জ্বলদর্চি

কথাসাহিত্যিক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় -এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অখিলেশ সুর

কথাসাহিত্যিক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় -এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অখিলেশ সুর


অখিলেশ সুর : আপনি দু'বার সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন। আপনার অসামান্য সাহিত্যকীর্তিকে জানাই সশ্রদ্ধ নমস্কার। আচ্ছা, আপনার জন্মস্থান চাঁদা গ্রামের বাড়িতে এখন কারা থাকেন?

তপন বন্দ্যোপাধ্যায় : স্বাধীনতার পরে পরেই আমাদের পরিবার চাঁদা গ্রামের বাড়ি ছেড়ে তিনটে গোরুর গাড়িতে মালপত্র বোঝাই করে চলে আসে উত্তর চব্বিশ পরগনার বাদুড়িয়ায়। তখন আমার বয়স মাত্র দুমাস। ক্লাস থ্রি-তে পড়ার সময় একবার ওখানে গেছিলাম। গিয়ে দেখি, বাস্তুটা পড়ে আছে। কিছু আত্মীয় স্বজন তখনও ছিল। তাঁরাও পরে পরে সবকিছু ছেড়ে চলে আসে এপারে।

অখিলেশ : সাতক্ষীরায় কপোতাক্ষ নদের তীরে মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি কি এখনও আছে? আপনার জন্মস্থান থেকে কত দূরে?

তপন : একবার দু'হাজার সালে আমরা খুলনা গিয়ে গাড়ি করে মধুসূদন দত্তের বাড়ি গিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে দেখি, যিনি বাড়িটা দেখাশোনা করেন, তিনি খুব যত্ন সহকারে বাড়িটি রক্ষা করে আছেন। এখনও যত্নে আছে বলে শুনেছি।

অখিলেশ : বাদুড়িয়া লন্ডন মিশনারী স্কুলে আপনার ছাত্র ও শিক্ষক জীবনের অভিজ্ঞতা কেমন?

তপন : এই বিষয় নিয়ে লেখা আমার উপন্যাস -'অক্ষরের সঙ্গে একটা জীবন'। স্কুল জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা। ওখানে আমি অঙ্কের মাস্টারমশাই হিসেবে সাত মাস কাজ করেছি। ওই সাত মাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে এখনও কিছু লিখিনি।

অখিলেশ : ইউ বি আই-এর করণিক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে কোনও উজ্জ্বল স্মৃতি কথা আছে কী? 

তপন : স্কুল ছেড়ে প্রথম ওই কাজে ঢুকেছিলাম। দু'বছর ছিলাম। ওই সময়ের স্মৃতি নিয়ে আমার লেখা উপন্যাস - তুষাগ্নি। আমি যাদবপুরে যে পাড়ায় থাকতাম সেটা ছিল সিপিআইএম-এর পাড়া। মাঝখানে নকশালদের পাড়া পেরিয়ে আবার সিপিআইএম-এর পাড়ায় ঢুকতাম। যাদবপুর ও টালিগঞ্জের মাঝে। এই সময় যাতায়াত করতাম খুব ভয়ে ভয়ে। প্রতিদিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলে মনে হত, আজ আর বাড়ি ফিরে আসবো না। আমার পাড়ার লোকেরা বলতো, ওটা দিয়ে যাস না, মেরে ফেলবে। আবার নকশাল পাড়া পেরোলে ওপাশের লোকেরা বলতো -"ও কি নকশাল?"এরকম অদ্ভুত এক মানসিক দ্বন্দ্বে ভুগতাম তখন।

অখিলেশ :  মেদিনীপুর জেলার মহকুমা শাসক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে কী কী নতুন জিনিস পেলেন, যা আপনার সাহিত্যচর্চার কাজে লেগেছে?

তপন : মেদিনীপুর জেলায় আমি আমি গভীর ভাবে সাঁওতাল জনজীবনের সঙ্গে মিশে গেছিলাম। ওই সময়ের স্মৃতি নিয়ে আমি তিনটি উপন্যাস লিখেছি। প্রথম হল--মহুলবনীর সেরেঞ। সেরেঞ মানে গান। দ্বিতীয়টা হল - মহুলবনীর সেংগেল। সেংগেল মানে আগুন। এবং তৃতীয়টি সদ্য প্রকাশিত হয়েছে -মহুল বনের মায়াম। মায়াম মানে পাপ। প্রথম উপন্যাস নিয়ে শেখর দাস একটি সিনেমা করেছেন। বিএফজেএ - র ১২ টার মধ্যে ১১ টা পুরস্কার পেয়েছেন। আমি পেয়েছিলাম বিএফজেএ-র শ্রেষ্ঠ কাহিনিকারের পুরস্কার। সর্বশেষ উপন্যাসটি একটি অদ্ভুত উপন্যাস। এখানে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে যেমন সরলতা, প্রাণ চাঞ্চল্য আছে, তেমনি জটিলতাও। একটি সাঁওতাল মেয়ে খুব ফর্সা ছিল। মেয়েটির মা এক সাহেবের বাড়িতে কাজ করতে যেত। যা নিয়ে তাদের সমাজ সন্দেহ করে। তাদের সমাজের লোকেরা মেয়েটিকে বলত, সে তাদের সমাজের সন্তান নয়। তাই তার ট্রাইবাল সার্টিফিকেট করা যাবে না। এই নিয়ে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। মাঝের উপন্যাসটি জঙ্গল মহলে আদিম অধিবাসীদের আইডেন্টিটি ক্রাইসিস নিয়ে লেখা। মাওবাদী আধিপত্যের সময় মাওবাদীরা ভাবত সরকারের কাছে এরা সব খবর দিয়ে দিচ্ছে, আবার সরকারের প্রশাসন ভাবত এরাই মাওবাদী। এ-এক অদ্ভুত আইডেন্টিটি ক্রাইসিস। আমি কেশপুর, দাঁতন, গড়বেতা, ঝাড়গ্রাম ও বিশেষ করে নয়াগ্রাম এলাকায় সাঁওতাল জনজীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলাম। তাঁরা পালাপার্বণে আমাকে আমন্ত্রণ করতেন। আমিও যেতাম। খাওয়া দাওয়া করতাম। রাত্রিবাসও করেছি অনেক সময়। আমি ওদের কাছে সাঁওতালি ভাষাও শিখেছি। গ্রাম বাংলার ওই এলাকার দুপক্ষের দ্বন্দ্ব নিয়ে একটি উপন্যাস লিখেছি -'দ্বৈরথ'। এটা একটা স্যাটায়ারিক উপন্যাস। তখন ছিল কংগ্রেস সিপিআইএম, এখন যেমন তৃণমূল ও বিজেপি। প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে ঘন ঘন ছুটতে হত ওইসব এলাকায়।

অখিলেশ : আশুতোষ কলেজ পত্রিকার 'আমি ' কবিতা  দিয়ে কি আপনার হাতে খড়ি ?

তপন : না, আমার সাহিত্যের হাতে খড়ি ক্লাস থ্রি-তে যখন পড়তাম তখন থেকেই। আমার ঠাকুমা আমাকে খুব রূপকথার গল্প শোনাতেন। সেগুলো শুনে খুব অনুপ্রাণিত হতাম। আর কিশলয় পড়ে মনে হত, আরে! এই ধরনের কবিতা তো আমি নিজেও লিখতে পারি। সেই থেকে আমার মনে হত সাহিত্য চর্চা আমার জীবনের ভবিতব্য। সেই থ্রি থেকে আজ 'সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার ' পর্যন্ত দীর্ঘ পথ। অবশ্য আমার প্রথম ছাপা কবিতা 'আমি'। স্কুল ও কলেজ জীবনে অনেক লিখেছি।

অখিলেশ : এই মুহূর্তে আপনি কি লিখছেন? 

তপন : এবছর একটা উপন্যাস বেরিয়েছে - লেডি ম্যাকবেথ।

অখিলেশ : 'গুড্ডুর' পৃথিবী এখন কেমন ?

তপন : গুড্ডু হচ্ছে আমার দৌহিত্র। ওর যখন পাঁচ বছর বয়স তখন আমি ওকে খুব ফলো করতাম। ওকে নিয়ে অনেক গল্প লিখেছি। তারপর ভাবলাম এগুলো জুড়ে একটা উপন্যাস লেখা যায়। সেই ভাবনা থেকেই 'গুড্ডুর পৃথিবী' । পাঁচ বছরের এক শিশুর চোখ দিয়ে পৃথিবীকে দেখার চেষ্টা করেছি। এখন তো সাইবার যুগে তার বয়সী ছেলে মেয়েরা মোবাইল ফোন নিয়ে কার্টুন দেখে, গান শোনে। তাই এখন যদি গুড্ডু পাঁচ বছরের থাকত, তাহলে অন্য রকম লিখতাম।

অখিলেশ : তিলোত্তমার প্রেমিকদের এখন কেমন দেখছেন ?

তপন : এখন কোনও যুবতী মেয়ে যদি কোথাও চাকরি করতে যায়, তবে নানারকম বাধা, যৌন হেনস্থা এসে পড়ে। যদি খুব স্ট্রং মেয়ে হয় সে ম্যানেজ করে নেবে। কিন্তু নরম মনের মেয়ে হলে, তার ক্ষেত্রে খুব সমস্যা দেখা দেয়। তিলোত্তমাও সেরকম বিভিন্ন সমস্যা পেরুবে। এরকম বিষয় নিয়ে আর একটা উপন্যাস আছে আমার। 

অখিলেশ : 'হিটলারের ভূত' কি এই রাজ্যে প্রকট উৎপাত করছে এখন? 

তপন : এখন এসব নিয়ে তেমন কিছু বলার নেই। তবে হ্যাঁ, ভূতের উপদ্রব তুমুল বেড়েছে। মানুষ এত অসৎ হয়ে গেল কী করে, তাই ভাবি। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন অন্য রকম ছিল। রাজনীতির লোকেরা এখন নিজের জন্য ভাবে, দেশের জন্য নয়।

অখিলেশ : শঙ্খচিলের ডানায় কি সাহিত্যিক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়?

তপন : ক্লাস ফাইভ থেকে ব্যাঙ্কের চাকরি পিরিয়ড পর্যন্ত সময়কে এখানে ধরেছি। এটা একটা অটোবায়োগ্রাফিক্যাল নভেল। আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস। শঙ্খচিলের মধ্য দিয়ে আমার বেড়ে ওঠা, আমার জীবন সংগ্রাম ধরা আছে। আমরা তো উদ্বাস্তু পরিবারের ছেলে, ওপার থেকে সম্বলহীন ভাবে আসতে হয়েছে। আগামী কাল কী খাওয়া হবে, বাজার কীভাবে হবে এগুলো নিয়ে ঠাকুরদার দুশ্চিন্তা ছিল সীমাহীন। স্কুলে ফি দিতে পারতাম না, পরীক্ষা মাঝে মাঝে বন্ধ হয়ে যেত। এই সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছি এখানে।

অখিলেশ : বর্তমান নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে আপনার গোয়েন্দা গার্গীর ভূমিকা কী হতো?

তপন : গার্গীকে এই তদন্তে লাগাতে পারলে ভালো হতো। কারণ, গার্গী তো জটিল সব সমস্যার সমাধান করে। সিবিআই পারে না এমন কাজ নেই। তবে করবে কী করবে না বা কতটুকু করবে, তা সময় বলবে। তবে গার্গী হলে এতদিনে সমাধান করে দিত।

অখিলেশ : 'হরিপদ কেরানি'-রা যে চাকরি হারিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ধর্না দিচ্ছেন, তাঁদের কি বলবেন?

তপন : গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি তে যাদের চাকরি যাচ্ছে, তারা তো পরীক্ষা দিয়ে নিয়ম মতো পাননি। চুরি করে বা কিনে পেয়েছিলেন, আমরা তো পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে নিয়ম মতো চাকরি পেয়েছি। এদের এই চাকরি যাওয়াটা দরকার ছিল। পরের প্রজন্ম আট লাখ, দশ লাখ টাকা দিয়ে চাকরি করতে চাইলে দুবার ভাববে। অভিজিৎ গাঙ্গুলী, বিশ্বজিৎ বসু ডুবে যাওয়া বাংলাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।

অখিলেশ : আপনার নদী, মাটি ও অরণ্য কি এখন প্রমোটারদের দখলে?

তপন : সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এইভাবে নদী মাটি অরণ্য দখল হবে। এই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। আর নদী মাটি অরণ্য তো আমার সুন্দরবনের কাহিনি। ওখানে প্রমোটারদের কথা তেমন নেই।

অখিলেশ :  'আমলাগাছি'- আমলা জীবনের দু-একটি ব্যতিক্রমী জন সংযোগের অভিজ্ঞতা যদি শেয়ার করেন ---
তপন : আমি যখন প্রথম বিডিও হিসেবে ভগবানগোলা যাই, ওখানকার এম এল এ বললেন- "আমি যা বলবো, তোমাকে তা শুনতে হবে।" আমি ভয় পাইনি, সমানে লড়াই করেছি।কাকদ্বীপে একটি স্কুলের আ্যডমিনিস্ট্রেটর ছিলাম।সিডিলকাস্ট হোস্টেল নিয়ে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছিল। স্কুলটি ছিল নদীর ওপারে। হেড মাস্টার যখন তখন এসে বিলে সই করিয়ে নিয়ে যেতো। সেবার সই করতে গিয়ে আমার কেমন ডাউট হলো, আমি বললাম আচ্ছা ১৫০-২০০ ছাত্র হোস্টেলে থাকে, বিল্ডিং আছে? হেড মাস্টার বললো দু তিনটে আছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে দেখতে যেতে চাইলাম। তখন কাঁচুমাচু হয়ে হেড মাস্টার বললো - স্যার কোনও বিল্ডিং নেই। আমি হতচকিত হয়ে গেলাম। খুব রেগে গিয়ে বললাম - গেট আউট, এখান থেকে। ভয়ে হেড মাস্টার সেদিন সুড়সুড় করে কেটে পড়লো।

অখিলেশ : জ্ঞানপীঠ পুরস্কারের নির্বাচক হিসেবে (২০১১, ২০১২, ২০১৩) কেমন কেটেছে ?

তপন : সাহিত্য অকাদেমি যেমন ২৪ টা ভাষায় ২৪ টা পুরস্কার দেয়, জ্ঞানপীঠ কিন্তু সারা ভারতের একজন পায়। আমি পূর্বাঞ্চল কমিটির নির্বাচক ছিলাম। নবনীতা দেব সেন ও সন্দীপ সরকারও ছিলেন। সেই সময় বাংলার সবচেয়ে সেরা যিনি তাঁর নাম প্রস্তাব করা হত। আমি একবার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, একবার নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ও একবার শঙ্খ ঘোষের নাম রেকমেন্ড করি। তখন যাঁরা সরস্বতী পুরস্কার পেতেন, তাঁরা জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেতেন না। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও শঙ্খ ঘোষ দুজনেই সরস্বতী পুরস্কার পেয়েছেন। তাই তাঁদের পাওয়ার কথা নয়। কিন্তু সারা ভারতে ব্যতিক্রমী ভাবে একমাত্র শঙ্খ ঘোষ সরস্বতী পুরস্কার পাওয়া সত্ত্বেও জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেয়েছেন।

অখিলেশ : শিশু কিশোর আকাদেমির প্রতিষ্ঠাতা-সচিব
হিসেবে সাহিত্য সংযোগের অভিজ্ঞতা থেকে হঠাৎ ছেড়ে চলে আসার নান্দনিক ডিজাইন এখন কেমন আঁকবেন?

তপন : হ্যাঁ, একটা প্রতিষ্ঠান আমি গড়লাম একেবারে শূন্য  থেকে শুরু করে, তাকে বড় করার চেষ্টা করছিলাম, তারপর মাঝপথে ছেড়ে চলে আসতে হল। সেটা একটা কষ্ট আছে। কিন্তু এখন আর কষ্ট দেয় না। কিন্তু, আরও অনেক কিছু করার ছিল আমার। যেমন, বাংলা সাহিত্যের সমস্ত শিশু সাহিত্য নিয়ে সংকলন গ্রন্থ করার ইচ্ছে ছিল। ব্লক ও মহকুমা স্তরে শিশু সাহিত্যের একটি করে লাইব্রেরি করার ইচ্ছে ছিল এবং যেখানে যত ট্যালেন্ট আছে -গানে হোক, নাচে হোক তাদের  সরকারি উদ্যোগে তুলে আনার। বেসরকারি তো অনেক আছে।

অখিলেশ : বর্তমান বাংলা সাহিত্যের যৌনতা নিয়ে কি বলবেন?

তপন : দেখো, যৌনতা নর-নারীর চিরন্তন বিষয়। সাহিত্যে এসব থাকবে। কিন্তু উপস্থাপন হবে নান্দনিক ভাষা ও রূপরেখা নিয়ে। 



 অখিলেশ : আপনি লিটল ম্যাগাজিন থেকে উঠে আসা সাহিত্যিক। লিটল ম্যাগাজিনের সুখ -দুঃখ, আনন্দ বেদনার কথা অনেকটাই জানেন। বর্তমান লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদকদের প্রতি আপনি কী বার্তা দেবেন?

তপন : লিটল ম্যাগাজিন বাংলা সাহিত্যের প্রাণ। আমিও তো লিটল ম্যাগাজিনে এখনও লেখালিখি করি। সম্পাদকদের বলব, লেখা ছাপার আগে একটু দেখে নিতে। লেখার মধ্যে যেন সাহিত্য গুণ থাকে। 

অখিলেশ : বাংলার সমাজ বাগানে এখন 'দোপাটি' র চারা ছেয়ে যাচ্ছে। সাহিত্য, সিরিয়াল, নাটক সবেতেই আপনার দোপাটি ফুলের পরিভ্রমণ। বিষয়টি সম্পর্কে কি বলবেন?

তপন : দোপাটি কিন্তু বহুগামী নারী নয়। সে একটা সম্পর্কিত দাদার লালসার শিকার হয়েছিল। কিন্তু গ্রামীণ মেয়ে সেই কলঙ্ক মাথায় নিয়ে সংগ্রাম করে জনসেবার কাজে যুক্ত হয়েছিলেন। প্রধান হয়ে এলাকার মানুষের মন জয় করেছিলেন। আমি কখনওই বর্তমান টিভি সিরিয়ালের কাহিনির মতো বহুগামী নারী বিষয়টি পছন্দ করি না। এতে সমাজের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়।

অখিলেশ : জ্বলদর্চি তিরিশ বছর পার করে এগিয়ে চলেছে। আপনার পরামর্শ ও শুভেচ্ছা পেতে চাই।

তপন : জ্বলদর্চি একটি লিটল ম্যাগাজিন যার তিরিশ বছর অতিক্রান্ত হওয়া নিঃসন্দেহে বাংলা সাহিত্যের একটি মাইলফলক। আমি দীর্ঘকাল ধরে জ্বলদর্চির  সাহিত্যকর্ম অনুসরণ করছি, তাতে উপলব্ধি করেছি এরকম সাহিত্যকর্মীদের জন্যই বাংলা সাহিত্য আজও অবস্থান করছে স্বমহিমায়। জ্বলদর্চি আরও নতুন পথ অনুসরণ করে তরুণ কবিলেখকদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্লাটফর্ম হয়ে উঠুক।

অখিলেশ : আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই। আপনার মূল্যবান সময় আমাদের দেওয়ার জন্য।

তপন : আপনাকেও ধন্যবাদ জানাই।
----
জ্বলদর্চি অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন।👇




Post a Comment

2 Comments

  1. এক নিমেষে পড়ে ফেললাম। একরাশ মুগ্ধতা জন্ম নিল।

    ReplyDelete
  2. স্যারের মতো মানুষ আজকাল সুদুলভ।

    ReplyDelete