জ্বলদর্চি

দূরদেশের লোকগল্প—সিরিয়া (এশিয়া)খলিফার বিচার /চিন্ময় দাশ

দূরদেশের লোকগল্প—সিরিয়া (এশিয়া)
খলিফার বিচার
চিন্ময় দাশ

[সিরিয়া-- মধ্য এশিয়ার একটি দেশ। ইউফ্রেটিস নদীর উত্তর তীরে অবস্থান। সে দেশের খলিফা ছিলেন হারুণ-অল-রসিদ। মাত্রই ৪৬ বছর বয়সে মারা যান তিনি। তখন ৮০৯ সাল। দেশ শাসন করেছেন সামান্য কয়েকটা বছর মাত্র। কিন্তু সুশাসনের জন্য সুখ্যাতি কুড়িয়েছিলেন দুনিয়া জুড়ে। দেড় হাজার বছর পার হতে চলল। খলিফা হারুণ-অল-রসিদের নাম মানুষ আজও মনে রেখেছে। আজকের গল্পটির জন্ম হয়েছিল তাঁরই জীবনের ছোট্ট একটি ঘটনা নিয়ে।]

গঞ্জটার নাম রাকা। সিরিয়া নামে যে দেশ, তারই একটা মাঝারি মাপের নগরী। দেশের একেবারে উত্তরে। পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে ইউফ্রেটিস নদী। মাসখানেক হতে চলল, একটা ঝামেলা বেধেছে শহরে। কাজীসাহেব রোগে পড়েছেন। উঠতেই পারছেন না বিছানা ছেড়ে। ফলে, তাঁর আদালত বন্ধ।
মামলা জমে জমে পাহাড় হয়ে উঠছে। বিচারপাতি নাই, অশান্তিও বেড়ে চলেছে শহরে। নগরপাল ভাবল, এখনই খলিফার কাছে খবর পাঠাতে হবে। দেরি হয়ে যাবে নইলে।
দূত ছুটল ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে। দামাসকাসে হাজির হোল যখন, ফেনা গড়াচ্ছে ঘোড়ার মুখ দিয়ে।
ফটকের সামনে এসে দাঁড়াতেই, পাহারাদাররা ঘিরে দাঁড়াল। জোব্বার পকেট থেকে নগরপালের পাঞ্জা দেখিয়ে, তবে ভিতরে ঢোকা গেল। দরবারে নিয়ে যাওয়া হোল দূতকে। 
নগরপালের লেখা চিঠি। মন দিয়ে পড়লেন খলিফা। চিঠির শেষের দিকে লেখা—মাননীয় খলিফা, এই অবস্থায় যদি নতুন একজন বিচারক পাঠান মেহেরবানি করে, তাতে শহরে শান্তি রাখতে সুবিধা হয়।  
হালকা মত একটা হাসির রেখা দেখা গেল খলিফার মুখে। জবাব পাঠিয়ে দেওয়া হোল—সামনের শুক্রবারেই নতুন বিচারক যাবেন রাকার আদালতে। ভাবনার কারণ নাই।
খলিফার কথা। খেলাপ হবার নয়। শুক্রবারেই বিচারক এসে হাজির হলেন রাকায়।
আদালতে আজ বেজায় ভীড়। অনেক দিনের অনেক অভিযোগ জমা পড়ে আছে। তাড়াতাড়ি ফয়সালা চায় সবাই।
তাড়াতাড়িই রায়  হতে লাগল মামলাগুলোর। বেশ তাড়াতাড়িই। আদালতের নাজির তো অবাক। এত তাড়াতাড়ি মামলার ফয়শালা করা যায়? আগে কখনও দেখা যায়নি। 
অথচ সব মামলাতেই সুবিচার হচ্ছে। কোনটাতেই কোন ভুল নাই। অবিচার নাই কোনটাতে। ধনী আর গরীবের ভেদাভেদ করা হচ্ছে না। ন্যায়বিচার না পেয়ে, মুখ ব্যাজার হচ্ছে না কারও। 
কাজীর আসনে বসেছেন নতুন বিচারক। ভারি মানিয়েছেও মানুষটিকে। যেন একেবারে স্বয়ং পয়গম্বরের বান্দা। গলার স্বর কী! যেন শাঁখের আওয়াজ। গোটা আদালত গমগম করে উঠছে, যখন কথা বলছেন।
অথচ কোনও ধমক-ধামক নাই। বকাঝকা করছেন না কাউকে। সামান্য রকম হম্বি-তম্বিও করছেন না। এই না হলে বিচারক!
একবার ডাক পড়ল এক বুড়ির। রোগা-পটকা মানুষ। গাল দুটো বসে গিয়ে চোয়াল উঁচিয়ে উঠেছে। ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে এসে দাঁড়াল সে। 
কাজী জানতে চাইলেন—অভিযোগ কী? নাজির ফিরিস্তি পড়ে গেল—দিনে দূপুরে এক সরাইখানায় ঢুকেছিল বুড়ি চুরি করতে। করেও ছিল চুরি। পাঁউরুটি আর মধু। তবে সরে পড়তে পারেনি। বামাল সমেত ধরা পড়ে গিয়েছে হাতেনাতে।
চুরি? কাজীসাহেব ভারি অবাক হলেন। বুড়ি কি এ দেশের লোক নয়? জানে না, চুরি এ দেশে মহা অপরাধ? প্রমাণ হয়ে গেলে, কঠিন সাজা হতে পারে। জরিমানা, জেলবাস, এমন কি হাতও কেটে নেওয়া হতে পারে। জেনেশুনে তো কেউ চুরি করে না এ দেশে! তবে? ব্যাপারটা কী? 
বুড়িকে ডাকবার আগে, কাজীসাহেব সরাইওয়ালাকে জানতে চাইলেন—তুমি এই অভিযোগ করেছ?
লোকটা বলল-- হ্যাঁ, হুজুর। সাক্ষী আছে আমার।
কাজী ভাবলেন, সাক্ষী বলতে তো, হাজির করবে নিজেরই দুটো কর্মীকে। গরীবের বিরুদ্ধে কথা বলবার লোকের অভাব হয় না কি?
তিনি সরাসরি বুড়িকে জানতে চাইলেন—এই অভিযোগ কি সত্যি? লম্বা সেলাম ঠুকল বুড়ি—হ্যাঁ, হুজুর। এক্কেবারে সত্যি।
কাজীসাহেব যেন আকাশ থেকে পড়লেন। ভয়াণক শাস্তি হতে আরে এতে। এভাবে সত্য কথা স্বীকার করে কেউ! তাও আবার কাজীর দরবারে দাঁড়িয়ে! 
কাজী বললেন—আপনি স্বীকার করছেন, চুরি করেছেন?
--করছি, হুজুর। চুরি করেছি। একটুও কাঁপল না বুড়ির গলা।   
--আমাদের দেশে চুরি করা কত বড় অপরাধ, তা আপনি জানেন? 
এবারও বুড়ির স্থির গলা—জানি, হুজুর! মহা পাপের কাজ। দোজখেও ঠাঁই হবে না আমার। এও জানি, আপনি সাজা দেবেন। কঠোর সাজা। 
বেশি বেশি করে অবাক হচ্ছেন —জানেন, আপনার জরিমানা হতে পারে? 
--জী হুজুর, জানি।
--আপনাকে জেলে পাঠানো হতে পারে।
--জী হুজুর, জানি।
এমনকি এই অপরাধের জন্য আপনার হাত কেটে নেওয়ার হুকুমও দিতে পার আমি।
--তাও আমি জানি, হুজুর। এ সব জেনেশুনেই আমি চুরি করেছি। এবারও গলা কাঁপল না বুড়ির।
অবাক হওয়া ছেড়ে দিলেন কাজীসাহেব। এবার ভারি কৌতুহল হোল তাঁর-- হাত কেটে নেওয়া হতে পারে, জেনেও আপনি চুরি করতে গেলেন? খুলে বলুন তো ব্যাপারটা, শুনি। 
সত্য কথা স্বীকারে গলা কাঁপেনি বুড়ির। এবার কিন্তু গলা কেঁপে এল। কোন রকমে বলল—পুরো সাত-সাতটা দিন খাইনি, হুজুর। আল্লার নামে শপথ। মিথ্যে কথা বলছি না। কেবল আমি নয়। ঘরে দুটো বাচ্চা নাতি-নাতনি আছে, হুজুর। তাদের পেটেও দানাটি জোটেনি। 
গাল বেয়ে অঝোর ধারা গড়িয়ে নামতে লাগল। গলা আটকে গেল এবার। খানিক বাদে, কাজী সাহেব বললেন—দোহাই, থামবেন না। বলে যান।
--গেল যুদ্ধের সময় বাচ্চাগুলোর মা-বাপ দুজনেই মারা পড়েছে। এদিকে ঘরে আর কিছু নাই আমার, যা বাঁধা দিয়ে দুজনের দুটো রুটি জোগাড় করব। বাসি খাবার নর্দমায় ফেলে দেয় কত লোকে। তার থেকেও একটা রুটি গরীবকে দেয় না কেউ। অন্য কোন উপায় ছিল না আমার। আবারও যুদ্ধ আসতে পারে। তার জন্য দুটো বাচ্চাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে তো? এজন্যই সরাইখানায় ঢুকেছিলাম। 
এবার আর ইউফ্রেটিস নদী নয়। ভূমধ্য সাগরের জল গড়িয়ে নামছে বুড়ির ভাঙা গাল দুটো বেয়ে। 
কাজীসাহেবও চুপ করে রইলেন কিছু সময়। একবার চোখ বুলিয়ে নিলেন দরবারে। সেখানেও অটুট নীরবতা। নাজিরকে ডেকে বললেন—শহরের নগরপাল, কোতওয়াল, আর নগরের যত গন্যমাণ্য লোক—সবাই যেন কাল এই আদালতে হাজির থাকেন। সবার সামনে কাল এই আর্জির রায় দেওয়া হবে।
পরদিন আদালত বসেছে। লোকে থইথই করছে আদালত চত্ত্বর। আর, দরবারের ভিতরে? তিল রাখা যায়, সেটুকু যায়গাও নাই। 
কাজীসাহেব এসে বসলেন তাঁর আসনে। বুড়ি দাঁড়িয়ে আছে বলির পশুর মত। সারা রাত কেঁদে কেঁদে, চোখের জল শুকিয়ে গিয়েছে তার। জরিমানা দেবার মত কানাকড়িও নাই ঘরে। হয় জেল খাটতে হবে। নয় হাত কাটা পড়বে। পাথরের মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছে বুড়ি।
কাজীসাহেব বললেন—অপরাধ প্রমাণের প্রয়োজন নাই। সবার সামনে নিজের অপরাধ কবুল করেছেন তিনি। দেশের আইন মোতাবেক এবার আমি সাজা ঘোষণা করব। আপনাদের কারও কিছু বলবার আছে?
কারই বা কী বলবার থাকতে পারে? সবাই চুপ। কেউ কেউ ভাবছে, চুরি করে ধরা পড়েছে বুড়িটা। কাল থেকে তাকে এমন আপনি-আজ্ঞে করা হচ্ছে কেন? ব্যাপারটা মাথায় ঢুকছে না কারও। 
দরবার নীরব। কেউই কিছু বলছে না। অতএব কাজীসাহেব রায় ঘোষণা করলেন—চুরি প্রমাণ হয়েছে। সেজন্য সাজা হিসাবে পঞ্চাশ ঘা চাবুক এবং একশ দিনার (সিরিয়া দেশের টাকা) রৌপ্যমুদ্রা জরিমানা করা হোল। অনাদায়ে জেল হতে পারে। দেশে আইন আছে, চোরের হাত কেটে নেওয়ার। সে রায় দেওয়া হোল না। কেন না, অপরাধী তাঁর দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। সেজন্য, সেই শাস্তি আমি মকুব করছি।
সবাই খুশি। ন্যায় বিচারই বলতে হবে একে। 
কাজীসাহেব প্রহরীকে ডেকে বললেন—যাও, চাবুক নিয়ে এসো। এখানেই হুকুম তামিল হবে। 
চাবুক আনা হোল। আসন থেকে নেমে এলেন কাজীসাহেব। সবার মাঝে দাঁড়িয়ে বললেন—যে দেশে একজন বুড়িমানুষ আর দুটি শিশুর রুটি জোটে না, চুরি করতে হয় পেটের জন্য, সে দেশের স্বয়ং খলিফার অপরাধ বুড়ির চেয়েও বেশি। আমি এখানে সেই খলিফার হয়ে বিচার করতে এসেছি। সে অপরাধ আমার উপরেও বর্তায়। তাই, পঞ্চাশ ঘা চাবুকের কুড়ি ঘা আমি খাবো। 
🍂
সবাই থ’। বলেন কী কাজীসাহেব! 
তিনি আবার বললেন—বাকি সাজার দশ ঘা নগরপাল, দশ ঘা কোতওয়াল খাবে। আর বাকি দশ ঘা নগরের গণ্যমান্যদের দশজন মাথাকে মারা হবে। এরা কেউই দেশের প্রজাদের খবরটিও রাখেনি।
নিজের দুটি হাত পেতে দিলেন কাজীসাহেব—দয়া করে আস্তে মারবেন না। ঠিক আসামীর মত করেই মারবেন।
গোলাপের পাপড়ির মত হাত দুটি। এক ঘা এক ঘা করে চাবুক পড়ছে। হাত ফেটে রক্ত ঝরছে। মুখ বুজে সয়ে গেলেন তিনি। 
চাবুকের পালা শেষ হোল। পকেট থেকে রুমাল বের করে হাতের উপর মেলে দিলেন। নিজের জোব্বা থেকে পঞ্চাশটি রুপোর দিনার বের করে রুমালে রাখলেন। বললেন—জরিমানার অর্ধেক আমি দিয়ে দিলাম। এবার যাঁরা পারবেন, দশ দিনার করে দিয়ে যান। সবাই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে, সুড় সুড় করে এসে দিয়ে যেতে লাগল। দেখতে দেখতে হাত ভরে গেল কাজীসাহেবের। কাজাঞ্চিকে ডেকে বললেন—গুণে দেখো, কতগুলো হোল। 
খাজাঞ্চি গুণে বলল—পাঁচশ’ দিনার হয়েছে, হুজুর। 
--এর থেকে একশ’ দিনার তোমার তহবিলে তুলে রাখো, জরিমানা হিসাবে। কুড়ি দিনার দাও মামলাকারী সরাইওয়ালাকে। তার রুটি, মধু আর হয়রানির মূল্য হিসাবে। 
খাজাঞ্চি বলল—বাকি দিনার কী করব, হুজুর?
বুড়িকে ডেকে নিলেন কাজীসাহেব—আপনার পরিবারের রুটির ব্যবস্থা করতে পারেননি দেশের খলিফা। সেটা তাঁর অপরাধ। সমস্ত প্রজাই তাঁর সন্তানের মত। আজ আমি এখানে এসেছি তাঁর প্রতিনিধি হয়ে। এতএব আজ আমিই এখানে খলিফা। আমি তাঁর হয়ে ক্ষমা চাইছি আপনার কাছে। আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।
কথা বলবে কী বুড়ি, ভয়েই জড়সড়। লজ্জায় মরে যাবার জোগাড় তার। মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছে বেচারা।
কাজীসাহেব বললেন—এই বাকি কটা দিনার আপনাকে দেওয়া হোল জরিমানা হিসাবে। দেশের খলিফার জরিমানা এটা। আপনি রুটির যোগাড় করবেন এ দিয়ে। 
এমন বিচার কে কবে দেখেছে, না শুনেছে? দরবার শুদ্ধ লোক থ’। কাজীসাহেব হাসিমুখে বুড়িকে বললেন—সামনের মাসে আপনি খলিফার দরবারে যাবেন। তিনি নিজে আপনার কাছে ক্ষমা চাইবেন। চিন্তা করবেন না। অনেক দূরের পথ। যাওয়ার ব্যবস্থা খলিফাই করে দেবেন।
চোখের জল আর আঁচল ভরা দিনার নিয়ে ঘরে ফিরে গেল বুড়ি।  
দু’বেলা রুটি আর মধু জুটে যাচ্ছে। শিশু দুটিও ভালই আছে। মনের সুখে দিন কেটে যাচ্ছে বুড়ির। কাজীর দেওয়া এক মাসের কথা মনেই নাই তার।
ঠিক এক মাস বাদে, এক পেয়েদা এসে দাঁড়াল বুড়ির কুটিরে। সাথে একটা উটের গাড়ি। ডাক পড়েছে খলিফার। দামাসকাস যেতে হবে বুড়িকে। 
প্রথমে পাড়ায়, তারপর গোটা রাকা নগরীতে সাড়া পড়ে গেল। এমন খলিফাও হয় তাহলে। ক্ষমা চাইবার জন্য, নিজেই বুড়িকে নিয়ে যাচ্ছেন! 
সেদিন হাতে চাবুক খেয়ে আর নিজের পকেট থেকে দিনার জরিমানা দিয়ে, নগরীর হোমরা-চোমরার দল ভেবেছিল, সেটা কাজীর বাড়াবাড়িই ছিল। আজ তাদের মুখ দিয়ে কথা সরছে না। 
সকলের চোখের সামনে, উটের গাড়ি চড়ে রওণা হয়ে গেল বুড়ি। নগরী পার হোল। টলটলে নীল জলের নদী পার হোল। নদীর ওপারে আলহোরা শহর পর্যন্ত রাস্তা ঠিক ছিল। তার পরেই যে মরুভূমি! যত দূর চোখ যায়, বালির সমুদ্র। বুড়ির বুক ছাঁৎ করে উঠল। এ কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাকে!
চলতে চলতে এক সময় রাজধানিতে পৌঁছল বুড়ির গাড়ি। ছবির মত শহর দামাসকাস। চোখ জুড়িয়ে গেল তার।
দরবারে বসে আছেন খলিফা। পাত্র-মিত্র, উজির-নাজির, নগরপাল-কোতওয়াল সবাই হাজির। বুড়িকে হাজির করা হোল ভরা দরবারে।
কেমন খটকা লাগল বুড়ির মনে। খলিফাকে যেন চেনা-চেনা লাগছে। সাহস করে দু’পা এগিয়েই গেল সিংহাসনের দিকে। হ্যাঁ ত, এই মানুষটাই তো! সেদিন খলিফা হয়ে বিচার করেছিল তার। মুখে কোন কথা জোগাল না বুড়ির।
খলিফা নেমে এলেন আসন থেকে। আহা, কী অপূর্ব হাসি সেই সুন্দর মুখখানিতে! যেন স্বয়ং খোদাতালাহ নেমে এসেছেন  বেহেস্ত থেকে।
খলিফা বুড়িকে বললেন—সেদিন কাজী হয়ে ক্ষমা চেয়েছিলাম। আজ এখানে আমি খলিফা। বুড়ি আর দুটি শিশুর মুখে রুটি জোগাতে পারিনি আমি। চুরি করতে হয়েছে আপনাকে। আমি সত্যিই লজ্জিত। আমি আমাকে মার্জনা করুন।
একেবারে সামনেই দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে দেওয়া যায়। বুড়ি কিন্তু দেখতে পাচ্ছে না খলিফাকে। চোখের জলে চোখ ঝাপসা। খোদাতালাহকেই দেখছে বুড়িমানুষটি।

Post a Comment

0 Comments