জ্বলদর্চি

কয়েকটি রম্য কবিতা- ২১ / শুভশ্রী রায়

কয়েকটি রম্য কবিতা- ২১ / শুভশ্রী রায়

সরোবরের হিয়ায়

চোখের সামনে ছড়িয়ে আছে বিরাট সরোবর,
টলটলে মায়াজলের দর্পণে মেঘ বেঁধেছে ঘর!
মন আমার, আলোর বেলায় ঘরের কদর কর,
ভুলিস না তুই মেঘ নদীর এই খেলা পরস্পর;
মন আমার, নিজেই কেন হ'স না রে তুই জল?
সরোবরের হিয়ায় ফুটুক তোর ইচ্ছা-শতদল,
মেঘের ডাকে জল সাড়া দেয় কামনা জর্জর,
নীলের আহ্বানে সাড়া দিতে শিখে নে সত্বর।


সুরের পাখি দূরে

যে পাখিটা গান গাইতে ভোলে না কখনো,
কখনোই সেই পাখিটা আসে না কেন কাছে?
তারও কী ভয়, সুর চুরি করবে দুষ্টু লোকজন!
না আসুক তবু তো তারই গান দু' কানে বাজে।

পাখি রে, সবার সামনে গাইতে তোর হয় লজ্জা,
স্বাভাবিক, জমায়েত কবেই বা তোর ছিল অভ্যাস?
আড়াল থেকেই অপূর্ব গান করে যা তুই সারা ক্ষণ
প্রচারের রমরমায় হয় না যেন তোর সুরের সর্বনাশ।

🍂


পাখি'র আসন

সে এক ভারি মিষ্টি, নরম, আমার প্রিয় ছোট্ট নীল পাখি,
সেই বিহগ-মিতার সঙ্গে আমার প্রাণ ভরে গল্প করা বাকি,
তাই তো ভোর থেকে বেলা অবধি মিতা করছে ডাকাডাকি,
জানলার বাইরে বিহঙ্গ আজ আসন নিয়েছে পাকাপাকি;
উড়ে আসছে ঘন ঘন আর বলতে চাইছে - হচ্ছেটা কী!
"শুধু সংসারের কাজ করলেই হবে, গল্পে দিয়ে ফাঁকি?"


আসর নেই

কবিতার আসর বসেনি বুঝি আজ, তাতে কী?
একেকটা দিন কেমন যেন এলোমেলো কাটে,
তবু তার মধ্যেও মাঝেমাঝে কবিতা উঁকি মারে;
কাব্য কখনোই জীবন থেকে দূরে দূরে না হাঁটে।

আজ তো নিজেকে গুছিয়ে নেওয়া ছিল জরুরি,
রূঢ় বাস্তবের সঙ্গে পুরো মিলেমিশে থাকার দিন,
তাও কবিতার নরম মুখ মনে পড়ে বুক টনটন;
গদ্যকে মেনে নিয়েও কাব্যের কাছে সত্তার ঋণ!

Post a Comment

0 Comments