জ্বলদর্চি

মেথর-মেথরানি হয়ে ওঠা/মলয় রায়চৌধুরী

আমার জীবনের ঘটনা-১৫
মলয় রায়চৌধুরী

মেথর-মেথরানি হয়ে ওঠা

আমরা বুড়ো-বুড়ি মিলে দুইঞ্চি পুরু গু পরিষ্কার করেছিলুম । নাকতলায় নিচেতলার ফ্ল্যাটমালিক ফণীবাবুর কাছে গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে মুম্বাই থেকে নিয়ে যাওয়া প্রিমিয়ার পদ্মিনী গাড়িটা রাখতুম ; একদিন গ্যারাজ খুলে দেখি গাড়িটা থই-থই-গুয়ে সিঁটিয়ে বসে আছে ; নিচেতলার ভাড়াটেরা স্যানিটারি ন্যাপকিন ফেলে-ফেলে গু বেরোবার পথ বন্ধ করে দিয়েছে । কর্পোরেশান বললে, পার্টি অফিসে যান, কর্মিদের সেখানেই পাবেন । সিপিএম পার্টি অফিস যিনি সামলাচ্ছিলেন তিনি বললেন, বাড়ির ভেতরের কোনো কাজের দায়িত্ব আমাদের নয়, ধাঙড়দের দিয়ে পরিষ্কার করান ।বাঁশদ্রোণী বাজারে ভোরবেলা যে ধাঙড়রা কাজ পাবার জন্যে বসে থাকে তারা বলল, ও কাজ আমাদের নয়, মেথরদের কাজ। গাঙ্গুলিবাগানে মেথর কলোনিতে গেলুম, বাসিন্দারা বলল, ওরা শুধু ম্যানহোলের কাজ করে, গুয়ের কাজ করে না । অগত্যা ডাণ্ডালাগানো দুটো সুইপার কিনে, নাকে গামছা বেঁধে, আমি খালি গায়ে গামছা পরে, সলিলা ব্লাউজ-শায়া পরে, গুয়ের পাঁক ঠেলে-ঠেলে, তিনতলা থেকে জলের পাইপ নামিয়ে গুয়ের ইঞ্চি দুয়েক হলুদ-সবুজ-কালচে চাদরকে পথে বের করে নর্দমায় ঢোকালুম । শিবুর চায়ের দোকানে তখন বামপন্হী দর্শকের পাল, শিবু অবশ্য হাওয়া বুঝে তৃণমূলে চলে গিয়েছিল । নর্দমার মুখটা গ্যারেজের কোনেই ছিল বলে রাস্তা নোংরা করতে হয়নি । মানুষের গু ধোবার ধান্দায় সেদিন দুপুরে তো রান্না হয়নি, পার্ক স্ট্রিটের রেস্তঁরায়  লাঞ্চ আর হুইস্কি খেতে গেলুম। জানি না আর কোনও সাহিত্যিকের দু-ইঞ্চি পুরু গু ধোবার অভিজ্ঞতা আছে কিনা । সেই যে “হয়ে-ওঠা’, এটা বোধ হয় মহাপুরুষ আর মহানারী  হয়ে ওঠায় উত্তরণ ।

🍂





Post a Comment

0 Comments