ভাষাবিদ সুভাষ ভট্টাচার্যের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অসীম ভুঁইয়া
অসীম ভুঁইয়া: বাংলা ব্যাকরণ চর্চার ক্ষেত্রে এখনও পাশ্চাত্য ও সংস্কৃতের অন্ধ অনুকরণ বেশ কিছুক্ষেত্রে লক্ষ করা যায়। যার ফলে বাংলা ব্যাকরণ এখনও সম্ভবত তার নিজস্ব ঠিকানা খুঁজে পায়নি। এ বিষয়ে আপনার মতামত যদি বলেন।
সুভাষ ভট্টাচার্য: হ্যাঁ, এ কথা ঠিক যে বাংলা ব্যাকরণে এখনও ইংরেজি এবং সংস্কৃত ব্যাকরণের প্রভাব যথেষ্টই রয়েছে। আমি মনে করি সময় এসেছে বাংলা ভাষার প্রকৃত ব্যাকরণ রচনার। স্কুলপাঠ্য ব্যাকরণের মধ্যে জগদীশচন্দ্র ঘোষ ও বামনদেব চক্রবর্তীর বই খুবই জনপ্রিয় বহুকাল ধরে। সে বইয়ে ওই সংস্কৃত প্রভাব খুবই স্পষ্ট। একই কথা অন্যান্য বই সম্পর্কেও। এখন অবশ্য অন্য লেখকেরাও স্কুলপাঠ্য ব্যাকরণ লিখছেন। এসব বইয়ের লেখকদের দোষ দিতে পারি না। দোষটা সিলেবাসের। ব্যাকরণ-প্রণেতারা সিলেবাসের বাইরে যেতে পারেন না। কাজেই আগে সিলেবাসকে আধুনিক হতে হবে, প্রকৃত বাংলা ব্যাকরণের কাঠামো তৈরি করতে হবে।
অসীম: আপনি কি মনে করেন, বিশুদ্ধ বাংলা ব্যাকরণ লেখা সম্ভব? যদি সম্ভব হয় তবে কীভাবে?
সুভাষ: দেখো, আমি মনে করি না যে সংস্কৃত পুরোপুরি এড়িয়ে বাংলা ব্যাকরণ রচনা করা সম্ভব। বাংলা ভাষায় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে সংস্কৃত। রবীন্দ্রনাথ যখন খাঁটি বাংলা ভাষা বা প্রাকৃত বাংলা ভাষার কথা বলেছিলেন, তখনও তিনি কিন্তু সংস্কৃতের কাছে বাংলার ঋণের কথা অস্বীকার করেননি। যতই ঠাট্টা করে বলা হোক যে, সংস্কৃত বাংলার 'ঠানদিদি' বা 'অতি বৃদ্ধ পিতামহী', আসলে সংস্কৃতকে পুরোপুরি বাদ দিয়ে বাংলা ব্যাকরণ প্রণয়ন সম্ভবই নয়। তাহলে কীভাবে সম্ভব খাঁটি বাংলা ব্যাকরণ রচনা করা? কিছু সংস্কৃত প্রকরণ অকারণে বাংলার উপর চেপে বসে আছে। সেগুলোকে বুঝতে হবে এবং দরকার মতো সংস্কার করতে হবে। যেমন কারক, বাচ্য, সন্ধি। সমাসের ব্যাসবাক্য তো আছেই। তাছাড়া দরকার মতো প্রত্যয়কে সহজ করে লিখতে হবে। সন্ধির আলোচনায় ধ্বনির ওপর বিশেষ জোর দিতে হবে। বিসর্গ সন্ধির তেমন প্রয়োজন নেই। এ কথা ঠিক যে, বাংলায় বহু শব্দ আছে যেগুলো বিসর্গ সন্ধির দ্বারা নিষ্পন্ন। যেমন, অহর্নিশ, নিরাকার, দুরাত্মা ইত্যাদি। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, এসব শব্দ গোটাগুটিই বাংলায় এসেছে। আমি বিশ্বাস করি যে, সংস্কৃতকে পুরোপুরি এড়িয়ে বাংলা ব্যাকরণ লেখা সম্ভব নয়। কিন্তু যেসব সংস্কৃত প্রকরণ অপ্রয়োজনীয় সেগুলোকে বাদ দেওয়া যেতেই পারে।
অসীম: আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানের জনক নোয়াম চমস্কির সঞ্জননী সংবর্তন থিওরি বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে কতটা কার্যকরী এবং প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন আপনি?
সুভাষ: চমস্কির তত্ত্বকে ব্যবহার করে ব্যাকরণ একেবারেই যে লেখা হয়নি তা নয়। উদয় চক্রবর্তী সে চেষ্টা করেছেন, পবিত্র সরকার তাঁর 'পকেট বাংলা ব্যাকরণ' বইয়ে চমস্কিকে অনুসরণ করে বাংলা ভাষার একটা সংক্ষিপ্ত রূপরেখা তৈরি করেছেন। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ বাংলা ব্যাকরণ লেখা হয়নি এখনও। তাছাড়া, সেটা করতে গেলে ব্যাকরণ যথেষ্ট কঠিন হয়ে পড়বে। পাঠক কতটা নিতে পারবেন জানি না। তবে পবিত্রর ছোট্ট বইটি একটা চমৎকার ভূমিকা।
অসীম: সুকুমার সেন বাংলা উপভাষাকে যে পাঁচটি ভাগে বিভক্ত করেছেন তা কি বর্তমান প্রেক্ষিতে পুনর্নির্মাণের প্রয়োজন নেই? কারণ এই পাঁচটি উপভাষা তো এখন আর পুরোপুরি ভৌগোলিক সীমা মেনে চলে না। অপরদিকে এই পাঁচটি ছাড়াও আরও অনেক আঞ্চলিক ভাষা শক্তিশালী হচ্ছে, এক্ষেত্রে এই বিভাজন কি এখন পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য?
সুভাষ: সুকুমার সেনের এই বিভাজন সাধারণভাবে গৃহীত হলেও দু-একটা জায়গায় প্রশ্ন তোলা যায়। ঝাড়খণ্ডি উপভাষা বলে সুকুমার সেন যে উপভাষা-গুচ্ছের উল্লেখ করেছেন, তার তেমন প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। ওই গুচ্ছের উপভাষাগুলোকে রাঢ়ীর অন্তর্ভুক্ত করাই যায়। পার্বতীচরণ ভট্টাচার্য তাই-ই করেছেন। সেটাই যুক্তিযুক্ত মনে হয়।
অসীম: বাংলা ভাষা রক্ষা করার দায় কি কেবল বাংলা ভাষা চর্চাকারী লেখক বা বাংলা বিষয়ের শিক্ষক অধ্যাপকদেরই? সাধারণ বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কি কোনও দায়বদ্ধতা নেই? যদি তা না হয় তবে অন্যদের দায়বদ্ধতা কতটা বলে আপনি মনে করেন?
সুভাষ: বাংলা ভাষাকে অধঃপাত থেকে বা বিকৃতি থেকে রক্ষার দায় কারও একার নয়। আমার মনে হয় দায় প্রধানত শিক্ষক, সংবাদপত্র ও ভাষার চর্চাকারীদের। অযথা সাধারণ মানুষকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।
অসীম: স্কুল-কলেজগুলোতে সাধারণত দেখা যায় যে, বাংলা ভাষা ব্যতীত অন্যান্য বিষয় শিক্ষকদের শুদ্ধ বাংলা লেখার ক্ষেত্রে অকারণ অনীহা। তাদের অনেকেই বলেন যে, এ তো বাংলা শিক্ষকদেরই কাজ। কারণ তারাই তো ভাষাটা শেখায় বা পড়ায়। তাদের এ ধরনের চিন্তা ভাবনা কি বাংলা ভাষার সার্বিক ক্ষতি করছে না?
সুভাষ: না না, তা কেন হবে। যাঁরাই বাংলা ভাষাকে তাঁদের শিক্ষণের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন, দায়িত্ব তাঁদের সবার। আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসুর মতো বিজ্ঞানী স্পষ্টই বলেছিলেন যে, বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চা সম্ভব। পরিভাষার ঘাটতি কোনো বাধা নয়। তাহলে এই যে শিক্ষকেরা বাংলা ভাষা শুদ্ধভাবে বা সাবলীলভাবে ব্যবহার করতে চান না, তাঁরা নিশ্চয় ঠিক করেন না। আসলে, এঁদের বাংলা ব্যবহার করাতেই এক ধরনের অক্ষমতা আছে বলেই এঁরা এইরকম কথা বলে এড়িয়ে যান।
অসীম: বাংলা বানান নিয়ে নানা সময় নানা চর্চা হয়েছে। সেই ১৯৩৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সম্ভবত প্রথম বাংলা বানানবিধি রচনা করে। তারপর গণশক্তি, আনন্দবাজার, সংসদ ও বাংলা আকাদেমি পুনরায় বানান সংস্কার করেন। প্রত্যেকের বানান বিধি কিছুটা হলেও ভিন্ন। এই বারবার নানা সংস্থার বানান সংস্কারের ফলে সাধারণ মানুষ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা কি সমস্যার মধ্যে পড়ছে না? বানান সংস্কারের ফলে বাংলা ভাষা কতটাই বা লাভবান হয়েছে? নির্দিষ্ট একটি সর্বজনগ্রাহ্য বানান বিধিকে সরকারি স্বীকৃতি দিয়ে অন্যগুলোকে আইন করে বাদ দিলেই তো মনে হয় সবার সুবিধে হয়।
সুভাষ: বাংলা বানান নিয়ে আলোচনা ও সংস্কার-প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল শতাধিক বছর আগে। তবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বানান সংস্কার সমিতির সুপারিশ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা বানানে জটিলতার কারণ বাংলা ভাষার শব্দ নানা উৎস থেকে এসেছে। অনেক সময় সেই উৎসের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার দায় জটিলতার একটা বড়ো কারণ। এই জটিলতা ছিল অনিবার্য। তবে সরলতা ও একরূপতা (uniformity) সাধনের চেষ্টাও জরুরি। এই উদ্দেশ্যেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের (১৯৩৫-৩৭) ওই সংস্কার প্রচেষ্টা। সংক্ষেপে বলি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বানান সংস্কার সমিতি বাংলা বানানকে সরল করতে অনেক দূর এগিয়েছিল। কিন্তু তারপরেও কেটে গেছে বহু বছর। তাই ১৯৭৮ সালে আরও একবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বানানকে সরল করার চেষ্টা করে অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, জগন্নাথ চক্রবর্তী প্রমুখের নেতৃত্বে। কিন্তু নানা কারণে (মূলত বিবাদ বিতর্কের জেরে) ওই কমিটি বাতিল হয়ে যায়। এছাড়া বিশেষ প্রচেষ্টা ছিল আনন্দবাজার পত্রিকা এবং পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির। এই দুই সংস্থার সংস্কারে বানানে একরূপতা এসেছিল অনেকটাই। কয়েকটা বিষয়ে মতভেদ অবশ্য ছিল। সমস্যা দাঁড়ায় অন্যত্র। দেখা যাচ্ছে, আকাদেমির বানান যতই যুক্তিনিষ্ট হোক না কেন, তা সকলে মেনে নেননি। বিভিন্ন সংবাদপত্র বিভিন্ন বানান লেখে। লেখকেরাও নানান বানানে অনড়। আমি মনে করি না যে, সরকারি ফতোয়া জারি করে একটি মাত্র বানানবিধি চালু করা উচিত। তাতে গন্ডগোল বাধবে। বরং বিকল্প থাকুক। একসময় সমতাবিধান তৈরি হবে। যতদিন তা না হচ্ছে, ততদিন শিক্ষকদের একটা দায়িত্ব পালন করতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিক ও যুক্তিগ্রাহ্য বানান সম্বন্ধে সতর্ক করতে হবে।
অসীম: সরকার স্বীকৃত নতুন বানানবিধি আমাদের কাছে অনেকটাই বিজ্ঞানসম্মত ও সহজ বলে মনে হয়েছে। তবে একে আরও সহজ করার জন্য উচ্চারণ-কেন্দ্রিক বানানকে কি পুরোপুরি মান্যতা দেওয়া যায় না? দিলে কী কী সমস্যা হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
সুভাষ: আমি মনে করি বাংলা ভাষায় উচ্চারণভিত্তিক বানান লেখা সম্ভব নয় সর্বত্র। বিদেশি শব্দে অবশ্যই অনেকটা সম্ভব। মজলিশ, পাপোশ, খরপোশ, আপোশ, অ্যাশট্রে- এসব বানান লেখায় অসুবিধে নেই। কিন্তু সর্বত্র উচ্চারণকে অনুসরণ করে বানান লেখা সম্ভব নয়। রবীন্দ্রনাথ অনেকটা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনিও বিশ্বাস করতেন যে, এটা পুরোপুরি সম্ভব নয়। সংস্কৃত, লাতিন প্রভৃতি কয়েকটি ভাষায় বানান আর উচ্চারণে সংগতি আছে। কিন্তু ইংরেজি, জার্মান, ফরাসি প্রভৃতি ভাষায় বানান আর উচ্চারণে আদৌ সংগতি নেই। তাতে ক্ষতি নেই। বানান একটা শেখবার ব্যাপার। ছোটো বয়স থেকেই তা শিখতে হবে।
অসীম: বাংলা ভাষার রক্ষা ও প্রসারের জন্য যে সমস্ত সংগঠনগুলি কাজ করে চলেছে, তাদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?
সুভাষ: পরামর্শ একটাই। নিজেরা বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে সহনশীল হয়ে কাজ করুন। ভিন্ন মতকে সহ্য করে যুক্তি দিয়ে আপনার মতকে বোঝান।
অসীম: বাংলা ভাষায় বর্ণমালা ও ধনিমালায় বর্ণ ও ধ্বনির সংখ্যার তারতম্য আছে। যতগুলি বর্ণ ততগুলি ধ্বনি নেই। আবার বিশেষ কোনো ধ্বনির নির্দিষ্ট বর্ণ ( অ্যা) নেই। এক্ষেত্রে বর্গীয় ব, অন্তঃস্থ ব (অন্তঃস্থ ব উচ্চারণ নেই) ঙ, ং । জ, য। ৎ, ত প্রভৃতির উচ্চারণ একই। এই একই উচ্চারণ বিশিষ্ট দুটি বর্ণের স্থলে একটি বর্ণকে কি বর্ণমালা থেকে বাদ দেওয়ার সময় আসেনি? যদি তা না হয় তবে এত সময় ধরে পরিবর্তন করা হচ্ছে না কেন?
সুভাষ: বাংলা বর্ণমালায় বিদ্যাসাগর মশাই যে পরিবর্তন করেছিলেন, সেটাই শেষ। তবে ঠিক সংস্কার না হলেও সরলীকরণ কিছুটা করেছে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, সাহিত্য সংসদ ও আনন্দবাজার পত্রিকা। বহু য- ওয়ালা শব্দ এখন জ দিয়ে লেখা হয়। তৎসম শব্দ এবং ধ্বন্যাত্বক শব্দ ছাড়া অন্যত্র ৎ এখন তেমন ব্যবহৃত হয় না। ঙ এবং ং বহু তৎসম শব্দে বৈকল্পিক। সেসব ক্ষেত্রে অনুস্বারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। অন্তঃস্থ - ব এ কালের বাংলায় নেই। অভিধানে এবং বর্ণমালায় তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অন্যগুলোকে বর্ণমালা থেকে বাদ দেওয়ার সময় এখনও আসেনি। আমাদের আরও কিছুকাল অপেক্ষা করতে হবে।
অসীম: বাংলা ব্যাকরণ ও ভাষাতত্ত্বের জগতে জীবিত ভাষাতাত্ত্বিকদের মধ্যে পবিত্রবাবু (সরকার) ও আপনি অগ্রগণ্য বলে আমরা মনে করি। আপনার অসংখ্য বইও রয়েছে। আপনাদের নতুন চিন্তা-ভাবনাকে তা সত্ত্বেও স্কুল পাঠ্য বা কলেজ পাঠ্য বইয়ে সে অর্থে প্রয়োগ করা হচ্ছে না। বা আপনাকে সরকারি ব্যাকরণ পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে না। যার ফলে বাংলা ব্যাকরণ ও ভাষাতত্ত্বের আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে কি অন্তরায় সৃষ্টি হচ্ছে না?
সুভাষ: এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে কঠিন। কেন পাঠ্য বইয়ের লেখকেরা আমাদের বা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন না, তা জানি না। সরকারি ব্যাকরণ পুস্তক রচনার ক্ষেত্রেও আমার মতামত কখনো চাওয়া হয়নি। কেন, তা বলতে পারব না। আমার মতামত চাওয়া হলে আমার বলবার কথা বলতাম নিশ্চয়। তবে এখন বড্ড দেরি হয়ে গেছে।
অসীম: আচার্য সুনীতি কুমার দীর্ঘদিন আগেই সম্ভবত বলেছিলেন, বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে রোমান (ইংরেজি) বর্ণকে গ্রহণ করা যেতে পারে। তাতে করে লিপির ক্ষেত্রটা অনেক সহজ হয়ে যায়। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?
সুভাষ: রোমান হরফ বাংলায় ব্যবহার করার সুবিধে ও অসুবিধে দুই আছে। সংস্কৃতে এই রোমান হরফ দিব্যি ব্যবহার করা হয়। বাংলায় অসুবিধা হল এই যে রোমান স্ক্রিপ্টে বাংলা লিখতে গেলে প্রচুর ডায়াক্রিটিকাল চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে। ও আর অ খুব সহজে ছোট আর ক্যাপিটাল o দিয়ে দেখানো যায় বটে। কিন্তু শ ষ স - র কী হবে? Ṣ S Ś -এই তিনটি চিহ্ন লাগে যথাক্রমে ষ স শ - র জন্য। তাহলে সেই তিনটি বর্ণই তো লাগল। বিশেষ সুবিধে কি হল রোমান হরফে?
অসীম: এমন অসুস্থ অবস্থার মধ্যেও আপনি আমাদের এতটা সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও প্রণাম জানাই। আপনার সার্বিক সুস্থতা কামনা করি।
সুভাষ: তোমাকে, জ্বলদর্চির সম্পাদক ঋত্বিককে এবং পত্রিকার পাঠকদের আমি অশেষ শুভেচ্ছা জানাই।
----
0 Comments