আমাকে পথ দেখালো
জন্মদিন উসকে দিল চিন্তার মায়া
রক্তাক্ত প্রান্তর থেকে
হাঁটু মুড়ে ফিরি রোজ,
তবু বেঁচে থাকি আজও
রক্তের রঙে লাল এই
গুহার অভ্যন্তর
পরকাল বলে কিছু নেই
যেটুকু ওড়ে শুধু ছাই
বাতাসে রয়ে যাবে তার শেষটুকু-----
জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇
ঋষি-বালক: অতিথি
এক-একটা দিন এমন বাতাস যখন দরজায়
চুপিসারে কথা বলে
দরজা খুলে দরজা ভেঙে অসীমকে চায়
বাঁধন যখন বন্ধনে-বন্ধনে শেকল হয়ে ওঠে
ঠিক তখনই
এই পৃথিবীকে নিজের করে নিজের বুকে
আচমকা ধরতে গিয়ে নিখিল হলো
তাই সজীব বিপুলমাতার পেতে রাখা কোল
তার ওপর ঠাঁই নিয়েছে
আকুল করে
নদীর জল গাছের সবুজ গানের সুর
দাঁড়ায় কখনও বৃষ্টিভেজা মাঠে
দু-চোখ সীমাহীন খুঁজছে বিস্ময় চরাচর
মন আলোকজারণ হলে দিগন্ত পার করে
পতাকা উঁচিয়ে ধরে কালের রথযাত্রাতে
মহাকালের সেই যাত্রীদের মতন
শিস দেয় পাখি বাদলের ভেজা ঝোপঝাড়ে
'তুই আমার মরণ পাখি'---
এই বলে সূর্য ওঠার আগেই সে
অসীম কালোরাত্তিরে ঝাঁপ দিয়েছিল
আরও আলো আর আলোর দূর্নিবার ডাকে
0 Comments