জ্বলদর্চি

তিনটি কবিতা /সন্তোষ ভট্টাচার্য

তিনটি কবিতা

সন্তোষ ভট্টাচার্য 

পাখির ডাক

বিদায়ের মুখড়াতে পাখিকে ডেকেছি রাতে
তাই ছড়াতে গিয়েছি খই
এসে দেখি সব থৈ থৈ। 
রাত জাগা পাখি ডেকে উঠেছিল, ওবাড়ির মেয়ে
বেরিয়ে এসেছিলো দানা নিয়ে। 
তারপর অন্ধকার, হাতড়ানো সার। 
সেই থেকে ঘুমের ভিতরে ঘুম, ঘুম নিভৃতে নির্ঝুম
স্বপ্ন নৌকা বয় নদী জলে
আমি আহতের মতো দিকহত। 
আমার ভিতরে প্রাণ নেই, জ্ঞান অল্প আছে
জালে যে স্বপ্ন পড়েছে
তাই দিয়ে মাখি খই, ফলারের মতো। 
ওবাড়ির মেয়ে চলে গেছে ডিঙি নিয়ে মাঝিদের ডাকে
আসবে না বলে গেছে পিছুডাকে
তবু রাত জাগা পাখি, ওঠে ডাকি। 
আমি যাই দানা নিয়ে। 


শাদা মেঘ 

এক শাদা মেঘ এসে ঘুলিয়ে দিলো অগ্নুৎপাত
ঘুলিয়ে দিলো বাহিরের বিকিরণ, বাহিরের রূপটান
কলঙ্ক ছোঁয়া অনুভূতির আগে সে বললো আছি
শাদা পাখির ডানায় ভর করে দেখি সত্য আছে। 

যে শব্দ থেকে অগ্নুৎপাত ঘটে যে শব্দ থেকে বন্যা
তাকে চাই না, নির্লজ্জতার খেলায় মাতবো না, ভাবি
তবু তার শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে বলি দয়িতা হও শাদা মেঘ
আমি পুরুষ, আমার ছন্দে তুমি বাজো, বেজে ওঠো। 

এসেছো বাষ্পীয় শকটে দেখি, বাষ্পীয় মুগ্ধতায় দেখি
আজ দিব্যযানে এসেছো মুগ্ধপ্রাণ, আমার দয়িতা হও
আমার ঘরে যে সুর আছে, শাদা মেঘ সাজবো তোমাকে
আভরণ থেকে নিরবরণে, মেঘ, সিক্ত হও চন্দনে চন্দনে। 

দূরে চলে যাও শাদা মেঘ, ছুঁয়ে চলে যাও শাদা মেঘ
হে আমার নিবৃত্ত অস্তিত্ব, প্রার্থনার মাণিক্য রতন
আমার কলিঙ্গ ঘুঙ্ঘট, নিরস্ত্র প্রাণের শিরস্ত্রাণ
কপটতা বিধৃত সংলাপে থাকে তোমার বাষ্পীয় মুক্তিস্নান। 


বিমুগ্ধ জলধরা

কী অসাধারণ সেজে এলে সেদিন
কালো টপস, কালো জিনস ঠোঁটে কালচে লিপস্টিক। 
গায়ের রঙের সাথে কী দারুণ ম্যাচিং। 
এসেই মুখ ভার, নখ খুঁটতে লাগলে, সাদা গোলাপি নেলপলিশ।
তারপর কাঁদতে লাগলে অঝোরে,
মুখের কাছে আনি মুখ, ঠোঁটের কাছে ঠোঁট, 
আসতে আসতে খসে পড়ে সব আবরণ…

ভীষণ বিচ্ছিরি তুমি, তারপর তো আর দেখতেই পেলাম না
এখন শুধু নীলে নীল, তোমায় পাই না। 
প্রতিবার এসে এমনি করে ভিজিয়ে দিয়ে পালাও। 

🍂


Post a Comment

0 Comments