জ্বলদর্চি

রক্তে আঁকা নির্বাচন / শুভশ্রী রায়

 কবিতা / শুভশ্রী রায়

সময়ের অঙ্গে

ব্যাপক হিংসা, রক্তে মাটি ভিজে, একের পর এক লাশ,
প্রতিনিধি বেছে নেওয়া যার নাম আসলে কি আগাগোড়া সন্ত্রাস?

রাজনীতি ক্ষরিত রক্ত বাংলার মাটির ভেতরে খানিকটা ঢুকে গেলে,
চ্যানেল-চোখ তুমি সবুজ বঙ্গভূমির ভেতর কী দেখে এলে?

গণনা কেন্দ্রের সামনে জমায়েত মানুষের ওপর আধা সামরিক লাঠি,
সন্ত্রস্ত পায়ে আমি নিরাপদ কোনও ঝোপঝাড়ের দিকে হাঁটি।

তারপরে স্টেশন, সেখান থেকে পালানো মহানগর- রাজধানী,
পেছনে উৎসব লোলুপ রক্তে আঁকা নির্বাচনোত্তর গ্রামখানি।


নারাজ-নীতি

আমি শিখি তার কাছে উৎসব অনুষ্ঠান, জ্বালানো শবমার্কা বাজী,
এত কিছু হয়েছে তবু অস্বাভাবিক বলতে না-রাজী!
শিখি নির্বিকার থাকতে, ভেতরে গুটিয়ে নিতে হাত-পা, চোখ,
বর্ষা এত রক্ত ঝরিয়েছে দেখেও বলব এ আর কী এমন শোক!


নারীদ্রোহ 

যা যা দেখে আসছ, সে সব লিখো না
অপমান ভক্ষণ করে বেঁচে থাকা আর
তোমার চামড়ার রং নিয়ে যার-তার থিসিস,
সয়ে নাও সব, নিজের ভেতরে রাখা হোক।

ঢাকো মুখের আগুন মাখো রূপটান,
অজস্র শিকারী হাতের অশ্লীল স্পর্শে অস্থির, 
ছ্যাঁকা খাওয়া গভীর শরীর লুকিয়ে রাখো,
বরং দেহকে উপকথা বানাও প্রাণপণে
মরমে নরম গোলাপতুল্য শব্দ বেছে নিয়ে;

বলেছি না, তোমার কোনো প্রেমিক ছিল না কখনো,
শুধু সম্পর্কের এ ধার থেকে ও ধার সারি সারি প্রভু,  
ওরা নাকি নিরাপত্তা দিয়ে এসেছে চিরকাল!
বিনিময়ে ওইটুকু চলে, পুংদুনিয়া মনে করে।

নিজের দহন নিজের মধ্যে রাখো,
তবেই তো এগিয়ে আসবেন সামন্তপুরুষগণ
সুরক্ষা দেওয়ার জন্য মাগনায়।

ছি: সোনা,
নারীবাদী চেঁচামেচিকে কবিতা বলে না!
🍂

পুরনো চেনাপরিচয়

পুরনো সব চেনাপরিচয় এলোমেলো হয়ে আছে,
হারিয়ে গিয়েছে এমন নয়
তবে আর নেই নাগালের মধ্যে,
সহজ আলাপচারিতার বৃত্তে।

যত পুরনো চেনাপরিচয়, যুগের ব্যস্ত প্রেক্ষিত জুড়ে
ভাঙ্গা কাচের চুড়ির রঙবেরঙ্গি টুকরোর মতো
ছড়িয়ে ছিটিয়ে,
দুর্লভ আন্তরিক আলো পড়লে ঝিকমিকিয়ে ওঠে;
অন্য সময়ে তাদের ওপর দিয়ে বেপরোয়া হেঁটে যায় রূঢ় দিনকাল।

এলোমেলো হয়েও সামনেই রয়েছে
কিছু চেনা নামধাম সংযোগ নম্বর,
অপ্রাসঙ্গিক আন্তরিকতা!
ক্কচিৎ কদাচিৎ কৌশল নেয় কুশল সংবাদ।

Post a Comment

1 Comments

  1. শুভশ্রী রায় ও প্রভাস মজুমদারের লেখা কবিতা ভালো লাগল।

    ReplyDelete