জ্বলদর্চি

তিনটি কবিতা/ মধুপর্ণা বসু

তিনটি কবিতা 
মধুপর্ণা বসু 

অগভীর 

আমি নদীর স্রোত মেলে দিলেই
জুড়ে নিতাম জীবন, কিন্তু
শ্যাওলা আর সবুজ পান্না প্রিয়
হয়ে উঠলে ছিঁড়ে যায় জলের
স্বচ্ছ সর, উঁকি দিয়ে যায়
তুচ্ছ ব্যাঙাচি আর কাঁচপোকার প্রাণ।
অন্ধ ভাবে বসে আছি অগভীর
ঘুম ঘুম রক্তাভা গোধুলীর পাশে
মন্ত্র রাখি অকাজের বুক জলে।
কোন সাড়া পাইনি পূরবী মেঘে,
শুধু ঘনিয়ে আসে অসময়ে
ঝড়ের খবর, ঈশানে আসে
ছেঁড়া পাতায় উড়ে গেছে
আমার দ্রোহকাল।


অপ্রেম কথা 

ভোর হওয়া দেখা হয় না কতো কাল
যারা গভীর ঘুমহীন রাত উজাগর দেয়,
তাদের ভোর নেই, নেই পাটভাঙা সকাল।
ক্যাম্পোজ ডেকে আনে শব্দহীন মৃত্যুর মত
অপেক্ষা শেষে রাত ক্লান্তিতে চোখ জুড়োয়
প্রয়োজন মিটে গেলে জীবন জঞ্জালই তো।
দুহাতে আগলেছি যত আদরের অভিমান
এখন শুধু তর্ক যুদ্ধে করেছো দেউলিয়া
কিছুই যাবেনা সাথে, থাকবেনা পিছুটান।
মূর্খতায় নষ্ট করেছো দুর্লভ যে আয়ুকাল
স্ফটিকের জীবন ,তারা খসে নিভে গেলে
স্মৃতি নিয়ে অন্ধকার ফিরবেনা সে সকাল।
🍂

জাগতিক

তোমাকে চিনি না বললে যদি এই নীল যন্ত্রণা 
পূর্ণ মর্যাদা পায়, তাহলে মিথ্যে অক্ষয় হোক।
জলের আল্পনা থরথর কেঁপে ভাষাহীন বিতৃষ্ণা 
ছুঁড়ে দিচ্ছে আমার আত্মাহীন অবয়বে, 
সেই হোক প্রকৃত পরিচয়...         অজানা এক নদী গভীর আঁধারে বুকের নীচে অস্থিরতা চেপে আজ নিশ্চুপ। 
সেও এক আভাসিত শাস্তি! কাকে দিয়ে গেলে? 
যে আজীবন উজাগর করলো তার অন্ধকার রাত-
নাকি সেও এক অলৌকিক ভ্রম,      সত্যি নয় কিছু। 
এখানে স্পন্দন নেই নদীর বুকে,  নিঃস্ব দুহাত!
বালি খুঁড়ে পেয়েছে শ্রান্তির অনড় অবহেলা। 
ওই এক বিন্দু নীলাভ আকাঙ্ক্ষা জ্বলে একা, 
ওরই সাথে বাঁধা পড়ে আছে জাগতিক সব প্রেম।

জ্বলদর্চি অ্যাপ ডাউনলোড করুন। 👇

Post a Comment

0 Comments