জ্বলদর্চি

কালের অতল তলে কলোরাডো/ পঞ্চম পর্ব /চিত্রা ভট্টাচার্য

কলোরাডোর পাহাড়

কালের অতল তলে কলোরাডো 
পঞ্চম পর্ব
চিত্রা ভট্টাচার্য

আস্পেন নগরী 

 সুদূরের পিয়াসী মন ক্লান্তি বিহীন ছুটে চলেছে  কলোরাডোর  আস্পেন নগরীর  উদ্দেশে।  সেই তামাটে   দুই পাহাড়ের  হৃদপিন্ড চিরে ন্যাশানাল হাইওয়ে --  মাকড়সার জালের মত সড়ক পথ  ছড়িয়ে আছে সারা মহাদেশ ব্যাপী কত রাজ্য রাজধানী শহর নগর গ্রামের সাথে শাখা প্রশাখায় যুক্ত হয়ে । ভাবছি, এই  নাগরিক সভ্যতা কত বিজ্ঞান সন্মত ভাবে নির্মিত হয়েছে। কত হাজার হাজার যুগ ধরে বিভিন্ন ভাবে চলছে এ অসাধ্য সাধন। ডিনামাইট দিয়ে পাহাড়ের পর পাহাড় গুড়িয়ে এই কঠিন কঠোর অচলায়তন কে নিজের বশে এনেছে সভ্য বিবেচক মানুষের দল। কালক্রমে  গড়ে তুলেছে বিশাল অত্যাধুনিক  নাগরিক সভ্যতা। সে তার প্রয়োজনে পাহাড় ভেঙেছে ,নদীর চলার পথ রোধ করেছে ,অরণ্য ধ্বংস করেছে সমুদ্র কে ও রেহাই  দেয় নি। প্রযুক্তির প্রয়োগে বিশ্বজুড়ে সৃষ্টি করেছে মানব সভ্যতার অহঙ্কার।    মানুষের এ সর্বগ্রাসী ক্ষুধার জ্বালায় আধুনিকতার ইঁদুর দৌড়ে চলেছে  নিধন যজ্ঞ, প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্লজ্জ লোভ অত্যাচার ,এই কারণ গুলোই হয়তো কোনো এক কালে হয়ে থাকবে প্রকৃতির নির্মম  ধ্বংস্বের সূচনার স্বাক্ষর। বিস্তর ভাবনায় উদ্বিগ্ন আমি , গাড়ির হেড লাইটের আলোয় পাহাড়ের সুড়ঙ্গ পথ পেরিয়ে এলাম। রোজমারির ক্ষেত ফল ফুলের নার্সারির বাগান বাঁয়ে ফেলে গ্রাম নগর খামার বাড়ি পার হয়ে চলেছি এক ঘেঁয়ে ধুধু মাঠের মরা ঘাসের প্রান্তর ডিঙিয়ে। মাঝে মধ্যে জেগে উঠছে সবুজ চাদর গায়ে গড়ানো টিলা , কোথাও পাহাড়  ধুয়ে এসে ছলছল বয়ে যাওয়া তরঙ্গিণীর  ঝর্ণা ধারা।  
রোপওয়ে

   দিনের শেষের শেষ খেয়ায় সূর্যের ঝলমলে আলোয় প্রতিফলিত চারদিকে। বিদায়ী বেলায় আকাশের ক্যানভাসে নানা রঙের মেলা। নীলাভ  বেগুনী হলুদ কমলা গোলাপী বিচিত্র রঙের প্রদর্শনী তে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। নীল সীমানায় আকাশের দিগন্ত  জুড়ে এমন উজ্জ্বল রঙের বাহার আজই  প্ৰথম দেখলাম। উত্তর দক্ষিণ নানা দিক থেকে গড়িয়ে আসা সোনা রোদ্দুরের আলোয় বিভ্রান্ত হয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাড়ে সাতটা। এখন ও সূর্য পাটে বসেনি তাঁর জ্বলন্ত চাহনি।খুঁজে বেড়াই সকাল বেলার শুরুতে ,  আকাশের বুকের মাঝে লেপ্টে  থাকা স্তরে স্তরে সাজানো কালচে মেঘের মন খারাপের দিস্তা। ব্রতীন বলে আস্পেন নগরী বেশ দূরের পথ। পাহাড়ের গা বেয়ে আরো উঁচুতে ,নানা প্রজাতির পাহাড়ি গাছ গুলোর  মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছি। পাতার ফাঁক দিয়ে অস্তগামী লাল টুকটুকে সূর্য অনিমেষে তাকিয়ে থাকে। গাছের পাতা ঝিকিমিক করে।  Car side mirror এ  সে দৃশ্য দেখে চমকে উঠি।  

 প্রায় ঘন্টা খানেক কেটে গিয়েছে ,এবারে এলো  রুক্ষ পাথরের গা ঘেঁষে ঘাড়ে মাথায়  জায়গা করে  দাঁড়িয়ে থাকা ছোট বড়ো বিভিন্ন আকারের প্রায় ১৫থেকে ২০ফুট লম্বা আস্পেন গাছেরা। সারিবদ্ধ হয়ে পথের দুই পাশে দাঁড়িয়ে থেকে এ রাজ্যে প্রবেশ করা নতুন অতিথিকে সুস্বাগতম জানায় করজোড়ে। এতো আস্পেন গাছের সমারোহ দেখে আন্দাজেই বলি ''নিশ্চয়ই কলোরাডোর আস্পেন নগরীর  কাছাকাছি এসে গিয়েছি। '' ব্রতীন মাথা নেড়ে জানায় আর বেশী দেরী নেই। সামনেই জমজমাট  পিটকিন কাউন্টি তারপরেই আস্পেন নগর। গ্যাস স্টেশনে ট্যাঙ্ক ফুল করতে ,বার দুয়েক কফি ব্রেকে   এবং এই দুর্গম পথে  অতি সাবধানে  ড্রাইভ করতে হচ্ছে তাই অন্ততঃ ৪৫মিনিট সময় অতিরিক্ত লাগলো ।                                                   স্কী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র      
           
এখন গাঢ় অন্ধকার ! ঘড়িতে রাত প্রায় ৯ টা।  গাড়ির মধ্যে থাকায় বাইরের ঠান্ডা কত টা অনুভব করতে পারিনি। তখন পড়ন্ত বেলায় রোদের চমকে মনে হয়েছিল আস্পেন ও থাকবে রৌদ্রোজ্জ্বল। অতনু বলে আস্পেনে এখন ঠান্ডা  minus 3 degree,,,আমরা কলোরাডোর পশ্চিম প্রান্তে চলেছি ,সী লেভেল থেকে প্রায় ৯০০০ ফুট উঁচুতে। যত উপরের দিকে উঠছি আবহাওয়ার ঝটিতি পরিবর্তন হয়ে চলেছে। কোথাও কিছু নেই হঠাৎ কালো মেঘে  ছেয়ে গিয়েছে।এলোমেলো ঝোড়ো হাওয়া বইছে। চটর পটর শব্দে শিলা বৃষ্টি ঝরে পড়ছে রাস্তায় গাড়ির চালের ওপর। দূরে লোকালয়ে ঝলমলে নিয়ন আলোয় সাজানো শহর ভিজছে। শিল নয় অবিরাম তুষার ঝরছে। পারভীন বলে মনে হচ্ছে একরাশ রূপালী জরির ফিতে আকাশ থেকে ঝরে পাহাড়ের গায়ে গড়িয়ে নামছে। অপূর্ব মনোমুগ্ধ কর সে  দৃশ্যে সবাই নির্বাক চেয়ে আছি।                                                         আস্পেন বরফাবৃত                                                                                                                               কলোরাডোর আস্পেন গাছময় শান্ত স্নিগ্ধ এ শহরটি র নাম  আস্পেন সিটি। শতবর্ষী '' আস্পেন' নামের গাছ টির একটি শিকড় থেকে দল বেঁধে জন্মানো এই  আস্পেন গাছ গুলো পুরো শহর কে আগলে রেখেছে নিজের দু বাহুর থেকে প্রবল পরাক্রমী অসংখ্য বাহুর জোরে।   এ গাছের কাঠ ভারী শক্ত লোহার মত মজবুত। এখন বসন্তর শুরু। গাছ গুলোর পাতা সবুজ শ্যামলিমায় ভরা কিন্তু শরৎ এলে পাতা গুলো সব হলদেটে কমলা বরণ নেয়।  যেন আগুন লেগেছে বনে বনে। সে এক অবর্ণনীয় সৌন্দর্য। সে হলুদ দেখলে মনে হবে খাঁটি সোনায় কেউ আপাদ মস্তক মুড়ে দিয়েছে। এই  জন্যই কলোরাডোর ৭২ টি নামী দামী শহরের মধ্যে এই আস্পেন শহর টি ও নিজের জায়গা করে নিয়েছে অন্যতম সমৃদ্ধময়ী রূপসীর তালিকায়।                                             চলার পথে                                                  

ইয়াম বলে,  আর  গ্রীষ্মে এ শৈল শহর বেড়ানোর পক্ষে ভারী মনোরম। তখন তুষার পাতের এতো      আধিক্য নেই।  নানা রঙের ফুলের মধু খেতে হ্যামিংবার্ড ঘুরে বেড়ায়। ক্যামেলিয়া ড্যাফোডিল ডেইজি লিলি ,পিটুনিয়া ,গজেনিয়া গোলাপের সাথে বাহারী  ক্যাকটাসের ফুলের আভরণে রানীর মত সেজে ওঠে শহর । কত নাম না জানা পাহাড়ের পাখির দিনভর  কলরবে মুখরিত আকাশ--ফিজ্যান্টস ,কার্ডিনাল খেলে বেড়ায় , থ্রাস মনের সুখে গান শোনায়। তখন রূপের শোভায় স্বর্গীয় সৌন্দর্যে মেতে আস্পেন তখন প্যারাডাইস। সর্বত্র লোকে লোকারণ্য। হোটেল মোটেল গুলো  No vacancy ..রেস্তোরাঁয় তিল ধারণের ও জায়গা নেই। কিন্তু এখন স্প্রিং টাইম হলে ও খেয়ালী প্রকৃতির পাগলামো মর্জি তে স্নো ফল শুরু হতেই পারে। জমে থাকা স্তূপীকৃত বরফ আস্পেনের মাঠ ঘাট জুড়ে রাস্তার ধারে। তাতেই এসে আনন্দে মাতে  নানাদেশের  প্রকৃতি প্রেমিক ভ্রমণার্থী। আমি বলি ,এও এক অপরূপ অপার্থিব সৌন্দর্য। বরফাচ্ছাদিত  ঠান্ডায় পাহাড়ি শহরে  থাকা খুব কষ্ট কর হলেও  তার স্নিগ্ধ শ্বেত শুভ্র পবিত্র সাজের আবেদন ভারী দৃষ্টি নন্দন অতুলনীয়।                                                                                                                                 গাড়ির  ভিতর বেশ আরাম দায়ক , তাই বাইরে যে -3 degree --ঠান্ডা  ভাবতে পারিনি। অবেলায় পাহাড়ের গায়ে রোদের  চমক  দেখে মনে হয়েছিল আস্পেন ও পাবো এমনি শুখনো  আবহাওয়া । এখন রাতের অন্ধকার ,অতিরিক্ত স্নো ফলের জন্য স্ট্রীট লাইটের হলদে মৃদু আলো  শেডের আড়ালে  রাখায় টিমটিমে আলো তে তুষার ঝরা এ নগরী কে বেশ রহস্যাবৃত লাগছে। রাস্তার দুই ধারে স্তূপাকৃত বরফ ,এক মানুষ সমান উঁচু ঢিবি হয়ে আছে। দেখেই বোঝা যায় সারা শীত ধরে এখানে কত বরফ পড়েছে !  নির্জন শুনসান পথ। নির্দিষ্ট স্থানে বুকিং করা সাজানো এপার্টমেন্ট টি খুঁজে নিয়ে বেশ উঁচুতে পাহাড়ের এক সমতলে কাঠের সিঁড়ি বেয়ে উঠে এলাম। আধুনিক সুসজ্জিত  বিল্ডিঙের এই এপার্টমেন্ট টি দুটো বেড রুমের বেশ বড়ো। এখানে কফি থেকে শুরু করে ব্রেকফাস্ট লাঞ্চ ডিনার সব নিজেরা প্রস্তুত করে খাওয়ার যাবতীয় সু ব্যবস্থা আছে। সুতরাং কফি দিয়ে রাতের সূচনা করে সঙ্গে আনা খাদ্য দ্ৰব্য সামগ্রী চাল,ডাল নুন তেল ইত্যাদি দিয়ে খিচুড়ি আলু ভাজা ,ডিম ভাজায় ডিনার পর্ব  হৈহৈ করে শেষ করে  যে যার বিছানায় কম্বলাশ্রয়ী হয়েছিলাম। সারাদিনের পথশ্রমের ক্লান্তিতে সহজেই চোখের পাতা বুজে এলো।         

  4th march ----- অকাতরে ঘুমোচ্ছিলাম ,ভোরের আলো পর্দার ফাঁক দিয়ে  চোখের পাতায় পড়তেই ঘুম একেবারে  উধাও। বরফের স্তূপের ওপর প্রতিফলিত প্রথম সূর্যের স্বর্ণাভ আলোয় ভুবন ভরা। কে বলবে ? কাল রাতে অজস্র স্নোফল মাথায় নিয়ে ঠকঠক করে শীতে কেঁপে এ শহরে প্রবেশ করেছিলাম।  আমার বেশ মজা লাগে ,যখন দেখি তুলোর মত তুষার পাতের প্রবল ধারা তে বরফের সাদা চাদরে ঢেকে যায় পথ ঘাট গাছ পালা। ডাল পালা গুলো  গুচ্ছের বরফের সাদা ফুল ভরে থাকে । টোপরের মত বরফ জমে থাকে গাড়ির মাথায় বাড়ির ছাদে উঠোনে ব্যালকনিতে। বাইরে তাকিয়ে দেখি গার্ডেন আমব্রেলা টা হাওয়ায় চিৎ হয়ে গিয়েছে। তার ওপর অজস্র স্নো পরে মস্ত এক কড়াই বরফ জমে গিয়েছে । ঠান্ডা জলে কাকভেজা হয়ে কেঁপে ওঠে দিগ্বিদিক। দুচার জন মানুষ আপাদমস্তক ওভার কোটে মুড়ে মাথায় টুপি ,কালো চশমায় চোখ ঢেকে পথে বেরোয়। কখোনো দেখি , তারা স্নোফল উপভোগ করছে  বাড়ির বারান্দায় বসে বারবি কিউয়ে মাংস ঝলসে। কেউ বা ওয়াইন অথবা বিয়ারের মগ হাতে। কাঁচে ঢাকা বারান্দায় চিপস বয়েল এগস ফ্রায়েডরাইস ,কষা মাটন বা চিকেন স্যুপ ব্রেড বাটারে ডিনার সারতে ব্যস্ত। কোথাও গৃহবাসী তৎপর হয়ে ওঠে শুখনো কাঠ মজুত রাখতে। শীতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে কাঠ সম্বল করে ফায়ার প্লেসের আগুন উস্কে দেওয়ার সুব্যবস্থা চালিয়ে যেতে থাকে অনবরত ।                                                                                                                                      এপার্টমেন্ট গুলো সব রাশিরাশি তুষারস্নাত পাহাড়ে ঘিরে আছে । তবে এখন স্নো ফল হচ্ছে না। ওরা নিজেরাই ব্রেকফাস্ট,কফি বানিয়ে তিনজনে বেরিয়ে গেছে কনফারেন্সে। পারভীনের কাজ জিওলজিক্যাল সার্ভের। তাই একটু পরে আমরা দুজনে শীত বস্ত্রে সম্পূর্ণ  আচ্ছাদিত হয়ে বেরিয়েছি আস্পেন নগরীর আশেপাশে টহল দিতে। আস্পেন মাউন্টেন স্কী রিসর্টে,ঢাউস দুকাপ কফি আর স্ন্যাক্স নিয়ে এক ছাদ খোলা রেস্তোরাঁর ব্যালকনিতে এসে বসেছি। জরুরী ফোন কল পেয়ে কফির মগে  লম্বা  চুমুক দিয়ে পারভীন চলে গিয়েছে নিজের কাজে। কথা আছে আমি এখানেই ওদের সবার ফেরার অপেক্ষায় থাকবো।                      
জ্বলদর্চি অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন।👇
দূরের পাহাড় নবীন সূর্যালোকের ছটায় পর্বত সম্রাট যেন  শীর্ষে তাঁর স্বর্ণ মুকুটে সোনার অলঙ্কারে সেজেছে। ভ্রমণ পিপাসুদের চলাচলে গমগম করছে শ্বেত সামাজ্য।  এমন রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে  বোধহয়  ঘরের কোণটিতে কেউ বসে নেই। যতদূর দেখা যায় চাঁদের হাট বসেছে । এই উপত্যকায় কেউ হাইকিং, বাইকিং কেউ বা স্কীয়িং প্র্যাক্টিস করতে এসেছে।অবাক হয়ে দেখি এত যে ভীড় কিন্তু কোথাও এতটুকু নোংরা কেউ ফেলছে না। এত টুকু নয়েজ পল্যুশান ও নেই।  হাতে স্টিক পিঠে রুকসাক কোমরে দড়ি বেঁধে তিনজনের একটি  হাইকারের  দল আমার সামনের  টেবিল থেকে রওনা দিলো কোনো এক পাহাড় চূড়ায় ওরা পায়ে হেঁটে পৌঁছবে। আমেরিকানরা খুব এডভেঞ্চার প্রিয়, এবং প্রকৃতি প্রেমিক। প্রায়ই  বছরের একটা মাস ওরা সপরিবারে শত কষ্ট সহ্য করে ও প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ায় --RV ভাড়া নিয়ে বা নিজেদের গাড়িতে। পাহাড়ে জঙ্গলে সমুদ্র পাড়ে এমন কি মরুভূমিতে যেখানে মন চায়। প্রকৃতিকে খুব কাছের থেকে স্পর্শ করবে , দুচোখ ভরে দেখতে জানতে বুঝতে । এদের এই দলে ছোট্টো শিশুটি যেমন বাপ ,মায়ের কাঁধে পিঠে চড়ে বেড়ায় তেমনি সাথে থাকে বাড়ির  পোষ্য কুকুরটিও। আস্পেনের এই  রাজ্য বছরের প্রতিটা  ঋতুতেই সৌন্দর্যের ডালি উপহার দেয় তার  প্রকৃতি প্রেমিক ভ্রমণকারীদের।                                                                                                                                               বেশ কিছুক্ষণ একা উঁচুপাথরের বেদীতে  বসে আছি। একটি দলের স্কীয়িং প্রাকটিস দেখছিলাম। অবাক হয়ে দেখি এ দলে  আট ,দশ বছরের বাচ্চা  থেকে নানান বয়সের নারী পুরুষ , এমন কি আশি বছরের বৃদ্ধ বৃদ্ধারা ও এই খেলায় মেতেছে। যেন বয়স টা  ওদের কাছে শুধু একটা সংখ্যা মাত্র। এতো কর্মঠ হাসি খুশি প্রাণবন্ত বৃদ্ধ মানুষের দল ও তাদের উজ্জ্বল প্রশান্তিতে ভরা  জীবন দেখে  আনন্দে  মন ভরে  গেল । সমান তালে চলছে বরফের মধ্যে তাদের ঝাঁপাঝাঁপি।বিভোর হয়ে দেখছিলাম রকি পর্বত মালার মন হারানো অপরূপ সৌন্দর্যের  সাথে সবুজ নিবিড় বনানী কে কেমন শ্বেত শুভ্র বরফ সোহাগে জড়িয়ে ধরেছে।

Post a Comment

0 Comments