জ্বলদর্চি

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা ১৫৭

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা ১৫৭
চিত্রগ্রাহক - মৃণাল ঘোষ
সম্পাদকীয়,
আজ মানবাধিকার দিবস? সেটা কী? জানতে হলে দোলনচাঁপা আন্টির লেখাটা পড়ে নাও। আবার   ধারাবাহিক উপন্যাস লাচুঙের নেকড়ে নিয়ে হাজির শ্রীকান্ত আঙ্কেল। হবে না কেন?  উৎসব শেষ। লাচুঙের গল্পটা ভুলে ভুলে গেছ নাকি? চিন্তা নেই শ্রীকান্ত আঙ্কেল একটু একটু করে মনে করিয়ে দেবেন। আমাদের উৎসব শেষ হলেও বাসবদত্তা আন্টির লেখায় এখনো উৎসব চলছে। কারণ শীতেই তো শীতের দেশে উৎসব। আসরফী আন্টির লেখা চড়াই এর ছড়া শুনে ছোটোবেলায় উড়ে এসে জুড়ে বসেছে ঘুঘুটা। কে বলল?  মৃণাল আঙ্কেল। প্রতিবারের মতো অসীম আঙ্কেলের গল্প বলা চিঠিটা কেমন লাগলো জানিও কিন্তু....  মৌসুমী ঘোষ।
ধারাবাহিক উপন্যাস
লাচুঙের নেকড়ে
শ্রীকান্ত অধিকারী

পর্ব –ঊনত্রিশ 

সো দীপকবাবু ইধার আপ অফিসিয়ালি কি ননঅফিসিয়ালি? শক্ত চোয়ালের সেরগিল সাহেব কথাগুলো বেশ চিবিয়ে চিবিয়ে বলেন।
দীপক লক্ষ করে বুকে সাঁটানো ব্যাচে নাম রয়েছে ড.সেরিং নামগ্যাল গ্যাটসো। এস পি লাচুং,সিক্কিম। পরিষ্কার আগুনে পোড়া চেহেরা। পাহাড়ি এলাকার মানুষের মতই শরীরে গঠন পাথরের মতই। সহজে হার না মানার জেদ চোখে মুখে। তবু দীপক বলে, নো নো মিস্টার সেরগিল নো ইন্টারেস্ট অ্যাবাউট ইট স্টিল নাও। পুরো বিশ্বাস আছে আপনাদের কাজের প্রতি। তবে কিনা ওদের বাচ্চা তো।  আর এই ফ্যামিলির সঙ্গে আমার ক্লোস রিলেশন। 
কথা চলছিল। চা দিয়ে গেছে টেবিলে। 
স্যার ওদের কোনো খবর? রামসির মায়ের এই সব কথাবার্তা যেন মাথায় ঢোকে না। বেশ বিরক্তই হয়। পাশে রামসির বাবা রামসির মায়ের হাত চেপে বসে। বিষণ্ণ। 
বড় মামাকে সম্বোধন করে সেরগিল সাহেব বলেন, ইনভেস্টিগেশন জারি হ্যায়। তুরন্ত কুছ না কুছ বেরিয়ে আসবে। 
একটা কন্সটেবলকে ডাকলেন।  তারপর কাকে যেন আনতে বললেন। 
এসেও গেল এক জন সিক্কিমের লোক। ঠিক একেবারে বড়মামার সামনে।  
-ইনি মিষ্টার অমর লেপচা। নর্থ সিকিমে একটা এন জি ও–এম এল এ এস-এর প্রেসিডেন্ট। 
সেরগিল সাহেব চেয়ারটা একবার পোঁ করে ঘুরিয়ে বড়মামার দিকে সরে আসেন। তারপর খুব কাছে এসে বলেন নর্থ সিকিমের কন কন স্পট দেখা হ্যায় স্যার! ইন কো সাথ যায়িয়ে আপকো বহোত সারে দেখনে কি জাগা মিলেগা। মন খুস হো জায়েগা। দীপক বাবুকো ভি লে যায়িয়ে।
বড় মামার এবার মেজাজ হারানোর পালা। দু দিন ধরে ওদের দুটো লোক খুঁজে পাচ্ছে না, আর এখন ওদের নিয়ে মজা নেওয়া হচ্ছে। কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল ওদিক থেকে স্থির দৃষ্টিতে ঠাণ্ডা গলায় রামসির মা বলে, কাঁহা কাঁহা জানা হ্যায়? একবার বাতা দিজিয়ে। এক বাত সাফ হ্যায় আপ কুছ নেহি করেঙ্গে। 
-আপ ক্যায়া কর লেঙ্গে ডি আই জি সাহেব কো বাতা দেঙ্গে, কি হাম লোগ লাচুং পোলিশ স্টেশন কুছ নেহি কর রাহা হ্যায়! সেরগিল সাহেব মুচকি হেসে ওঠেন । 
ইতোমধ্যে রামসিঙের মা এখানের ডি আই জির সঙ্গে কথা বলেছে। ডি আই জি অবশ্য লাচুং পুলিস ষ্টেশনের এস পি ড.নামগাল গ্যাটসো মানে সেই সেরগিল সাহেবের ওপর ভরসা করতে। কিন্তু এই খবরটা সেরগিলের কাছে এলো কী করে! 
শুনিয়ে ম্যাডাম! হাম লোগ চাইল্ড কিলার অর ম্যান ইটার নেহি হুঁ। আপ কি দর্দ হাম সমঝ সকতে হ্যাঁয়। ইয়ে দেখিয়ে এক সাথ নৌ আদমি লা পাতা হ্যাঁয়। বলতে বলতে একজন স্টাফকে ডাকলেন। 
একটা ফাইল দিয়ে গেলেন। 
ফাইল খুলে দেখালেন এই দু দিনের আপডেট। নর্থের আপার হিল এরিয়া, ইস্টের পাহাড়ি লো ল্যান্ড, ওয়েস্টের ঘন জঙ্গল থেকেই যত কাণ্ড ঘটছে।    
রামসির বাবা বলে, কিন্তু স্যার আর কতদিন? ওরা … 
সেরগিল সাহেব রামসির বাবাকে বলতে দিলেন না,-শুনিয়ে ইয়ে বাত সাফ হ্যায়, ইস কে পিছে এক দো আদমি নেহি হ্যায়, পুরা গ্যাং হ্যায়।  সিক্কিম কা পলিটিক্যাল ইস্যু বান যায়েগা, সিক্কিম কা ল অ্যাণ্ড অর্ডার ভি হিল যায়ে গা। সায়েদ আমরা যা অনুমান লাগাচ্ছি তা যদি সত্যি হয়। এই জন্য ধীরে কাম নিতে হচ্ছে। তব আমি বলতে পারি উন লোগোকো কুছ নেহি হোগা। আমাদের কাছে রিপোর্ট আসত। খুন খারাবি নেহি হুয়া। 
বেশ কিছুক্ষণ ল্যাপটপের স্কিন স্ক্রল করার পর সেরগিল সাহেব বলেন ,-লেপচা জগত! জঙ্গু দেখা হ্যায়? জঙ্গু ইজ দ্যা ওনলি প্রোটেক্টেড এরিয়া অফ দ্যা লেপচা প্রিমিটিভ ট্রাইব। ওখনে ওদের ভ্যানিশিং ল্যাঙ্গুয়েজ, কালচার অ্যাণ্ড আদার্স রিলেটেড সব কুছ রেসট্রিক্টেড। নর্থ সিক্কিম কা বেষ্ট সাইট! ক্যায়া? বাতাইয়ে অমরজি। 
অমরজিকে অবশ্য তেমন স্বতঃস্ফূর্ত লাগল না। চোখে মুখে কীসের যেন ভয় ফুটে ওঠে। হিন্দি ইংরেজি আর লেপচা ভাষায় যা বলল তাতে বোঝা গেল যে, উনি একটা এন জি ও চালান বহু দিন থেকে, সেই ১৯৬০ সাল থেকে। প্রতিষ্ঠা করেছিল ওনার বাবা। পঁচাত্তর সালের পর আরো বেশি করে ওদের সদস্য বাড়ে। সিক্কিম সরকার অবশ্য কিছু ডোনেট করে। ওরা অন্য কিছু করে না, শুধু ওদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়। ওদের ওখানে আপার এবং লোয়ার অঞ্চলে যে তিরিশটা বহু পুরনো গাঁ আছে তাদের সব্বাই ওর এন জি ওর সঙ্গে যুক্ত। পাসিংদাম, কুসুং,টিংদম,সাক্যং আর পেন্টং এই পাঁচ এলাকার মানুষ নিজস্ব কাপড় তৈরি, পুরনো ঘর রক্ষা করা আর নতুন নতুন লেপচাদের পুরনো স্টাইলে ঘর বানানো। এর মধ্যে একটুখানি নাচ গান এই আর কি! এর মধ্যে ওদের দোষ কোথায়। এই সব তো রাজা শেষ চোগিয়াল থাকাকালীন করে এসেছে। কথাগুলো বলার পরও অমরজি অদ্ভুত ভয়ার্ত চোখে সেরগিল সাহেবের দিকে চেয়ে ছিল। মাঝে মাঝে বড় মামার দিকেও।  
হঠাৎ একটা ফোন পেয়ে অত্যন্ত বিচলিত হতে দেখা গেল সেরগিল সাহেবকে। বেশ কিছুক্ষণ অস্থিরভাবে কথা বললেন। কথা শেষ হলে তিনি অনেকক্ষণ চুপ থাকলেন। পরে চেয়ার থেকে উঠে বলেন, অর এক প্রবলেম! কেস বহত হি জটিল হো রাহা হ্যায়! ইন্ডিয়ান আর্মি ভি ইস বারে ইঙ্ক্যুয়ারি শুরু কিয়া! আভি এস ডি এম য়্যুংথাং সরাসরি খবর দিলেন। লেকিন উনারা তো রেসকিউ করনে ইঁহা রোড পর জুটে হুয়ে থে। হঠাৎ রামসির মায়ের দিকে তাকিয়ে বলেন, আপনার কী এখানেও কোনো জান-পয়ছান আছে নাকি! 
আমার ভাই আর ছেলের খোঁজ নিন আগে।-রামসির মা সেরগিলের চেম্বার থেকে বেরিয়ে যায়।-চলো গ্যাটসো। পেছন পেছন বাকীরাও।  
ওরা প্রায় পুলিস স্টেশনের বাইরে এসে গেছে, ঠিক তখনই সেরগিল সাহেব বলেন, যাওগে  ম্যাডাম ইয়ুংথাং, বডি পহচান নে কে লিয়ে? উধার এক নেকড়ে ঘুষ গ্যায়া। 

( ক্রমশ)

একটু দে ভাই ঠাঁই                            
আসরফী খাতুন  

চারটে চড়াই বললো সেদিন 
খাইনি খুকু আমরা ক'দিন 
তাই তো করে ঝগড়া,
মা আমাদের চলে গেছে
কাল সকালেই মগরা।

দিন কে দিন বাড়ছে কেবল
বড়ো বড়ো বাড়ি, 
থাকার ঠাঁই নেই কো তাই
মা গিয়েছে ছাড়ি।

মায়ের কোল বাবার  আদর
আমরাও তো চাই
ভাবরে তোরা সবার কথা
একটু দে ভাই ঠাঁই।

উৎসব মরশুমে আমেরিকাতে বাসবদত্তা কদম

পর্ব ৩ 
আমরা নীচে নেমে বাইরে বের হতেই দেখা হলো দাদার সঙ্গে। দেখা হতেই প্রথম কথা হলো, -দেখলি ফল কালার? এ দেশের ফলের ছবি আমি দেখি প্রত্যেকবার। দাদা পাঠায়। এবার নিজের চোখে।
তখন বুঝতে পারলাম, এতক্ষণ ধরে, এই সব রঙিন গাছ যা দেখছি তা হলো ফলের কালার(ইচ্ছাকৃত রঙ না বলে এ শব্দ ব্যবহার করলাম। এটাই ব্যবহৃত হয় গাছেদের এই রঙিন পাতার ক্ষেত্রে)।
চিরহরিৎ কিছু গাছ ছাড়া শীতের শুরুতে গাছ পাতা ঝরিয়ে দেয় নিজেকে বাঁচাতে, এ আমরা সবাই জানি। এরা ঝরার আগে নিজেদের রঙিন করে। আমাদের দেশেও ঝরার আগে পাতার রঙ পালটায়, তবে তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হলুদ ঘেঁসা। এমন বাহারি রঙ সমতলে আমরা দেখতে পাই না।
এখানেও সেসময় পাতা ঝরায়। সেটাই স্বাভাবিক। সুন্দরটা হলো, সে সময় গাছেরা ধীরে ধীরে তার পাতাদের রাঙাতে থাকে। ঠিক যেন গাছে গাছে দোল লেগেছে। মাইলের পর মাইল এভাবেই সাজতে থাকে। পুরো রঙ হলেই ঝরে পড়বে একটা জোর হাওয়ায়। আবার নতুন পাতা আসবে শীতের শেষে। 
ঠিক যেন চলে যাওয়ার আগে বলে যাওয়া, ভুলো না যেন, আমরা আবার আসবো কিন্তু।
দাদা অনেক বছর ধরে এদেশে থাকে। এয়ারপোর্ট থেকে ওদের বাড়ি যেতে লাগবে শুনলাম ঘন্টাখানেক। গাড়ি চলতে শুরু করতেই দেখি সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে রঙিন গাছেরা। রাস্তার দুদিকেই। আমি একবার এদিক দেখি, একবার ওদিক। নিজে ঠিক করতে পারছি না কোনদিকটা বেশি সুন্দর। 
দাদা বললো – এত অস্থির হোস না। কাল সকালে আরো অনেক রঙ দেখবি গাছেদের।
বাড়িতে পৌঁছালাম। ঘরে ঢুকে দেখি, ঘরের মধ্যে লঙ্কা গাছ ভর্তি লঙ্কা। আরেকটা গাছে ভর্তি বেগুন। দাদার গাছ লাগানোর শখের কথা জানি কিন্তু এমন বন্ধ ঘরে!  
ঘরের মধ্যে এমন গাছে ফল হতে দেখিনি আমরা। শুনলাম ফ্রস্ট এর থেকে বাঁচাতে এসময় গাছ ঘরে নিয়ে আসতে হয়। নাহলে গাছ মরে যাবে। এরপর আসবে বরফ। হাওয়ায় ভেসে আসে তারার মত সুন্দর হয়ে কিন্তু এই গাছগুলো সব মরে যাবে ঠান্ডায় তাই বছরের এই সময় এরা ঘরেই থাকে। জানলা দিয়ে যেটুকু আলো আসে আর বিদ্যুতের আলোর ভরসায়।
আমাদের দেশে শীতে ফুলের চাষ, সবজির চাষ হয় দেখেছি অত্যন্ত ভালো। ডালিয়া চন্দ্রমল্লিকা আরো কত যে ফুল ফোটে। কত রকমের সবজি হয় কিন্তু এক দেশ থেকে অন্য দেশে আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে কতকিছু বদলে যায়।
আড্ডা চলছে। কিন্তু পরদিন সকাল ছটায় বেরিয়ে পড়তে হবে আমাদের, ভেবে একটু টেনশনও হচ্ছে। আমরা দুজনেই লেট লতিফ। এলার্ম লাগিয়ে ঘুমাতে হবে। নাহলে উঠবো কোন বেলায় কোনো ঠিক নেই। এমনিতেও দুদিন ধরে ভূতেদের যা উপদ্রব গেল। নিজেদের বোকামির গল্প বললাম। সব থেকে বেশি হাসল ভাইপো। স্বাভাবিক তাই। ও এদেশেই বড় হচ্ছে। এগুলো ওর কাছে মজার ঘটনা। গল্প শুনলাম ওরাও কি কি কান্ড করে তার। 
নায়াগ্রা, চিত্রগ্রাহক - বাসবদত্তা

যে জায়গায় দাদাদের বাড়ি সে জায়গার নাম কিং অব প্রাসিয়া। ফিলাডেলফিয়াকে আমেরিকানরা আদর করে বলে ফিলি। এই ফিলাডেলফিয়া একসময় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীও ছিল। তবে সে অনেকদিন আগের কথা। তারপর সে রাজধানী ওয়াশিংটন ডি সি তে চলে গেলেও ফিলাডেলফিয়া এখনো আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর।
আমরা বেরিয়ে পড়লাম ঠিক ছটায়। খুব সকালে উঠে দেখলাম, দাদা বৌদি উঠে পড়েছে অনেকক্ষণ আগেই। 
এটা দেখেছি ওদেশে লোকজন বেশ সকালে ওঠে। অফিসেও চলে যায় সকলেই বেশ তাড়াতাড়ি। ধরো আটটার ভিতরে। 
যেখান থেকে আমরা রওনা হলাম, সেখান থেকে নায়েগ্রার শহর বাফেলোর দূরত্ব প্রায় সাড়ে চারশো কিলোমিটার। শুনলাম এতটা রাস্তা নাকি মাত্র কয়েক ঘন্টায় আমরা পেরিয়ে যাবো। নায়েগ্রা দেখবো সেদিন দুপুরেই। ভূগোল বইয়ের নায়েগ্রাকে সামনে থেকে দেখবো ভেবেই একটা উত্তেজনা হচ্ছে। 
আমেরিকায় গাড়ি চলে খুব দ্রুত গতিতে। পাড়ার ভিতরের রাস্তা ছাড়া প্রায় সব রাস্তায়’ই গাড়ির গতি বেঁধে দেওয়া আছে। তবে ৫৬ কিলোমিটার(৩৫ মাইল)/ঘন্টার কম কোথাও দেখেছি বলে মনে পড়ছে না। ওদেশে দুরত্ব মাইলে মাপা হয়। 
আমাদের গাড়িও ছুটলো হু হু। বৌদি রাত জেগে বেশ কিছু খাবার বানিয়ে গাড়িতে ভরে নিল। 
 
আমেরিকার হাইওয়ে পুলিশ খুব কড়া। বিভিন্ন জায়গায় তাদের রাডার লাগানো আছে। সেই রাডারে গাড়ির গতি ধরা পড়লে এবং কেউ অতিরিক্ত স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে জানতে পারলেই শাস্তি হয়। প্রচুর ফাইন। তাই দূর থেকে পুলিশ দেখলেই সবাই একটু আস্তে গাড়ি চালায়।
যে রাস্তা দিয়ে আমরা যাচ্ছি, তার একপাশে খানিকটা উঁচু জমিতে মাইলের পর মাইল রঙিন গাছ মাথা দোলাচ্ছে। অন্যদিকে ফিংগার লেক। সত্যিই সরু সরু অনেকগুলো আঙুলের মতো আকৃতির লেক একটা এসে আরেকটার সঙ্গে মিশেছে। শুনলাম এসব লেক তৈরী হয়েছে সেই আইস এজে। সিনেমার কল্যাণে আইস এজ আমাদের সবার পরিচিত। ক্যানাডেগুয়া, কাউগা, হেমলক, ওয়েস্কো, সেনেকা এরকম কত যে নাম তাদের। 
রাস্তা চলছে আর চলছে ফিংগার লেক। সঙ্গে আছে রঙিন সব গাছেরা। তারাও চলছে আমাদের সঙ্গে নায়েগ্রা। শুনলাম এসব গাছ শিকড় বিস্তৃত হয়ে একটার থেকে আরেকটা জন্ম নেয়। আর এর সঙ্গেই আছে মাঝে মাঝেই পাখির ঝাঁক। হাজারে হাজারে পাখি এক একটা ঝাঁকে। গাড়ির পাশে পাশে, একটু উঁচুতে, নীচুতে চলল তারা। তারপর কোথায় হারিয়ে যায়। 
মন খারাপ হতেই দেখি আবার একটা দল। কখনো তারা একটু নামে। কখনো একটু ওঠে। গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দেয়। ঘুরে ফিরে যেন আকাশে আলপনা আঁকছে। 
এ রাস্তায় যেতে যেতে রেস্ট এরিয়া পড়ে খানিকক্ষণ পর পর। সেখানে চা কফি কেক  বিস্কুটের দোকান, বসার জায়গা আর বাথরুম সবই আছে। কিন্তু রাস্তা থেকে খানিকটা দূরে। একেবারে রাস্তার ওপরে হলে অন্য গাড়ি দাঁড়িয়ে যাবে, নাহলে এক্সিডেন্ট হবে। গাড়িগুলো চলে ভয়ানক স্পীডে। 
রেস্ট এরিয়ার আশেপাশে আপেল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে একজন দুজন। আমাদের দেশের ফিরিওয়ালাদের মতই বলা যায়। শুনলাম এদের আপেল বাগান আছে। সেই আপেল খানিকটা বিক্রি করে এরা এভাবে হাইওয়েতে দাঁড়িয়ে। 
আমাদের সঙ্গে অনেক খাবার তবুও খানিকটা কেনা হলো। গাছের সদ্য পাড়া আপেল বলে কথা। 
বার দুয়েক থেমে বাফেলো শহরে যখন পৌঁছালাম তখন বেলা সাড়ে এগারোটা। দাদা দৌড় দিল টিকিট কাটতে। আমরা তখন তার গুম গুম আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি।
দাদা ফিরে এলো টিকিট নিয়ে। হাতে সবার জন্য রেইনকোট। নীল রঙের। 
-রেইন কোট! কেন? 
দাদা বললো, -এগুলো পরে নে। 
-একি! বৃষ্টি বাদলা নেই খামখা রেইনকোট পরবো কেন?
-পর। পরলাম।
ওমা! লাইনে দাঁড়িয়ে দেখি সবাই নীলবর্ণ হয়েই দাঁড়িয়েছে।
(ক্রমশ)
স্মরণীয় দিবস
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস 
(১০ই  ডিসেম্বর)
কলমে - দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে 

মানব অধিকার হলো, মানুষের আচরণের নির্দিষ্ট মানদন্ডের জন্য নৈতিক নীতি বা নিয়ম। আরো সরল ভাবে বলা যায় যে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এবং আর্থিক অবস্থাভেদে বিশ্বের সব দেশের সব মানুষের সব সুবিধা পাওয়ার অধিকার কে মানবাধিকার বলে।

জাতিসংঘের নির্দেশনায় বিশ্বের সকল দেশে প্রতিবছর ডিসেম্বরের ১০ তারিখটিকে  মানবাধিকার দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
১৯৪৮ সালের ডিসেম্বরের১০ তারিখে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রথম 'মানবিক অধিকার দিবস' পালন করা হয়। এছাড়াও বলতে পারি সার্বজনীন মানবাধিকার সংক্রান্ত ঘোষণা কে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই দশ তারিখটি নির্ধারিত করা হয়। সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে নতুন রূপে গঠিত জাতিসংঘের এক বিরাট অর্জন বলা যেতে পারে।
মানবাধিকার দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে বলতে গেলে বলা যায় যে,১৯৫০ সালের ৪ই ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৩১৭তম পূর্ণাঙ্গ সভায় মানবাধিকার দিবসের আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠা ঘটে। সাধারণ পরিষদ রেজোলিউশন ৪২৩(V) ঘোষণা করে এবং সমস্ত সদস্য রাষ্ট্র ও আগ্রহী সংস্থাগুলিকে 'মানবাধিকার দিবস'পালন করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়।
এই দিবসটি এতোই জনপ্রিয়তা অর্জন করে যে, ১৯৫২ সালে জাতিসংঘের ডাক প্রশাসন কর্তৃক জারি করা স্মারক মানবাধিকার দিবস স্ট্যাম্পটি প্রায় ২০০০,০০০ অগ্রিম আদেশ পেয়েছিল।
যখন সাধারণ পরিষদে ঘোষণাপত্র টি গৃহীত হয় তখন ৪৮ টি রাষ্ট্রের পক্ষে মাত্র ৮টি রাষ্ট্র  বিরত থাকে। মানবাধিকার কে পৃথিবীর 'সমস্ত মানুষ এবং জাতির জন্য অর্জনের একটি সাধারণ মানদন্ড' হিসেবে ঘোষণা করা হয়। দিবস টি পালনের মাধ্যমে প্রতি ব্যক্তি এবং সমাজের প্রগতিশীল পদক্ষেপ এর মাধ্যমে প্রচেষ্টা করা উচিত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক তাদের সার্বজনীন এবং কার্যকর স্বীকৃতি পালন ও সুরক্ষিত করা।এই দিবসটি বাধ্যতার চেয়েও বেশি পরামর্শমূলক হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল।

মানবাধিকার দিবস ঘোষণা পত্রটি যদিও রাজনৈতিক, নাগরিক, অর্থনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের বিস্তৃত পরিসরের সাথে একটি বাধ্যতামূলক দলিল নয়। এই ঘোষণাটি ষাটটিরও বেশি মানবাধিকার উপকরণকে অনুপ্রাণীত করেছে যা একসাথে মানবাধিকারের একটি আন্তর্জাতিক মান গঠন করে।

প্রতিবছর ১০ই ডিসেম্বর মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে সভা-সমাবেশ এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ে অনুষ্ঠান এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের তথ্যচিত্র কিংবা চলচ্চিত্র প্রদর্শনী করা হয়ে থাকে। ঐতিহ্যগতভাবে এই দিনটিকে কেন্দ্র করে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর জাতিসংঘের 'মানব অধিকার  ক্ষেত্র পুরস্কার' প্রদান করা হয়। এছাড়াও 'নোবেল শান্তি পুরস্কার' এদিনই প্রদান করা হয়।

প্রত্যেক দিবসের ক্ষেত্রে একটি করে প্রতিপাদ্য বিষয় থাকে ঠিক সেই রকম ২০০৬সালের মানবাধিকার দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, 'দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে অবস্থান'।
পাঠ প্রতিক্রিয়া
(ছোটোবেলা১৫৬ পড়ে অসীম হালদার যা লিখলেন) 

জগদীশ শর্মার 'পেটুক' ছড়াই হোক বা টুংকুরিদের ইয়াবড়া পাইপের মধ্যে বসে গল্প করাই হোক, খেলা করতে করতে খুশি আর আনন্দে থাকতে আমরা সবাই ভালবাসি। সেই সময়টায় ফিরে যেতে মন খুব চায়ই তো। সেই ভাল লাগার মজাটা যতখানি ছেলেবেলায় জমিয়ে রসিয়ে উপভোগ করা যায়, অতখানি বড়বেলায় করা হয়ে ওঠে না অনেক সময়েই। আর তার সাথে যদি শীতকালের ফুরফুরে শিরশিরে হাওয়া বয়ে যায়, কাঁপুনি দিয়ে ওঠে সারা শরীরে, তাহলে তো কথাই নেই। রইলো পড়ে বইপত্তর ঘরে, দিলাম পাড়ি দূর দেশের পারে। সম্পাদকীয় সেই কথাটাই বলতে চেয়েছে। আরে আমারও তো ইচ্ছে করছে একটু কচিকাঁচা সাজতে আর তাই বেরিয়ে পড়লাম আবার জ্বলদর্চির হাত ধরে ভ্রমণ আর কল্পবিজ্ঞানের আশ্রয়ে গড়ে তোলা মুক্তাঙ্গনে। বহুদিন পরে একটু সময় পেতেই আবার তোমাদের কাছে। 

মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি আর শিরশিরে হাওয়া দিয়ে প্রকৃতি রাণী আমাদের বলছে, 'আমি শীতকাল এখন তোমাদের দ্বারে'। মেঘে ঢাকা এমন আলসে দুপুরে ইচ্ছে করে একটা বালাপোষকে সঙ্গী করতে। হাতদুটো যতখানি জড়িয়ে আষ্টেপৃষ্টে চেপে ধরা যায়, মনে হয় সে বন্ধন যেন আর আলগা না হয়। এ সময় যে একটু বেরু বেরু ঘুরতে ভাল লাগে তা তো বেশ বোঝাই যাচ্ছে। আর বেরানোর কথায় বাসবদত্তা দিদি আমাদের নিয়ে চললেন অ্যামেরিকা। সেটা ছিল পুজোর উৎসবের দিনে ২০১৮ সালে। পড়তে গিয়ে তোমাদের মত আমিও জেনে নিলাম হ্যালোউইনের কথা, সোলস ডে পালনের কথা। হঠাৎ বিশাল কুমড়োর কথা পড়ে সত্যিই অদ্ভুত লাগলো। সেইসঙ্গে অদ্ভুতুড়ে পোশাকের কথা। ছবিও দেখলাম।মজাদার ঘটনা হলো তাঁদের পাশের বাড়ির জিমদের কাণ্ডটা পড়ে। কি ভয়টাই না পেয়েছিলেন। ছোট্ট বন্ধুরা, তোমাদের যে ভাল লেগে গেছে, বুঝতেই পারছি। কিন্তু এটুকু দেখে তো থেমে গেলে হবে না। ওদিকে বরফ হওয়ার আগেই পৌঁছে যেতে হবে ফিলাডেলফিয়ায় নায়াগ্রা জলপ্রপাত দেখতে। কিন্তু প্লেনে থেকে দেখা হলুদ লাল খয়েরী বেগুনী রঙ কি তবে গাছের পাতাদের! তাহলে সবুজ রঙের পাতারা কোথায় গেল! আমাদের ধৈর্য্য ধরে থাকতে হবে আগামী রবিবার অব্দি। একটা কেমন টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে আমরা এখন নায়াগ্রা জলপ্রপাত দেখতে প্লেন থেকে নামছি। এসব তো আর আমাদের এলাকার মতো নয় যে ঠাকুর দেখবো বলে বেরিয়ে বিশাল লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। কাশফুলদের পেরিয়ে আমরা গল্পের হাত ধরে এখন বিদেশ বিভুঁইএর পথে। কেউ পিছন থেকে ঠেলা দিচ্ছে না বা দড়ি টপকে যাবার দরকার নেই। এ এক নতুন অভিজ্ঞতার কাহিনী। 

কচি বেলায় যত না দুষ্টুমি, তার চাইতে বেশি ছিল খেলাধুলা। প্যাঁকাটি চেহারার ছবিটা দেখলে মনে হয়, মুখ দেখে কিন্তু সত্যিই মনে হয় না কত কিছু করেছি। ঘুরে বেরিয়েছি মাঠঘাট, চড়েছি গাছগাছালি। সে ছিল জীবনের এক জীবন্ত অধ্যায়। তবে পাঁচ ছয় বছরের অপুর কাছে হার মানতে হয়। কি অসম্ভব রকমের সম্পর্ক তৈরী হবার মতো কাহিনী তুলে ধরেছেন জয়ন্তী দিদি। গাছেদের সঙ্গে এমন সখ্যতা মনে করায় মানুষের সাথে বনের প্রাণীদের সংযোগের কথা। মানুষ আর প্রকৃতি কেমন একসাথে নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়ে, তা এ গল্পটি না পড়লে বোঝা যাবে না। ছোট্ট অপুর গোটা হৃদয়জুড়ে তাঁর সেলামপুর গ্রামের বাড়ির বাঁশগাছ, গাছের সবুজ পাতা। ওদের সাথে কি কথা হয় আমাদের কানে আসে না। বুঝতে পারা তো দুঃসাধ্যই। জোড়াসাঁকোর পাশের আবাসনে কাটালেও মন পড়ে থাকে সেই গ্রামের তরুছায়াতলে। এ এক অপূর্ব বন্ধন মানুষ আর সবুজ প্রকৃতির সাথে। পঁচিশে বৈশাখ যেখানে রবি-বন্দনায় ব্যস্ত জনতা জোড়াসাঁকোতে ভীড় করেছে, সেখানে ছোট্ট অপু খুঁজে নিয়েছে তার গ্রামের বাড়ির বাঁশগাছটিকে। পল্লীজীবনের এমন সরল সহজ ছবি আমাদের এক নিমেষে নিয়ে চলে সেই সেলামপুরের গাঁয়ে। গল্পকার এখানে এক সার্থক গল্প রচনা করলেন কিশোর কিশোরীদের জন্য। কিন্তু না, এ গল্প আমাদের মতো পাঠকের মনও জয় করে নিলেন সুন্দর একটি কল্পনার আশ্রয়ে। মনে পড়ে গেল আমার নিজের গ্রাম শিবগঞ্জের মাঠে। গোটা মাঠ যখন গরমে লঙ্কা গাছে ভরে, চারিদিকে কেমন লাল আর সবুজের বন্ধন। সেই দিন আজ কোথায়!

ভ্রমণ নিয়ে কথা যখন হচ্ছিল, ঠিক তখনই এমন একটা মজাদার কাহিনীর সম্মুখীন হলাম যে ধারাবাহিক গল্পটির কেবলমাত্র শেষ পর্বটুকুতে থেমে থাকতে পারি নি। এটা বাসবদত্তাদির ধারাবাহিক গল্পের ক্ষেত্রেও অনুরূপ হয়েছে। হৃদয়ের মণিকোঠায় জায়গা নিয়ে নেওয়া বিশিষ্ট গল্পকার সুকুমার রুজের 'ছোটকাকুর কাণ্ডকারখানা' রীতিমতো পাঠকসমাজকে চুম্বকের মতো টানতে বাধ্য। সাত পর্বে ধারাবাহিক গল্পটা পড়ার জন্য আমাকে ছুটে যেতে হয়েছে একেবারে এর উৎসপথে। ঘটনাগুলো এমনভাবে তিতলি, সুমন, ছোটকাকু, পল হ্যারী, স্যামুয়েল জনসন ও আইভন ডিক্সন চরিত্রগুলোর মধ্য দিয়ে ঘটিয়েছেন তিনি, এতরকমের বৈচিত্র্য দেখিয়েছেন, এক কথায় অনবদ্য। গল্প তো শুধু কল্পনা দিয়ে নয়, বাস্তবের অনেক ছবিকেই তুলে ধরে, সমস্যার কথা বলে, বার্তা দেয় সমাজকে শিক্ষা দেওয়ার। পরিবেশ-বিজ্ঞান সম্বন্ধে সচেতনতা রক্ষা, বইপত্র পড়া ও ডায়েরী লেখার প্রয়োজনীয়তা ইত্যাদি কত কিছু যে এই গল্পে তুলে ধরলেন তা ছোটদের পাশে বড়দের কাছেও আদরনীয় হতে বাধ্য। রয়েছে মাটির তলা থেকে প্রাপ্ত অদ্ভুত আকারের চিঠির লেখা উদ্ধার করার রোমাঞ্চকর কাহিনী, রয়েছে ব্যাথিস্কোপের কাহিনী। ছোটকাকুঅন্ত প্রাণ দুটি কিশোর কিশোরীদের মাধ্যমে উপহার দিলেন মজাদার একটি গল্প। সমুদ্রের তলায় তিনি যে রত্নের কথা উল্লেখ করেছেন, এ গল্প যেন তেমনই এক রত্ন। বিজ্ঞানের কত দিশা যে তিনি দেখালেন গল্পে, হেলিপ্লেন তার একটি সাক্ষাৎ উদাহরণ।

মাথার মধ্যে ঘুরে বেরাচ্ছে অপুর কথা, হ্যালোউইনের কথা, ওজনস্তরের বিপন্নতার কথা। আর অবশ্যই ভাবছি গরমে টিকতে না পেরে থাকতে দৌড়ে এসিতে আরাম পাবার কথা, পরিবেশ বিজ্ঞানীদের চেতাবনির কথা। শুধু একটা কথা প্রমাণিত, আমরা স্বার্থপর হবার চরম সীমায় পৌঁছে গেছি। পরিবেশের বন্ধু না হতে পেরে নিজেরা কখন শত্রু হয়ে গেলাম, টেরই পেলাম না, জানো! সত্যি তো, আমরা কি পারি না নিজেরা একটু ত্যাগ স্বীকার করে পরিবেশকে আর একটু বাসযোগ্য করে তুলতে, যাতে আগামী প্রজন্ম একটু শান্তিতে জীবন কাটাতে পারে! মৌসুমীদির এই সাপ্তাহিক উদ্যোগ কতখানি যে সমাজের পক্ষে মঙ্গলজনক সেটাও যেন বলতে ইচ্ছে করছে, যেখানে এমন গুণী গল্পকারেরা আর কবিরা তুলে আনলেন এমন সব সৃষ্টি যা মনোরঞ্জনের পাশাপাশি শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে সমাজকেও। এ উদ্যোগকে স্বাগত না জানিয়ে পারি না। ছোট্ট বন্ধুরা, তোমরাও আগামীদিনের বিজ্ঞানী হবার পথে এগিয়ে চলো সুমনের মতো, অপুর মতো প্রকৃতির বন্ধু হয়ে ভালবেসে গড়ে তোল সবুজের সাম্রাজ্য। তবেই পৃথিবী হবে নির্মল এবং সুন্দর। সামনের সংখ্যায় তৈরী হয়ে নাও তুলি, রং, কলম নিয়ে; সাজিয়ে তোল নতুন সাম্রাজ্য জ্বলদর্চির আঙিনায়। সবাই রাজি তো!

Post a Comment

0 Comments