জ্বলদর্চি

বিশিষ্ট সাংবাদিক জয়ন্ত ঘোষালের সাক্ষাৎকার নিলেন ভাস্করব্রত পতি

বিশিষ্ট সাংবাদিক জয়ন্ত ঘোষালের সাক্ষাৎকার নিলেন ভাস্করব্রত পতি 


ভাস্করব্রত পতি -- নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের কঠিন নিয়মকানুনে পড়াশোনা করেছেন। এই শৃঙ্খলা কিভাবে ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে আপনার জীবনে প্রভাব ফেলেছে? 

জয়ন্ত ঘোষাল -- আমার মনে হয় এই মুহূর্তে এই শৃঙ্খলা নিয়মানুবর্তিতার প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি বেশি করে আমি অনুভব করছি। প্রত্যেক মানুষের জীবনে এগুলোর অনুশীলনের প্রয়োজন আছে। আগে হোস্টেলে অভিভাবক না থাকায় আমাদের স্বাধীনতা বেশি ছিল। এখন বরং যে অভিভাবকত্ব দেখি, তাতে ছেলে মেয়েদের হাত পা বাঁধা। একটা মুক্ত আকাশ দেখে বড় হয়েছি। বিরাট প্রতিযোগিতামূলক সমাজে থেকে বড় হইনি। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, 'অনাদর একটা মস্ত বড় স্বাধীনতা'। অভিভাবকদের এই অতি আদর না থাকায় আমরা বেশি স্বাধীন ছিলাম। আমি মনে করি যে কোনও মানুষের বড় হওয়ার পেছনে শৃঙ্খলার প্রয়োজন আছে। 

ভাস্করব্রত -- সাংবাদিকতাকে পেশা ও নেশা করার পরিকল্পনা মাথায় কিভাবে এলো? 

জয়ন্ত -- আমি সাংবাদিক হব বলে কখনও ভাবিনি। আমি জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে এম বি বি এস পড়েছিলাম। কিন্তু রক্ত দেখতে ভয় পেতাম। এখনও আঙুলে ছুঁচ ফুটিয়ে রক্ত বের করতে ভয় পাই। মাথা ঘুরে যেত রক্ত দেখে। আমার যেন সবসময় মনে হত, আমি ভুল ক্যারিয়ার বাচছি। দেড় বছরের মধ্যে ডাক্তারি পড়া ছেড়ে পলিটিক্যাল সায়েন্স নিয়ে ভর্তি হলাম। ইচ্ছে ছিল অধ্যাপক হয়ে কলেজে পড়াবো। আমি বামপন্থী রাজনীতিতে আগ্রহী ছিলাম। কালচারাল ফ্রন্টে যুক্ত হয়ে গণসঙ্গীতের মাধ্যমে দেশে বিপ্লব আনবো ভাবলাম। এই সময়েই রাজনীতির প্রতি বেশি করে জড়িয়ে পড়ি। আর সাংবাদিকতা সুলভ লেখা চলে এলো সেই রাজনীতির মাধ্যমে। আমি ভারতের গোল্ডেন টাইম অব জার্নালিজম উপভোগ করেছি। তাই চাকরি নিয়ে আমার কোনও অনুতাপ নেই। 

ভাস্করব্রত -- সাংবাদিকতার ঘেরাটোপে থেকে বহু সেলিব্রেটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে সামনে থেকে দেখেছেন, বুঝেছেন, ঠাওর করেছেন। আপনার লেখায় তাঁদের প্রচ্ছন্ন বা প্রকট প্রভাব কখনও পড়েছে? 

জয়ন্ত -- আমার নিজস্ব মতামত হচ্ছে HUMAN BEING IS UNIQUE। দুটো যমজ সন্তানও একরকম হয় না। ফলে রাজনৈতিক নেতারাও প্রত্যেকে আলাদা। বাপ বেটাতেও আলাদা চরিত্র। মুলায়ম ও অখিলেশ এক নয়। আমি বর্তমান ও আনন্দবাজার পত্রিকায় সাংবাদিকতার সুবাদে কলকাতা ও দিল্লি দু জায়গার নেতাদেরই দেখেছি। সব দলের নেতাদের সঙ্গে মিশেছি কাজের প্রয়োজনে ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে। কিন্তু আমার নিজস্ব মতামত হল -- সাংবাদিকের কাজ হল জার্সি গায়ে দিয়ে সাংবাদিকতা করা নয়। সে যেমনটা দেখবে, তেমনটাই লিখবে। কিন্তু কোনও দলের ধ্বজাধারী হয়ে লিখবে না। এই না হওয়ার চেষ্টা সারাজীবন ধরে করেছি। আমি মোহন ভাগবত কিংবা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় - উভয়কে নিয়েই বই লিখেছি। আমার কোনো ছুৎমার্গ নেই। কেউই আলাদা করে প্রভাব ফেলতে পারেনি কাগজের ওপর আমার কলমের আঁচড়ে। 

ভাস্করব্রত -- বর্তমান ও আনন্দবাজার পত্রিকায় কাজ করার সূত্রে বহু স্বনামধন্য ব্যক্তির সংস্পর্শ পেয়েছেন। সে অভিজ্ঞতা শুনতে চাই। 

জয়ন্ত -- বিভিন্ন নেতার স্টাইল অব ফাংশানিং আলাদা। একটা উদাহরণ দিই। আমি ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী ও মনমোহন সিংয়ের সাথে মরিশাস গিয়েছিলাম। সন্ধ্যায় বাজপেয়ী তাঁর মেয়েকে নিয়ে বিচে এসে দেদার ঘুরতেন। মিশতেন আমাদের সঙ্গে। আর মনমোহন সিং কিন্তু কাজের শেষেও কোনও দিন বাইরে বেরোতেন না। পরে বিমানে জিজ্ঞেস করেছিলাম, 'আপনি তো কাজের শেষে বেরোলেন না'! তখন তিনি বললেন, 'এই তিনদিন আমি দুটি বই পড়া শেষ করেছি। একটা মরিশাসের ইতিহাস, আর অন্যটা মরিশাসের অর্থনীতি'। এই দুটো গল্পে কিন্তু আলাদা আলাদা অভিজ্ঞতা আমার। 

ভাস্করব্রত -- বহু ভারতীয় রাজনীতিবিদের উত্থান পতন সরেজমিনে দেখেছেন। মনে দাগ কেটে যাওয়া কিছু ঘটনার কথা যদি বলেন! 

জয়ন্ত -- রাজনীতিতে উত্থান পতন থাকবেই। একসময় দুহাতে মাথা কাটছে এমন নেতাকে একসময় জেলের ঘানি টানতে হয়েছে। তাঁর বাড়িতে কেউ পরবর্তীতে পা পর্যন্ত মাড়ায় না। উপেক্ষিত হতে হয়েছে। একসময় বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কত পাইক বরকন্দাজ তাঁর আশেপাশে ছিল। কিন্তু যখন শেষ দিনগুলোতে কিডনির ডায়ালিসিস হচ্ছিল অ্যাপোলোতে, তখন তাঁর পাশে কেউ ছিল না। একা বসে বসে ছবি আঁকতেন ও কবিতা লিখতেন। কবিতার বইও আছে তাঁর। শেষ সময়ে সনিয়া গান্ধীর কাছে গিয়ে বোফর্স নিয়ে ক্ষমাও চেয়েছেন। তবে উল্টো ঘটনাও ঘটেছে রাজনীতিতে। নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার খতম হয়ে গেছে ভেবে বাক্স প্যাঁটরা গুছিয়ে হায়দরাবাদে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পামুলাপতি ভেঙ্কট নরসীমা রাও। হঠাৎ রাজীব গান্ধীর মৃত্যু হল। সনিয়াও রাজনীতিতে এলেন না। তখন নরসীমা রাও প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন। ঘুরে গেল ভাগ্যের চাকা। 

ভাস্করব্রত -- সাংবাদিকতা করার পাশাপাশি বেশ কিছু বই লিখেছেন সাংবাদিকের চোখ দিয়ে। এর বাইরে বেরিয়ে মৌলিক সৃজনমূলক লেখার কথা কখনো ভেবেছেন? আগামীদিনে এমন কোনও পরিকল্পনা আছে আপনার? 

জয়ন্ত -- এটা আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আমি ক্রমশ অতীতচারী হয়ে উঠছি। পৃথিবী জুড়ে মাস মিডিয়ায় সঙ্কট আসছে। আমরা গ্রাউন্ড জিরোতে সাংবাদিকতা করেছি। এখন আমি নন ফিকশন লেখার দিকে ঝুঁকছি। উপন্যাস লেখার অতৃপ্ত বাসনা রয়েছে। আধ্যাত্মিকতা ও যৌনতা -- দুই বিষয়েই সমান আগ্রহ রয়েছে। দুটো নিয়েই পড়াশোনা করতে ভালো লাগে। তবে কাল আমি সাংবাদিক ছিলাম, আর আজ আমি সাহিত্যিক হয়ে গেলাম -- এটা সম্ভব নয়। আমি এখন নিজেকে ট্রেনি লেখক হিসেবে ভাবছি। যাঁরা বহুদিন ধরে সাহিত্যসেবা করছেন, তাঁদের লেখা পড়ছি। লেখক হতে গেলে পাঠক হতে হয় প্রথমে। সাংবাদিক থেকে লেখক হয়ে ওঠার বাসনা রয়েছে। সফল হব কিনা জানি না। 

ভাস্করব্রত -- আগের দিনের সাংবাদিকতা এবং বর্তমান সময়ের সাংবাদিকতা কিংবা সংবাদজগতের মধ্যে কি কোনও পার্থক্য ধরা পড়েছে আপনার চোখে?
 
জয়ন্ত -- প্রচুর পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু একটা সুতোও রয়েছে। অতীতের সবটাই ভালো, আর বাকি যা কিছু সবটাই খারাপ -- এটা Deterministic approach। এইরকম নির্দেশ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গী আমার কাছে কাম্য নয়। আমি সাংবাদিকতার ক্লাস নিই অ্যাডামাস ইউনিভার্সিটিতে। ষাট জন ছাত্র আছে আমার। এইসব ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের কাছে প্রতিদিন আমি অনেক কিছু শিখি। ওঁরা কিন্তু অনেক বেশি Challenging পরিস্থিতিতে রয়েছে আমাদের তুলনায়। 

ভাস্করব্রত -- লিটল ম্যাগাজিন তো সাহিত্যচর্চার একটা স্তম্ভ। কেন্দ্র বা রাজ্য এই সেক্টরটিকে কি বঞ্চিত বা পোষিত করেছে বলে মনে হয় আপনার? 

জয়ন্ত -- আমি লিটল ম্যাগাজিনের ঘোরতর সমর্থক। আমার প্রথম লেখা শুরু লিটল ম্যাগাজিনের পাতায়। আমার বক্তব্য যে, শুধু সরকারি সাহায্য বা অনুদান দিয়ে লিটল ম্যাগাজিন চলতে পারে না। এখন লিটল ম্যাগাজিন 'বই' হয়ে উঠেছে। চরিত্র হারাচ্ছে। অনুষ্টুপ, কোরক, এবং মুশায়েরাদের কথা উল্লেখ করতেই হয়। কিছু কিছু ম্যাগাজিন লিটল ম্যাগাজিন থেকে ছাড়িয়ে সমান্তরাল প্রতিষ্ঠানের চেহারা নিয়ে ক্রমশ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। 

ভাস্করব্রত -- 'মমতা বেয়ণ্ড ২০২১' বইটির অভিমুখ যদি কিছু বলেন!  

জয়ন্ত -- এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বায়োগ্রাফি নয়। এই বইটা তৃণমূল নেতাদের চেয়েও বিজেপি নেতাদের বেশি করে পড়া উচিত। গত লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপি পেল ১৮ টা আসন। অথচ ২০২১ এর বিধানসভা ভোটে এ রাজ্যে বিজেপি পর্যুদস্ত হল মমতার কাছে। এটা কেন হল? মমতার সাফল্যের এই রসায়নটা কি? এই বিষয় নিয়েই আমার বই। 

ভাস্করব্রত -- 'দিল্লি দরবারে রিপোর্টার ভূতনাথ' লিখেছেন। এই ভূতনাথ কি সাংবাদিক জয়ন্ত ঘোষালের প্রতিরূপ? দিল্লির দরবারে কি অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন যা আগে কখনো ভাবেননি। 

জয়ন্ত -- ভূতনাথের মধ্যে অবশ্যই জয়ন্ত ঘোষাল লুকিয়ে আছে। কিন্তু শুধু জয়ন্ত ঘোষাল নয়, আরও অনেক চরিত্র মিলেমিশে গেছে এতে। এটা একটা প্রোটাগনিষ্ট চরিত্র। রাজনৈতিক ক্ষমতার অলিন্দে সে একজন আউটসাইডার। কিন্তু সে সবকিছুর উইটনেসড। এই বইটি খুব জনপ্রিয় হয়েছে। এই বইমেলায় এর পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত সংস্করণ বেরোবে। ভূতনাথকে নিয়ে ওয়েব সিরিজ তৈরির অফারও রয়েছে। 
🍂

ভাস্করব্রত -- সাংবাদিক হিসেবে কি কি সম্মান পেয়েছেন? 

জয়ন্ত -- এটা না বলাই ভালো। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় জায়গা থেকেই সম্মাননা পেয়েছি। তবে আমি অ্যাওয়ার্ড পাওয়া সাংবাদিক নয়। কিন্তু গত ৪০ বছর ধরে দুটি নিউজ হাউস আমার জন্য দিস্তা দিস্তা নিউজ প্রিন্ট খরচ করেছে। এখনও করে চলেছে অনেক মিডিয়া হাউস। আর পাঠক তা গলাধঃকরণ করছে। আমাকে মানুষ মনে রেখেছে সাংবাদিক হিসেবে। অর্থাৎ আমার এখনও Date of Expery হয়নি এটাই বড় সম্মান আমার কাছে। আমি আমার জন্য কখনো সাংবাদিক পেনশনের আবেদন করিনি। পুরস্কারের জন্যেও নয়। সর্বভারতীয় সাংবাদিকতা করেছি। তবে Identity Crisis এ পড়েছি। 

ভাস্করব্রত -- বাংলার রাজনীতি কোন ধারায় বইছে? এর ভবিষ্যৎ কি? 

জয়ন্ত -- আমি একটু প্রেসিমিস্টিক। কোনও রাজনৈতিক দল ও সরকারকে দোষারোপ করার চেয়ে বাঙালির উচিত সামাজিক সচেতনতা এবং সামাজিক আন্দোলনেই প্রাধান্য দেওয়া। আগামী দিনের বাংলাতে যে অবক্ষয় আসছে, তা থেকে উদ্ধার করতে পারে বাঙালিই। লেনিন বলেছিলেন, 'Few, but better few'। তাই গুণগত উৎকর্ষের খুব প্রয়োজন এখন। আমার মতে, এখন আর রাজশক্তি নির্ধারক শক্তি হতে পারে না। মানুষের শক্তিই আসল পথ দেখাবে। 

ভাস্করব্রত -- কখনও হলুদ সাংবাদিকতার আবহে ফেলেছেন নিজেকে? বাধ্য হয়েছেন পেশা টেকাতে গিয়ে কর্মক্ষেত্রের নির্দেশ মেনে নিতে? 

জয়ন্ত -- কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মানা আর হলুদ সাংবাদিকতা এক বিষয় নয়। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা। আমি কোনদিন জ্ঞানত অসত্য লিখিনি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কোনও কায়েমি স্বার্থের জন্য কখনও কাউকে ছোট করিনি। কখনও কারোরই চরিত্রহনন করিনি। তাই হলুদ সাংবাদিকতার ছায়া অবলম্বনের প্রয়োজন পড়েনি আমার জীবনে। 

ভাস্করব্রত -- সাহিত্যচর্চা না সাংবাদিকতা -- কোনটা কঠিন কাজ বলে মনে হয় আপনার?

জয়ন্ত -- সাহিত্যচর্চা অত্যন্ত কঠিন কাজ। চেষ্টা করলেও সাহিত্যিক হওয়া কঠিন। আমার কাছে অন্তত বেশ কঠিন কাজ এটা। সাহিত্যিক হতে গেলে প্রশিক্ষণ নিতে হয় না। এটা একটা অন্তর্নিহিত শক্তি। প্রচেত গুপ্ত একাধারে সাংবাদিক। কিন্তু সফল সাহিত্যিক। সব সাংবাদিক যেমন সফল সাহিত্যিক হতে পারবে না, তেমনি সব সাহিত্যিকও সফল সাংবাদিক হতে পারবে না। 

ভাস্করব্রত -- জ্বলদর্চি তিরিশ বছর পার করলো। আপনার পরামর্শ আমরা প্রত্যাশা করি।

জয়ন্ত -- জ্বলদর্চি প্রতিনিয়ত যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে আমি চমকিত। আমি এর নিয়মিত পাঠক। এটি এখন ডিজিটালি খুব সক্রিয়। প্রচুর প্রচার পাচ্ছেও। অবাক হয়ে যাই। জ্বলদর্চির নেতৃত্বকে স্যালুট জানাই। তবে আমার মতে, এখন ডিজিটাল সংস্করণের মোড়ক থেকে বেরিয়ে ফিজিক্যাল বই প্রকাশের দিকে আরও বেশি করে নজর দিক জ্বলদর্চি-সহ অন্যান্য লিটল ম্যাগাজিনগুলো।

Post a Comment

0 Comments