সন্দীপ দত্ত ও সঞ্জীব ভট্টাচার্য-র অণুগল্প
চিত্র- সম্পা সেনাপতি
কাঁসার থালা।। সন্দীপ দত্ত
চাকরি না পাওয়া অসহনীয় দুঃখের জীবনটা আজ বাহান্ন বছরে এসে শেষ হল পলাশের। কাঁসার বড় থালায় ভাত খাওয়াটা স্বপ্নই রয়ে গেল। বলেছিল,"চাকরি পেলেই খাব। তখন ও থালায় খেলে আমায় মানাবে।"
পিণ্ডদানের সময় বাড়ির লোকেরা বাক্সবন্দি থালাটা বের করতে চাইলে পলাশের ষোলো বছরে পা দেওয়া একমাত্র ভাইঝি সজল চোখে বলল, "কাকাই চাকরি পায়নি। কাঁসার বড় থালায় খেতে দিলে খুব কষ্ট পাবে।"
ভয়
সঞ্জীব ভট্টাচার্য
দশ বারো বছরের দস্যি ছেলেটা সন্ধে নামার পর থেকেই কেমন গুটিয়ে গিয়েছে।তার শুধু মনে হচ্ছে পাশের বাড়ির সদ্য মরে যাওয়া দাদু যেন তাকে গিলে খেতে আসছে।রাত বাড়ার পর সে আর পারলো না।মাকে ফিসফিস করে বললো , 'আমার খুব ভয় করছে মা।'
-'কিছু ভয় নেই বাবা।এই লোহাটা রাখলাম। ঘুমিয়ে পড়।'
লোহাটা মুঠো করে মাকে জড়িয়ে ধরে সে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ল।
.........প্রায় চার দশক পরে সেই ঘুমটাকে বিটটু কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছে না।সাদা থান পরে আর উড়ুনি গায়ে খালি কম্বলে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।মাতৃহারা সে।তার সেই মা যাকে কেন্দ্র করে বিটটুর জগৎ ,যাকে বেশী দিন না দেখে থাকতে পারতো না সে।অথচ এই মুহূর্তে চাবিটাকে চেপে ধরে গোঙাতে থাকে বিটটু।ঘষ্টানো শব্দে বলে যায়,-না, না,না.....
🍂
0 Comments