বাংলা প্যারোডি কবিতা, পর্ব -- ৩৯
মানকের কল
ভাস্করব্রত পতি
চণ্ডীদাসের খুড়োর মামার পুত্র শ্রীমান মানকে
আজব রকম কল করেছে, শুনেই গেছি চমকে।
আমার সাথেই পড়তো ওটা, এক্কেবারে বোগাস
পড়ার নামে অষ্টরম্ভা, প্রতি ক্লাসেই ধপাস।
দুকান ধরে নিলডাউনে কি ভয়ানক শাস্তি
তাই না দেখে আমরা রোজই ভোগ করি খুব মস্তি।
পড়াশোনা করতোনা সে, নানা রকম ছলে
সেই ছেলে আজ কল করেছে, আপন বুদ্ধি বলে।
কাগজগুলো ছাপলো রঙিন, যন্ত্রসহ পিকচার
তাই না দেখে রাজ্যজুড়ে, পড়েছে জয়জয়কার।
যন্ত্রখানা তুচ্ছ অতি, সহজ এবং সরল
দেখলে পরে যাবেই বোঝা, জলের মতো তরল।
মজবুতি এক ছাতার হাতায়, আস্ত চেয়ার জোড়া
যন্ত্র খাসা, বাকি শুধু, ওপর থেকে পড়া।
বায়ুর উর্দ্ধ চাপের চোটে, থাকবে ছাতা খেঁচে
দেহের ভারে নামবে তখন, ধীরে ধীরে নিচে।
সিঁড়ি ভাঙার কষ্ট ছাড়াই, নামতে যদি চাও
দেড়শো তলা ছাদ থেকে তাই, লাফটি দিয়ে দাও।
ভয় পেয়োনা, পড়বে না কো, ধপাস করে ধরায়
আস্তে আস্তে নামবে তুমি, ভেসে ভেসে হাওয়ায়।
নামতে পারো পাহাড় কিংবা, গাছের আগা হতে
মনের সুখে ছোলা বাদাম, মটর খেতে খেতে।
কাগজ পড়ে সবাই বলে, খবর বটে আজকে
গ'ড়ল নজির এই দুনিয়ায়, মেদিনীপুরের মানকে।
খুড়োর কল
সুকুমার রায়
কল করেছেন আজব রকম চণ্ডীদাসের খুড়ো
সবাই শুনে সাবাস্ বলে পাড়ার ছেলে বুড়ো।
খুড়োর যখন অল্প বয়স- বছর খানেক হবে
উঠ্ল কেঁদে ‘গুংগা’ বলে ভীষণ অট্টরবে।
আর সবাই ‘মামা’ ‘গাগা’ আবোল তাবোল বকে,
খুড়োর মুখে ‘গুংগা’ শুনে চম্কে গেল লোকে।
বল্লে সবাই, “এই ছেলেটা বাঁচলে পরে তবে,
বুদ্ধি জোরে এ সংসারেতে একটা কিছু হবে"।
সেই খুড়ো আজ কল করেছেন আপন বুদ্ধি বলে,
পাঁচ ঘণ্টার রাস্তা যাবে তিন ঘণ্টায় চলে।
দেখে এলাম কলটি অতি সহজ এবং সোজা,
ঘণ্টা পাঁচেক ঘাটলে পরে আপনি যাবে বোঝা।
বল্ব কি আর কলের ফিকির, বলতে না পাই ভাষা,
ঘাড়ের সঙ্গে যন্ত্র জুড়ে এক্কেবারে খাসা।
সামনে তাহার খাদ্য ঝোলে যার যে রকম রুচি
মণ্ডা মিঠাই চপ্ কাট্লেট্ খাজা কিংবা লুচি।
মন বলে তায় ‘খাব খাব’, মুখ চলে তায় খেতে,
মুখের সঙ্গে খাবার ছোটে পাল্লা দিয়ে মেতে।
এমনি ক’রে লোভের টানে খাবার পানে চেয়ে,
উৎসাহেতে হুঁস্ রবে না চল্বে কেবল ধেয়ে।
হেসে খেলে দু’দশ যোজন চলবে বিনা ক্লেশে,
খাবার গন্ধে পাগল হ’য়ে জিভের জলে ভেসে।
সবাই বলে সমস্বরে ছেলে জোয়ান বুড়ো,
0 Comments