তিনটি কবিতা
মলয় সরকার
দেবতা ও শিল্পী
একদল ভাঙল বহুকালের
বহু যত্নে মমতায় গড়া বুদ্ধমূর্তি,
আর একদল ভাঙল সুন্দরের প্রতিমূর্তি
এক সুন্দর মন্দির,
একদল ভাঙল সকলের প্রাণের প্রিয়
পদ্মফুলের মত, প্রাচীন এক মসজিদ,
আর একদল এক গীর্জাকে পরিবর্তন
করল মসজিদে-
সকলকে জিজ্ঞাসা করলাম,
কেন করছ এসব?
তারা বলল, বিধর্মীদের শাস্তি দিতে,
আমাদের ধর্মই সেরা-
তারই প্রতিষ্ঠা চাই।
অন্যেরা বিধর্মী।
ভিতরের দেবতা,
যিনি সব গুলোতেই রয়েছেন,
তিনি হাসলেন।
দূর থেকে লক্ষ্য করছিলেন
সুন্দরের এই ধ্বংসলীলা,
এক শান্ত সৃষ্টিশীল মানুষ।
তিনিই বড় মমতায় তৈরী করেছেন সব,
তিনি বড় অসহায়ের মত শুধু দেখলেন-
কারণ, তাঁর কিছুই করার নেই।
তিনি শিল্পী,
তিনি কাঁদলেন।
সান্ত্বনা
আমার ঘুমবাসরে এত কাঁটাতার কেন?
সব তমিস্রা পাষাণের বুকে
ঝরণার মত গলে যায় নি কেন?
আকাশের পাড়ের নীল সমুদ্র
তার বিস্তৃত ময়ুরপুচ্ছ নিয়ে
এগিয়ে আসে নি কেন-
আমি দেখছি,
আমার সমস্ত বাগান শুকিয়ে
মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে,
পিরামিডের সমস্ত পাথর
একটি একটি করে
খসে খসে পড়ে চূর্ণ হয়ে যাচ্ছে,
তুমি অসহায়ের কান্নায় চোখ ভেজাচ্ছ,
তবু কোন মহাশক্তি এসে
সান্ত্বনার বাণী শোনায় নি-
" ভয় কি রে পাগল
আমি তো আছি"।
🍂
মানুষ যখন হাঁটতে থাকে
মানুষ যখন হাঁটতে থাকে
তখন তার পিছু ফিরে না তাকানোই উচিত।
উচিত ডাইনে বামে না তাকানোরও-
হয়ত তাকে লক্ষ্য করছে কেউ-
দু একটা রূঢ় শব্দ কিংবা ঝোড়ো বাতাসও উড়ে আসতে পারে।
তবু তার না থেমে হাঁটতে থাকাই উচিত।
হয়ত হাঁটতে হাঁটতেই
তার মাথায় পড়বে স্বাতী নক্ষত্রের জল
আর সে পেয়ে যাবে সাত রাজার ধন।
কারণ শুধু আশে পাশের জীবজগত নয়
তাকে লক্ষ্য রাখছে আকাশের কোটি কোটি সজাগ তারারাও-
কাজেই—-
0 Comments